Ajker Patrika

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগেরই তো মেয়াদ নেই, বললেন কুবি শাখার সভাপতি

কুবি প্রতিনিধি
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগেরই তো মেয়াদ নেই, বললেন কুবি শাখার সভাপতি

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ। অবশ্য চার বছর আগেই এই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও সভাপতি পদ আঁকড়ে থাকার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তুলনা টানেন তিনি।

ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিকের অভিযোগ, গতকাল রোববার রাত ১১টায় ইলিয়াস হোসেন সব হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সঙ্গে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার সাকিবকে ওই হল থেকে সংবাদকর্মীদের নামিয়ে দিতে আদেশ দেন। ইলিয়াসের সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল বাসার সাকিবসহ আরও কয়েকজন তাঁদের হুমকি-ধমকি দেন।

গতকাল রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাজ্জাদ বাসার দৈনিক আজকের পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। অন্যজন সাফায়িত সিফাত আরটিভি অনলাইনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি।

সাজ্জাদ বাসার ও সাফায়িত সিফাত যথাক্রমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এই ঘটনায় আজ আজ সোমবার দুই সাংবাদিক প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

তাঁরা জানান, রাতের খাবার খাওয়া শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দুজনে কথা বলছিলেন। এ সময় তাঁদের ডেকে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কথোপকথনের একপর্যায়ে ইলিয়াস ও মাজেদ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রসঙ্গ তুলে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁরা বলেন, ‘ভেবেছিস তোদের হ্যাডম আছে তাই যা ইচ্ছে লিখে ফেলছস। এবার দেখবি আমাদের কী হ্যাডম।’

সংবাদকর্মীরা আরও জানান, প্রকাশিত সংবাদের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য থাকলে প্রতিবাদলিপি দেওয়ার কথা বলা হলেও ইলিয়াস আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি প্রেসক্লাবে যুক্ত সাংবাদিকদের হলে থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন।

সংবাদকর্মী সাজ্জাদ বাসার বলেন, ‘ইলিয়াস ভাই আমাকে দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকা বঙ্গবন্ধু হলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাসার সাকিবকে আমি ও অন্যান্য সাংবাদিকদের কালই হল থেকে বের করে দেওয়ার আদেশ দেন।’

হুমকি দেওয়ার বিষয়ে পরে কথা বলতে গেলে কুবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘কোনো হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। দুজনের সঙ্গে শুধু কিছু কথা বলেছি।’ 

হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রসঙ্গে আবার জানতে চাইলে ইলিয়াস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আছে তাদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ নিয়ে লিখবে আর ছাত্রলীগ কিছু করবে না। এটা হতে পারে না।’ 

ইলিয়াস আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগেরই তো মেয়াদ নেই সেখানে আমাদের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন আসে কেন? তোমরা যাদের বক্তব্যে নিউজ দাও তাদের মেয়াদ তখন কই থাকে? আওয়ামী লীগের সম্মেলনও তো অনেক আগে হয়েছে। সেই হিসাবে তো শেখ হাসিনাও মেয়াদোত্তীর্ণ।’ এই কথোপকথনের রেকর্ড আজকের পত্রিকার কাছে সংরক্ষিত আছে। 

এ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছোট ভাইয়ের মতো বিষয়টা বলেছি। সাংগঠনিক জায়গা থেকে বলি নাই।’ 

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডি, আমরা সবাই বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’ 

গত ১৯ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ পাঁচ দফা দাবিতে, ২০ জুলাই নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল শাখা ছাত্রলীগ তিন দফা দাবিতে এবং সর্বশেষ ২১ জুলাই ১৪ দফা দাবিতে মানববন্ধনে নামেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ। ২১ জুলাই মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি দিতে গেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের সঙ্গে ইলিয়াস হোসেনের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় উপাচার্য ইলিয়াস হোসেন সবুজকে উদ্দেশ্য করে তাঁর স্ত্রীর চাকরি ও টেন্ডার বাণিজ্যের জন্য বারবার আসার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। 

এই ঘটনার পর দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘উপাচার্যকে চাপে রাখতে তৎপর কুবি ছাত্রলীগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ‘উপাচার্যকে চাপে ফেলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা কুবি ছাত্রলীগ নেতার’ শিরোনামে সংবাদ করেন সাফায়িত সিফাত। 

 ২০১৭ সালের ২৬ মে ইলিয়াস হোসেন সবুজকে সভাপতি ও রেজাউল ইসলাম মাজেদকে সাধারণ সম্পাদক করে কুবি শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটিকে এক বছরের জন্য অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একই বছরের ২২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে হলগুলোতে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ, ক্যাডারবাহিনী তৈরি করে ভিন্নমতের অনুসারীদের হল থেকে বিতাড়ন, টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে কমিশন নেওয়া, নিয়োগ বাণিজ্য, প্রশাসনকে চাপে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার আসামিদের বিশ্ববিদ্যালয়েই চাকরি পাইয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ ওঠে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজা থেকে গৃহবধূর লাশ নিয়ে মর্গে পাঠাল পুলিশ, পালিয়েছেন স্বামী-শ্বশুর

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশালের মুলাদীতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লাশ দাফনের কাজ শুরু করেন স্বামী ও তাঁর লোকজন। কিন্তু মরদেহ গোসল করানোর সময় গলায় কালো দাগ দেখার বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। জানাজার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত গৃহবধূ হলেন নাসরিন আক্তার (৩০)। তিনি পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামের দুলাল ব্যাপারীর স্ত্রী এবং উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের চরবাটামারা গ্রামের আবুল হোসেন ভূঁইয়ার মেয়ে।

পুলিশ জানায়, গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথমে দাবি করেছেন, গতকাল রোববার রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে নাসরিন মারা গেছেন। পরে তাঁরা দাবি করেন, নাসরিন আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে নাসরিনের বাবা আবুল হোসেন ভূঁইয়ার দাবি, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে হৃদ্‌রোগে মৃত্যুর কথা বলে লাশ দাফনের চেষ্টা করছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মাহবুব হোসেন জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামে গৃহবধূ নাসরিন আক্তারের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু লাশ গোসলের সময় গলায় কালো দাগ দেখে স্থানীয় নারীদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানাজাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় নাসরিনের স্বামী কিংবা শ্বশুর কাউকে পাওয়া যায়নি।

নাসরিনের বাবা আবুল হোসেন ভূঁইয়া জানান, গতকাল রাত ১২টার পরে নাসরিনের শ্বশুর কাসেম ব্যাপারী তাঁদের মোবাইল ফোনে জানান, নাসরিন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রাতেই জামাতার বাড়ি গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে পান তিনি। আজ বেলা ১১টার দিকে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। ১১টার দিকে পুলিশ পৌঁছালে নাসরিনের শাশুড়ি জানান, নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাতে হৃদ্‌রোগের সংবাদ এবং পুলিশ দেখে আত্মহত্যার কথা বলায় সন্দেহ দেখা দেয় তাঁর। আবুল হোসেন ভূঁইয়ার দাবি, নাসরিনকে হত্যা করে ভিন্ন কথা বলে লাশ দাফনের চেষ্টা করা হয়েছিল।

নাসরিনের শাশুড়ি আমেনা বেগম জানান, তাঁর ছেলে দুলালের সঙ্গে ঝগড়া করে রাতে নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। থানা-পুলিশের ঝামেলা এড়াতে বিষয়টি গোপন করে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কথা সবাইকে জানানো হয়েছিল।

এ ব্যাপারে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ গোপন করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেছিলেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ শিশু ঢাকায় খাবার হোটেলে কাজ করছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি

‎সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার শিশুকে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রেলওয়ে কলোনির একটি খাবার হোটেল থেকে এদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

‎শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অধিযাচনপত্রের (রিকুইজিশন) ভিত্তিতে শাহজাহানপুর থানার একটি দল গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেলওয়ে কলোনির একটি হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই হোটেল থেকে চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

‎পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুরা জানিয়েছে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পথ হারিয়ে ফেলে। এরপর ছয় দিন ধরে বিভিন্ন হোটেলে বয়ের কাজ করছিল।

‎উদ্ধারের পর শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান আহমদ (৩০) জকিগঞ্জ উপজেলার নিদনপুর গ্রামের খছরুজ্জামানের ছেলে।

র‍্যাব-৯ জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার বারহাল এহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে জকিগঞ্জ থানাধীন ফারুক মিয়ার পরিত্যক্ত আদিম ব্রিকস ফিল্ডে ঘুরতে যাওয়ার পর আসামিরা গোপনে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর ছবি তোলে। আসামিরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখায় এবং অনৈতিক প্রস্তাব করে। ভিকটিম তাতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে ও তার বন্ধুকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ব্রিকস ফিল্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বন্ধু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখায় এবং তাকে আটকে রাখে।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং ভিকটিমকে ওই বিষয়টি কাউকে বা পুলিশকে না জানানোর জন্য হত্যার হুমকি দেয়।

বিষয়টি ভিকটিম ভয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু পরে অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শাকের আহমদকে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ আরও জানান, পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিকে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব-৯-এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্যসামগ্রী।

লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জব্দ করা পণ্যগুলো আইনিপ্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত