Ajker Patrika

ফরিদপুরে যুবদল নেতাকে চোখ উপড়ে, রগ কেটে হত্যা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ১৯
Thumbnail image
মিরান খান। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ পাঁচ মামলার আসামি সাবেক যুবদল নেতা মিরান খানের (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে পিটিয়ে, চোখ উপড়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা সদরের আলিয়াবাদ ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরবেষ্টিত গদাধরডাঙ্গী গুচ্ছগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মিরান খান উপজেলার পশ্চিম সাদীপুর গ্রামের জালাল খানের ছেলে। তিনি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরান মাছ ও বালুর ব্যবসা করতেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা নদীবেষ্টিত চরের এই গুচ্ছগ্রামে শতাধিক বাসিন্দার বসবাস। দক্ষিণ পাশের এক কোণের ঘর নিজের নামে নেন মিরান। তাঁর ঘরটি চারদিক দিয়ে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা। তবে সেখানে তাঁর স্ত্রী-সন্তান থাকতেন না।

গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ঘরে থেকেই অপরাধ কার্যক্রম চালাতেন মিরান। বহিরাগতদের নিয়ে নিয়মিত আড্ডা দিতেন। তাঁর ভয়ে দিন কাটাত এখানকার নারীরা, দেওয়া হতো কুপ্রস্তাব। রাজি না হলে নির্যাতন চালানো হতো। পদ্মাপাড়ে কেউ ঘুরতে এলে তাদের আটকে টাকা আদায় করা হতো। এ ছাড়া জেলেদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করা হতো। তাঁর ভয়ে জেলেরা আতঙ্কিত ছিলেন।

গতকাল রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্থানীয় সালমা নামের এক নারী বলেন, সাত-আটজন বহিরাগত জাহাঙ্গীর নামের এক বাসিন্দার ঘরে হামলা চালায়। তখন অস্ত্রের শব্দ শোনা যায়। এরপর মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় আশপাশের এলাকার লোকজন ছুটে এসে মিলনকে গণপিটুনি দেয়। তবে এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়।

এখানকার গুচ্ছগ্রামের একটি ঘরে থাকতেন মিরান। ছবি: সংগৃহীত
এখানকার গুচ্ছগ্রামের একটি ঘরে থাকতেন মিরান। ছবি: সংগৃহীত

তবে মিরানের ছোট ভাই ইরান খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের লোকজনের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের বিরোধ চলছিল। এর জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গুচ্ছগ্রামের একটি ঘরে নিয়ে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় সেই ঘরের কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ডাকাতির নাটক সাজানো হয়।

ইরান খান অভিযোগ করে বলেন, রাত ১টার দিকে তাঁর ভাইকে মারার খবর পেয়ে উদ্ধার করতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন বাধা দেয়। পরে ভোরে গিয়ে দেখেন তাঁর ভাইয়ের দুই চোখ খুঁচিয়ে, হাত-পায়ের রগ কেটে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবির হোসেন বলেন, সকালে তাঁকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁর দুই চোখে আঘাত রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

তবে বিরোধের অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করেন ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘মিরানদের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। কারা মেরেছে সে বিষয়ে আমি জানি না। ফজরের নামাজের সময় জানতে পারি চরের লোকজন ওকে মারধর করেছে।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান জানান, মিলনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তবে হত্যার প্রকৃত কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না। তাঁর নামে কোতোয়ালি থানায় হত্যা, চাঁদাবাজিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।’ তবে সেখানে চুরি বা ডাকাতি ঘটেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত