Ajker Patrika

পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ২৫
পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু

সব বাধা ও প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে পদ্মা সেতুর সড়কপথের আনুষ্ঠানিক কার্পেটিংয়ের (পিচ ঢালাই) কাজ শুরু করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৪০ নম্বর পিলার থেকে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কার্পেটিং কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতুর পুরো অংশের কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করতে অন্তত ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রকৌশলীরা। 

পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুতে ৪১ নম্বর স্প্যানটি বসানো পর পদ্মার বুকে দৃশ্যমান হয় সম্পূর্ণ পদ্মা সেতু। এরপর ২৩ আগস্ট শেষ হয় সেতুর রোড স্ল্যাব বসানোর কাজ। রোড স্ল্যাব বসানোর পর প্রস্তুত করা হয় কার্পেটিংয়ের জন্য নির্ধারিত বেড। কার্পেটিংয়ের আগে রোড স্ল্যাবের ওপর ২ মিলিমিটার পুরুত্বের পানিনিরোধক স্তর (ওয়াটার প্রুফিং মেমব্রেন) দেওয়া হয়েছে। যা মূলত সড়কের ওপর দিয়ে পানি লিকেজ করা থেকে সেতুকে নিরাপদে রাখবে। এই ওয়াটার প্রুফ মেমব্রেন দেখতে অনেকটা প্লাস্টিকের আচ্ছাদনের মতো। ওয়াটার প্রুফের কাজ শেষ হওয়া অংশে দুই স্তরে করা হবে কার্পেটিংয়ের কাজ। প্রথম স্তরে করা হয়েছে ৬০ মিলিমিটার পরিমাণ পুরুত্বের কার্পেটিংয়ের কাজ। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে করা হবে আরও ৪০ মিলিমিটার পুরুত্ব সম্পন্ন কার্পেটিং। সব মিলিয়ে সেতুর ওপরে কার্পেটিং সড়কের পুরুত্ব হবে ১০০ মিলিমিটার। 

পদ্মাসেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুতে ২ হাজার ৯১৭টি রোড ওয়ে স্ল্যাব ও ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে। গত জুলাইয়ের জাজিরা প্রান্তের মাঝামাঝি ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারে বসানো স্প্যানের রোড স্ল্যাবের ওপর ৬০ মিটার পরিমাণ পরীক্ষামূলক কার্পেটিং করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম থাকায় প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য এত দিন কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা যায়নি। ১০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া স্থায়ী এই কার্পেটিংয়ের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। 

মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ৯৫ শতাংশ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৮৯ শতাংশ আর নদী শাসনের কাজ এগিয়েছে ৮৬ শতাংশ। সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে চলবে রেল আর উপরিভাগে চলবে সাধারণ যানবাহন। সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকায় থাকা দেশের সর্ব বৃহৎ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। আগামী বছরের জুনে উদ্বোধনের পর যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগ সহজ হবে। 

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হ‌ুমায়ূন কবির বলেন, সেতুর রোড স্ল্যাব বসানোর পর থেকেই বেড প্রস্তুতের কাজ শুরু করা হয়েছিল। এরই মধ্যে সেতুর যে অংশে ওয়াটার প্রুফিং কাজ শেষ হয়েছে সে অংশে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। কার্পেটিং ছাড়াও সেতু প্রস্তুতে শেষ মুহূর্তে এক্সপানশন সংযোগ, প্যারা পেট ওয়াল, মিডিয়াম স্পিডিং, স্ট্রিট লাইটিংসহ নানামুখী কর্মযজ্ঞ চলছে। 

পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, সেতুর রোড স্ল্যাব বসানোর পর থেকেই বেড প্রস্তুতের কাজ শুরু করা হয়েছিল। এরই মধ্যে সেতুর ৪৩০ মিটার অংশে ওয়াটার প্রুফিং কাজ শেষ হয়েছে সে অংশেই কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। আজ প্রথম দিনে ৩০০ মিটার পরিমাণ কার্পেটিং করা হবে। বৃহস্পতিবার হবে বাকি ১৩০ মিটার অংশ। এখন থেকে বেড প্রস্তুত করে সপ্তাহে অন্তত ১ বার কার্পেটিং এর কাজ চলমান থাকবে। এ ছাড়াও সেতু প্রস্তুতে শেষ মুহূর্তে এক্সপানশন সংযোগ, প্যারা পেট ওয়াল, মিডিয়াম স্পিডিংসহ নানামুখী কর্মযজ্ঞ রয়েছে শেষের দিকে। শিগগিরই শুরু হবে স্ট্রিট লাইটিং এর কাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

যুবককে আটক করা নিয়ে বিজিবি ও এলাকাবাসীর পাল্টাপাল্টি দাবি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত