Ajker Patrika

বেইলি রোডে আগুন: রিমান্ড শেষে ৪ জন কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ১৮: ৫১
বেইলি রোডে আগুন: রিমান্ড শেষে ৪ জন কারাগারে

রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তাঁরা হলেন কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জিসান, চা চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক ও শাকিল আহমেদ রিমন এবং গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুল।

বিকেলে তাঁদের দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনছার মিলটন তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে আইনজীবীরা চারজনের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন।

আদালত জামিনের আবেদন শুনানির জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন এবং আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তরের রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দিন ফকির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন মারা গেছেন। ১১ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ জন শিশু।

এ ঘটনায় ২ মার্চ শনিবার সকালে রমনা মডেল থানার এসআই মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন ভবনটির নিচতলায় থাকা চা-কফির দোকান চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক (২৯), গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের মালিক আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ, ভবনের ম্যানেজার মুন্সি হামিমুল আলম বিপুল (৪০) এবং কাচ্চি ভাই নামে রেস্তোরাঁর মালিক মো. সোহেল সিরাজ (৩৪)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ভবনটির মালিক ও ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট এবং দোকান ভাড়া দেন। রেস্টুরেন্টগুলো যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়া রান্নার কাজে গ্যাসের সিলিন্ডার এবং চুলা ব্যবহার করে। রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য ভবনের মালিক ও ম্যানেজারের যোগসাজশে চুমুক, কাচ্চি ভাই, মেজবানী রেস্টুরেন্ট, খানাস ফ্ল্যাগশিপ, স্ট্রিট ওভেন, জেস্টি, হাক্কা ঢাক্কা, শেখহলি, ফয়সাল জুসবার (বার্গার), ওয়াফেলবে, তাওয়াজ, পিৎজা-ইন, ফোকো এবং এম্ব্রোশিয়া রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবনটির নিচতলায় বিপুল পরিমাণে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করেন।

তাঁরা জননিরাপত্তা তোয়াক্কা না করে অবহেলা, অসাবধানতা, বেপরোয়া, তাচ্ছিল্যপূর্ণ ও বিপজ্জনকভাবে এই গ্যাস সিলিন্ডার এবং গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এই আগুনের তাপ ও প্রচণ্ড ধোঁয়া পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন ফ্লোরে থাকা রেস্টুরেন্ট ও দোকানে অবস্থানকারী লোকজন আগুনে পুড়ে ও ধোঁয়া শ্বাসনালিতে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান এবং গুরুতর আহত হন।

পুলিশ মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করেছে, ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তী সময় মালিক ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর ব্যবসায়িক কাজে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নেন। ভবনটির যেসব তলায় রেস্তোরাঁ ছিল, সেগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও নেই।

এজাহারে বলা হয়েছে, ভবনের মালিক, ম্যানেজার ও রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবন ব্যবহারের যথাযথ নিয়ম মানেননি। তাঁরা আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দিয়েছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দোকান পরিদর্শকদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ স্থাপন করে, গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার ব্যবহার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
সাপের কামড়ে মৃত্যুর খবরে স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাপের কামড়ে মৃত্যুর খবরে স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনীতে বিষধর সাপের কামড়ে শামীম হোসেন (১৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত শামীম হোসেন তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া করমদি গ্রামের মিজানুর রহমান হারানের ছেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাপে কামড় দেওয়ার পর দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে ওঝা বা কবিরাজের কাছে যাওয়াই এই মৃত্যুর কারণ।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে শামীম হোসেন নিজের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁকে বিষধর সাপে কামড় দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে বাড়ির লোকজন তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে কয়েকজন কবিরাজ বা ওঝার কাছে নিয়ে যায়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ বুধবার সকালে তাঁকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

রোহান আহমেদ নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সকালে আমি খেলার উদ্দেশ্যে বের হয়ে দেখি একজনকে সাপে কেটেছে। দ্রুত লোকজন নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে যায়।’

আকাশ আহমেদ জানান, তাঁরা সকালে ঘর খুঁড়ে অত্যন্ত বিষধর মনে হওয়া সাপটিকে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলেন।

নিহত শামীম হোসেনের বাবা মিজানুর রহমান হারান বলেন, ‘যখন জানতে পারি আমার ছেলেকে সাপে কেটেছে, তখনই আমরা কয়েক জায়গায় (কবিরাজের কাছে) নিয়ে যাই। কিন্তু অবস্থা খুবই খারাপ হতে থাকে। বুক বন্ধ হয়ে আসছিল। তখন কয়েকজনকে নিয়ে আজ সকালে গাংনী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর আমার ছেলে মারা যায়। বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কত বেদনার, তা কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব না।’

স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, ‘সাপে কামড়ালে মানুষ কেন যে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়, তা বুঝি না। সাপের অ্যান্টিভেনম হাসপাতালে পাওয়া যায়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে রোগী অনেকটা সুস্থ হয়ে যায়। আমাদের পাড়ায় আজ একজন মারা গেল। কারণ, হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল।’

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আজিজ এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সাপে কাটা রোগীকে আমাদের কাছে সকাল সাড়ে ৭টার সময় আনা হয়। তাঁকে আমাদের কাছে শেষ মুহূর্তে আনা হয়েছিল। তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল।’ তিনি বলেন, রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এক ঘণ্টা পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

আব্দুল্লাহ আল আজিজ আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পারি সাপে কামড় দেওয়ার পর তাঁকে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আসলে মানুষের উচিত যখন কাউকে সাপে কাটবে, তখন অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা। আমাদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত