Ajker Patrika

অনিয়মের অনুমতির তদন্তেও অনিয়ম

  • পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ২ জুলাই তিন সদস্যের কমিটি হয়
  • কমিটির পক্ষ থেকে ৯ জুলাই মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়
অরূপ রায়, সাভার (ঢাকা)
Thumbnail image
ফাইল ছবি

ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ের নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা ২০৪টি ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ইট পোড়ানোর অনুমতি পায়। প্রায় আড়াই বছর ধরে চলা এই অনিয়মের বিষয়টি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের গোচরে এলে পরিবেশ অধিদপ্তরকে তা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই তদন্তেও অনিয়ম করা হয়েছে।

অধিদপ্তর তদন্ত করে মাত্র দুটি ইটভাটার ছাড়পত্র বাতিলের সুপারিশ করে। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অধিদপ্তরের এমন তদন্তকে প্রহসন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা।

২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ছাড়পত্র এবং ইট পোড়ানোর অনুমতি পাওয়া ২০৪টা ভাটা নিয়ে গত ৫ জুন আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় মন্ত্রণালয় ভাটাগুলো পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রতিবেদন দিতে বলে। নির্দেশনা অনুযায়ী অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয় থেকে ২ জুলাই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোজাফ্ফর হোসেন ও পরিদর্শক হাবিবুর রহমান।

অভিযোগ রয়েছে, কমিটি মাত্র ৫টি ইটভাটা পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে ৯ জুলাই কমিটির পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ৫টি ভাটার মধ্যে সাভারের কর্ণফুলী সুপার ব্রিকস, মেসার্স সোমা ব্রিকস ও মেসার্স এম এইচ বি স্টার ব্রিকসের অবস্থান আপাতদৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য বলে মতামত দেওয়া হয়। আর সাভারের বি সি এম অ্যান্ড ব্রিকস ও ধামরাইয়ের মেসার্স মা ব্রিকসের ছাড়পত্র বাতিলের সুপারিশ করা হয়।

এমন প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাভার নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি রহিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর নিজেদের দোষ ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দায়সারাগোছের প্রতিবেদন দিয়েছে।

এদিকে সাভার ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা সব ইটভাটায় ইট পোড়াতে দেখা গেছে। ধামরাইয়ের জলসিং এলাকার মেসার্স মা ব্রিকসের ব্যবস্থাপক কবীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইটভাটার কয়েক শ ফুটের মধ্যে যে ঘরবাড়ি আছে, তাতে এখানে ইট পোড়ানো চলে না। কিন্তু ধামরাইয়ের সব ভাটার অবস্থা একই। দশজনে যেভাবে চালায়, আমরাও সেইভাবেই চালাইতাছি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা দীপংকরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত