Ajker Patrika

সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না: বেরোবি শিক্ষকেরা

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না: বেরোবি শিক্ষকেরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবু সাঈদসহ দেশের সকল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষকবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে তাঁরা ওই কর্মসূচি পালন করেন। 

শিক্ষকেরা আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের এফআইআর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে জানান। 

ওই কর্মসূচিতে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমরা একটা মামলার তথ্য বিবরণী (এফআইআর) দেখেছি। খুন করেছে পুলিশ, মামলা করেছে পুলিশ, তদন্ত করবে পুলিশ। আর এই পুলিশের চোখের মধ্যে ঠুলি পড়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না। বাংলাদেশে অনেক প্রবীণ রাজনীতিক যারা চোখে দেখে না। আমরা যাব কোথায়, কার কাছে যাব? কার কাছে বিচার প্রত্যাশা করব? আবু সাঈদের মৃত্যু নির্মমভাবে হয়েছে। হাজার হাজার হাজার মানুষ দেখেছে, কোটি কোটি মানুষ দেখেছে। এই ভিডিও কোনো এডিট করার সুযোগ নেই। একাধিক টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করেছে।’ 

‘আবু সাঈদকে যখন তার মৃত ঘোষণা করা হয়েছে তখন বেলা তিনটা পাঁচ মিনিট, তখনো তো কোনো শিক্ষার্থী আন্দোলন নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে নাই। এফআইআর এমনভাবে লেখা হয়েছে পড়লে মনে হয় একই সময়ে সব ঘটনা ঘটেছে। এই সমস্ত কলা কৌশল, এই সমস্ত কুটচাল সবকিছু থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে অনুরোধ করি আপনাদের বাচ্চা আছে, আত্মীয়স্বজন আছে, এই দেশে আপনাদেরও দেশ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগে কত গোলাগুলি হয়েছে, পুলিশ কত জীবন দিয়েছে। আর আপনারা কী সেগুলো স্মরণ করেন না?’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকাআমরা শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘এই দায় আমাদের বহন করতে হবে, সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করতে হবে। তা না হলে আমরা যে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা কোনো সুস্থ বাংলাদেশ নয়, এটা একটি অসুস্থ বাংলাদেশ। আমরা এখন ঘুমাতে পারি না, আমাদের চোখে ঘুম নাই। ঘুমাতে গেলে হঠাৎ কানে বাজে, ‘পানি লাগবে পানি।’ মনের মধ্যে ভেসে ওঠে এক শিশুর একদিক থেকে গুলি ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। আমাদের চোখে বারবার ভেসে ওঠে শহীদ আবু সাঈদের সেই সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা। যে আবু সাঈদ পৃথিবীর মানুষকে পথ দেখিয়েছে, কীভাবে অস্ত্রের মুখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আমরা সেই আবু সাঈদকে স্যালুট জানাই।’ 

আর যেন একটা মানুষেরও এভাবে মৃত্যু না হয় জানিয়ে অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমরা কী দেখেছি, যে পুলিশ আবু সাঈদকে গুলি করেছে, সেই পুলিশকে ধরা হয় নাই। আর কত প্রহসন? আমরা আর কত মিথ্যার পথে হাঁটতে থাকব? আমরা এই পথ হাঁটা বন্ধ করতে চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এখানে একত্রিত হয়েছি আবু সাঈদসহ কোটা আন্দোলনের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিয়ে। আমরা সুষ্ঠু বিচার দেখতে চাই।’

পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক ফারজানা জান্নাত তোশি বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্পাস থেকে যেভাবে সাঈদকে হত্যা করেছে, এই ফুটেজ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে। এটা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। যে পুলিশ গুলি করেছে, তার নাম, বাড়ির ঠিকানা সবই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পরও এতদিন আমরা তাঁর কোনো ইনেসেটিভ দেখিনি। বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের মৃত্যুর যে সূচনা হয়েছে, তা প্রথম সাঈদের মৃত্যু দিয়ে হয়েছে। যদি এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়, তাহলে বাকিগুলোর তো কোনো এভিডেন্স নাই। সেগুলোর বিচার হবে কীভাবে?’ এই শিক্ষক বলেন, ‘যদি আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয়, তাহলে দেশের একটা হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হবে না।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমার ফারুক বলেন, ‘যে দেশে ঘরের শিশু নিরাপদ নয়, সেখানে বাংলাদেশের আমরা কেউই নিরাপদ নই। আমাদের নিরাপদের জন্য এই বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা দরকার। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে এই বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডগুলোর যথাযথ বিচারের আওতায় নিয়ে আসাটা খুবই জরুরি। এই দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার তদন্তের ওপরে আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।’ এ কারণে এই হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য এই শিক্ষক জাতিসংঘের তদন্তের দাবি করেন। 

ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র আবু সাঈদ মারা গেছেন, এখন তাকে রাজাকার বানানোর চেষ্টা চলছে। আমার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় কখনো রাজাকার বা অন্য কোনো দলের মিছিল মিটিং দেখি নাই। আমার শুধু প্রশ্ন, এই ১৬ তারিখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী রাজাকার হয়ে গেল।’ 

শুধু আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড তাই নয়, সারা দেশে যে নৃশংসতা হয়েছে বা গণহত্যা হয়েছে, এই গণহত্যার বিচার হওয়া দরকার মন্তব্য করে অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী নিহত হলো, সারা পৃথিবীর লোকজন দেখেছে। বাংলাদেশের সব লোকজন দেখেছে। যেটি আসলে লুকানোর কোনো কারণ নেই। সেটাকে যদি এভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে অন্য যেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ফুটেজ নাই, সাক্ষী নাই, তাহলে সেগুলোর কি হবে? পুলিশের ওপর কোনো আস্থা রাখতে পারছি না।’ তিনি সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য জাতিসংঘের অধীনে কমিশন গঠনের দাবি জানান। 

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। এ ঘটনায় পরদিন ১৭ জুলাই পুলিশ একটি মামলা করে। মামলার বিবরণীতে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। 

এদিকে রোববার (৪ আগস্ট) আবু সাঈদসহ রংপুরের ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে আসছেন বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এই তদন্ত কমিটি ৫ আগস্ট সোমবার সকাল ৯টায় রংপুর সার্কিট হাউজে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের স্বাক্ষর গ্রহণ করবে, ওই সার্কিট হাউসে ৬ আগস্ট সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দীন মিলন ও মানিক মিয়া হত্যাকাণ্ডের এবং ৭ আগস্ট মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহের হত্যাকাণ্ডের স্বাক্ষর গ্রহণ করবে বলে রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

রাবি প্রতিনিধি  
রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুল থেকে সায়মা হোসাইন নামের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ অক্টোবর) রাতে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁরা ‘তুমি কে? আমি কে? সায়মা, সায়মা’, ‘বিচার চাই, বিচার চাই সায়মা হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবেদন লেখা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান ছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সহসভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা সায়মা হত্যার বিচার না নিয়ে এখান থেকে যাব না। শুধু সায়মা নয়, এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। প্রশাসন চায় আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি, তারপর তারা কথা বলবে। তারা এখনই আমাদের সামনে আসুক এবং নিশ্চিত করুক দ্রুত বিচার।’

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। কেন ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়া তাকে সাঁতার কাটতে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্নের জবাব চাই। প্রশাসনের অবহেলায় আমরা বারবার আমাদের ভাইবোনদের হারাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছে ১৪ দিন সময় চেয়েছি।’

এর আগে আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে যান সায়মা হোসাইন। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাসা কুষ্টিয়ায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় কুমির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের শ্যামুবাড়ি গ্রামে কয়েক দিন ধরে এ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের দাবি, রাতে ও ভোরে পদ্মা নদী থেকে কুমির উঠে আসছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দা।

শ্যামুবাড়ি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে অন্তত দুটি কুমির দেখা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কৌতূহলী হয়ে পুকুর পাড়ে ভিড় করছে স্কুলশিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকার মানুষ।

মো. হায়াত হোসেন ও মো. রানা ওরফে মধু নামের দুই যুবক জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে পথচারীরা পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় গোয়ালঘরে কাছে একটি কুমির দেখতে পান। আতঙ্কিত হয়ে তাঁরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে টর্চলাইটের আলোতে কুমিরটির ছবি তোলার চেষ্টা করলে কুমিরটি ধীরে ধীরে পুকুর পাড় থেকে নদীর দিকে চলে যায়।

গৃহবধূ সালিনা বেগম বলেন, ‘রাতে গোয়ালঘরে পাশে কুমির দেখতে পাই। ছবি তুলতে গেলে সেটা পুকুর পাড় থেকে সরে যায়।’ এ ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁরা দ্রুত কুমিরগুলোকে উদ্ধার এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, বিষয়টি বন বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালের মালিকানা কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই। শুধু লাইসেন্সিং হিসেবে অপারেটর নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব। আজ রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বন্দরের চিফ পারসোনাল অফিসার মো. নাসির উদ্দিনের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্তৃক ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ আনা হয়।

এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সব টার্মিনাল, জেটি, ইয়ার্ড ও অন্য সব স্থাপনার একক মালিকানা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের। বন্দরের কোনো টার্মিনালের মালিকানা ইতিপূর্বে কখনোই কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা বন্দর কর্তৃপক্ষ বা সরকারের ছিল না বা এখনো নেই।

বাংলাদেশের প্রচলিত বিধিবিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে শুধু লাইসেন্সিং হিসেবে অপারেটর নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালগুলো পরিচালনার ব্যাপারে কতিপয় সংবাদমাধ্যম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করছে। এসব অসত্য, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সাধারণ জনগণ ও বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কোনো বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত না হয়ে মনগড়া, ধারণাভিত্তিক বা অনির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদ পরিবেশন করা হলে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরসম্পর্কিত মনগড়া, অবাস্তব সংবাদ বন্দরের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দর এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় অন্তরায়।

বন্দরের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখা এবং ক্রমবর্ধমান উন্নতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখাসহ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য—বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), বে-টার্মিনাল ও লালদিয়ার চর পরিচালনার জন্য তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যে এ-সংক্রান্ত চুক্তি হওয়ার কথা ইতিমধ্যে সরকারের নীতিনির্ধারকদের ভাষ্যে এসেছে।

এরই মধ্যে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৩০ দিন চট্টগ্রাম বন্দরসংলগ্ন বারেক বিল্ডিং মোড়, নিমতলা মোড়, ৩ নম্বর জেটি গেট, কাস্টমস মোড়, সল্টগোলা ক্রসিংসহ বন্দর এলাকায় যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক, শ্রমিক বা সামাজিক সংগঠনের মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পথসভা নিষিদ্ধ করা হয়।

তবে শুরু থেকেই বন্দরের স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন ঢাকা-চট্টগ্রামে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে। ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), স্কপসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনও রাজপথে নামে। আগামী ১ নভেম্বর স্কপ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে বিজিবির পৃথক অভিযানে উদ্ধার ১৪ জন, তিন মানব পাচারকারী আটক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
বিজিবির অভিযানে আটক তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির অভিযানে আটক তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফে একই রাতে পৃথক অভিযানে ১৪ জনকে উদ্ধার এবং মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।

আটক মানব পাচারকারীরা হলেন চক্রের মূল সদস্য আবু তাহের (৬৯), তাঁর স্ত্রী দিলদার বেগম (৩৮) ও মোহাম্মদ শফি (৩২)। এ ছাড়া ফাইসেল, সাইফুল, নুরুল মোস্তফা, মো. উল্লাহ, সাইদ, হারুন ও মো. ফিরোজসহ আরও কয়েকজন পাচারকারী পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবির কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রথম টেকনাফের নোয়াখালীপাড়ার আবু তাহেরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটজনকে উদ্ধার করা হয়। সাগরপথে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে তাঁদের ওই বাড়িতে রাখা হয়েছিল। এ সময় দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়। একই রাতে দ্বিতীয় অভিযানে লম্বরী এলাকার মোহাম্মদ শফির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদেরও সাগরপথে বিদেশে পাচারের ওই বাড়িতে রাখা হয়। এ সময় সেখান থেকে এক মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়।

বিজিবি জানায়, উদ্ধার করা ১৪ ভুক্তভোগীকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধে বিজিবির অভিযান ও কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত