Ajker Patrika

ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছে আরাকান আর্মি, তাদের হাতে আটক আছে ১০৪ জেলে: বিজিবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের সৈকতসংলগ্ন উর্মি রেস্টহাউসের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবির প্রেস বিফ্রিং। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের সৈকতসংলগ্ন উর্মি রেস্টহাউসের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবির প্রেস বিফ্রিং। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমারের রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তাদের মাধ্যমে ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসছে। এতে তারা রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে। আজ সোমবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমদ এসব কথা জানান। কক্সবাজার শহরের সৈকতসংলগ্ন বিজিবির উর্মি রেস্টহাউসের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে এই প্রেস ব্রিফিং হয়।

বাংলাদেশের অসংখ্য নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে ‘রহস্যজনকভাবে’ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যাতায়াত করছে বলে জানান কর্নেল মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। যে পদক্ষেপে রাডার থেকে তথ্য সংগ্রহ, ড্রোন, নাইট ভিশন ডিভাইস এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই প্রযুক্তিতে ধরা পড়ছে বাংলাদেশের নৌযানের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমার যাতায়াতের দৃশ্য।

বিজিবির পর্যবেক্ষণের তথ্য দিয়ে রামু সেক্টর কমান্ডার জানান, নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের রুট তৈরি হয়েছে। এসব রুটে ৮০ শতাংশ মাদক পাচার হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে আসা এসব মাদকদ্রব্য শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে, তা নয়, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত সমুদ্র উপকূল ও নাফ নদী থেকে আরাকান আর্মির হাতে ২২৮ জন জেলে আটক হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় ১২৪ জন জেলেকে ফেরত আনা হয়েছে। এখনো ১২টি ট্রলারসহ ১০৪ জন জেলে আরাকান আর্মির হাতে আটক রয়েছেন। তাঁদের ফেরত আনতে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, ‘আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের অফিশিয়াল কোনো যোগাযোগ নেই। নানা মাধ্যমে কৌশলে যোগাযোগ করতে গিয়ে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সীমান্ত নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালান রোধে বিজিবির সদ্যস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। বিজিবির অভিযানে গত ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই মাসে ২৮ লাখের বেশি ইয়াবা ট্যাবলেট, প্রায় ১ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ৮৮ কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। এ সময়ে সীমান্ত দিয়ে আসা একে-৪৭ রাইফেল, এসএলআর, জি-৩ রাইফেলসহ ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল গুলিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে রামু সেক্টর কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাছ ধরার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশের পর আটক হয়েছে। আমাদের জলসীমায় এসে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সাহস আরকান আর্মির নেই।’

সাগরপথে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির সক্ষমতা না থাকলেও প্রতিনিয়ত গোয়েন্দা তথ্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় জনসচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং পরিচালনা করা হচ্ছে। জনমত তৈরি ও জেলেদের নাফ নদীতে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম না করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রামু সেক্টরের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাবশালী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ গ্রেপ্তার

বিহার নির্বাচন: লড়বেন না প্রশান্ত কিশোর, ‘নিশ্চিত পরাজয়’ দেখছেন বিজেপি জোটের

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত