Ajker Patrika

যুবলীগ নেত্রী মিশুকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩, ২৩: ৩৫
Thumbnail image

ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেনাজ তাবাচ্ছুম মিশুর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে সাভার মডেল থানা-পুলিশ। 

আজ রোববার বিকেলে আজকের পত্রিকাকে রিমান্ড আবেদনের তথ্য নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ।

আদালতে সাভার থানার দায়িত্বরত সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মাসুদ মিয়া বলেন, রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য ২৩ আগস্ট দিন ধার্য আছে।  

এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার মেহেনাজ মিশুকে আদালতে পাঠালেও সেদিন রিমান্ড আবেদন করেনি পুলিশ। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

সাভারে এক স্কুলছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক মেহনাজ তাবাসসুম মিশুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মিশুর কথিত স্বামী আতিকুর রহমান আতিক ওরফে সঞ্জু শেখ পলাতক রয়েছেন। মেহেনাজ মিশুর বাড়ি সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন শাহানাজ গার্ডেন এলাকায়। 

গ্রেপ্তারের দিন ১৯ আগস্ট রাতেই সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় মেহনাজ মিশুকে।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম-সম্পাদক মেহেনাজ তাবাচ্ছুম মিশুকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার বলেন, ‘আমার নেত্রীর নির্দেশ, যেকোনো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারি। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায়ভার সংগঠন কখনোই নেবে না। তাই অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, এক কিশোরীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার চেষ্টা, নির্যাতনসহ নানা বিষয় উল্লেখ করে গতকাল শনিবার সকালে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী এক কিশোরীর মা। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সকাল ১০টার দিকে সাভার উপজেলা পরিষদসংলগ্ন গেন্ডা এলাকার নিজ বাসা থেকে মেহনাজ মিশুকে আটক করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর মায়ের দায়ের করা মামলায় মেহনাজ মিশুকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করতেন মেহনাজ মিশু। পূর্ব পরিচয় ও প্রতিবেশীর সূত্র ধরে ভুক্তভোগীকে কৌশলে মেহনাজ তার বাসায় নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে ছাত্রীকে বাসায় বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করে। এসময় আতিক ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। রাজি না হলে তাকে সিগারেটের ছ্যাকা ও নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। পরে বাসার ৫ম তলার বেলকুনি থেকে নীচে ফেলা দেয় মিশু ও আতিক। পরে স্থানীয়রা ভুক্তভোগীকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে একটু সুস্থ হলে হাসপাতালে গিয়ে মিশু ভুক্তভোগীকে ঘটনা কাউকে না জানাতে হুমকি দেয় এবং সে নিজে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল বলে সবাইকে জানাতে বলে। ১৫ দিন চিকিৎসাধী থাকার কিছুটা সুস্থ হলে খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে বাসায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মামা বলেন, ‘বাসার মালিকের মেয়ে মিশু মাফিয়া টাইপের। মেয়েদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করায়।’ 

তিনি আরও বলেন, বাবা-মা পৃথক হওয়ার পর ভাগনি তার ফুফুর সঙ্গে মিশুদের বাসায় ভাড়া থাকতো। কিন্তু ফুফু গ্রামে ও ফুফুতো বোন চাকরি সুবাদে অন্যত্র চলে যায়। তখন একাই বসবাস করতে থাকে। সেই সুযোগে তাকে নিয়ে অনৈতিক কাজ করাতে চেষ্টা করে। গত ২৪ জুলাই সারা রাত দফায় দফায় মারধর করে। আমরা ভাগনি পুলিশকে জানাবে বললে, ৫ম তলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। ফোনও ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা খোঁজ করে পরিবারের ঠিকানায় যোগাযোগ করে। তারপর আমরা জানতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত