Ajker Patrika

চট্টগ্রামে অর্ধ শতাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে অর্ধ শতাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়

চট্টগ্রামে অর্ধ শতাধিকেরও বেশি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। যাঁরা মূলত আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং এমনকি হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। এরা ইয়াবা-ফেনসিডিলসহ নানা মাদকদ্রব্য সেবন করছে। আধিপত্য বিস্তারে ব্যবহার করছে অবৈধ অস্ত্র। 

আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। এর আগে নগরীর চকবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘ডট গ্যাং’ নামে এক কিশোর গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব সদস্যরা। 

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘দেশে কিছু অপসংস্কৃতির প্রভাব ঘটেছে, তাঁর একটি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। অন্যান্য জেলার মতো চট্টগ্রাম মহানগরীতে কিশোর গ্যাং এর আধিপত্য রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কিশোর গ্যাংয়ের ওপর নজরদারি রাখা শুরু করি। এই পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৫০ এর অধিক কিশোর গ্যাং শনাক্ত করা হয়েছে।’ 

মাহবুব আলম বলেন, ‘এসব গ্যাং এর মধ্যে ‘ডট গ্যাং’ বা ‘সুপ্রীমেসি গ্যাং’ নামে একটিকে শনাক্ত করা হয়। যাঁদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও শেয়ার হয়ে থাকে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের ওপর কয়েক দিন ধরে নজরদারির পর এই গ্যাং এর প্রধানসহ সাতজনকে আটক করা হয়।’ 

র‍্যাব-৭ অধিনায়ক আরও বলেন, ‘দেড় বছর আগে এই গ্যাং তৈরি হয়। এই গ্রুপের আনুমানিক সদস্য সংখ্যা ৪০ জন। মারামারিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এই গ্রুপটি দ্বারা পরিচালনা হতো। গ্রুপটির বেশির ভাগ সদস্যই ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। এরা চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্বনামধন্য স্কুলের ছাত্র।’ 

তিনি বলেন, ‘আটকদের সবাই চট্টগ্রামের একটি কোচিং সেন্টারের নিয়মিত ছাত্র ছিল। সেখানে থেকে তাঁদের সবার সঙ্গে পরিচয়। একসঙ্গে চলাফেরা ও আড্ডা দেওয়া শুরু হয়। আড্ডা দেওয়ার সময় কথিত একটি গ্রুপ তাঁদের কাজ কর্মে বাধা দিতে থাকে। অনেক মারধরও করে। মূলত এখান থেকেই ‘ডট গ্যাং’ গ্রুপটির সৃষ্টি ও কার্যক্রম শুরু হয়। গ্যাং প্রধান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মকাণ্ডগুলো শেয়ার করতেন। এই গ্যাংটির বিরুদ্ধে একটি ফেসবুক আইডি খুলে তাঁদের বিভিন্ন অপকর্মের স্থির চিত্র এবং ভিডিও চিত্র ধারণ করে আপলোড করার অভিযোগ রয়েছে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সমাজের কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এরা চলে। মূলত তাঁদের কারণে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা বিপথে চলে যাচ্ছে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে এই কিশোর গ্যাংটিকে সহযোগিতা করে বিভিন্ন কাজে লাগায় কথিত বড় ভাইয়েরা।’ 

তিনি জানান, ‘র‍্যাবের প্রাথমিক তদন্তে কিশোর গ্যাং এর সঙ্গে তথাকথিত কিছু বড় ভাইদের বিষয়ে অনেক তথ্য পেয়েছি। এদের কেউ প্রভাবশালী, কেউ রাজনীতিবিদ। তবে যেহেতু তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তদন্ত শেষে পরে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত