Ajker Patrika

বাড়তি ভাড়া আদায় করায় তিন বাস কাউন্টারকে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আবদুল্লাহপুরে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা।
আবদুল্লাহপুরে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনসাধারণের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অভিযানকালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিনটি বাস কাউন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২ জুন) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই অভিযান শুরু হয়।

দিনব্যাপী এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদ। এতে সহযোগিতা করে র‍্যাব-১ ও ঢাকা জেলা প্রশাসন।

আবদুল্লাহপুরের শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের যাত্রী হেলেনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেবা গ্রিন লাইনের লাস্ট স্টপেজ রংপুর পর্যন্ত। সেখানকার ভাড়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমি যাব বগুড়া, ভাড়া ৬০০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে ৮০০ টাকাই নিয়েছে।’

একতা বাস কাউন্টারের যাত্রী মুনতাহা জাহান প্রাপ্তি বলেন, ‘আমি নাটোর যাব, ভাড়া ৭০০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে চাঁপাইয়ের ভাড়া ১২০০ টাকা রেখেছে।’

পরে র‍্যাব ও সাংবাদিকেরা কাউন্টার মাস্টার মো. জাহাঙ্গীরের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, সেই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত আদায় করা টাকা ফেরত পাওয়ার পর প্রফুল্লিত হয়ে প্রাপ্তি বলেন, ‘আমরা যাত্রীরা ন্যায্য ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে চাই। কিন্তু বাস কাউন্টারগুলো আমাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।’

এদিকে সেবা গ্রিন লাইন বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টার আবদুল্লাহপুর, বাস ডিপো কামারপাড়া এলাকায়। টিকিট আবদুল্লাহপুর থেকেই বিক্রি করছেন। কিন্তু তাঁরা যাত্রী ওঠাচ্ছেন গাজীপুর থেকে। সেই সঙ্গে নির্ধারিত ভাড়া ৬১৭ টাকা। কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ৭৫০ টাকা করে।

এ বিষয়ে সেবা গ্রিন লাইন বাস কাউন্টার মাস্টার সিরাজুল বলেন, ‘আমাদের আবদুল্লাহপুরের রোড পারমিট নেই। যার কারণে গাজীপুর থেকেই যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে।’

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অভিযান প্রসঙ্গে র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানকালে আমাদের কিছু যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাচ্ছি। যেসব কাউন্টারের বিরুদ্ধে আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে।’

কাজী তামজীদ আহমেদ আরও বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন পরিবহনের কাগজপত্র চেক করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

কাজী তামজীদ বলেন, ‘তিনটি বাস কাউন্টারের তিনজনকে সড়ক পরিবহন আইনে জরিমানা করা হয়েছে। যার মধ্যে আশরাফুল আলম ও কাউসার হাওলাদারকে ৩৮০০ টাকা করে এবং নূর হোসেন বাবুকে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।’

এ সময় বাস মালিক সমিতির কাছে অনুরোধ জানিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ বলেন, সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ভাড়ার নতুন তালিকা প্রতিটি কাউন্টারে দিয়ে দেবেন, যেন যাত্রীসাধারণ তাঁদের গন্তব্যের ভাড়া সম্পর্কে জানতে পারেন।

অভিযানকালে র‍্যাব-১-এর সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিফ বিন হালিম বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা সংশ্লিষ্ট এলাকার র‍্যাবকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’

ঈদ নিরাপত্তা ডিউটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেজর আহনাফ বলেন, ‘আমরা তিন পর্বে আমাদের নিরাপত্তা কার্যক্রম চালাব। পর্ব তিনটি হলো—ঈদের আগে, ঈদের সময় ও ঈদের পর।’

মেজর আহনাফ বলেন, ‘নিরাপত্তা জোরদার ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় যেন না করতে পারে, আমাদের বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পোশাকেও প্যাট্রল ডিউটি অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। অনেক বাস আছে, যেগুলো টিকিটবিহীনভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

মেজর আহনাফ বলেন, ‘ঈদের আগে ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে যায়। এসব প্রতিরোধ করতে আমাদের সার্বক্ষণিক টহল ও গোয়েন্দা দল নিয়োজিত রয়েছে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তাহলে আমাদের টহল টিমের কাছে আসবেন, তাদের জানাবেন।’

বেশি টাকা উত্তোলনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে র‍্যাব কর্মকর্তা আহনাফ বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রেও আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করেছি। সেই সঙ্গে জনগণকেও একটু সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অভিযান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেজর আহনাফ বলেন, ‘আজ আমরা দুটি তারতম্য পেয়েছি। একটি হলো, কিছু বাস সাধারণত চলে না, কিন্তু ঈদ উপলক্ষে রাস্তায় চলছে। আরেকটি হলো, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। এসব ক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের যুবককে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তাঁর ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

এ দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী আবু হানিফকে হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৬৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে বারবার ইট দিয়ে আঘাত করছেন কয়েকজন। অন্তত ৫-৭ জনের ওই দল দফায় দফায় তাঁকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তথ্যমতে, গত সোমবার দুপুরে আবু হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তাঁকে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তায় ফেলে যান অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরাসহ তাঁদের কয়েকজন সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করেন।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুরের দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে-কবে, তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়ে আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীর (হানিফ) ভেতরে বসাইয়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামের স্থানীয় একজনকে চিনেছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে চলে যায়। অনেক পরে আমরা তাঁরে হাসপাতালে পাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মামার বদলে আদালতে হাজিরা ভাগনের, কারাফটকে ধরা

­যশোর প্রতিনিধি
শামীম আহম্মেদ। ছবি: সংগৃহীত
শামীম আহম্মেদ। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানির মামলায় মামার পক্ষে যশোরের আদালতে হাজিরা দেন ভাগনে। আদালতে জেরার উত্তরও দেন তিনি। শেষে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত আসামিকে (ভাগনে) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে আসামি নিয়ে প্রিজন ভ্যান কারাফটকে গেলে নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাইকালে বেরিয়ে আসে আসল পরিচয়।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আসামি হাসানের পক্ষে কারাগারে যাওয়া ভাগনে মো. শামীম আহম্মেদ (২৭) যশোর সদর উপজেলা ভেকুটিয়া গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। আর হাসান বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মন্টুর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন আদালতের নির্দেশে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করা ও মূল আসামি হাসানের নামে পরোয়ানা জারি হবে। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন বলে এর বেশি জানাতে চাননি তিনি।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর সদরের ভেকুটিয়া এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলামের বাড়িতে চাঁদাবাজি করতে আসেন স্থানীয় নিশানুর রহমান অন্তরের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন। এ সময় রাকিবুলের কাছে পাঁচ লাখ চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে তাঁদের ওপর হামলা ও রাকিবুলের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটে। এ সময় তাঁরা নগদ ও বিকাশে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

পরদিন ভুক্তভোগী রাকিবুল চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও হামলার অভিযোগে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার ৫ নম্বর আসামি হাসান। বিভিন্ন সময়ে আসামিরা আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনে রয়েছেন।

গতকাল দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে আসামিরা হাজিরা দিতে আসেন। আসামি হাসানের পক্ষে তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দেন ভাগনে শামীম। এদিন (২১ অক্টোবর) শামীম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে আসামি হাসানের পরিবর্তে কারাগারে পাঠানো হয় শামীমকে।

প্রিজন ভ্যানে আসামি কারাগারে যাওয়ার পর আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আসামির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা যাচাইয়ের সময় শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ফলে কারাগারের সিস্টেমের মাধ্যমে তাঁর ফিঙ্গার প্রিন্টে প্রকৃত নাম মো. শামীম আহম্মেদ শনাক্ত হয়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, আসামি হাসানের পরিবর্তে কারাগারে যাওয়া শামীম জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন হাসান তাঁর আপন ছোট মামা। মামার পরিবর্তে তিনি তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন আকারে আদালতে পাঠিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাবেরুল হক সাবুর মোবাইল ফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদ ফোস্তফা রাজা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। অনেক সময় মুহুরিদের ম্যানেজ করে আসামির পক্ষে কেউ হাজিরা দিয়ে সহায়তা করতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। কীভাবে এটি হলো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাচার ঠেকাতে সিলেট সীমান্তে বিজিবির অভিযান, যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে সুপারি পাচারকারীদের ‘সংঘর্ষের’ খবর পাওয়া গেছে। এতে আলমাস উদ্দিন (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চারিকাটা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বালিদাড়া কান্দির মুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলমাস উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিজিবি সদস্যদের গুলিতে আলমাস মারা গেছেন। পুলিশ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে জানিয়ে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে তিনটি গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তবে বিজিবি তাদের ওপর হামলা ও একজন বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার কথা জানালেও ওই যুবকের মৃত্যু নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আজ সকাল ১০টার দিকে বিজিবির জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধীন সুইরঘাট বিওপির চারজন সদস্য দুটি মোটরসাইকেলে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় জৈন্তাপুরের সীমান্তবর্তী বালিদাড়া কান্দিরমুখ মসজিদের দক্ষিণে তাজ উদ্দিনের বাড়ির পাশে চতুল-লালাখাল সড়কের ওপর পিকআপে করে দেশীয় সুপারি নিয়ে যাওয়ার সময় গুলি চালানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলমাস উদ্দিন নিহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কান্দিরমুখে মসজিদের কাছে এলে বিজিবিকে দেখতে পেয়ে গাড়ি (পিকআপ) ঘুরিয়ে বাজারের দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন আলমাসসহ অন্যরা। তখন বিজিবি তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসুজ্জামান সেলিমের জিম্মায় জব্দ সুপারি রেখে গেছে বিজিবি।

এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সকাল ১০টার দিকে সুরাইঘাট বিওপির একটি টহল দল জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্তিখলা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানবিরোধী অভিযানে যায়। অভিযানের সময় টহল দল একটি অবৈধ পণ্যবাহী পিকআপ আটক করলে অজ্ঞাতনামা একদল সশস্ত্র চোরাকারবারি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, দা, বল্লম, লাঠিসোঁটাসহ টহল দলের ওপর আকস্মিক হামলা করে জব্দ করা মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সরকারি সম্পদ অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং টহল দলের সদস্যদের জানমাল রক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা নিরুপায় হয়ে ৪-৫ রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। হামলাকারীদের আক্রমণে বিজিবির এক সদস্য মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

তবে চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি পিকআপে দেশি সুপারি ছিল। বিডিআর (বিজিবি) ধাওয়া দিয়ে পিকআপে বেশ কয়েকটি গুলি করে। পিকআপের ওপরে থাকা একটা ছেলেকে ডিরেক্ট (সরাসরি) গুলি করে। গুলির আঘাতে ছেলেটা মারা গেছে। হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যায়।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিহত ছেলেটি পিকআপশ্রমিক মানে চালকের সহকারী, চোরাকারবারি নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার বলেন, ‘আমাদের হেডকোয়ার্টার্সে তথ্য পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে মেসেজ এলে আপনাদের জানানো হবে। এর বাইরে এখন কিছু বলতে পারব না।’

জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আমরা লাশ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। নিহত ব্যক্তির শরীরে তিনটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে।’

বিজিবির গুলিতে নিহতের অভিযোগ প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা দাবি করেছেন, বিজিবির গুলিতে আলমাস মিয়া মারা গেছেন।’

তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ তাঁদের কাছে কোনো অভিযোগ করতে আসেনি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে মর্গে মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, ডোম গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার ডোম আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার ডোম আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা এক তরুণীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করার অভিযোগ উঠেছে মর্গের ডোম আবু সাঈদের (১৯) বিরুদ্ধে। মর্গের চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করার পর পুলিশ দ্রুত ডোমকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাটি গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসক ও পুলিশ। বিষয়টি জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য ওই তরুণীর মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়। পরদিন সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করার সময় অস্বাভাবিক কিছু বিষয় লক্ষ করেন।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পরে জানান, ময়নাতদন্তের সময় তিনি নিশ্চিত হন, মৃতদেহটি মর্গে আসার পর তার ওপর পাশবিক নির্যাতন হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে জানান।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দেহবশত মর্গের দায়িত্বে থাকা ডোম আবু সাঈদকে (১৯) জিজ্ঞাসাবাদ করে। জেরায় অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার করা ডোমের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ডোম সাঈদের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায়।

মেডিকেল কলেজের মর্গের মতো একটি সুরক্ষিত ও সংবেদনশীল স্থানে এমন ঘটনায় হাসপাতালের কর্মী মহল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মরদেহের নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে বিবেচিত স্থানে এমন ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় হালুয়াঘাট থেকে তরুণীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়েছিল। মৃতদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের খবর পেয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে আটক করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার পর আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক অপরাধ। আমরা দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করে আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব, যাতে এমন বর্বরতা কেউ আর কখনো করার সাহস না পায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত