Ajker Patrika

চবিতে একযোগে ১৬ জনের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন উপাচার্য 

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১১: ০১
চবিতে একযোগে ১৬ জনের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন উপাচার্য 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসন থেকে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষকসহ ১৮ পদে থাকা ১৬ জন একযোগে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে সবাই ব্যক্তিগত ব্যস্ততা উল্লেখ করলেও নেপথ্যের কারণ নিয়ে মুখ খুলেছেন উপাচার্য ও পদত্যাগকারীরা। 

মূলত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণেই তাঁরা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে উপাচার্য বলছেন, ‘ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করায় তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।’ 

রোববার দুপুরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রক্টরের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নতুন প্রক্টর ও দুজন সহকারী নিয়োগ দেয়। 

একযোগে পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে পদত্যাগকারী প্রক্টরিয়াল বডির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন, কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর এসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তাই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তাঁরা পদত্যাগ করেছেন। 

একযোগে ১৬ জনের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওরা যা বলছে (পদত্যাগীরা), সব মিথ্যা কথা। রবি (সাবেক প্রক্টর) ও শহীদ (সাবেক সহকারী প্রক্টর) আমার কথায় ৯ মার্চ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। ওরা বলছে আমাদের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সময় দেন, আমাদের কিছু কাজ বাকি আছে। আমি বলেছি, তোমরা উল্টাপাল্টা করবে কিনা? তারা বলছে করবে না। তারা সময় নিয়ে এটা করল। এটা আমি তিন মাস ধরে জানি। তবে বিশ্বাস ছিল রবি এমন করবে না। রবি জাপানে যাওয়ার আগে নিজেই বিকল্প খুঁজতে বলেছিল।’ 

শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমি বিকল্প তখনই খুঁজে নিয়েছি। আর আবাসিক শিক্ষকরাসহ যে পদত্যাগ করবে এটা আমি জানতাম। এটা আমাকে অনেক জায়গা থেকে বলেছে। তারা তিন মাস ধরে ডেমুনেস্ট্রেশন করতে চাইছে। তারা সবাই এক, ভিসি থাকুক না থাকুক তারা ঐক্যবদ্ধ। কোনো কোনো সহকারী প্রক্টর বলেছে, তারা রবি স্যারকে ওউন করে। এতই যদি ক্ষমতাবান হয়ে যায়, তাহলে তো অন্য চিন্তা করতে হয়। না হলে বিশ্ববিদ্যালয় চলবে কীভাবে? আমি তখন তাদের বলেছি, তোমরা তো ব্যস্ত হয়ে গেছ, তোমরা সিনিয়র হয়ে গেছ, তোমাদের গবেষণা করতে হয়, জাপানে যেতে হয়, তোমরা প্রক্টরিয়াল বডির পদটা ছেড়ে দাও, আমি নতুন করে গঠন করি। তারা রাজি হয়েছে।’ 

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আর তারা যেসব কথা বলছে সব ভোগাস। ওরা কোনো দিন কোনো সমস্যার কথা বলে নাই। তারা নিজেদের কিছু এজেন্ডা নিয়ে এসেছে। আমরা কিছু করেছি, কিছু করতে পারিনি। এগুলো সামগ্রিক এজেন্ডা নয়। এগুলো নিয়ে আমি এখন কিছু বলব না। কোথাও কোনো দুর্নীতি হয়নি। আমাদের প্রশাসনে কোনো দুর্নীতি করতে দেওয়া হয়নি।’ 

উপাচার্যের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রবিউল হাসান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব ছাড়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। উপাচার্য বিভিন্ন সময়ে এটা বলেছেনও। আমি আমার জায়গা থেকে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি করোনার সময় বেশ কিছু কাজ (গবেষণা) করেছি। সিটি করপোরেশনের মশক নিধনসহ আরও অনেক কাজ করেছি। দায়িত্ব পালন করার কারণে আমার গবেষণার কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। আমি জাপানে যাওয়ার আগেও দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছি। এর আগেও একবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম।’ 

তবে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে একযোগে পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাঁরা পদত্যাগ করেছেন, বিশেষ করে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা, তাঁরা উপাচার্যের সাড়ে তিন বছরের সব দুষ্কর্মের অংশীদার। তাঁরা বর্তমানে উপাচার্যের সঙ্গে তাঁদের স্বার্থের সংঘাতের কারণেই পদত্যাগ করেছেন। এই উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এর থেকে বেশি কিছু আশা করতে পারে না।’ 

হেলাল উদ্দিন নিজামী আরও বলেন, ‘যাঁকে নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সম্প্রতি মেরিন সায়েন্স ও ফিশারিজ বিভাগে একসঙ্গে চারটি বিজ্ঞাপিত পদের বিপরীতে ১৩ জন শিক্ষক নিয়োগের নেপথ্যে লিয়াজুকারী হিসেবে কাজ করেছেন। সুতরাং এর পুরস্কারস্বরূপ প্রক্টরের পদত্যাগের আধা ঘণ্টার মাথায় তাঁঁকে প্রক্টর করা হয়েছে বলে অনুমান করা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারী শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে ইবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি

ইবি প্রতিনিধি
ইবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাজিদ হত্যার বিচার ও নারী শিক্ষার্থীকে পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারী শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝিকে বরখাস্তসহ পাঁচ দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। দুই ঘণ্টার বেশি কর্মসূচি পালনের পরে বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করার সময় তাঁকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যার পর ১০৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত হত্যার বিচার হয়নি, কোনো খুনিও গ্রেপ্তার হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়সারা মনোভাব ও বিচারপ্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।

উপরন্তু, আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝি কর্তৃক সাজিদ আবদুল্লাহকে ‘কোথাকার কোনো মৃত পোলা, যা-ই হোক, সে তো চইলাই গেছে’ বলে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও কটূক্তির মতো লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে। তাঁর এমন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নৈতিক অধঃপতন ও বিচারবোধহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

এ সময় উপাচার্যের কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করে খুনিদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। সাজিদকে হেয়প্রতিপন্ন করা ও নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারী আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝিকে ন্যক্কারজনক ও যৌন হয়রানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অপরাধে বরখাস্ত করতে হবে। সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি হুমকি প্রদানকারীদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘কোনো শিক্ষক যদি এভাবে কাউকে অপমান করেন, তাহলে যেকোনো শিক্ষকের পক্ষ থেকেই আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমাদের কথা বলার অধিকার আছে, কিন্তু কাউকে গালি দেওয়ার অধিকার নেই। এ ধরনের বক্তব্য যেন কোনো শিক্ষক ভবিষ্যতে আর না দেন, সেই ব্যবস্থা করব। আমি যত দূর জানি, তিনি সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র পেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘আমি আল কোরআন বিভাগের সভাপতি হিসেবে শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহর জন্য বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে বিচার চেয়ে আন্দোলন করেছি। আমার অফিসে বসেই কেস এন্ট্রি করেছি। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে ভিসি, প্রো-ভিসি, ইবি থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু এতৎসত্ত্বেও, আমার এক ছাত্রের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমার অসাবধানতাবশত কিছু শব্দ চয়নে ভুল হয়েছে বলে আমি মনে করি। এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

প্রসঙ্গত, আজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি নাসিরউদ্দিন মিঝির একটি পুরোনো অডিও ভাইরাল হয়। এতে শোনা যায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ নারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। অডিওটি ভাইরালের পরে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ড. মিঝি নিঃশর্ত ক্ষমা চান সবার কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রিংকু রংদীকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মামলার পরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার রিংকু রংদী উপজেলার মাধুপাড়া গ্রামের সুপারসন চাম্বুগংয়ের ছেলে। তাঁরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।

আর ভুক্তভোগী কিশোরী (১৪) পূর্বধলা উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। সেখানকার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগীর পরিবার ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগে ফেসবুকে ইসলাম ধর্মাবলম্বী ওই ছাত্রীর পরিচয় হয় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী রিংকুর সঙ্গে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ২৭ অক্টোবর সকালে ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় যে, সে দুর্গাপুরে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছে। পরে রিংকু তাকে নিয়ে দুর্গাপুরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়ান এবং সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে থাকার প্রস্তাব দেন। এতে ওই ছাত্রী রাজি হয়ে সেখানে থেকে যায়। রিংকু নিজের শয়নকক্ষে ওই ছাত্রীকে থাকতে দেন। আর তিনি অন্য কক্ষে ঘুমাতে যান। রাত ১১টার দিকে কৌশলে রিংকু কক্ষে প্রবেশ করে ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন এবং ফোনে পরিবারকে বিষয়টি জানান।

পরদিন সকালে ওই ছাত্রীর মা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রিংকুর বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে বিকেলে রিংকুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযান চালিয়ে রিংকুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী কিশোরীকেও মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাই, বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে অপসো ফার্মার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশালে অপসো ফার্মার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালে অপসো স্যালাইন (ওএসএল) ফার্মা লিমিটেডের প্রায় ৫২০ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে একযোগে ছাঁটাই করা হয়েছে। আজ বুধবার ডাকযোগে শ্রমিকদের কাছে ছাঁটাইয়ের চিঠি পাঠানোর কথা জানায় কর্তৃপক্ষ।

ছাঁটাইয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর নগরীর বগুড়া রোডের ওএসএল ফার্মার সামনে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা।

এ সময় শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। পরে কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আগামী শনিবার সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে শান্ত হন শ্রমিকেরা। ছাঁটাই হওয়া সবাই কোম্পানির স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন।

শ্রমিকেরা জানান, কোনো কারণ ছাড়াই তাঁদের চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগের উপব্যবস্থাপক ও এইচআর বিভাগের ইনচার্জ।

তাঁরা আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবার আছে, সংসার আছে। এতগুলো পরিবারকে কোনো কারণ ছাড়া চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হলো। এখন এই পরিবারগুলো কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সংসার কীভাবে চলবে।’ নোটিশ প্রত্যাহার করে শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে যোগদানের সুযোগ না দিলে পুরো কোম্পানি অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিকদের পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ওএসএল ফার্মা লিমিটেডের বগুড়া রোডে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টে কর্মরত সব শ্রমিক-কর্মচারীকে অবহিত করা যাচ্ছে যে, কোম্পানির নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

এই অবস্থায় বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ২৬(৩) ধারার বিধান অনুযায়ী আগামী ১ নভেম্বর হতে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের সব শ্রমিক-কর্মচারীর চাকরি অবসান করা হলো। একই সঙ্গে বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী অবসানকৃত শ্রমিক-কর্মচারীদের চূড়ান্ত পাওনা আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অপসো স্যালাইন ফার্মা লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাড়া না পাওয়ায় কারও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে বাসদের বরিশাল জেলা সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, অপসো স্যালাইন তাদের একটি সেকশন বন্ধ করে ৫২০ জনকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের সঙ্গে বসে তাঁদের ন্যায্য অধিকার দিতে। কেননা, এভাবে হুট করে ৫২০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা অমানবিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুকসু গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রকাশ, প্রার্থিতার বয়সসীমা ২৮ বছর

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (কুকসু) গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৯টি ও হল সংসদে ৯টি পদে নির্বাচন হবে। প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ বছর এবং ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ খসড়া গঠনতন্ত্র প্রকাশ করা হয়।

খসড়া অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদে মোট পদ ২১টি। এর মধ্যে সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদ ছাড়া অন্য ১৯টি পদে সরাসরি নির্বাচন হবে। পদগুলো হলো সহসভাপতি; সাধারণ সম্পাদক; সহসাধারণ সম্পাদক; মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক; শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক; স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক; আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক; ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক; সাহিত্য-সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক; ক্রীড়া সম্পাদক; পরিবহন সম্পাদক; সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক; ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক (ছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত); পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক এবং চারজন নির্বাহী সদস্য।

সংরক্ষিত পদে পদাধিকারবলে সভাপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ।

এ ছাড়া হল সংসদে মোট পদ রয়েছে ১১টি। সেগুলো হলো–সভাপতি; কোষাধ্যক্ষ; সহসভাপতি; সাধারণ সম্পাদক; সহসাধারণ সম্পাদক; সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক; পাঠাগার সম্পাদক; ক্রীড়া সম্পাদক; স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং দুজন কার্যনির্বাহী সদস্য।

এর মধ্যে ৯টি পদে নির্বাচন হবে এবং অন্য দুটি পদের মধ্যে হলের প্রাধ্যক্ষ পদাধিকারবলে সভাপতি হবেন এবং আবাসিক শিক্ষক বা হাউস টিউটরদের থেকে একজন কোষাধ্যক্ষ হবেন।

কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রার্থিতার যোগ্যতা হিসেবে শিক্ষার্থীকে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত হতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বা ততধিক স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হবেন না। শিক্ষার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ২৮ বছর রাখা হয়েছে। প্রার্থিতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সান্ধ্যকালীন কোর্স যেমন, এমবিএ, ইএমবিএ, এমএড অথবা কোনো পেশাদার বা নির্বাহী বা বিশেষ মাস্টার্স কোর্স, অথবা এমফিল ও পিএইচডি বা সমমানের কোর্সসমূহ, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্সসমূহ, ভাষা কোর্সসহ এ ধরনের অন্যান্য কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের সদস্য হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশে বলবৎ কোনো আইন অনুসারে নিষিদ্ধঘোষিত কোনো সংগঠনের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত বা শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কোনো কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবেন।

এ বিষয়ে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এই খসড়া প্রকাশ করেছি এবং আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এই গঠনতন্ত্র নিয়ে তাদের মতামত জানাতে পারবে।

‘পাঁচ দিন পরে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে কোনো সংযোজন-বিয়োজন করা লাগলে করা হবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হবে।’

উল্লেখ্য, আগামী পাঁচ কার্যদিবস পর্যন্ত নিম্নোক্ত এই ([email protected]) ই-মেইল ঠিকানায় গঠনতন্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীরা যেকোনো মতামত জানাতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত