Ajker Patrika

সরকারি আলু-পেঁয়াজ বীজ নিয়ে বিপাকে কৃষকেরা

পাংশা (রাজবাড়ী) ও আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
Thumbnail image
প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজে চারা গজায়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজবাড়ীর পাংশায় প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ আবাদ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ২৫০ জন কৃষক। বেশির ভাগ বীজ থেকেই চারা গজায়নি। ফলে জমি প্রস্তুতের খরচই বিফলে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

এদিকে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সরকারের দেওয়া আলুবীজ কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকেরা বলছেন, বীজ আলুর পরিবর্তে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে নিম্নমাণের খাবার আলু দেওয়া হয়েছে তাঁদের, যা রোপণযোগ্য নয়।

পাংশা উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ১ হাজার প্রান্তিক কৃষককে বারি-১, বারি-৪ ও তাহেরপুর জাতের প্রণোদনার পেঁয়াজবীজ বিতরণ করে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

কৃষকেরা বলছেন, নভেম্বর মাসে সরকারিভাবে ১ কেজি করে পেঁয়াজবীজ দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এই বীজ রোপণ, সেচ, সার, কীটনাশক ও জমি প্রস্তুত বাবদ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বীজ থেকে চারা গজায়নি। এখন নতুন করে বীজ কিনে পেঁয়াজ রোপণ করাও সম্ভব নয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, ১ হাজার কৃষকের মধ্যে বারি-৪ জাতের পেঁয়াজবীজ পেয়েছেন ২৫০ জন। তাঁদের বীজগুলো না গজানোর অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ০ থেকে ৩০ শতাংশ বীজের চারা গজিয়েছে।

রতন কুমার ঘোষ বলেন, বিএডিসির সরবরাহ করা পেঁয়াজবীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কমিটি একটি তদন্ত দল গঠন করেছে।

এদিকে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আলু প্রদর্শনীর জন্য পাঁচ চাষিকে নির্ধারণ করে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। ওই পাঁচ কৃষককে মোট ২০০ কেজি আলুবীজ দেওয়া হয়। সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সারও দেওয়া হয়।

চাষিদের অভিযোগ, জমি প্রস্তুতের পর বস্তা খুলে কাটা, পচা ও নিম্নমাণের খাবার আলু দেখতে পান তাঁরা।

আলু-আলু থেকে অঙ্গুর গজায়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলু-আলু থেকে অঙ্গুর গজায়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা

তরণী শিকারি নামের এক চাষি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২৫-৩০ বছর ধরে আলু চাষ করছি। আগে দেখতাম আলুর বীজের বস্তায় কোম্পানির নাম, আলুর জাত, মেয়াদ ও বস্তার মুখে মেশিনের সেলাইসহ টোকেন লাগানো থাকত। কিন্তু এই আলুর বস্তায় এ সবের কিছুই নেই। মনে হয় বাজার থেকে খাবার আলু ক্রয় করে ছিয়েছে কৃষি অফিস।’

মকবুল হোসেন জমাদ্দার ও দশরত হালদার নামের দুই চাষি বলেন, ‘কৃষি অফিসের প্রদর্শনীর জন্য দেওয়া আলুতে কোনো অঙ্কুর নেই। এই আলু রোপণ করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। আলু চাষের জন্য আমরা জমি প্রস্তুত করে ফেলেছি। এখন জমিতে অন্য কোনো ফসল চাষ করাও সম্ভব নয়।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পীযূষ রায় বলেন, বিএডিসির আলুবীজ না পাওয়ায় জয়পুরহাট জেলা থেকে আলুর বীজ কিনে প্রদর্শনীর চাষিদের দেওয়া হয়েছে। চাষিরা এই আলু রোপণে অনীহা প্রকাশ করলে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি। কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ওই আলুবীজ দেখে চাষিদের সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত