আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পকেট থকে ৫০ টাকার একটি নোট বের করে বলেন, ‘এটা রাখো, এটি তোমার জন্য উপহার।’ জাতির জনকের উপহারের সেই স্মৃতি আজও বুকে আগলে রেখেছেন ঘিওরের আব্দুল মুন্নাফ। নদীভাঙনে ঘরসহ তলিয়ে গেছে সেই নোট। কিন্তু আজও স্মৃতির কথা মনে করে ডুকরে কেঁদে ওঠেন মুন্নাফ।
মুন্নাফের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা নয়াপাড়া গ্রামে। পিতা ফুলচাঁনের ছিল আট সন্তান। অভাবের সংসারে বাধ্য হয়ে কিশোর মুন্নাফ তরা ফেরি ঘাটে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে চায়ের দোকান দেন। তাঁর দোকানে চা পান করেন জাতির পিতা। চা পানে সন্তুষ্ট হয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে মুন্নাফকে আশীর্বাদ ও ৫০ টাকার একটি নোট উপহার দেন।
মুন্নাফের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের। এ সময় মুন্নাফ বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের তরায় ছিল কালীগঙ্গা নদী। কালীগঙ্গা তখন ভয়ানক প্রমত্তা; চলাচল করত বড় জাহাজ আর বাণিজ্যিক নৌকাবহর। সেখানে ছিল ফেরিঘাট, ফেরি পারাপার হয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করতেন। প্রায়ই ভিড় লেগে থাকত ঘাট এলাকায়। তখন এত গাড়ি ছিল না, তবুও ফেরি পারাপারে ধরতে হতো লম্বা লাইন।’
মুন্নাফ বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় খালাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু আরও সঙ্গী নিয়ে ঢাকা ফিরছেন। ঘাটে ভিড়, হঠাৎ তিনি গাড়ি থেকে নামলেন। সাধারণ মানুষ আর দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর আমার দোকানের দিকে এগোতে লাগলেন। দ্রুত গামছা দিয়ে চেয়ার মুছে দিলাম। বঙ্গবন্ধু বসলেন। বললেন, ‘ভালো করে চা দাও।’
আমি চা বানাচ্ছি আর বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখছি। জীবনে এই প্রথমবার তাঁকে কাছে থেকে দেখলাম। তাও আমার ভাঙা চায়ের দোকানে। কাঁপা কাঁপা হাতে চা দিলাম। চায়ে চুমুক দিয়েই বললেন, ‘বাহ, বেশ ভালো হয়েছে চা। কী নাম তোমার?’ এই বলে আমার হাতে ধরিয়ে দেন ৫০ টকার একটি নোট। বলেন, ‘এটা রাখো, এটি তোমার জন্য উপহার।’ এই বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। এরপর গাড়িতে চড়ে চলে গেলেন। যতদূর দেখা গেছে ততক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। সেই স্মৃতি মনে হলে আজও মনের ভেতরে ঝড় ওঠে।’
এরপর ১৯৭৩ সালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালীগঙ্গার বুকে নির্মিত হয় সেতু। উঠে যায় ফেরিঘাট, উঠে যায় মুন্নাফের মতো আরও অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান। চা-দোকানি কিশোর মুন্নাফের বয়স এখন ৬৭ বছর। চার সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে অভাব-অনটনে দিন কাটছে তাঁর। অনেক কিছু ভুলে গেলেও সেই স্মৃতি আগলে রেখেছেন অন্তরাত্মায়। তাঁর চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছে থেকে একবার দেখা।
আব্দুল মুন্নাফ বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। নিজের হাতে চা বানিয়ে খাওয়াতে পেরেছি এটা ভাগ্যের বিষয়। তবে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৫০ টাকার সেই নোটটি হারিয়ে গেছে। ৩০ বছর যত্নে ছিল। হঠাৎ কালীগঙ্গা নদীতে বসতবাড়ি ভেঙে যায়, নতুন ঠিকানায় আবাস গড়ি। এর পর থেকে আর খুঁজে পাচ্ছি না সেই ৫০ টাকার নোটটি। এ জন্য বুক ফেটে কান্না আসে।’
তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল আজিজ এই ফেরিঘাটে পারাপারের সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছিলেন কয়েকবার। তিনি বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় খালাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু আরও সঙ্গী নিয়ে ঢাকা ফিরছেন। এখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। তরা ঘাটে ছোট্ট এক দোকানে চা খেয়ে কিশোর দোকানিকে ৫০ টাকা উপহার দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তখন ৫০ টাকা ছিল একজন শিক্ষকের এক মাসের বেতন।’
অনেক দিন পর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানের খোঁজ করতে গিয়ে আলোচনায় আসে কিশোর চা দোকানি মুন্নাফের কথা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও জাবরা গ্রামের বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম খুঁজে বের করেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য আবদুল মুন্নাফকে। স্মৃতিবিজড়িত তরা কালীগঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান আব্দুল মুন্নাফসহ এলাকাবাসী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পকেট থকে ৫০ টাকার একটি নোট বের করে বলেন, ‘এটা রাখো, এটি তোমার জন্য উপহার।’ জাতির জনকের উপহারের সেই স্মৃতি আজও বুকে আগলে রেখেছেন ঘিওরের আব্দুল মুন্নাফ। নদীভাঙনে ঘরসহ তলিয়ে গেছে সেই নোট। কিন্তু আজও স্মৃতির কথা মনে করে ডুকরে কেঁদে ওঠেন মুন্নাফ।
মুন্নাফের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা নয়াপাড়া গ্রামে। পিতা ফুলচাঁনের ছিল আট সন্তান। অভাবের সংসারে বাধ্য হয়ে কিশোর মুন্নাফ তরা ফেরি ঘাটে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে চায়ের দোকান দেন। তাঁর দোকানে চা পান করেন জাতির পিতা। চা পানে সন্তুষ্ট হয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে মুন্নাফকে আশীর্বাদ ও ৫০ টাকার একটি নোট উপহার দেন।
মুন্নাফের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের। এ সময় মুন্নাফ বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের তরায় ছিল কালীগঙ্গা নদী। কালীগঙ্গা তখন ভয়ানক প্রমত্তা; চলাচল করত বড় জাহাজ আর বাণিজ্যিক নৌকাবহর। সেখানে ছিল ফেরিঘাট, ফেরি পারাপার হয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করতেন। প্রায়ই ভিড় লেগে থাকত ঘাট এলাকায়। তখন এত গাড়ি ছিল না, তবুও ফেরি পারাপারে ধরতে হতো লম্বা লাইন।’
মুন্নাফ বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় খালাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু আরও সঙ্গী নিয়ে ঢাকা ফিরছেন। ঘাটে ভিড়, হঠাৎ তিনি গাড়ি থেকে নামলেন। সাধারণ মানুষ আর দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর আমার দোকানের দিকে এগোতে লাগলেন। দ্রুত গামছা দিয়ে চেয়ার মুছে দিলাম। বঙ্গবন্ধু বসলেন। বললেন, ‘ভালো করে চা দাও।’
আমি চা বানাচ্ছি আর বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখছি। জীবনে এই প্রথমবার তাঁকে কাছে থেকে দেখলাম। তাও আমার ভাঙা চায়ের দোকানে। কাঁপা কাঁপা হাতে চা দিলাম। চায়ে চুমুক দিয়েই বললেন, ‘বাহ, বেশ ভালো হয়েছে চা। কী নাম তোমার?’ এই বলে আমার হাতে ধরিয়ে দেন ৫০ টকার একটি নোট। বলেন, ‘এটা রাখো, এটি তোমার জন্য উপহার।’ এই বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। এরপর গাড়িতে চড়ে চলে গেলেন। যতদূর দেখা গেছে ততক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। সেই স্মৃতি মনে হলে আজও মনের ভেতরে ঝড় ওঠে।’
এরপর ১৯৭৩ সালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালীগঙ্গার বুকে নির্মিত হয় সেতু। উঠে যায় ফেরিঘাট, উঠে যায় মুন্নাফের মতো আরও অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান। চা-দোকানি কিশোর মুন্নাফের বয়স এখন ৬৭ বছর। চার সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে অভাব-অনটনে দিন কাটছে তাঁর। অনেক কিছু ভুলে গেলেও সেই স্মৃতি আগলে রেখেছেন অন্তরাত্মায়। তাঁর চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছে থেকে একবার দেখা।
আব্দুল মুন্নাফ বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। নিজের হাতে চা বানিয়ে খাওয়াতে পেরেছি এটা ভাগ্যের বিষয়। তবে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৫০ টাকার সেই নোটটি হারিয়ে গেছে। ৩০ বছর যত্নে ছিল। হঠাৎ কালীগঙ্গা নদীতে বসতবাড়ি ভেঙে যায়, নতুন ঠিকানায় আবাস গড়ি। এর পর থেকে আর খুঁজে পাচ্ছি না সেই ৫০ টাকার নোটটি। এ জন্য বুক ফেটে কান্না আসে।’
তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল আজিজ এই ফেরিঘাটে পারাপারের সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছিলেন কয়েকবার। তিনি বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় খালাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু আরও সঙ্গী নিয়ে ঢাকা ফিরছেন। এখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। তরা ঘাটে ছোট্ট এক দোকানে চা খেয়ে কিশোর দোকানিকে ৫০ টাকা উপহার দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তখন ৫০ টাকা ছিল একজন শিক্ষকের এক মাসের বেতন।’
অনেক দিন পর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানের খোঁজ করতে গিয়ে আলোচনায় আসে কিশোর চা দোকানি মুন্নাফের কথা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও জাবরা গ্রামের বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম খুঁজে বের করেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য আবদুল মুন্নাফকে। স্মৃতিবিজড়িত তরা কালীগঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান আব্দুল মুন্নাফসহ এলাকাবাসী।
গাজীপুরের শ্রীপুরে তরমুজ নিয়ে ব্যবসায়ী ও ছাত্রদল নেতার মধ্যে মারামারি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এরপর বাজারের ব্যবসায়ীরা একত্র হয়ে ছাত্রদল নেতার নির্যাতনের প্রতিবাদে নামেন। এ সময় বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি..
৬ মিনিট আগেচট্টগ্রামে সাতকানিয়ায় দুই জামায়াত-কর্মীকে গণপিটুনিতে মারার ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলটি নগর পুলিশের। ‘তরাস’ নামে ব্রাজিলের তৈরি এই পিস্তলটি আধা স্বয়ংক্রিয়। এটা ব্যবহার করত নগর পুলিশ। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে নগরের থানাগুলোতে তাণ্ডব চালানোর সময় পিস্তলটি লুট হয় বলে পুলিশের ধারণা।
১০ মিনিট আগেস্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইসিটি সেন্টারে এক শিক্ষার্থীকে অ্যাডহক ভিত্তিতে সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। গত ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত আদেশে...
২৭ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শাহীনকে (৩৮) ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ছোট ফাউসা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৭২টি ইয়াবাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৩৯ মিনিট আগে