Ajker Patrika

‘সড়কে প্রতি মুহূর্তে হত্যার আয়োজন হচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ২০
‘সড়কে প্রতি মুহূর্তে হত্যার আয়োজন হচ্ছে’

সড়কে প্রতি মুহূর্তে হত্যার আয়োজন হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেছেন, ‘সড়কের সব দুর্ঘটনা মানব সৃষ্ট। যদি আমাদের চালকদের লাইসেন্স ঠিক থাকে, গাড়ির ফিটনেস ঠিক থাকে এবং সড়ক ঠিক থাকে, আমরা যদি রোড সংকেত মেনে চলি, যাত্রীরা যদি আচরণবিধি মেনে চলে, এরপরও যদি দু–একটি ঘটনা ঘটে, তার নাম দুর্ঘটনা। কিন্তু আপনার গাড়ির ফিটনেস ঠিক নেই, টাকা দিয়ে লাইসেন্স পাওয়া যায়, সড়ক ঠিক নেই। তাহলে এখানে তো প্রতি মুহূর্তে হত্যার আয়োজন হচ্ছে।’ 

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বিগত সরকারের প্রণীত সড়ক আইনে যাত্রী স্বার্থ উপেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। 

বিগত সরকারের সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কারও কোনো পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন না। তিনি একক সিদ্ধান্তে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন বলেও উল্লেখ করেন রোবায়েত ফেরদৌস। 

সড়ক দুর্ঘটনায় বিশিষ্ট সাংবাদিক তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন আমরা তৎকালীন সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেছিলাম, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি হত্যার আয়োজন। এখানের মতো চড় বাকল তোলা বাস সারা পৃথিবীর কোথাও নেই। এখানকার দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো চুক্তিভিত্তিক ড্রাইভার নিয়োগ দেওয়া। তারা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ মারছে। আমাদের মেয়র এবং সেতুমন্ত্রী সব সময় বাগাড়ম্বর করতেন। আমরা প্রত্যেকেই এর ভুক্তভোগী হতে পারি। সড়কের সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ থাকত এবং এখানে সীমাহীন লুণ্ঠন লুটতরাজ এবং ন্যূনতম সুশাসনের ব্যবস্থা না রেখেই সড়কগুলো ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে।’ 

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজ্জাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য কিছুতেই থামছে না। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশের ইতিহাসে সাড়া জাগানো সর্ববৃহৎ ছাত্র আন্দোলনের পরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সড়ক পরিবহনের নতুন আইন করলেন, আইন বাস্তবায়নও হলো কিন্তু পরিবহনে বিশৃঙ্খলা কেবল বাড়ছেই। পরিবহন খাতসহ দেশের সব ক্ষেত্রে বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার শত সহস্র তাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন সেক্টরেও দীর্ঘদিন যাবৎ যাত্রী সাধারণ ছিল বঞ্চিত। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে তাদের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। 

মোজ্জাম্মেল হক আরও বলেন, পরিবহনের প্রধানতম স্টেকহোল্ডার দেশের জনগণ তথা যাত্রীসাধারণ হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৬ বছর পরিবহন পরিচালনার সব ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান স্টেকহোল্ডার যাত্রী সাধারণের প্রতিনিধিত্ব বাদ দিয়ে সরকারের অনুগত লেজুড়বৃত্তি একটি বাস মালিক সমিতি ও একটি পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্বে পরিবহন সেক্টর পরিচালনা করতে গিয়ে সবকিছু যেন লেজেগোবরে অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। ফলে পরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য, যাত্রী হয়রানি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যাত্রীসাধারণের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগের কোনো উপায় ছিল না। পরিবহন সেক্টরে যাত্রী স্বার্থের সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হতো বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশন গুটিকতেক নেতাদের প্রেসক্রিপশনে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের সংকটকে পুঁজি করে বিগত ১৫ বছরে দেশের সড়ক যোগাযোগে উন্নয়নের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নেওয়া হয়েছে একের পর এক মেগা প্রকল্প, উদ্দেশ্য ছিল মেগা লুটপাট। পরিবহনে মালিক-শ্রমিক নেতাদের তোষামোদি করার মাধ্যমে যাত্রীদের পকেট কাটার নৈরাজ্য চলেছে। চাঁদাবাজির নামে শত শত কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা চাঁদাবাজির অংশীদার থাকায় কোনো প্রতিবাদ করা যায়নি। 

সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না, যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত সাকিল প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

­যশোর প্রতিনিধি
ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

কাজ করে দিতে পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করায় যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে বদলির আদেশ দিয়েছে দুদক।

আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) যশোরে গণশুনানি চলাকালে দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী এই আদেশ দেন। অবশ্য অভিযোগকারী রুস্তম আলীর দাবি, তাঁর কাছ থেকে পাকা কলা ছাড়াও ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন আলমগীর হোসেন। এরপর আরও ৬ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন, যা না দেওয়ায় জেলা পরিষদের জমির ডিসিআর অন্যকে দিয়ে দেন ওই কর্মকর্তা।

‘রুখব দুর্নীতি, গড়ব দেশ; হবে সোনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গণশুনানি আজ যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুনানিতে প্রধান অতিথি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, ‘যতই দিন যাচ্ছে, ততই দুর্নীতি বাড়ছে। দুর্নীতির ধরন চেঞ্জ হচ্ছে। মানুষ পারাপার করেও টাকা আদায় করা যায়, দুর্নীতি করা যায়—এই যশোরে এসে নতুন দুর্নীতির ধরন শুনলাম। স্বৈরাচারের দোসর হোক, মামলার আসামি হোক—তারা যশোরের রাজনীতির এলিটদের মাধ্যমে ভারতে পার হচ্ছে। এটা যদি হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রত্যাশা বিঘ্নিত হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। দুদক দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারবে—এটা প্রত্যাশিত নয়, তবে কমানো যাবে। আমরা শুনানির মাধ্যমে জনগণকে কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করে দিচ্ছি না। আমি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পৃক্ততা তৈরি করছি। এতে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে।’

দুর্নীতির কারণেই বিগত সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, সুষ্ঠু ও আনন্দঘন পরিবেশে নির্বাচন হবে, সেটায় সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশটাকে ভালো রাখতে সৎ প্রার্থীকে বাছাই করতে হবে। আমরা যদি ১৫ বছরের ইতিহাস দেখি, সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছিল দুর্নীতি। বিগত সরকারের এই অবস্থা হওয়ার পেছনে ছিল দুর্নীতি। ফলে দুর্নীতিগ্রস্তকে বেছে নেবেন না। সেটিই হবে রাষ্ট্রের প্রতি সুবিচার। এই যশোর থেকে ন্যায়ের ও দুর্নীতিমুক্ত যাত্রাটা শুরু হবে।’

জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের আয়োজনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী। শুনানি মডারেটর করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। শুনানিতে জেলার সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৩৭টি দপ্তরের ৭৫টি অভিযোগের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও কিছু বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট চেম্বারের নির্বাচন স্থগিত করল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ রোববার মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-১ শাখার উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক সাঈদা পারভীন জানান, কয়েকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য এটি স্থগিত করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও পুনঃতফসিলের মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদি (২০২৫-২৬) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর আগে আগামী ১ নভেম্বর সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে প্রার্থী বাছাইসহ নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশালে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১৩
বরিশাল নগরীতে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল নগরীতে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রাকিবুল ইসলাম আজ রোববার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাসেল গাজী (৪৫), মো. রোকন খান (৩৩), রাজিব জমাদ্দার (৩৫) ও জাহিদ হাওলাদার (৩৬)।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার অজিবর রহমান জানান, রায় ঘোষণার সময় রাসেল, রাজিব ও জাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি রোকন খান মামলার বিচার চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন।

অজিবর রহমান আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর গ্রেপ্তার এই চার আসামি অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। তবে পুলিশ তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে নগরের একটি এলাকায় এই দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তখন গৃহবধূর বয়স ছিল ১৮ বছর। প্রথমে ৯ নভেম্বর ঘরে ঢুকে রাসেল গাজী তাঁকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। এর পরদিন ওই নারী বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় ওঠেন। চালক তাঁকে নিয়ে ভুল পথে রওনা দেন। একপর্যায়ে আসামিরা মোটরসাইকেলে তাঁর পিছু নেন এবং নির্জন স্থানে পৌঁছে গৃহবধূকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফের গহিন পাহাড় থেকে উদ্ধার ৫ নারী ও শিশু, মানব পাচারকারী আটক

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
অভিযানে আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফের হাবিরছড়াসংলগ্ন গহিন পাহাড়ি এলাকা থেকে চার নারী ও এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় মানব পাচারকারী অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটক পাচারকারী টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিবছড়া ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (৫৫)।

কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা সালাউদ্দিন রশিদ বলেন, আটক পাচারকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশ্যে নারী-শিশুসহ কয়েকজনকে হাবিরছড়ার পাহাড়ি এলাকায় বন্দী করে রাখা হয়েছিল। গতকাল দিবাগত রাত ২টার দিকে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর একটি বিশেষ দল যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে চার নারী, এক শিশুসহ পাঁচজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র উন্নত জীবনের স্বপ্ন, উচ্চ বেতনের চাকরি ও অল্প খরচে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়া পাচারের ফাঁদে ফেলে। পাচারের আগে তাদের পাহাড়ি এলাকায় বন্দী রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করা হতো।

উদ্ধার ব্যক্তিদের ও আটক মানব পাচারকারীর বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত