Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image
খুঁটির সঙ্গে যুবককে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে রহমত উল্লাহ (৩৮) নামের এক যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনের পর তাঁকে ১০ ফুট নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বাধ্য করা হয়।

গতকাল রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের কাজীর দিঘীরপাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নির্যাতনের সাড়ে ৪ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে জেলাব্যাপী নিন্দা শুরু হয়।

রহমত উল্লাহ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার চৌকিদার বাড়ির আহমদ উল্লাহর ছেলে।  তবে এই ঘটনার পর নির্যাতিত যুবক বা তার পরিবারের সদস্যদের কাউকে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

ভিডিওতে দেখা যায়, রহমত উল্লাহকে একটি সাইনবোর্ডের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বাঁধা হয়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন লাঠি দিয়ে ওই যুবককে পেটাতে দেখা যায়। একপর্যায়ে সুমন হোসেন নামে একজন এসে রহমত উল্যাহকে ১০ ফুট নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বলে। নাকে খত দেওয়া অবস্থায় পেছন থেকে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায় কয়েকজন যুবককে।  

১০ ফুট নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বাধ্য করা হয় যুবককে। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত
১০ ফুট নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বাধ্য করা হয় যুবককে। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

কাজিরদিঘীর পাড় বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল রোববার দুপুরে ওয়াদুদ হোসেন নামে বাজারের একজন মুদি দোকানদারের ক্যাশ বাক্স) থেকে টাকা চুরির চেষ্টা করে রহমত। এ সময় তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা তাকে বেধম মারধর করে। পরবর্তীতে আমি অভিযুক্তকে উদ্ধার করে ছেড়ে দিয়েছি।’

নাকে খত দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ঠিক হয়নি। কিন্তু ঘটনাটি এমন পর্যায়ে ছিল, আমি নাকে খত দেওয়ার বিষয়টি নিষেধ করতে পারিনি। কারণ সেখানে বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা ছিলেন। বরং আমি ঘটনাস্থলে যাওয়াতে অভিযুক্ত ছাড়া পেয়েছে।’

ব্যবসায়ী ওয়াদুদ বলেন, ‘রহমত উল্যাহ নামে ওই যুবক দোকানে প্রবেশ করে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা চুরি করার সময় জনতা ধরে ফেলে। তবে ওই সময় আমি দোকানে ছিলাম না। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করলে আইনগতভাবে তার বিচার হবে। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কাম্য নয়। এই ধরনের নির্যাতন এবং নাকে খত দেওয়ার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।’

এদিন সদর উপজেলার লাহারকান্দি সৈয়দপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে সাবেক যুবলীগ নেতা রাশেদ আলম দুই নারীকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। সেই ভিডিওও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত