Ajker Patrika

সীতাকুণ্ডে নয় ঘণ্টায় তিন খুন, গ্রেপ্তার ৩ 

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ২২
সীতাকুণ্ডে নয় ঘণ্টায় তিন খুন, গ্রেপ্তার ৩ 

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নয় ঘণ্টার মধ্যে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি খুনের ঘটনায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন কিশোরকে আজ সোমবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহতরা হলেন, সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি (গামরিতল) এলাকার মানিক কোম্পানির বাড়ির মৃত আফজা উল্লাহর ছেলে ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন (৩৫), সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর বড়ইতলা (ছিন্নমূল) এলাকার মো. সবুজের ছেলে ইমন (১৫) ও বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগর এলাকার ইউনিয়ন গ্রাম্য সরদার মো. নুর মোস্তফা ওরফে বজল (৫০)।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানান, গত রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মুদি দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন। সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চৌধুরীঘাটা এলাকা অতিক্রমের সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভাটিয়ারী বিএসবি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জঙ্গল সলিমপুরে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে ইমনকে (১৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সোমবার দুপুরে সীতাকুণ্ড থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছে তাঁর বাবা।

ইমনের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে জঙ্গল সলিমপুরে ইমনের সঙ্গে তাঁর বন্ধুদের কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তারা লাঠি দিয়ে ইমনের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ইমনকে নগরীর সাউদার্ন মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সীতাকুণ্ডের বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগর এলাকায় পূর্ববিরোধের জেরে তৌহিদুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীরা গ্রাম্য সরদার নুর মোস্তফাকে গুলি করে ও কুপিয়ে যায়। এই ঘটনার পর তাকে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পৃথক তিনটি খুনের ঘটনার মধ্যে দুটি খুন পারিবারিক বিরোধ ও বন্ধুদের মধ্যে মনোমালিন্যর কারণে হয়েছে বলে ধারণা করা হলেও অনেকটা রহস্য ঘেরা সোনাইছড়ির ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের খুনের ঘটনাটি।

বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের লালানগর এলাকায় গ্রাম্য সরদার নুর মোস্তফা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পূর্ববিরোধের কারণে সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবার। এদিকে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়ার সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নূর মোস্তফাকে বারৈয়ারঢালা ইউনিয়ন  বিএনপির সহসভাপতি দাবির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করেছেন।

তবে মোস্তফার ছেলে তাওসিফ ফেরদৌস তারেক আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁর বাবা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত তৌহিদুল ও তার বাবা নুর মোস্তফা আপন মামাতো-ফুপাতো ভাই। তাঁর বাবাকে হত্যার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁকে মোবাইলে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন তৌহিদুল।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তৌহিদুল ও নুর মোস্তফার মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ ছাড়া ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের জন্য তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিস হয়। সালিসে তাঁকে গ্রামে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়। যার কারণে নুর মোস্তফার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তৌহিদুল। সন্ধ্যা তাঁকে একা পেয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।

অন্যদিকে আলমগীর হোসেন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাঁর চাচাতো ভাই মাওলানা শাহাবুদ্দিন বলেন, আলমগীরের সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। সে দীর্ঘদিন প্রবাসী থাকার পর বাড়ি ফিরে এসে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করলেও তাঁর সঙ্গে থাকা নগদ নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন কিছুই নিয়ে যায়নি।

সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনির আহমদ বলেন, আলমগীর হোসেন চৌধুরীঘাটা এলাকায় একটি চায়ের দোকান চালাতেন। তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তিনি রাজনীতি করতেন না। রাস্তার পাশে পথচারীরা আলমগীরের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে ভাটিয়ারী বিএসবিএ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ইমনের বাবা মো. সবুজ জানান, তাঁর স্ত্রী চাকরি থেকে ঘরে ফেরার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইমন ২০ টাকা চেয়ে নিয়ে নাশতা করতে যায়। ৮টার পর সে বাসায় ফেরার পেছন থেকে গাছ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। আহত হয়ে অনেকক্ষণ সে ওই জায়গাতেই পড়ে ছিল। পরে লোকজন দেখে জানালে তাঁরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ইমনের ঝগড়া হয়েছিল। তারাই পরিকল্পিতভাবে ইমনকে গাছ দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, খবর পেয়ে পৃথক তিনটি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। গ্রাম সর্দার মোস্তফাকে পারিবারিক বিরোধে ও ইমনকে ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে। তবে আলমগীর হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পূর্ব বিরোধের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

ওসি বলেন, এক রাতে পৃথক তিনটি ঘটনা ঘটলেও এখনো মোস্তফা ও আলমগীর হোসেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে জঙ্গল সলিমপুরে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোর ইমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিরপুরে ‘বিবাহ বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের কালশী রোডে একটি কমিউনিটি সেন্টারে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, আরও দুটি ইউনিট সেখানে যাওয়ার পথে রয়েছে।

‎ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১০টা ২৭ মিনিটে কাজ শুরু করে। আগুন লেগেছে মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার ‘বিবাহ বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারের ছয়তলা ভবনের ছয় তলায়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের চারটি ইউনিট কাজ করছে। আরও দুটি ইউনিট পথে আছে।’

‎তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানছড়িতে ইউপিডিএফের হয়ে চাঁদা আদায়কারী আটক

পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি 
আটক সৈয়দ মাহবুব রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আটক সৈয়দ মাহবুব রহমান। ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের হয়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে সৈয়দ মাহবুব রহমান (৫৩) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানছড়ি সেনা সাব জোনের বিশেষ অভিযানে দমদম গ্রাম থেকে তাঁকে আটক করা হয়। আটক মাহবুব রহমান ওই গ্রামের মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে।

সেনা সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁর কাছ থেকে এক লাখ টাকা ও একাধিক চাঁদা আদায়ের রসিদ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহবুব স্বীকার করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফের পক্ষে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। পরে তাঁকে আইনগত ব্যবস্থার জন্য পানছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আটক সৈয়দ মাহবুব রহমানকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সেনা সূত্র আরও জানায়, পাহাড়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় বন্ধে অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং চক্রের অন্যান্য সদস্যের শনাক্তে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরগুনার আমতলীতে যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় শাহিনুর বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ নীলগঞ্জ গ্রামের কালু হাওলাদারের স্ত্রী।

জানা গেছে, আট দিন আগে কালু হাওলাদার জমি ক্রয় করতে বায়না করেন। জমি কিনার জন্য স্ত্রী শাহিনুরের কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। কিন্তু শাহিনুর বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে শাহিনুরের কলহ বাধে। স্বামী কালু হাওলাদার, ননদ রেবেকা বেগম ও ননদের স্বামী হানিফ মুসল্লি তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁরা শাহিনুরের চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেন। মারধর শেষে তাঁকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন। গৃহবধূর স্বজনেরা খবর পেয়ে আজ পুলিশে খবর দেন। পরে দুপুরে পুলিশ গিয়ে শাহিনুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।

গৃহবধূর বাবা হানিফ হাওলাদার বলেন, ‘জমি কিনতে আমার মেয়ের কাছে জামাতা তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে মেয়েকে মেরে ঘরে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

ভুক্তভোগী গৃহবধূ শাহিনুর বেগম বলেন, ‘২০১১ সালে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে যৌতুক দাবি করে আসছেন স্বামী। টাকা না দিলেই আমার ওপর নির্যাতন চালায়। গত এক সপ্তাহ আগে জমি কিনবে বলে আমার কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে আমার স্বামী, নুনুন্দা (ননদের জামাই) হানিফ মুসুল্লি ও ননদ রেবেকা বেধড়ক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

এদিকে যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করে কালু হাওলাদার বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকটি চর-থাপ্পড় দিয়েছি।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আহত নারীর চোখে যে সমস্যা হয়েছে, ওষুধ খেলে ভালো হয়ে যাবে, তবে সময় লাগবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাল্যবিবাহের অতিথি ইউএনও, জানতে পেরে খাবার না খেয়ে চলে গেলেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নেছারাবাদে সপরিবারে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে জানতে পারেন কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে; এরপর খাবার না খেয়ে ফিরে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। পরে কাজিও বিয়ে না পড়িয়ে চলে যান।

ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দৈহারী গ্রামে।

জানা যায়, বর শেখ মো. অনিক (২৩) জগন্নাথকাঠি গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে এবং কনে মোসাম্মৎ মুন্নি আখতার (১৬) দৈহারী গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে। শুক্রবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে উভয় পরিবার। বিয়ে অনুষ্ঠানে পরিবারসহ ইউএনও অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

জানতে চাইলে বিয়ে পড়াতে আসা কাজি মো. ইসহাক আলী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে জানানো হয় মেয়ের বয়স ১৮ বছর। পরে কনের প্রকৃত বয়স ১৬ জেনে আমি বিয়ে পড়াইনি। ইউএনও সাহেবও বিষয়টি জানার পর সপরিবারে না খেয়েই চলে যান।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল আমীন জানান, ‘বিয়েবাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। ইউএনও সাহেব সপরিবারে এসেছিলেন। কনের বয়স কম শুনেই তিনি এবং কাজি চলে গেলে আমি নিজেও ফিরে এসেছি। আমরা কোনো খাওয়াদাওয়া করিনি।’

এ বিষয়ে ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত অনুরোধে দাওয়াতে গিয়েছিলাম। কনের বয়স কম জেনে আইনগত ও নৈতিক দিক বিবেচনায় দাওয়াত না খেয়েই ফিরে এসেছি। পরে জানতে পেরেছি বিয়েটি আর হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত