Ajker Patrika

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার

পর্যটন মৌসুম শেষের পথে দেখা নেই বিশেষ ট্রেনের

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটনের ভরা মৌসুম। এই সময়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে ঘুরতে বের হন; বিশেষ করে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—দুই মাসে পর্যটকের বেশ চাপ থাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাতায়াত সুবিধা নিয়ে। ভ্রমণপিয়াসি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে পর্যটন মৌসুম ঘিরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে বিশেষ ট্রেন চালুর কথা ছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ আশার মুখ দেখেনি। তবে বিশেষ ট্রেন বা বাড়তি কোচ চালুর সম্ভাব্যতা দেখতে আগামী সপ্তাহে সরেজমিনে আসবেন রেলসচিব।

কক্সবাজারের হোটেল মোটেল মালিকেরা জানান, পর্যটন মৌসুমে প্রতিবছর কক্সবাজারে ভিড় জমে লাখো মানুষের। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে বিশেষ ট্রেন বা কোচের বেশ চাহিদা রয়েছে।

কিন্তু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এই রুটে বাড়তি বিশেষ ট্রেন বা কোচ চালু করতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। এ জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের বাসিন্দা ফখরুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বার্ষিক পরীক্ষা শেষে তিন সন্তানকে নিয়ে ট্রেনে করে কক্সবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা তাঁর। কয়েকবার চেষ্টা করেও টিকিট করতে না পারায় শেষমেশ কক্সবাজার ভ্রমণ বাতিল করতে হয় তাঁকে।

জানা গেছে, রেলের নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি ঈদ, পূজা, ইজতেমাসহ ছুটির মৌসুমে যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় এই রুটে বিশেষায়িত ট্রেন পরিচালনা করে থাকে রেলওয়ে। এ ছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত কোচ যুক্ত করেও যাত্রীদের চাহিদা মেটানো হয়। এতে বিশেষ পরিস্থিতিতে সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি বাড়তি আয়ও হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সেবা প্রতিষ্ঠানটির। তবে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজার রুটে বিপুল চাহিদা থাকলেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি রেলওয়ে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ সুবক্তগীন বলেন, রেলওয়ের ইঞ্জিন-সংকটের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাড়তি ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। জিএম আরও জানান, এ রুটে বিশেষ ট্রেন বা বাড়তি কোচ চালুর সম্ভাব্যতা সরেজমিনে দেখতে আগামী সপ্তাহে আসবেন রেলসচিব। ১৫ থেকে ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সফর করবেন তিনি। এ সময় তিনি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুট সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। এরপর বিশেষ ট্রেন চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। যেসব রুটে যাত্রীর চাহিদা কম, সেসব রুট থেকে কিছু ট্রেন এনে কক্সবাজার রুটে চালানো হবে বলে জানান মোহাম্মদ সুবক্তগীন।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে যাত্রীসেবার জন্য কক্সবাজার রেল-সংযোগ করা হয়েছে। পর্যটন মৌসুমে ট্রেন পরিচালনা না করলে কখন করা হবে?’

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়ে পরিচালিত ২৭টি বিশেষায়িত ট্রেনে মোট যাত্রী পরিবহন হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯৫ জন। এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বেশি।

চাহিদার ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলতি বছরের ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর এবং ২৩ থেকে ২৭ অক্টোবর—দুই দফায় আটটি করে মোট ১৬টি বিশেষায়িত ট্রেন পরিচালনা করেছিল রেলওয়ে। এতে ৭ হাজার ২১৬ জন যাত্রী পরিবহন করে ১ কোটি ১৪ লাখ ৯১ হাজার ১১৪ টাকা আয় হয়।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘পর্যটক মৌসুমে বিশেষ ট্রেন চালু করা হলে পর্যটকদের কষ্ট কমে। অনেকে দূরদূরান্ত থেকে আসেন। তাঁরা ট্রেনে স্বস্তিবোধ করেন। এ বিষয়ে রেলওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত ট্রেন চালুর জন্য তারা আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু পরে আর চালু করেনি।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, হোটেল-মোটেল জোনে তারকা মানের হোটেলসহ নানা ক্যাটাগরির ৫ শতাধিক হোটেল রয়েছে। এসব আবাসনে দৈনিক ১ লাখ ৩০ হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ গত বছরের নভেম্বর মাসে উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করে কালুরঘাট সেতু মেরামত করা হয়। এরপর ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তনগর ট্রেন চালু হয়। তবে ইঞ্জিন, কোচ ও লোকবলসংকট দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চালু হয়নি। পরে অবশ্য ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বরাদ্দ রাখা হয়। জানুয়ারিতে চালু হয় আরেকটি আন্তনগর ট্রেন। এ ছাড়া চলতি বছরের এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে একটি বিশেষ ট্রেন চলে। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে মোট তিনটি ট্রেন কক্সবাজার আসা-যাওয়া করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আদালত থেকে পালানো আসামি গ্রেপ্তার, ৭ পুলিশ প্রত্যাহার

বগুড়া প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার শাহীন। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার শাহীন। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় আদালতে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতের হাজত খানা থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় কৌশলে হাত কড়া খুলে পালিয়ে যায় শাহীন ওরফে মিরপুর (১৯) নামের এক আসামি। তিনি বগুড়া শহরতলীর সাবগ্রাম (চানপুর) গ্রামের নুর আলমের ছেলে।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে শহরের থানারোডে পকেট মারার সময় জনগন শাহীনকে আটক করে মারধর করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। ভুক্তভোগীদের কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় সদর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার শাহীনকে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর শাহীনকে আদালত হাজত খানায় রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬ টার দিকে হাজত খানা থেকে প্রিজনভ্যানে ওঠানোর সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পুলিশের সামনেই দৌড়ে পালিয়ে যায় শাহীন।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে হাজত খানার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম হোসেন, সহকারি টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মাসুদ রানা, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল জলিল, শহীন মিয়া ও গোলাম মোস্তফাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরতলীর সাবগ্রাম এলাকা থেকে শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভুট্টাখেতে অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার হোমনায় শান্ত দাস (২২) নামের এক অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে হোমনা পৌর এলাকার কারারকান্দি-বাহেরখোলা সড়কের পাশের একটি ভুট্টাখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শান্ত দাস হোমনা উপজেলার বিজয়নগর গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে।

নিহত শান্তর বাবা অরুণ চন্দ্র দাস জানান, শান্ত দাস গতকাল বৃহস্পতিবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে তিনি বাড়ি যাননি। আজ সকালে ভুট্টাখেতে তাঁর লাশ দেখতে পেয়ে লোকজন খবর দেন। তাঁর ধারণা, ছেলের অটোরিকশা ছিনতাই করতে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কালিয়াকৈরে যুবককে গাছে বেঁধে হাতুড়িপেটা, আটক ১

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
যুবককে গাছে বেঁধে মারধর। ছবি: সংগৃহীত
যুবককে গাছে বেঁধে মারধর। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনায় কুরবান আলী নামের এক মোটর মেকানিককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টান কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে আটক ব্যক্তিকে আজ শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, দিনদুপুরে ওই যুবককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। তবে হাতুড়িপেটার শিকার ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।

অভিযুক্ত ব্যক্তি দিনাজপুর সদর উপজেলার বিশ্বনাথপুর এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে কুরবান আলী (৩২)। প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি কালিয়াকৈরের চাপাইর এলাকায় বিয়ে করে বসবাস শুরু করেন। তিনি একটি বাসের মালিক বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, গত বুধবার ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় একটি নারকেলগাছের সঙ্গে যুবকটিকে ‘চোর’ বলে বেঁধে রাখা হয়। এরপর হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ২৫ থেকে ৩৫ মিনিট তাঁকে একইভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষ মোবাইলে ছবি ও ভিডিও তুললেও কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। পরে আহত যুবককে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়, কিন্তু এর পর থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, হাতুড়িপেটার ঘটনায় আহত যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে আজ গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হবে।

কুরবান আলীর কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যের বরাতে ওসি বলেন, কুরবান আলীর একটি বাস রাজধানী পরিবহন কোম্পানির অধীনে চলাচল করে। গাড়িটির মূল চালক কিছুদিন আগে হাতুড়িপেটার শিকার ওই যুবককে বদলি হিসেবে চালাতে দিয়েছিলেন। এই সুযোগে তিনি ঢাকার মিরপুরে নিয়ে বাসটি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে মূল চালক সেটি উদ্ধার করে মালিককে বুঝিয়ে দেন। বদলি চালক গতকাল এলাকায় গেলে তাঁকে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পেটান কুরবান আলী। মারধরের শিকার যুবকের বাড়ি উত্তরবঙ্গে। তবে মূল ভুক্তভোগীকে পেলে এর সত্যতা জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশু সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশু সাজিদকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু সাজিদকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সকালের আলো ফোটার আগেই কোয়েলহাট পূর্বপাড়া থমকে যায়। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসে শিশু সাজিদের জানাজার খবর। দুদিন ধরে শোকে স্তব্ধ গ্রামের বাতাস আরও ভারী হয়ে ওঠে এ ঘোষণায়। হাজারো মানুষ চোখের পানি ফেলেন তাকে দেখতে এসে।

সকাল সাড়ে ১০টায় গ্রামের মাঠে জানাজা হয় দুই বছরের শিশু সাজিদের। এরপর দাফন করা হয় পাশের গোরস্তানে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার এ গ্রামের রাকিবুল ইসলামের শিশুসন্তান সাজিদ গত বুধবার দুপুরে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় মাটির ৫০ ফুট গভীর থেকে।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে জানাজা শেষে তাকে নেককিড়ি কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে সবাই এক পথে চলতে থাকেন সাজিদের বাড়ির দিকে।

সাজিদের ছোট দেহটি জানাজার জন্য মাঠের দিকে নিয়ে যাওয়ার আগে বাড়িতে আবার কান্নার ঢেউ ওঠে। স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ, বিশেষ করে তার মায়ের আকুতি মানুষকেও কাঁদায়। তিনি বারবার ছুটে যেতে চাইছিলেন সন্তানকে ছুঁয়ে দেখতে, জড়িয়ে ধরতে, কিন্তু তাঁকে ধরে রেখেছিলেন আশপাশের নারীরা। তবে থামাতে পারেনি তাঁর বুকফাটা আর্তনাদ।

গ্রামের মাঠে জানাজায় মানুষের ঢল নামে। কষ্ট নিয়ে গ্রামের বৃদ্ধ, তরুণ, স্কুলপড়ুয়া শিশু—সবাই এতে অংশ নেয়। জানাজার নামাজ পড়ান কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। পরে গোরস্তানে মরদেহ দাফন করা হয়। দাফন শেষে সবাই ছোট্ট শিশুটির জন্য হাত তুলে দোয়া করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত