Ajker Patrika

বৈরী আবহাওয়ায় জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল খালাস পিছিয়ে গেছে 

নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈরী আবহাওয়ায় জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল খালাস পিছিয়ে গেছে 

বৈরী আবহাওয়ায় পিছিয়ে গেল চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ (মাদার ব্যাসেল) থেকে জ্বালানি তেল খালাস। আজ রোববার সমুদ্রে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সরাসরি তেল খালাসে ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ (এসপিএম) প্রকল্পের পরীক্ষামূলকভাবে কমিশনিং শুরু করা যায়নি। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতে মহেশখালীতে মুরিং পয়েন্টে সৌদি আরব থেকে আসা ৮২ হাজার টন ক্রুড অয়েলবাহী (অপরিশোধিত তেল) একটি জাহাজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে তেল খালাসের কথা ছিল। এরপর পরিশোধিত তেলের জাহাজ আসলে দ্বিতীয় পাইপলাইনটিও কমিশনিং করা হবে। বর্তমানে খালাসের অপেক্ষায় থাকা জাহাজটি গভীর সমুদ্রে রয়েছে। 

প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে গভীর সাগর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার পাইপলাইন সাগরে নোঙর করা জাহাজ থেকে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে তেল নেওয়া হবে। পাইপলাইন কমিশনিং করার পর সেখানে থাকা হেজ, সার্কিট বাল্ব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর স্টোরেজ থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত পাইপলাইন কমিশনিং করা হবে। প্রথমে ক্রড অয়েল ও পরে ডিজেলে পাইপলাইন কমিশনিং করা হবে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী আগস্টে প্রধানমন্ত্রী এসপিএম প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। 

এর আগে ২০১৫ সালে পাইপলাইন বসানোর প্রকল্পটি (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) হাতে নেওয়া হয়। মোট চার হাজার ৯৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ইতিমধ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে সাত হাজার ১২৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এর মধ্যে চার হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে চীন সরকার। 

এ ছাড়া বিপিসি এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ৬০১ কোটি টাকা দিচ্ছে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে। প্রকল্পের অধীনে এক সেট এসপিএম-পিএলইএম, একটি ভাসমান ভয়া, ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন, এর মধ্যে ১৪৬ কিলোমিটার সাগরের তলদেশ দিয়ে এবং ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইন উপকূল দিয়ে, দুই লাখ ৮৮ হাজার ঘনমিটারের ছয়টি স্টোরেজ ট্যাংক, তিনটি ব্লক ভালব স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। 

চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কারিগরি তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে এসপিএম প্রকল্প। এতে পরামর্শক হিসেবে সহায়তা দিচ্ছে জার্মান ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইএলএফ। এসপিএম চালু হলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বছরে সাশ্রয় হবে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা। এখন ৪০ দিনের জ্বালানি তেল মজুতের সক্ষমতা থাকলেও এসপিএম চালুর পর তা আরও ১০-১৫ দিন বাড়বে। 

উল্লেখ্য, গভীর সাগর থেকে এক লাখ মেট্রিক টন তেলবাহী বড় জাহাজ থেকে তেল খালাসে সময় লাগবে মাত্র ২-৩ দিন। দেশে জ্বালানি তেল মজুতের সক্ষমতা বাড়বে ১০-১৫ দিন। কমবে তেল চুরি, সিস্টেম লসসহ নানা পরিবহন নৈরাজ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত