Ajker Patrika

পদায়নের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় চিকিৎসকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১৬: ০৬
পদায়নের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় চিকিৎসকদের

মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসকদের অবদান বড় হলেও তাঁদের পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক চৌধুরী। 

এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসক কনসালট্যান্টদের দেড় বছরেও পদায়ন হয় না। কেন তাদের পদায়নের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে? এ রকম বৈষম্য থাকবে কেন?’ 

আজ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন আয়োজিত ২১তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দয়া চাই না, দাক্ষিণ্য চাই না। আমাদের অধিকার দিতে হবে। যেখানে সংবিধানে বলা আছে ক্যাডার বৈষম্য থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীও আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন করতে বলেছেন। কিন্তু যাঁরা করবে তাঁরা তেলে তৈলাক্ত হয়ে বসে আছেন।’ 

এহতেশামুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘ছুটির জন্য আবেদন করা হলে চিঠি দেওয়া হয় আপনি ছুটি চান কেন? এমনকি শোকজও করা হয়। এটা করবেন কোন শক্তিতে? আপনারা ছুটি দেবেন না ভালো কথা, কিন্তু শোকজ করা হবে কেন? যিনি চিকিৎসককে শোকজ করেছেন, সেই কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’  

চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নেই দাবি করে এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘একদিকে বন্দুকসহ নিরাপত্তা দিয়েছে, আর এদিকে চিকিৎসকদের কলার চেপে ধরে রোগীর স্বজনেরা। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আপনি আমলাদের প্রতিনিধি নন, আপনি চিকিৎসকদের প্রতিনিধি। আপনি আবারও মন্ত্রী হবেন, আমাদের দিকে তাকান।’ 

তবে ক্যাডার সিস্টেম থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান। 

ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘আমার কথায় অনেকে হয়তো একমত হবেন না, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটাই সত্য যে, বৈষম্য দূর করতে এই ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই আমরা মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে পারব।’ 

স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, ‘চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। লিভার, কিডনি প্রতিস্থাপনসহ নানা ধরনের উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে। একের পর এক বিশেষায়িত হাসপাতাল হচ্ছে। সর্বশেষ ৫০০ শয্যার বার্ন হাসপাতাল হয়েছে, যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই।’ 

ডা. এম এ আজিজ বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনেক সমালোচনার পরও শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। সমালোচকেরাও এখন প্রশংসা করছেন। তাঁদের আমি ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের সমালোচনার কারণেই আমরা সতর্ক থেকেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’ 

এম এ আজিজ বলেন, ‘চিকিৎসকদের মধ্যে থাকা বৈষম্য নিরসন করতে হবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রেখে কাজ করেছি। মন্ত্রণালয়ের অনেক নেতিবাচক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে।’ 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। করোনা মহামারির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছেন।’ 

দেশে চিকিৎসাব্যবস্থায় চিকিৎসকের সংকট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নতুন কোনো নির্দেশনা দেবেন। চিকিৎসকদের প্রমোশনের বিষয়টিতে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী প্রমুখ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রাহকদের বকেয়া না দিয়ে পালানোর চেষ্টায় কর্মকর্তারা, অবরোধ-বিক্ষোভ

শিপুল ইসলাম, রংপুর
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের রংপুর জোনাল অফিসে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকার বিমা পরিশোধ না করে অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন কর্মকর্তারা—এমন খবর পেয়ে গ্রাহকেরা দ্রুত অফিসে গিয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার মধ্যরাতে অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আসবাব ও দামি সরঞ্জাম বিক্রি করে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় স্থানীয় গ্রাহকদের। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে অফিসে গিয়ে মালপত্র আটক করেন এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহির জন্য অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকে অফিসের সামনে গ্রাহকের ভিড় করতে শুরু করে দুপুর গড়তেই জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোডে জামাল মার্কেটের সামনে অফিসের নিচে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গ্রাহকেরা। এ সময় অফিসের লকার, চেয়ার-টেবিল, আসবাবসহ একটি ট্রাক দেখা যায়। অফিস কক্ষে চারজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রংপুর বিভাগের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকারও বেশি বিমা দাবি এখনো পরিশোধ করেনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা টাকা না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।

রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের আট জেলায় ২৯ হাজার ৫৯৬ জন গ্রাহকের বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে, যার বিপরীতে ১২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকারও বেশি পরিশোধ বকেয়া রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ধরে শুধু আশ্বাসই পাচ্ছেন।

রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থান নেওয়া গ্রাহক নগরীর ভগিবালা এলাকার বৃদ্ধা আকলিমা বেগমের দুই বছর আগে বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা দীর্ঘদিন ঘুরেও পাননি। আক্ষেপ করে আকলিমা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, অনেক কষ্ট করে টাকা জমাইছি। সেই টাকা না দিয়ে অফিস নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বিমা কোম্পানি লোকজন। আমার কষ্টের টাকা আমি ফেরত চাই। খবর পেয়ে সবার সঙ্গে এখানে অবস্থান নিচ্ছি।’

আরেক গ্রাহক নগরের আদর্শপাড়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে ভালোর আশায় রিকশা চালিয়ে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে ১২ বছর ধরে টাকা জমিয়েছি। সেই টাকা না দিয়ে ফারইস্ট কোম্পানি অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালিয়ে যাচ্ছে। এই টাকা না পেলে পথে বসে যাব। আমার রক্ত-মাংস পানি করা টাকা আমি ফেরত চাই। এ জন্য আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।’

রাস্তায় বসে বিমার কাগজপত্র নাড়াচাড়া করছিলেন আর চোখ দিয়ে জল পড়ছিল হারাগাছ এলাকার সায়েম বাদশা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে যেন ভালোভাবে চলতে পারি, সেই আশায় বিমা করেছিলাম। না খেয়ে কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা করে জমিয়েছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে, কিন্তু এখনো টাকা পাইনি। সরকার কাছে দাবি আমাদের আসল টাকাটা যেন ফেরত নিয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে অস্ত্র-গুলিসহ ৪ নারী গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাসে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ চার নারীকে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার ভোর পর্যন্ত উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিতাস-অস্ত্র২
তিতাস-অস্ত্র২

গ্রেপ্তার নারীরা হলেন শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা (২৯), জসিমের স্ত্রী আমিনা (৩৭), জহিরের স্ত্রী জুবেদা (৩৩) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী শান্তি বেগম (৬০)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিতাস থানা-পুলিশের একাধিক টিম শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে ১টি বিদেশি রিভলবার, ৬টি গুলি, ১টি এলজি বন্দুক, ২টি পাইপগান উদ্ধারসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একই রাতে একই এলাকার আব্দুল কাদিরের বাড়িতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০টি সিসা কার্তুজ ও ৫টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিমলায় টিকা নিতে গিয়ে পিকআপের ধাক্কায় নানি-নাতনি নিহত

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলায় টিকা নিতে যাওয়ার পথে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় নানি তাঁর ১৪ দিনের নবজাতক নাতনিসহ নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের শুটিবাড়ি বাজারসংলগ্ন এলাকার আব্দুস ছাত্তার খানের স্ত্রী মোছা. সূর্য খাতুন (৫৫) এবং তাঁর নাতনি সামিয়া আক্তার (১৪ দিন) একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে সূর্য খাতুন নাতনি সামিয়াকে নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি মালবাহী পিকআপ তাঁদের ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই নবজাতক সামিয়া মারা যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সূর্য খাতুনকে উদ্ধার করে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার পর পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

নিহত নবজাতকের স্বজনেরা বলেন, নানি তাঁর নাতনিকে নিয়ে টিকা দিতে গিয়েছিল। সকালবেলায় হাসিখুশি ছিল সবাই। কিন্তু মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল।

স্থানীয়রা জানান, ওই সড়কে বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। পিকআপের চালককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্টেশনমাস্টারের দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আক্কেলপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ‘আক্কেলপুরবাসী’র ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধশতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, খাদিজা খাতুন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সান্তাহার জংশনের দায়িত্বেও আছেন। স্থানীয় যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া এবং তাঁর মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের আক্কেলপুরে যাত্রাবিরতি বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁকে দ্রুত এখান থেকে অপসারণের দাবি জানান তাঁরা।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির সমন্বয়ক আব্দুর রউফ মাজেদ। বক্তব্য দেন পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম চপল, তিলকপুর ইউপির সদস্য মামুনুর রশিদ পিন্টু, কলেজশিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম তুহিন, মাসুদ চৌধুরী, ছাত্রদল নেতা আরমান হোসেন কানন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল, নওগাঁর বদলগাছী-পত্নীতলা এবং বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার যাত্রীরা এই স্টেশন ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে। চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি পেলে মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। কিন্তু স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে তা বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমি চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির বিরোধিতা করে কোনো মৌখিক বা লিখিত প্রতিবেদন দিইনি। ২০২৪ সাল থেকে সান্তাহার জংশনের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছি। এক বছর তিন মাসে কোনো যাত্রী আমার দ্বারা হয়রানির শিকার হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত