Ajker Patrika

শ্রমিক ছাঁটাই: শ্রীপুরে আরেক কারখানায় বিক্ষোভ-ভাঙচুর, কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় শ্রমিকেরা কারখানার মূল ফটকে তালা দিয়ে কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। শ্রমিকেরা কারখানায় ভাঙচুর ও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদেরচালা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে মূল ফটক ভেঙে কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

এদিকে সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের বিবিএস কেবল নামের একটি কারখানার কয়েক শ শ্রমিক এই বিক্ষোভ করেন। ১২ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে তাঁরা কর্মবিরতি পালন, আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় ভাঙচুর হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় ভাঙচুর হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিক রিফাত হোসেন বলেন, ‘ঈদের পূর্বে কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনির হোসেনকে অপসারণের জন্য আমরা দাবি জানাই। সে সময় আন্দোলনের মুখে মনিরকে অপসারণ করা হয়। তখন শ্রমিকেরা দাবি করেন, যেন কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা না হয়। কিন্তু ঈদের ছুটি শেষ হলে আজ (শনিবার) কর্মস্থলে এসে অনেক শ্রমিক জানতে পারেন, তাঁদের চাকরি নেই। এই ক্ষোভ আমরা কারখানার মূল ফটক তালাবদ্ধ করি। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য আসেন। পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিপেটা করলে ক্ষোভে ভাঙচুর চালানো হয়। এলোপাতাড়ি কয়েকজন মারধরের শিকার হন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ইটপাটকেল ছোড়েন।’

কারখানার সুপারভাইজার হামজা মিয়া বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে কর্মকর্তা ও শ্রমিকেরা কারখানায় কাজে যোগদান করে। ৮টার পরপরই শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার মূল ফটক তালাবদ্ধ করে দেন। আমাদের কর্মকর্তাদের মারধর শুরু করেন শ্রমিকেরা। এতে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসাইন, হেলাল উদ্দিন, আরিফুর রহমান, জলিলসহ ১০ থেকে ১৫ জন কর্মকর্তা আহত হন। সকাল ১০টার কিছু সময় পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলেও শ্রমিকেরা কারখানার ফটক খোলেননি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন কারখানার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন।’

কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আহত ইলিয়াস হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৮টার দিকে কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেন। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন শ্রমিক হইহল্লা শুরু করেন। এতেই সব শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানা ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের মারধর শুরু করেন। তাঁরা মূল ফটক তালাবদ্ধ করে দেন। নিরাপত্তা প্রহরীদের মারধর করা হয়। আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হলে দুই ঘণ্টা পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে উদ্ধার করেন।’

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস হোসাইন বলেন, ‘যে কজন শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে, তা বিধি মেনেই হয়েছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে কারখানার মূল ফটক ভেঙে কর্মকর্তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিস্তারিত এখনই জানানো সম্ভব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত