Ajker Patrika

‘আমি তীব্র যন্ত্রণা ছাড়া কিছুই অনুভব করতে পারছিলাম না’ 

আকাশ আহমেদ, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২১, ০৮: ৫৪
‘আমি তীব্র যন্ত্রণা ছাড়া কিছুই অনুভব করতে পারছিলাম না’ 

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী ও রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ। এখনও শরীরে তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন ৪০টি গ্রেনেডের স্প্রিন্টার। গ্রেনেডের ক্ষত ও সেদিনের দুঃসহ কষ্টের দিনগুলো তিনি এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারেন না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনি অন্যতম রাজসাক্ষী।

তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এমরুল করিম রাশেদ জানান, গ্রেনেড হামলার মুহূর্তে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অস্থায়ীভাবে ট্রাকের ওপর তৈরিকৃত মঞ্চের পাশেই ছিলেন। ঘাতকদের গ্রেনেড হামলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিসহ শেখ হাসিনার পাশে থাকা সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতারা মানব দেয়াল রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর শরীরে অসংখ্য গ্রেনেডের স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তৎকালীন নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট রুবিনা মিরা ও অপর এক নেত্রীর সহযোগীতায় তিনি প্রথমে ঢাকার সিকদার মেডিকেলে ভর্তি হন। সেখানে আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৯ আগস্ট তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বেলজিয়ামে যান। বেলজিয়ামে কয়েকটি স্প্রিন্টার বের করতে পারলেও এখনও ৪০টি স্প্রিন্টার শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত ড. হাছান মাহমুদকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ২১ আগস্টের মর্মান্তিক স্মৃতির কথা স্মরণ করতে গিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যে ট্রাকে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন সেই ট্রাকের পাশেই আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই নেত্রীকে বাঁচাতে মানবদেয়াল তৈরি করেন নেতৃবৃন্দরা। এ সময় দেখি আমার সমস্ত শরীর রক্তে ভিজে গেছে। শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। রাস্তায় লুটিয়ে পড়ি। অ্যাডভোকেট রুবিনা মিরাসহ কয়েকজন আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যান। তখনও আমার সারা শরীরে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অনেকক্ষণ বিনা চিকিৎসায় ফ্লোরেই পড়েছিলাম। ডাক্তাররা যখন আমার চিকিৎসা শুরু করেন, তখন আমি তীব্র যন্ত্রণা ছাড়া কিছুই অনুভব করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, মৃত্যু আমার কাছে চলে এসেছে। একটু পরেই হয়তো আমি মরে যাবো।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনায় আমার শরীরে কমপক্ষে ২ শতাধিক স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়। হাসপাতালে আমার দুই মাসের চিকিৎসা চলে। সেখানে একাধিক অপারেশন করে দেড় শতাধিক স্প্রিন্টার শরীর থেকে বের করা হয়। তবে এখনও শরীরে ৪০টি স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়ে আছে। যা একাধিক অপারেশনেও বের করা সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত