Ajker Patrika

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ, উপজেলা সভাপতিসহ আহত ১২

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ১২
Thumbnail image
রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে উপজেলা সভাপতিসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর ও মুন্সিরঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গোলাম আকবর খোন্দকার-সমর্থিত রাউজান উপজেলা ও পৌর বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মতবিনিময় সভা ছিল। সভা শেষে পরিষদ অফিস থেকে মাঠে নামলে সেখানে অবস্থানরত গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে সেখান থেকে সদরের মুন্সিরঘাটার দিকে দুই পক্ষ আলাদা মিছিল নিয়ে আসে। সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (গোলাম আকবর খোন্দকার-সমর্থিত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ রাউজানে যোগদান করা ইউএনওর সঙ্গে মতবিনিময় করি। ফেরার পথে কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের ওপর হামলা করে। তাতে আমাদের উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দীন চৌধুরীসহ ১০-১২ জন আহত হন। এখনো অনেকের খবর পাচ্ছি না।’

এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হামলাকারীরা নির্দিষ্ট কোনো দলের না, তারা পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি করে। যখন যে দল আসে, তারা সেই দলের হয়ে কাজ করে। দীর্ঘ ১৭ বছর তারা কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি (গিয়াস উদ্দিন কাদের-সমর্থিত) সাবের সুলতান কাজল বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে হামলা-মামলার শিকার হয়েছি, ঘরছাড়া হয়েছি। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ পুনরায় স্বাধীন হওয়ার পর এলাকায় আসি। দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহাবস্থান করা একটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপজেলা প্রাঙ্গণে আসে।’

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত
রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

সাবের সুলতান কাজল আরও বলেন, ‘আমাদের কিছু নেতা-কর্মী সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে উপজেলা প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ জানায়। তারা আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে পকেট কমিটি করে। পরে সে কমিটি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করে। এর প্রতিবাদ জানালে তাদের হামলায় আমাদের শহীদ, নবী, রিয়াজ, রাব্বিসহ পাঁচ-ছয়জন আহত হয়।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘নবগঠিত কমিটির ইউএনওর সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা ছিল। ফেরার পথে কী হয়েছে এখনো অবগত নই।’

এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ফোন ধরেননি।

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত
রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ বলেন, ‘বিএনপির ৪০ থেকে ৫০ নেতা-কর্মীর একটি গ্রুপ আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উপজেলা প্রাঙ্গণে আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং স্কাউটসের দুটি পৃথক প্রোগ্রাম চলছে। উপজেলা প্রাঙ্গণে কোনো সমস্যা দৃষ্টিগোচর হয়নি।’

জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর শুনেছি। তবে কোনো পক্ষ এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত