Ajker Patrika

নিরাপত্তাহীনতা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দালাল চক্রের খপ্পরে স্থানীয়রা: গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১৮: ৩৭
নিরাপত্তাহীনতা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দালাল চক্রের খপ্পরে স্থানীয়রা: গবেষণা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কারণে নানা সমস্যায় পড়ছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া এই উদ্যোগের ফলে পরিবেশদূষণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দালাল চক্রের খপ্পরেও পড়ছে তারা। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে সেখানে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে, সে বিষয়ে প্রাথমিক এক গবেষণায় এসব কথা জানানো হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ যৌথভাবে ‘নির্মাণাধীন আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ প্রকল্প: একটি আর্থসামাজিক সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

গবেষণায় অংশগ্রহণ করা ৯৩ শতাংশ জানিয়েছেন, উপকূলীয় অঞ্চলে আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীদের সবাই জানিয়েছেন, এই নির্মাণকাজের কারণে গাছপালার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। যার কারণে সেই এলাকার তরমুজ, পালংশাক এবং অন্যান্য শাকসবজি পচে এবং কালো হয়ে যাচ্ছে। 

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশিকুর রহমান। পরিকল্পিত আশুগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট সম্পর্কে স্থানীয় নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তাভাবনা শনাক্ত করার জন্য একটি সত্য অনুসন্ধান মিশনের অংশ হিসেবে এই সংক্ষিপ্ত গবেষণাটি করা হয়েছিল। মোট ১০০টি সাক্ষাৎকার থেকে কিছু গুরুতর উদ্বেগ ও অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয়নি। ২০২২ সালের এপ্রিলে বালু ভরাটের কার্যক্রম শুরু হয়। ক্ষতিপূরণ ছিল সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ লাখ টাকা। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ১০০ জন উত্তরদাতার মধ্যে সর্বাধিক ৮৪ শতাংশ উত্তর দিয়েছেন যে আনুমানিক পরিমাণ প্রকৃত নয়। তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ দাবি করেছে, স্থানীয় দালাল অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অতিরিক্ত মূল্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। 

আশিকুর রহমান বলেন, মোট পুনর্বাসনের জন্য তারা ভূমি অধিগ্রহণ অফিস, ভূমি জরিপকারী এবং ভূমি অধিগ্রহণের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য খাতে ঘুষ হিসেবে দালালকে সর্বনিম্ন ৪৪ হাজার ৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়েছে।  

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সবাই জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের ফলে গাছপালার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। যার মধ্যে সেই এলাকার তরমুজ, পালংশাক এবং অন্যান্য শাকসবজি পচে এবং কালো হয়ে যাবে। মাঠ পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, আশপাশের মাটির স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ও অবনতি ঘটছে। মাটির ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে প্রশ্নে মোট ৮২ শতাংশ এই নির্মাণকাজের কারণে মাটির দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ৭৯ শতাংশ বায়ুর মানের অবনতির জন্য উদ্বেগের সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন। 

উপকূলীয় অঞ্চলে আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্বিগ্নের কথা জানিয়ে আশিকুর রহমান বলেন, ৯৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী উপকূলীয় অঞ্চলে আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের ক্রমবর্ধমান উত্তর এবং মিডিয়া রিপোর্ট থেকে আরও দেখা গেছে, ওই এলাকার মানুষ বঙ্গোপসাগর থেকে তীব্র আবহাওয়ার ধরন, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের ব্যাপক ভাঙন, ডলফিন ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু এবং সেই সঙ্গে পরিবর্তিত অভিবাসন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। নিকটবর্তী এলাকায় ইলিশ সম্পদের রুট। 

জনসাধারণের ধারণা, প্রকল্পটি শেষ হলে জলযানের ঘনঘন চলাচল এবং দূষণ বৃদ্ধির কারণে ওই এলাকা থেকে মাছ ধরা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। গবেষণায় অংশ নেওয়া সবাই বলেছেন, শিল্পায়নের কারণে ইলিশের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে পাবে। 

মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আশিকুর রহমান বলেন, প্রকল্পের নির্মাণের কারণে অংশগ্রহণকারীরা আশঙ্কা করছেন, মাছ অনেক দূরে চলে যাবে, তাই তাদের জীবিকা পরিবর্তন করতে হবে। ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় নদীতে মাছ ধরা সম্ভব নয় এবং তাদের জীবিকা হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। 

নির্মাণকাজের সাংস্কৃতিক প্রভাব সম্পর্কে আশিকুর রহমান বলেন, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৬০ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা সম্পর্কে উত্তর দিয়েছেন। উত্তরদাতারাও সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে চিন্তিত। সমীক্ষায় ৭৯ শতাংশ জানিয়েছে, এই প্রকল্প নির্মাণের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আক্রমণ করতে পারে এবং ৬৯ শতাংশ উত্তরদাতা প্রকল্পের কারণে সম্ভাব্য গুরুতর শব্দদূষণ সমস্যা হবে বলে মত দিয়েছেন। 

অনুষ্ঠানে বাপার যুগ্ম সম্পাদক স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘বিদ্যুৎ প্রকল্প কোথাও হলে সেখানের মানুষই যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিষয়টি তা নয়। আপনার ছেলে যদি ধানমন্ডিতে পড়েও সে কিন্তু এটা দ্বারা আক্রান্ত হবে। পটুয়াখালী হলে সিলেটের মানুষও কিন্তু আক্রান্ত হবে। বাতাসের গতিবেগের কারণে এটা কিন্তু চলে আসবে। বায়ুদূষণ এখন ঢাকা না উপকূল অঞ্চলেও এটা ছড়িয়ে পড়েছে।’ 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ইলিশ মাছের সাইজ ছোট হয়ে যাচ্ছে। তারপর প্রজননের পথ পরিবর্তন করে ফেলছে। এটার মূল কারণই হলো সেখানকার পরিবেশদূষণের ফলে বাস্তুসংস্থানের যে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে, সেটার কারণেই হচ্ছে। 

ভুক্তভোগী কৃষক ফরিদ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের এখানের অধিকাংশই তিন ফসলি জমি। প্রকল্পে যত জমি প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ বিশেষজ্ঞেরা বলেছে কৃষিজমিতে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়। প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিবিদরা বলে একটা, চামচারা করে আরেকটা। কিছু বললে তারা করে মামলা। আর বলে সরকারি প্রজেক্ট। স্বাস্থ্যগত সমস্যা জমির ন্যায্যমূল্য না পাওয়াসহ আমরা নানা ধরনের সমস্যায় ভুগছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন মুরশিদ, বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস, বাপার নির্বাহী সদস্য ও অর্থ, বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়নবিষয়ক কমিটির সদস্যসচিব এম এস সিদ্দিকী, বাপার নির্বাহী সদস্য ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়িতে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এক স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে লিটন ত্রিপুরা (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

‎মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর বন্ধুকে নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে আলুটিলা এলাকায় বেড়াতে যান। ওই সময় লিটন ত্রিপুরা তাঁদেরকে অনুসরণ করেন। আলুটিলায় তারেং এলাকায় পৌঁছানোর পর মোটরসাইকেলচালক লিটন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই শিক্ষিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ১০ হাজার টাকাও দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগীর বন্ধু স্থানীয় সেনাক্যাম্পে খবর দিলে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে লিটন ত্রিপুরাকে আটক করে। এরপর তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। 

মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা ধর্ষণের অভিযোগে মোটরসাইকেলচালক লিটন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করি। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

যমুনা রেলসেতুর পিলারে দেখা দেওয়া কিছু ফাটলের ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো আসলে ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট সূক্ষ্ম ‘হেয়ার ক্র্যাক’ বা চুলের মতো সরু ফাঁকা। বৃহস্পতিবার থেকে একাধিক ফেসবুক পেজে এসব ফাটলের ছবি দেখা যাচ্ছে।

যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. নাইমুল হক বলেন, যমুনা রেলসেতুতে কোথাও কোনো ফাটল ধরেনি। কোনো পিলারে ফাটলের চিহ্নও নেই। একটি চক্র এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাটল ধরানোর ছবি তৈরি করেছে এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে গুজব ছড়িয়েছে।

যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মার্ক হ্যাবি বলেন, রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের ৮-১০টি পিলারের নিচে হেয়ার ক্র্যাক শনাক্ত হয়েছে। এসব জায়গায় ইতিমধ্যে রেজিন বা বিশেষ আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

মার্ক হ্যাবি আরও বলেন, এটি কোনো নির্মাণ ত্রুটি নয়, এমনকি ‘হানিকম্ব’ সমস্যাও নয়। প্রচণ্ড গরম ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কংক্রিটের নিচে শূন্য দশমিক ১ থেকে ৩ মিলিমিটার পর্যন্ত সূক্ষ্ম ফাঁকা তৈরি হয়েছে। এতে সেতুর গঠন বা স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়বে না।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক জানান, এসব হেয়ার ক্র্যাক ধীরে ধীরে ঘষে মেরামত করা হচ্ছে। সেতুর কাঠামো বা ট্রেন চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি বড় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

উল্লেখ্য, যমুনা সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯ স্প্যান। এটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

সেতুটিতে আসা-যাওয়ার দুটি লাইন (ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাক) রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালকসহ নিহত ৩

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদীর রাইনাদী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের রাইনাদী গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে সিয়াম মিয়া (২২), আলতাফ হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৮) ও রবিউল ইসলামের ছেলে অটোচালক ফাহিম মিয়া (৩০)।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, রাতে ইজিবাইকে করে তিনজন মাধবদীর দিক থেকে রাইনাদী এলাকায় যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে সিলেটগামী দ্রুতগতির বাসটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এ সময় দুজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান আরও একজন।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজন মারা গেছেন। ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। বাসটি জব্দ করা হলেও পালিয়ে গেছেন বাসের চালক ও তাঁর সহযোগী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামীকাল শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে। এ কারণে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নামার জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। জাল ও নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গোছাতে মাছঘাটগুলোতে এখন তাদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। এদিকে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশা করছেন, এবার ইলিশের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি হবে।

জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন লক্ষ্মীপুরের রামগতি আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে দুই শতাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে প্রায় ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১০টি নৌকা ও প্রায় ১ হাজার কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার জন্য জেলেরা এখন নৌকা ও জাল মেরামতের কাজ করছেন। জেলেরা জানান, এবারের অভিযান কঠোর ছিল এবং তারা সরকারের আইন মেনেই মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন। তবে তাদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময় বরাদ্দকৃত চাল (৪৪ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি হারে মোট ১ হাজার ১৪ মেট্রিক টন) কিছু ক্ষেত্রে অন্য পেশার লোকজনকে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে তারা পুরোদমে আবার মাছ ধরা শুরু করবেন।

লক্ষীপুর-২
লক্ষীপুর-২

এবারের অভিযান সফল হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, "গতবারের চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। " তিনি আশা করেন, এ বছর লক্ষ্মীপুরে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার মেট্রিক টন হবে, যা গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এই ধরনের কঠোর অভিযান অব্যাহত ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত