Ajker Patrika

উত্তরায় চীনা নাগরিক খুনের যৌথ তদন্ত করবে চীন ও বাংলাদেশ পুলিশ

নুরুল আমিন হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩: ০৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে রাজধানীর উত্তরায় ওয়াং বো (৪৭) নামের এক চীনা নাগরিককে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন দুই চীনা নাগরিক। হত্যা মামলাটি চীন পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত করবে।

এ ঘটনায় করা মামলায় হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত বাংলাদেশি গাড়িচালক হৃদয় হোসেন ওরফে শাকিলকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডে সহযোগী আরেক বাংলাদেশি পলাতক।

হত্যার কারণ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনে থাকাকালে নিহত ব্যক্তি ও হত্যাকারী দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল। সেই কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হত্যা মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘হত্যা মামলাটি চীনা পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে। চীনা পুলিশের কথা হয়েছে। তাঁরা হত্যা মামলা তদন্তের জন্য আসবে বলে জানিয়েছে। চীনা পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশ যৌথভাবে মামলাটি তদন্ত করবে।’

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৬৩ নম্বর বাসার নিচতলায় চীনা নাগরিক ওয়াং বোকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ওই দিন দিবাগত রাত ১২টা ৭ মিনিট থেকে ৯ মিনিট পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের মিশন পরিচালিত হয়। নিহত ওই ব্যক্তি ইট, বালু ও পাথরের ব্যবসা করতেন। এ ঘটনায় ওই বাড়ির চীনা নাগরিক লিউ রুই একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া চীনা নাগরিকদের ব্যবহৃত এক্স নোয়া গাড়ির চালক হৃদয় হোসেন ওরফে শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধারালো ছুরি দিয়ে ১১টি আঘাত করে চীনা নাগরিক ওয়াং বোকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে দুজন চীনা নাগরিক। হত্যাকারীরা একটি সাদা এক্স নোয়া গাড়িতে আসে, হত্যার পর ওই গাড়িতে করেই পালিয়ে যায়। তাদের সহযোগিতা করেছে ওই গাড়িতে থাকা চালক ও অপর আরেক বাংলাদেশি।

এদিকে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে হত্যাকারীদের একজন বাড়ির গেটে এলে ভিকটিম ওয়াং বো গেট খুলে খুনিকে তাঁর রুমে নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে ওই খুনি ১২টার দিকে বের হয়ে আরেকজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারপর তারা হাতে একটি চাকু নিয়ে ও গ্লাভস পরে ওই বাড়িতে রাত ১২টা ৭ মিনিটে প্রবেশ করে। তারপর তারা হত্যাকাণ্ডের মিশন শেষ করে ১২টা ৯ মিনিটে গেট থেকে বের হয়ে যায়। তারপর হত্যাকারীরা নোয়া গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।

হত্যার পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়া চীনা নাগরিক লিও ফানলং ডবের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি হাফিজ বলেন, হত্যাকাণ্ডের জড়িত দুই খুনির তথ্য তাঁদের উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের ৩/সি রোডের ১৫ নম্বর বাসার গেস্টহাউস থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে পাসপোর্টের সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পর তাঁরা দিবাগত রাত ৩টা ১১ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৪০ ফ্লাইটে থাইল্যান্ডে চলে যান।

ওসি হাফিজ বলেন, ‘হত্যাকারীরা বাংলাদেশে থাকতে একটি এক্স সাদা নোয়া গাড়ি ভাড়া নিয়েছিল, সেটি চালাত শাকিল। হত্যাকাণ্ডের দিন শাকিলই তাদের ওই বাড়িতে গাড়িতে করে নিয়ে গিয়েছিল এবং পালাতে সহায়তা করেছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক্স নোয়া গাড়ি ও হত্যাকাণ্ডের সময় খুনিদের একজনের পরিহিত কালো রক্তমাখা হুডি জব্দ করা হয়। তার সঙ্গে থাকা পলাতক আরেক বাংলাদেশি সম্পর্কে আমরা তথ্য পেয়েছি, তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

গ্রেপ্তার হওয়া শাকিল উত্তরা থেকে না পালানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি হাফিজ বলেন, শাকিল মনে করেছিলেন, কারা হত্যা করেছে, সেটি কেউ জানতে পারবে না। তাই সে তাঁর মতো উত্তরাতেই চলাফেরা করছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আওয়ামী লীগকেও পথভ্রষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা

গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের বিবৃতিতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত