Ajker Patrika

‘যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে তাদের দেখলে আমি চিনব’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১৭: ২৪
‘যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে তাদের দেখলে আমি চিনব’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারানো স্বামীর পাশে বসে স্ত্রী নাহিদা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালে যখন আনা হয়েছিল তাকে অক্সিজেন ছাড়া অনেকক্ষণ রাখা হয়েছিল। আমার স্বামী তখন যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। আমরা বারবার অনুরোধ করার পরও অক্সিজেন লাগানো হয়নি। শেষ দিকে যখন অক্সিজেন লাগানো হয় তখন আমার স্বামী মারা যায়।’ আজ রোববার দুপুরে চমেক হাসপাতালে আজকের পত্রিকাকে এসব কথা বলছিলেন নাহিদা আক্তার।

শনিবার চমেক হাসপাতালে রাত ৩টায় চিকিৎসাধীন মো. ফরিদ (৪২) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। গতকাল শনিবার রাত ১২টা নাগাদ নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পাহাড়তলী রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদ এলাকায় হামলার শিকার হন ওই ব্যবসায়ী। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনেন।

ফরিদ পাহাড়তলী রেলওয়ে কলোনি এলাকায় একটি গাড়ি ধোয়ার দোকানের মালিক ছিলেন।

 ফরিদের স্ত্রী নাহিদা বলেন, ‘আমার স্বামীকে মারধর করছে এমন খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আমার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। অনেকগুলো লোক হাতে বাটন, ছুরি ও নানান অস্ত্র নিয়ে তাকে ঘিরে ধরে রেখেছে। তারা আরও মারতে চাইলে আমি সাথে সাথে গিয়ে আমার স্বামীকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করি। তা না হলে তারা তখনই আমার স্বামীকে মেরে ফেলত। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

এর আগে নাহিদা বলেন, ‘কাল রাতে আমার স্বামী চা খাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে একটি দোকানে গিয়েছিল। তার এক বন্ধু সাথে ছিল। পরে হঠাৎ আলো নামে এক যুবক ঘটনাস্থলে এসে ফরিদের সাথে ভালোমন্দ কথা বলে। সাথে সাথে মোটরসাইকেল নিয়ে চশমা ফারুকসহ আরও অনেকেই সেখানে আসে। তারা এ সময় ফরিদের বন্ধুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে সেই বন্ধু ফোন করে আমার স্বামীকে মারধরের বিষয়টি জানায়। আমি খবর শুনে বাসায় কাউকে কিছু না বলে দৌড়ে বাজারে গিয়ে স্বামীকে খোঁজাখুঁজি করি।’

ফরিদের স্ত্রী বলেন, ‘যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে তাদের দেখলে আমি চিনব। তারা চাঁদার জন্য আমার স্বামীকে খুন করেছে। তাদের আমি বিচার চাই।’ সেই সঙ্গে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. আরিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্যে যা পাওয়া গেছে তাতে মনে হয়েছে চাঁদা না দেওয়ার বিষয় নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তির একটি গাড়ি ধোয়ার দোকান ছিল। দোকানটির জন্য স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের পর স্থানীয় কিছু লোক ফরিদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। ফরিদ চাঁদা না দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ফরিদের ওপর হামলা হয়। পেটানোর পাশাপাশি ফরিদের বুকে ছুরিকাঘাতও করা হয়েছে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে ও বাকিদের শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত