Ajker Patrika

বাড়তি ভাড়া আদায় করায় তিন বাস কাউন্টারকে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আবদুল্লাহপুরে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা।
আবদুল্লাহপুরে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনসাধারণের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অভিযানকালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিনটি বাস কাউন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২ জুন) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই অভিযান শুরু হয়।

দিনব্যাপী এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদ। এতে সহযোগিতা করে র‍্যাব-১ ও ঢাকা জেলা প্রশাসন।

আবদুল্লাহপুরের শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের যাত্রী হেলেনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেবা গ্রিন লাইনের লাস্ট স্টপেজ রংপুর পর্যন্ত। সেখানকার ভাড়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমি যাব বগুড়া, ভাড়া ৬০০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে ৮০০ টাকাই নিয়েছে।’

একতা বাস কাউন্টারের যাত্রী মুনতাহা জাহান প্রাপ্তি বলেন, ‘আমি নাটোর যাব, ভাড়া ৭০০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে চাঁপাইয়ের ভাড়া ১২০০ টাকা রেখেছে।’

পরে র‍্যাব ও সাংবাদিকেরা কাউন্টার মাস্টার মো. জাহাঙ্গীরের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, সেই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত আদায় করা টাকা ফেরত পাওয়ার পর প্রফুল্লিত হয়ে প্রাপ্তি বলেন, ‘আমরা যাত্রীরা ন্যায্য ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে চাই। কিন্তু বাস কাউন্টারগুলো আমাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।’

এদিকে সেবা গ্রিন লাইন বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টার আবদুল্লাহপুর, বাস ডিপো কামারপাড়া এলাকায়। টিকিট আবদুল্লাহপুর থেকেই বিক্রি করছেন। কিন্তু তাঁরা যাত্রী ওঠাচ্ছেন গাজীপুর থেকে। সেই সঙ্গে নির্ধারিত ভাড়া ৬১৭ টাকা। কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ৭৫০ টাকা করে।

এ বিষয়ে সেবা গ্রিন লাইন বাস কাউন্টার মাস্টার সিরাজুল বলেন, ‘আমাদের আবদুল্লাহপুরের রোড পারমিট নেই। যার কারণে গাজীপুর থেকেই যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে।’

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অভিযান প্রসঙ্গে র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানকালে আমাদের কিছু যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাচ্ছি। যেসব কাউন্টারের বিরুদ্ধে আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে।’

কাজী তামজীদ আহমেদ আরও বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন পরিবহনের কাগজপত্র চেক করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

কাজী তামজীদ বলেন, ‘তিনটি বাস কাউন্টারের তিনজনকে সড়ক পরিবহন আইনে জরিমানা করা হয়েছে। যার মধ্যে আশরাফুল আলম ও কাউসার হাওলাদারকে ৩৮০০ টাকা করে এবং নূর হোসেন বাবুকে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।’

এ সময় বাস মালিক সমিতির কাছে অনুরোধ জানিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ বলেন, সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ভাড়ার নতুন তালিকা প্রতিটি কাউন্টারে দিয়ে দেবেন, যেন যাত্রীসাধারণ তাঁদের গন্তব্যের ভাড়া সম্পর্কে জানতে পারেন।

অভিযানকালে র‍্যাব-১-এর সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিফ বিন হালিম বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা সংশ্লিষ্ট এলাকার র‍্যাবকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’

ঈদ নিরাপত্তা ডিউটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেজর আহনাফ বলেন, ‘আমরা তিন পর্বে আমাদের নিরাপত্তা কার্যক্রম চালাব। পর্ব তিনটি হলো—ঈদের আগে, ঈদের সময় ও ঈদের পর।’

মেজর আহনাফ বলেন, ‘নিরাপত্তা জোরদার ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় যেন না করতে পারে, আমাদের বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পোশাকেও প্যাট্রল ডিউটি অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। অনেক বাস আছে, যেগুলো টিকিটবিহীনভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

মেজর আহনাফ বলেন, ‘ঈদের আগে ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে যায়। এসব প্রতিরোধ করতে আমাদের সার্বক্ষণিক টহল ও গোয়েন্দা দল নিয়োজিত রয়েছে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তাহলে আমাদের টহল টিমের কাছে আসবেন, তাদের জানাবেন।’

বেশি টাকা উত্তোলনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে র‍্যাব কর্মকর্তা আহনাফ বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রেও আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করেছি। সেই সঙ্গে জনগণকেও একটু সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অভিযান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেজর আহনাফ বলেন, ‘আজ আমরা দুটি তারতম্য পেয়েছি। একটি হলো, কিছু বাস সাধারণত চলে না, কিন্তু ঈদ উপলক্ষে রাস্তায় চলছে। আরেকটি হলো, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। এসব ক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়ি থেকে ভিজিএফের চাল উদ্ধার দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

দেশ টিভির কার্যালয়ে ১২০০ বস্তা চাল পাঠানো প্রয়োজন: উপদেষ্টা আসিফ

অপমানিত সহকর্মীর ছাদ থেকে লাফ, শ্রমিক বিক্ষোভে রণক্ষেত্র শ্রীপুর, আহত শতাধিক

সরকারি কর্মচারীদের ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

জাদুঘরে রাখা হলো একটি কনডম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত