Ajker Patrika

আদালতে তুমুল হট্টগোল, এজলাস থেকে নামতে বাধ্য হলেন বিচারক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আদালতে তুমুল হট্টগোল, এজলাস থেকে নামতে বাধ্য হলেন বিচারক

বিচারকাজ পরিচালনার জন্য পূর্ব নির্ধারিত সময়ে এজলাসে না ওঠায় আইনজীবীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিচারক। আইনজীবীরা তুমুল হট্টগোল করার পর এজলাস থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন তিনি। আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই ঘটনা ঘটে।

পরে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বিচারক মো. আছাদুজ্জামান আবার বিচারকাজ পরিচালনা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার মহানগর দায়রা আদালতে বিচারক সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বিচার কাজ শুরু করবেন বলে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিন্তু আজ তিনি সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে এজলাসে ওঠেন। এ সময় আইনজীবীরা বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বিভিন্ন আদালতে আমাদের মামলা থাকে। নির্ধারিত সময়ে এজলাসে না উঠলে আমাদের অন্যান্য আদালতে মামলা পরিচালনা করতে অসুবিধা হয়। আপনি নির্ধারিত সময়ে ওঠেন না অথচ আমরা একটু দেরিতে আসলে সেই মামলার শুনানি গ্রহণ করেন না। এটা অবিচার।’

বিচারক এতে রেগে যান। তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্কে জড়িয়ে যান। একপর্যায়ে এজলাসে উপস্থিত সব আইনজীবীরা তুমুল হট্টগোল শুরু করেন। বিচারক বাধ্য হয়ে এজলাস থেকে নেমে যান। তিনি খাস কামরায় অপেক্ষা করতে থাকেন।

আদালতে এ সময় বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্যরা বিচারকের নিরাপত্তার জন্য আসেন ও আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ঢাকা বারের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু এসে আইনজীবীদেরকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তারা খাস কামরায় ঢুকে বিচারকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে বিচারক পুনরায় এজলাসে উঠে মামলা পরিচালনা করেন।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন থেকে নির্ধারিত সময়ে আদালত বিচারক আজ পরিচালনা করবেন। বিচারক এজলাসে উঠে আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কোনো সমস্যা থাকলে বা কোনো আবেদন থাকলে সকাল দশটায় আদালতকে জানাবেন। কোন কারণে কোন আবেদন যথাসময়ে করতে ব্যর্থ হলে বেলা ১১টার মধ্যে ওই আবেদন করবেন।

আদালতে উপস্থিত আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, এই বিচারক ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে যোগদানের পর তিনি খামখেয়ালিভাবে মামলা পরিচালনা করে আসছেন। আজ সোমবার সকালেও নির্ধারিত সময়ে এজলাসে না ওঠার কারণে আইনজীবীরা ক্ষিপ্ত হন এবং হট্টগোল করেন।

সরকারি ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আদালত চলার নির্দেশনা রয়েছে। আদালত তাদের নিজস্ব সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন আদালতে একজন আইনজীবীর বিভিন্ন মামলা থাকায় সময়সূচি অনুযায়ী বিচারকেরা এজলাসে না উঠলে আইনজীবীদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

ঢাকার আদালতের একজন সরকারি কৌঁসুলি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত রোববার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান বিকাল ৩টায় এজলাসে ওঠে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত মামলা পরিচালনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার বাইরে তিনি বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে ইয়াবা পাচারকারী দলের মূল হোতা ইউনুস মিয়া ওরফে লিটনকে জামিন দিয়েও তিনি আলোচনায় আসেন। ৩৮ হাজার ৮৮৭ পিস ইয়াবা পাচারের ঘটনায় ঢাকা বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা এই মামলায় লিটনকে জামিন দেওয়া হয়। মাসখানেক আগেই লিটনের জামিন হাইকোর্টে নামঞ্জুর হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

গোপনে ১৯০ মিলিয়ন ডলারের নজরদারি সরঞ্জাম কিনেছিল আওয়ামী লীগ সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত