Ajker Patrika

অবৈধ বালু উত্তোলন: আ.লীগ নেতাসহ ৭ জনের পরোয়ানা গায়েব

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ৪৭
অবৈধ বালু উত্তোলন: আ.লীগ নেতাসহ ৭ জনের পরোয়ানা গায়েব

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলায় সাতজন বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানার কোনো খোঁজ মিলছে না। আদালত সূত্র জানায়, মামলার আসামিদের পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। অপর দিকে থানা-পুলিশ জানায়, এসব আসামির পরোয়ানা থানায় পৌঁছেনি। থানার রেজিস্ট্রারেও তাঁদের নাম নেই।

এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত দিনে আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ার কথা। আসলে আমরা মামলা করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আদালত পরোয়ানা জারি করেন, পরে বিচারকার্য পরিচালনা করা হয়।’ 

মাহবুবুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই মামলায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আসামি ছিলেন।’

জানা যায়, চকরিয়া পৌরসভার দিগরপানখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ এলাকায় মাতামুহুরি নদী থেকে তিন লাখ ঘনফুট অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারে কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট দল সেখানে অভিযান পরিচালনা করে দুটি ট্রাক জব্দ করে। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট দলের ওপর হামলা চালিয়ে ট্রাক দুটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের তৎকালীন পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

মামলার আসামিরা হলেন মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে এরশাদ, মৃত নুরুল কবিরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (চেয়ারম্যান), মৃত আবুল খায়েরের ছেলে জহির উদ্দিন, মো. শফি মেম্বার, তাঁর ছেলে মো. হেলাল, মাহমুদুল্লাহ ও গোলাম কাদেরের ছেলে মো. রফিক।

এর মধ্যে গিয়াস উদ্দিন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য করায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ জানান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ এক বছর তদন্ত করে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর আদালতে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলাটি গৃহীত হয়। ওই মামলার সাতজন আসামির পরোয়ানা জারি করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহিদ হোসাইন।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্রোকি পরোয়ানাও জারি করে আদালত। ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মাহমুদুল হাসান পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের কাছে প্রেরণ করেন। সাড়ে চার মাস পার হলেও আসামিদের পরোয়ানা থানায় পৌঁছেনি।

এ বিষয়ে জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ার উল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে প্রসেস ও স্মারকমূলে থানায় পাঠানো হয়েছে।’ একই আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি এখন বলা যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারব।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার কোনো ওয়ারেন্ট থানায় নথিভুক্ত নেই। বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজ নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার সরানো হলো জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

উদ্দীপনের ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সচিব মিহির কান্তির বিরুদ্ধে ৬ মামলা

ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি: প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই ইশরাককে মেয়র ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত