Ajker Patrika

বাপের বাড়িতেই শায়িত হলেন রাউজানের গৃহবধূ তাইরিন

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১: ১৫
Thumbnail image

রাউজানের সেই গৃহবধূ জাহেদা আফরিন ওরফে তাইরিনের মরদেহ তাঁর বাপের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায় শায়িত করা হয়েছে। আজ শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের সাপলেজা পাড়া জহির আহমেদ চৌধুরী বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়। তাইরিন রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের সাপলেজা পাড়ার প্রবাসী মো. ইউসুফের মেয়ে।

চার ভাই-বোনের মধ্যে তাইরিন তৃতীয়। তিনি পোমরা জামেউল উলুম মাদ্রাসা থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) শেষে রাঙ্গুনিয়া আলমশাহ পাড়া কামিল মাদ্রাসায় কামিল (এমএ) হাদিস বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমলার দিঘি এলাকার গণীর বাড়ি থেকে গৃহবধূ জাহেদা আফরিন তাইরিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই এলাকার মো. ইসমাইলের স্ত্রী। বিয়ের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় তাইরিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তাইরিনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও পরিবারের লোকজন বলছে পরিকল্পিত হত্যা। তাইরিনের ছোট ভাই মো. ইব্রাহিম বোনের স্বামী ইসমাইলকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘সে আমার বোনকে মেরে ফেলেছে। বাসররাতে আমার বোনকে অত্যাচার করেছে। জোরজবরদস্তি করেছে। ওই রাতেই সে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরদিন সকালে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শরীরে তিনটি সেলাই করতে হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় আমার বোন কতটা কষ্টে ছিল।’

তাইরিনের বড় বোন রাশেদা আফরিন বলেন, ‘আমার বোনকে আমাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে দেয়নি। এমনকি আমাদের বাড়িতেও আসতে দেয়নি। আসার কথা বললে নানা অজুহাত দেখাত। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি থাকলেও তাইরিনের স্বামী ইসমাইল একটিবারও যোগাযোগ করেনি। কেমন মানুষের সঙ্গে বোনকে বিয়ে দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থেকে কেউ তাইরিনকে দেখলে গেলে বোনের সঙ্গে ওদের ঘরের কেউ একজন সঙ্গে সঙ্গে থাকত। একা একটু কথা বলবে সে সুযোগ দিত না। বোনের স্বামী নেশাগ্রস্ত, মাতাল ছিল।’ 

এদিকে তাইরিনের স্বামী মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমার যা বলার রাউজান থানা-পুলিশকে বলেছি। ঘটনার দিনও বলেছি, আর কয়বার বলব? তাইরিন ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেন আত্মহত্যা করেছে, সেটি জানি না। আমাদের সঙ্গে কোনো কিছু হয়নি।’ 

এদিকে তাইরিনকে তাঁর বাপের বাড়ি পোমরা ইউনিয়নের সাপলেজা পাড়া জহির আহমেদ চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তাইরিনকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন। কান্নায় ভারী হয়ে উঠে ওই এলাকার আকাশ-বাতাস। তাইরিনের ফুফাতো ভাই মো. ফয়সাল বলেন, ‘তাইরিনের বাবা প্রবাস থেকে সন্ধ্যার দিকে দেশে এলে তাঁকে দাফন করা হয়।’ 

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূ তাইরিনকে বাপের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত