গজারিয়ায় কাজী ফার্ম সড়কের ধুলায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। এই সড়কের ধুলায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। একটু বৃষ্টি হলে গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। এতে ছোট-বড় যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে ধুলায় কিছুক্ষণ পরপরই ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দ। গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত এলাকায় সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। 

বাউশিয়া পাখির মোড়-কাজী ফার্ম সড়কের চাষীচর, গুয়াগাছিয়া, কদমতলী, ভৈষারচর, ভাষারচর, দত্তেরচর, শিমুলিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিত্য দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কয়েক বছর ধরেই সড়কটিতে খানাখন্দ ও গর্ত। একবার কিছু অংশ মেরামত করলেও পরবর্তীকালে আর মেরামত হয়নি। বৃষ্টির পানি জমে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নবাসীর। এক কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়। বাকি অংশে ইটের খোয়া বিছিয়ে রাখা হয় প্রায় এক বছর ধরে। পিচ না দেওয়ায় ইটের খোয়া ধুলোবালুতে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলের কারণে তা উড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফসলি জমি, বাড়িঘরে পড়ছে। 

বাউশিয়া পাখির মোড়ে কাজী ফার্ম সড়ক বেহাল দশায় নতুন চাষীচর এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল হক মোল্লা বলেন, সড়কটির সংস্কারকাজে ধীরগতির কারণে বেহাল অবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই যেকোনো মূল্যে সওজ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কাজটি করার দাবি জানান স্থানীয় অটোচালকেেরা।

গৃহিণী জাহানারা আক্তার বলেন, রান্নাঘরের চারপাশে কাপড় ঝুলিয়ে ধুলোবালু থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। খাবারে ইটের ধুলোবালি পড়ছে নিয়মিত। 

দোকানদার কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়ক থেকে প্রতিদিন দোকানের আসবাবপত্রে ধুলোবালু স্তর পড়ছে। ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে পানি ছিটিয়েছি, কিন্তু কাজ হয় না। 

ভ্যানচালক রফিক মিয়া বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে গাড়ির নাটবল্টু প্রায়ই খুলে পড়ে যায়। ফলে সারা দিন ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৪০-৪৫ মিনিট।’ 

অটোরিকশাচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘ভাঙা রাস্তার কারণে এই সড়কে অটোরিকশার যাত্রী পাওয়া যায় না। ভাঙা রাস্তায় বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’

গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল খায়ের খোকন বলেন, ‘একদিকে ধুলাবালু, অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা-পানি একাকার হয়ে যায়। সড়কটির কারণে এলাকাবাসী চরম বিপদে রয়েছে। কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যেতে বা জরুরি প্রয়োজনে বাজারে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। জনস্বার্থে সড়কটি সংস্কার করা দরকার। প্রতিবছর এই রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়ে থাকে। এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে কাজটি করতে দেরি হচ্ছে, তবে আমি তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা দ্রুত ভাঙা রাস্তার কাজ করবে বলে আশ্বাস দেন।’ 

সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে গজারিয়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই অর্থবছরেই সড়কটি সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।