Ajker Patrika

১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২৪ মামলা, গ্রেপ্তার ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২৬
১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে  ২৪ মামলা, গ্রেপ্তার ১৫

ই-কমার্স নিরাপদ ডটকম ও ২৪ টিকেট ডটকমের দুজনকে সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে গত রোববার কিউকম ও এসপিসি নামে দুই প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে সাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ১৫ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ২৪ টিকেট ডটকমের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার আসামি রাকিবুল হাসান গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে। এই প্রতিষ্ঠান ‘২৪ টিকেট ডটকম’ স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক মূল্যছাড়ের পাশাপাশি বিনা মূল্যের টিকিটের ঘোষণা দেয়। বাড়তি লাভের আশায় অনেক ট্র্যাভেল এজেন্সি কম দামে এসব টিকিট কেনে। এপ্রিলের মাঝামাঝিতে হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতারণার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের ৪ হাজার ৭৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গ্রাহকের হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই টাকা যারা নিয়েছে, তারা কোথায়, কী করছে, তার তদন্ত হবে। পাওয়া গেলে গ্রাহকের টাকা গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হবে।

সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া ২৪টি মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে রয়েছে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ, এসপিসি ওয়ার্ল্ড, সহজ লাইফ, লাভলি মার্ট, ২৪ টিকেটিং, নিরাপদ শপ ও দালাল প্লাস। ধামাকা, ই-অরেঞ্জ ও এসপিসির বিরুদ্ধে সিআইডি বাদী হয়ে মানি লন্ডারিং মামলা করেছে। বাকি ৭টি প্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১৮টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ই-অরেঞ্জের চারটি, ইভ্যালির বিরুদ্ধে একটি, ধামাকার বিরুদ্ধে একটি, রিং আইডির বিরুদ্ধে একটি, নিরাপদ শপের বিরুদ্ধে একটি, ২৪ টিকেট ডটকমের বিরুদ্ধে একটি ও এসপিসির বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে।

সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ প্রতিরোধ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেছেন, সিআইডি ই-অরেঞ্জ ও এসপিসির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়ায় গুলশান ও কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে রোববার পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। এর আগে ধামাকার শপিংয়ের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকের টাকা তুলে অন্যান্য খাতে ব্যবহার করেছে, যেটা মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ।  

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুরুতেই নিয়ম অনুযায়ী তদারক করলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। এখন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে গ্রেপ্তারের পর লোপাট হওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। ইভ্যালির ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র ৩০ লাখ আর ধামাকার ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র ৯৭ হাজার টাকা। লোপাট হওয়া টাকাগুলো কোথায় গেল, সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের টাকা কীভাবে ফেরত দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে কোনো উত্তর তাদের কাছে নেই।

মামলার তদন্তকারীরা বলছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের পাওনার সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মালিকদের দাবি, ইভ্যালির কাছে তাদের দেনা ৯৫০ কোটি, ই-অরেঞ্জের ১ হাজার ১০০ কোটি, ধামাকার ৮০৩ কোটি, কিউকমের ৩৯৭, এসপিসি ওয়ার্ল্ডের ২৯০ কোটি টাকা, নিরাপদ ৭৮ কোটি, দালাল প্লাস ২০০ কোটি, রিং আইডির তিন মাসে ২১৩ কোটি ও সিরাজগঞ্জ শপ গ্রাহকের ৪৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত