Ajker Patrika

বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের ঘটনা হাজারের বেশি: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২: ৫০
বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের ঘটনা হাজারের বেশি: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ 

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে বাংলাদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজারের বেশি। এর মধ্যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত বিগত বছরের সংখ্যালঘু নির্যাতন-নিপীড়নের রিপোর্ট প্রকাশবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি জানান, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪৫টি। এর মধ্যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি, মরদেহ উদ্ধার (হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান) হয়েছে ৭ জনের, হত্যার চেষ্টা হয়েছে ১০ জনকে, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৩৬ জনকে, হামলা ও শারীরিক নির্যাতনে জখম হয়েছে ৪৭৯ জন। 

তিনি আরও জানান, এই সময়ে সংখ্যালঘুদের বসতঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১০২টি। বসতবাড়ি ও জমিজমা দখলের ঘটনা ঘটেছে ৪৭টি, বসতবাড়ি বা জমিজমা দখলের বা উচ্ছেদের তৎপরতা ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি, দেশত্যাগের হুমকি অথবা বাধ্য করার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ১১টি, দেবোত্তর/মন্দির/গির্জার সম্পত্তি দখল ও দখলের চেষ্টার ঘটনা হয়েছে ১৫টি, শ্মশানভূমি দখল/দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ৭টি, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৯৪টি, প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে ৪০টি, গণধর্ষণ/ধর্ষণ/ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫টি, অপহরণ/নিখোঁজ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের ঘটনা ঘটেছে ১২টি। এ সময় ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে আটক হয়েছে ৮ জন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে জাতীয় নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে ৩২টি, স্থানীয় নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে ৫টি, অন্যান্য ঘটনা ঘটেছে ১৪টি, মোট ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪৫টি। 

রানা দাশগুপ্ত দাবি করেন, সংখ্যাটি সাম্প্রদায়িক চালচিত্রের একটি আংশিক অংশমাত্র। বিগত বছরগুলোর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তুলনামূলক পর্যালোচনায় দেখা যায়, সহিংসতার ঘটনার খুব বেশি হেরফের আজও হয়নি। এহেন বিরাজমান সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে লক্ষণীয়, ১৯৭০-এর নির্বাচনকালীন প্রায় ১৯ শতাংশ সংখ্যালঘু ৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। 

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের চালচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশেষ করে সংখ্যালঘু স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার, মন্দির ও উপাসনালয় এবং বিগ্রহ, সংখ্যালঘুদের জায়গা-জমি ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার পরিবেশ একেবারেই সংকুচিত করা হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলাকালে সন্ত্রাসীদের কাউকে জনগণ আটক করলে পুলিশ প্রশাসন তাকে ‘পাগল’ বানিয়ে মূলত সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকেই উৎসাহিত করে। ফেসবুক হ্যাক করে ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়িকে আক্রমণের শিকার করছে, অহেতুক যুবক সম্প্রদায়কে হয়রানি করছে। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ভূমিকেন্দ্রিক। ভূমি জবরদখলের বদমতলবে ভূমিখেকো সন্ত্রাসীরা প্রায় বেশির ভাগ সময় নানান রাজনৈতিক দলের প্রভাবপুষ্ট হয়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই সাম্প্রদায়িক সহিংস আক্রমণ পরিচালনা করছে। সিটি করপোরেশনের মতো সরকারি সংস্থাও জমি জবরদখলের ঘৃণ্য কাজে জড়িত। ঢাকায় অতিসাম্প্রতিককালে বংশালের আগাসাদেক লেনের মিরনজিল্লা হরিজন পল্লী, যাত্রাবাড়ীর ধলপুরের তেলেগু কলোনি এবং কমলাপুর রেললাইনের পাশের হরিজন পল্লীর বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা না করে, তাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের অপপ্রয়াসের দুঃখজনক, অমানবিক ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। চলতি বছরের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের নেতাদের ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অপপ্রয়াসও দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা গেছে। শুধু তাই নয়, এ দুটি নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তারা মূলত সরকারি দলের। কেউ দলীয় প্রতীকে, কেউ বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। লক্ষ্য করা গেছে ব্যতিক্রমবাদে প্রার্থীদের অনেকে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুদের ভোটদানে নানানভাবে শুধু বিঘ্নই সৃষ্টি করেনি, প্রকারান্তরে সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে। এই বিভাজনের কারণে নির্বাচনের পক্ষ-বিপক্ষের হাতে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন নির্বাচনে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।’ 

রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির সংস্কৃতি আজও অব্যাহত আছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পুলিশ মামলা নিত না। এ সরকারের আমলে পুলিশ মামলা নেয়, কিছু অপরাধীকে অ্যারেস্ট করে, পরে তারা জামিনে বের হয়ে এসে মামলাকারীদের হুমকি দেয়। এ জন্য আমরা বলছি, দায়মুক্তির সংস্কৃতি অব্যাহত আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়া-তারেক রহমান প্রার্থী হওয়ায় বগুড়ায় বিএনপির আনন্দ মিছিল

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়া শহরে বিএনপির আনন্দ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়া শহরে বিএনপির আনন্দ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনে ধানের শীষের জয়ের জন্য লড়বেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লড়বেন বগুড়া-৬ আসন থেকে। বগুড়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করার ঘোষণায় জেলাজুড়ে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষণার পরপরই বগুড়ায় জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় বরাবরই বগুড়া বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে এই জেলার দুটি আসনে (বগুড়া-৬ ও ৭) নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনো পরাজিত হননি। ঐতিহ্যবাহী এই নির্বাচনী এলাকায় এবার তাঁর সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

আজ রাত ৮টায় বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে এক আনন্দ মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সাতমাথা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।

সমাবেশে রেজাউল করিম বাদশা এই মনোনয়নকে ‘বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুশির সংবাদ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ খবর পাওয়ার পরপরই তারেক রহমানকে ফোন করে বগুড়াবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। তিনি বগুড়াবাসীর কাছে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেছেন।

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বগুড়াবাসী নির্বাচিত করবে। আমরা আশা করছি, বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন এবং প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ

মাদারীপুর ও শিবচর প্রতিনিধি
শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় মাদারীপুর শিবচরের ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছে সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর কর্মী-সমর্থকেরা। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় আড়াই ঘন্টার সড়ক অবরোধে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি পদপ্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে মাদারীপুর-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে কামাল জামান মোল্লার নাম ঘোষণা করা হয়। এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু। এখন মনোনয়ন না পাওয়ায় লাভলুর কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন।

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসলাম চৌধুরী নেই বিএনপির প্রার্থী তালিকায়, চট্টগ্রামে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকদের বিক্ষোভ

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ১৭
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা লায়ন আসলাম চৌধুরীর সমর্থকেরা।

আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীরা মহাসড়কের ভাটিয়ারী, জলিল গেট, বানুরবাজার, কুমিরা, পৌর সদরের শেখপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে মহাসড়কের দুদিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, দেখা দেয় চরম ভোগান্তি।

বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জানান, বিএনপির রাজনীতির জন্য সর্বস্ব হারানো আসলাম চৌধুরী টানা ৯ বছর মিথ্যা মামলার ঘানি টেনেছেন। ব্যবসাসহ হারিয়েছেন সবকিছু। দলের জন্য নিবেদিত এ নেতাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া সীতাকুণ্ডের বিএনপির নেতা-কর্মীরা কখনো মেনে নেবে না। অবিলম্বে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির ত্যাগী নেতা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিলে সীতাকুণ্ড বিএনপির নেতা-কর্মীরা বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবেন।

বিএনপির বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী থেকে শেখপাড়া পর্যন্ত উভয়মুখী সড়কে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে যানজট মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অবরোধের দীর্ঘ এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো অবরোধ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। স্বাভাবিক হয়নি মহাসড়কে যানবাহন চলাচল।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোমিন জানান, আসলাম চৌধুরী-সমর্থিত বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীদের অবরোধের কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভাটিয়ারী থেকে শেখপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান বলেন, আসলাম চৌধুরী-সমর্থিত বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। পুলিশ অবরোধকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত