Ajker Patrika

টিকটক ভিডিও করতে ফটোগ্রাফারকে খুন করে ক্যামেরা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ১৪: ৫৭
খুন করে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ১০ জন। ছবি: সংগৃহীত
খুন করে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ১০ জন। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরাবাদ এলাকায় পরিকল্পিতভাবে গত শুক্রবার ফটোগ্রাফার নূরুল ইসলামকে খুন করে ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাই করে একদল দুর্বৃত্ত। ঘটনার চার দিন পর জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় ছিনতাই করা দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, একটি রামদা ও একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. নাঈম আহম্মেদ (২০), মো. শাহীন আকন্দ ওরফে শাহিনুল (২০), মো. শাহীন চৌকিদার (২২), মো. রহিম সরকার (১৯), মো. নয়ন আহম্মেদ (১৯), রিদয় মাদবর (১৮), মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), মো. আনোয়ার হোসেন (১৯), মো. শহিদুল ইসলাম (২০) ও মো. আরমান (১৮)।

‎পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা টিকটকে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করতেন। উন্নতমানের ও আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিও করার জন্য ডিএসএলআর ক্যামেরা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী খেলার মাঠে নাঈম আহম্মেদের নেতৃত্বে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নাম করে ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার দিন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কথা বলে জাফরাবাদে নিয়ে গিয়ে নুরুল ইসলামের কাছ থেকে ডিএসএলআর ক্যামেরা ও ব্যাগ ছিনতাই করার সময় বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করেন।

‎বুধবার দুপুর ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম। ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নুরুল ইসলাম (২৬) একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে বিভিন্ন ইভেন্টে ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। গত ১৫ মে একটি অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনে কল আসে। ওই ব্যক্তি একটি বিয়ের ইভেন্টে ছবি তোলার জন্য তাঁকে বুকিং দিয়ে ৫০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম পাঠান। পরদিন সন্ধ্যায় তাঁকে একই নম্বর থেকে ফোন করে শংকর চৌরাস্তায় অপেক্ষা করার কথা জানানো হয়।’

মাসুদ আলম আরও বলেন, ‘নূরুল ইসলাম তাঁর সহযোগী মো. ইমন ওরফে নুরে আলমসহ মতিঝিলের এজিবি কলোনির বাসা থেকে বের হয়ে সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি শংকর বাসস্ট্যান্ডে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা ওই ব্যক্তির কথামতো একটি অটোরিকশাযোগে জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা তাঁদের রিকশার গতি রোধ করে।’

তিনি বলেন, ‘এরপর ঘটনার আকস্মিকতায় ইমন রিকশা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান, কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা নুরুল ইসলামকে ধরে ফেলে। তারা ধারালো চাপাতি দিয়ে নুরুল ইসলামের মাথা, ঘাড়, বাহু ও হাতের আঙুলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তাঁর কাছে থাকা দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নূরুল ইসলামের বড় ভাই মো. ওসমান গনি বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত