Ajker Patrika

ট্রেনে বাড়ি যেতে ভরসা এখন স্ট্যান্ডিং টিকিট 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২৪
ট্রেনে বাড়ি যেতে ভরসা এখন স্ট্যান্ডিং টিকিট 

রেলস্টেশনে মানুষের ভিড়ই বলে দিচ্ছে ঈদ কড়া নাড়ছে। যাঁরা অনেক যুদ্ধ করে অগ্রিম টিকিট কাটতে পেরেছিলেন, এবার তাঁরা কিছুটা আরামে নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারছেন। তবে স্টেশনে টিকিট ছাড়াও অনেক যাত্রী আসছেন। এসব যাত্রীর ট্রেনে বাড়ি যেতে ভরসা এখন স্ট্যান্ডিং টিকিট। যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী এবার রেল কর্তৃপক্ষ প্রতি ট্রেনের ২০ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছেন। এর ফলে টিকিটবিহীন যাত্রী ট্রেনে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। 

এমনই একজন যাত্রী মোহাম্মদ জুয়েল রানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করেন। শনিবার সকালেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রেনে এসেছেন ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন। ছুটিতে যাবেন গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে। ট্রেনের টিকিট নেই, তাই ৫২০ টাকা দিয়ে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছেন। 

এই টিকিট দিয়ে বিমানবন্দর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যাবেন। তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কাটতে পারিনি। শেষ সময়ে এসে এখন আসলে কিছু করার নেই। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যেতেই হবে। সেটা যেভাবেই হোক। সড়কপথে যানজট এড়াতে বাসের টিকিট কাটিনি। আর গতকাল রাতে যারা বাসে রওনা দিয়েছেন, তারা এখনো গন্তব্যে যেতে পারেননি। তাই একটু কষ্ট হলেও ট্রেনে যাওয়াই ভালো, এতে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব।’ 

বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই স্টেশনের সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীর চাপ থাকলেও নির্বিঘ্নেই ট্রেনযাত্রা চলছে। কমলাপুর থেকে ট্রেন বিমানবন্দর স্টেশনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। প্রতিটি ট্রেন আসার আগেই যাত্রীদের ভিড় থাকলেও ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পরে ভিড় কিছুটা কমে যাচ্ছে। তবে টিকিট ছাড়া যাত্রীর সংখ্যাও পর্যাপ্ত রয়েছে স্টেশনে। সবাই যাতে যেতে পারে, সে জন্য রেল কর্তৃপক্ষ স্ট্যান্ডিং টিকিটি দিয়ে যাত্রীদের যাত্রা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। 

এদিকে শনিবার সকাল থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে প্রায় ২০টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ৫০ মিনিট, খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস আধা ঘণ্টা এবং রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস আধা ঘণ্টা দেরিতে বিমানবন্দর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে। এই প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস যথাসময়ে ছেড়ে যায়নি। 

বিমানবন্দর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. হালিমুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঈদের ছুটি এবার বেশি হওয়ায় সবাই মোটামুটি আগেভাগেই চলে গেছে। যাত্রীদের একসঙ্গে যাওয়ার চাপ নেই। ফলে যে ধরনের চাপ হওয়ার কথা ছিল, সে ধরনের কোনো চাপ পড়ছে না ট্রেনে। ফলে ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্ন হচ্ছে ট্রেনে। দু-একটি ট্রেন কিছুটা সময় দেরিতে যাচ্ছে, তবে সেটা স্বাভাবিক। ছাদে কোনো  যাত্রী আমরা উঠতে দিচ্ছি না। সবাই যাতে বাড়ি যেতে পারে, তার জন্য আমরা ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিটও দিচ্ছি।’ 

ট্রেনের ঈদযাত্রা নিয়ে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী রুমানা হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমলাপুর থেকে যথাসময়ে ট্রেনটি ছেড়ে এসেছে। এসি সিট না পাওয়াই শোভন চেয়ারে যাচ্ছি। অতিরিক্ত গরমে ট্রেনের মধ্যে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। ট্রেনে সিটের বাইরে অনেক যাত্রী  দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, ফলে অবস্থা আরও খারাপ। সব মিলিয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে ভালো লাগছে।’ 

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ শনিবার ঢাকা থেকে আন্তনগর, এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটারসহ মোট ১২২টি ট্রেন ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে  আন্তনগর ও ঈদ স্পেশাল ট্রেনের সিট ক্যাপাসিটি আছে ৩৩ হাজার এবং লোকাল, কমিউটার, এক্সপ্রেস ট্রেনের সিট ক্যাপাসিটি আছে ৩০ হাজার। সব মিলে প্রতিদিন প্রায় ৬৩ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে ট্রেনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত