Ajker Patrika

কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮২ হাজার ঘর, খোলা আকাশের নিচে অনেক পরিবার

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ১১
কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮২ হাজার ঘর, খোলা আকাশের নিচে অনেক পরিবার

‘গাংঙ্গের ভাঙ্গনের পরে পানিতে ঘরদুয়ার সব ভাসাইয়া নিছে। ভাঙ্গার পর থেকে এখনো আমরা বেড়িবাঁধের রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে থাকছি। রোদ–ঝড়-বৃষ্টি, মশার কামড় সব সহ্য করতে হচ্ছে। কোনো উপায় নাই। ঘরদুয়ার করার আর সামর্থ্য নাই। দেশবাসী সহযোগিতা করলে হয়তো মাথা গুছার ঠাঁই হবে।’ বন্যায় সর্বস্ব হারিয়ে উৎকণ্ঠার সুরে কথাগুলো বলছিলেন, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোমতি নদীর ভাঙন এলাকার বুরবুড়িয়া বাসিন্দা তাহমিনা বেগম। 

এ এলাকার আরেক বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার স্ত্রী বিলকিস আক্তার বলেন, ‘শুধু জানডা লইয়া রাস্তায় আছি, বন্যার পানি গেছে কিন্তু ঘরবাড়ি তো সব শেষ। এখন সড়কের উপর থাকি। মানুষ শুধু খাওন দেয়। ঘরবাড়ি না করা পর্যন্ত এখানেই থাকতে হবে। ঘর করার জন্য সরকারের সহযোগিতা চাই।’ 

কুমিল্লা-২বেড়াজাল গ্রামের আরেক বাসিন্দা বিনোদা রানী দাস বলেন, ‘আগে পরিবারের সদস্যরা কৃষিকাজ করত। এখন তো সব শেষ। কাজ করলে পরিবার চলত। কবে কৃষিকাজ শুরু হবে, পরিবার চলবে নাকি ঘর করব। অনিশ্চয়তায় ভয়াবহ দিন পার করছি।’ 

তাঁদের মতো এমন অনেক নীরব হাহাকার চলছে বুড়িচং উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের মাঝে। বুড়িচং ছাড়াও জেলার আরও ১৩টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন যাপন করছে। অনেকে আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী বা স্বজনদের বাড়িতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই কবে হবে এমন আশা ও হতাশা নিয়ে দির পার করছে তারা। 

কুমিল্লায় স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮২ হাজার ঘর। কৃষি, যোগাযোগ, শিক্ষাব্যবস্থারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকারি–বেসরকারি সহযোগিতা ছাড়া এসব ক্ষতি কাটিয়ে সম্ভব নয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা। ফলে বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার। তবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানায় বরাদ্দ আসলে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করবে। 

কুমিল্লা-৩জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টিই কবলিত হয়। এসব উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বুড়িচং উপজেলা। এ উপজেলায় মোট ১৬ হাজার ৪৮৮টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৪ হাজার ২৪৩ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১২ হাজার ৩৪৫টি ঘর। নাঙ্গলকোটে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০০টি ঘর ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১০ হাজার ৫০০টি ঘর। আদর্শ সদর উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৫০০ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১২ হাজার ঘর। চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৪৫ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৪ হাজার ৫০০টি ঘর। 

এদিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৩২ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হাজার ৩৫০টি ঘর। লাকসাম উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৪ হাজার ৫০ ঘর। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫ ঘর এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৪ হাজার ৮০৫টি ঘর। বরুড়া উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩ হাজার ৮৮৫টি ঘর। মনোহরগঞ্জ উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৩০০টি ঘর এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হাজার ৪২০টি ঘর। তিতাস উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৪৯টি ঘর এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২৭৪টি ঘর। 

দেবীদ্বার উপজেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫ হাজার ৬২০ ঘর। লালমাইয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ১১২ ঘর। মুরাদনগরে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০০ ও দাউদকান্দিতে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০ ঘর। 

জেলায় ৮২ হাজার ৭৭৫ ঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ৮ হাজার ৬৭৪টি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৭৪ হাজার ৮১টি ঘর। এতে বানের পানির স্রোতে মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে ও বিধ্বস্ত হয়ে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৮৪ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সামনে বসে আছেন এক বৃদ্ধা। কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার বুরবুড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকাকৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, বন্যায় কৃষিতে ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা, বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরণ, ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ায় সহায়তা, বিনা মূল্যে কৃষিসেবা ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলাল হোসেন জানান, মৎস্য খাতে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই হিসাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, জেলায় চার হাজারেরও বেশি গবাদিপশুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুই লাখ নয় হাজার বিভিন্ন জাতের গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় ৩ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ও আংশিক মিলেয়ে ৮২ হাজার ৭৭৫টি ঘর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। বরাদ্দ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওমানের সড়কে ঝরে গেল বাংলাদেশি যুবকের জীবন

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শেখ মো. কামরুল (৩৬) ওমানের রাস্তায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে মার্কেটে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ মো. কামরুল উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। তিনি ২৫ বছর ধরে ওমানে বসবাস করছিলেন এবং সিলাল মার্কেটে ব্যবসা করতেন।

কামরুলের চাচাতো ভাই শেখ মো. সজিব জানান, কোরবানির ঈদ শেষে কামরুলসহ পাঁচজন একসঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ১০ অক্টোবর ওমানে ফিরে যান। ফেরার মাত্র ছয় দিন পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা।

স্বজনদের ভাষ্যমতে, ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে সিলাল মার্কেটে যাওয়ার পথে একজন তানজানিয়ান চালকের প্রস্তাবে কামরুল একটি বাসে ওঠেন। নতুন সিলাল মার্কেটের গেটের সামনে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি মাটি কাটার গাড়ির (জেসিবি) সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। বর্তমানে তাঁর মরদেহ রুস্তাক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার রাতে কামরুলের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর তাঁর নিজ এলাকা মাধবপুরে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।

তাঁর দুই শিশুপুত্র রয়েছে; একজনের বয়স চার বছর এবং অন্যজনের মাত্র পাঁচ মাস। কামরুল ১২ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিতে প্রবাসে পাড়ি জমান। তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টো পথে বাস, চাপা পড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক ইজিবাইকচালক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ‘ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানে গিয়ে সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাঁ দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকর আছে। উৎসুক লোকজন ও স্কুলশিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছে। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাঁ থেকে ডান দিকের লেনে হাইস্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটোগাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।’

পাশের আরেক দোকানের মালিক জিয়াউর প্রামাণিক বলেন, ‘আজ নয়; প্রায় গাড়ি ফাঁকা দেখে উল্টো পাশ দিয়ে ওভারটেক করে এই স্ট্যান্ডে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেনের লাশ উদ্ধার করি। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তাল বুয়েট: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২২
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

‎বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় এই মামলা করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা করেছে। গতকাল রাতেই আটক থাকা ওই শিক্ষার্থীকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‎এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এতে রাতেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত