Ajker Patrika

নবান্ন উৎসব নেই ৬০ হাজার কৃষক পরিবারে

  • বন্যায় উপজেলার ১৮ হাজার ৪৪০ হেক্টর আমনের খেত নষ্ট।
  • কৃষি বিভাগ অসময়ে ৬ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দিলেও ভালো ফলন হয়নি।
মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

প্রতিবছর হেমন্তের এই সময়ে আমন ধান ওঠার পর কৃষকদের ঘরে ঘরে চলত নবান্ন উৎসব। চারদিকে খেত থেকে পাকা ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন কৃষকেরা। নতুন ধানে পিঠাপুলির আয়োজনে তাঁরা আনন্দমুখর থাকতেন। কিন্তু এ বছর নবান্ন উৎসব নেই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কৃষকদের।

চলতি বছরের আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ৬৬ হাজার কৃষকের খেতের আমন ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। একদিকে ঘরে খোরাকির চাল তুলতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের খাদ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে গবাদিপশুর খড়ের জোগান নিয়েও কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। যে মাঠে ফসল কাটা নিয়ে ব্যস্ততা ছিল, সেই মাঠ এখন বিরান ভূমির মতো।

যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ছয় হাজার কৃষককে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ঘরে ধান তুলতে পারবেন। তবে আমনচাষিরা বলছেন, তাঁরা বন্যাপরবর্তী কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি এবং অসময়ে ধান চাষ করায় ভালো ফলন পাচ্ছেন না।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগস্টের বন্যায় ১৮ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়। এতে ৪০০ কোটি টাকার বেশি লোকসানে পড়ে ৬৬ হাজার ৩২৮ কৃষক পরিবার। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় আমনের বীজতলা নষ্ট হয়। ক্ষতি পোষাতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় ছয় হাজার কৃষকের মধ্যে ধান ও সার বিতরণ করে। অথচ সেই প্রণোদনা বীজ ও সার কৃষকদের কাজে আসেনি। একাধিকবার ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় আমন ধান ফলাতে পারেনি ৬৬ হাজার ৩২৮ কৃষক পরিবার। তাই এবার নবান্ন উৎসব নেই এই পরিবারগুলোতে।

উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রান্তিক কৃষকদের বেশির ভাগ ফসলের মাঠ আগাছায় পূর্ণ। অথচ প্রতিবছর এমন সময় এসব মাঠে ফসল কাটার ধুম থাকে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে আরও জানা গেছে, এই উপজেলায় ১৮ হাজার ৪৪০ হেক্টরের মধ্যে মাত্র ১০ হাজার হেক্টরে আমন চাষ হয়েছে। তা-ও আবার আশানুরূপ ফসল পাওয়া যাবে না বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। এখনো বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের আবাদি জমিতে বন্যার পানি জমে আছে। আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চৌদ্দগ্রামের প্রায় ছয় হাজার কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজধান ও সার দেওয়া হয়।

আমনের বীজ দেওয়া হলেও এবার তা কাজে আসছে না। অসময়ে কৃষকেরা অন্য উপজেলা থেকে আমনের চারা এনে জমিতে রোপণ করলেও আশানুরূপ ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এবার লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

বাতিসা ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের মো. আমির হোসেন মজুমদার বলেন, বন্যার ক্ষতি পোষাতে কৃষিস্প্রসারণ দপ্তর থেকে ধান ও সার দেয়। কিন্তু বীজতলা তৈরীর পর ভারী বর্ষণে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রণোদনা কোনো কাজে আসেনি।

মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফেলনা গ্রামে কৃষক নজির আহমেদ বলেন, ‘আমি তিন হাজার টাকা খরচ করে অন্যের জমিতে বীজতলা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু আগস্টের বন্যায় সেই বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। পরে পানি নেমে গেলে আবার বীজতলা তৈরি করি। তখন একাধিকবার জলাবদ্ধতায় সেই বীজতলাও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এবার আমন চাষ করা সম্ভব হয়নি। ঘরে নতুন ধানও ওঠেনি।’

এদিকে প্রতিবছর আমনের খড় দিয়ে কৃষকেরা তাঁদের গৃহপালিত পশুর খাদ্যের জোগান দিতে পারলেও এবার আমন চাষ না হওয়ায় গোখাদ্যের সংকট সৃষ্টি হবে। এই নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

সোনাপুর গ্রামের কৃষক আবু তাহের বলেন, ‘প্রতিবছর আমনের খড়ে গৃহপালিত গরুর খাদ্যের জোগান হতো। আমার সাতটি গরু আছে। আমন চাষ না হওয়ায় এগুলো নিয়ে খাদ্যসংকটে পড়তে হবে।’

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জুবায়ের আহমেদ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ছয় হাজার কৃষককে ধান ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আবহাওয়া ঠিক থাকলে প্রায় ৬০ শতাংশ ধান কৃষকেরা গোলায় তুলতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রাহকদের বকেয়া না দিয়ে পালানোর চেষ্টায় কর্মকর্তারা, অবরোধ-বিক্ষোভ

শিপুল ইসলাম, রংপুর
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের রংপুর জোনাল অফিসে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকার বিমা পরিশোধ না করে অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন কর্মকর্তারা—এমন খবর পেয়ে গ্রাহকেরা দ্রুত অফিসে গিয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার মধ্যরাতে অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আসবাব ও দামি সরঞ্জাম বিক্রি করে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় স্থানীয় গ্রাহকদের। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে অফিসে গিয়ে মালপত্র আটক করেন এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহির জন্য অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকে অফিসের সামনে গ্রাহকের ভিড় করতে শুরু করে দুপুর গড়তেই জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোডে জামাল মার্কেটের সামনে অফিসের নিচে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গ্রাহকেরা। এ সময় অফিসের লকার, চেয়ার-টেবিল, আসবাবসহ একটি ট্রাক দেখা যায়। অফিস কক্ষে চারজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রংপুর বিভাগের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকারও বেশি বিমা দাবি এখনো পরিশোধ করেনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা টাকা না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।

রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের আট জেলায় ২৯ হাজার ৫৯৬ জন গ্রাহকের বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে, যার বিপরীতে ১২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকারও বেশি পরিশোধ বকেয়া রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ধরে শুধু আশ্বাসই পাচ্ছেন।

রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থান নেওয়া গ্রাহক নগরীর ভগিবালা এলাকার বৃদ্ধা আকলিমা বেগমের দুই বছর আগে বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা দীর্ঘদিন ঘুরেও পাননি। আক্ষেপ করে আকলিমা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, অনেক কষ্ট করে টাকা জমাইছি। সেই টাকা না দিয়ে অফিস নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বিমা কোম্পানি লোকজন। আমার কষ্টের টাকা আমি ফেরত চাই। খবর পেয়ে সবার সঙ্গে এখানে অবস্থান নিচ্ছি।’

আরেক গ্রাহক নগরের আদর্শপাড়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে ভালোর আশায় রিকশা চালিয়ে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে ১২ বছর ধরে টাকা জমিয়েছি। সেই টাকা না দিয়ে ফারইস্ট কোম্পানি অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালিয়ে যাচ্ছে। এই টাকা না পেলে পথে বসে যাব। আমার রক্ত-মাংস পানি করা টাকা আমি ফেরত চাই। এ জন্য আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।’

রাস্তায় বসে বিমার কাগজপত্র নাড়াচাড়া করছিলেন আর চোখ দিয়ে জল পড়ছিল হারাগাছ এলাকার সায়েম বাদশা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে যেন ভালোভাবে চলতে পারি, সেই আশায় বিমা করেছিলাম। না খেয়ে কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা করে জমিয়েছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে, কিন্তু এখনো টাকা পাইনি। সরকার কাছে দাবি আমাদের আসল টাকাটা যেন ফেরত নিয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে অস্ত্র-গুলিসহ ৪ নারী গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাসে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ চার নারীকে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার ভোর পর্যন্ত উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিতাস-অস্ত্র২
তিতাস-অস্ত্র২

গ্রেপ্তার নারীরা হলেন শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা (২৯), জসিমের স্ত্রী আমিনা (৩৭), জহিরের স্ত্রী জুবেদা (৩৩) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী শান্তি বেগম (৬০)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিতাস থানা-পুলিশের একাধিক টিম শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে ১টি বিদেশি রিভলবার, ৬টি গুলি, ১টি এলজি বন্দুক, ২টি পাইপগান উদ্ধারসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একই রাতে একই এলাকার আব্দুল কাদিরের বাড়িতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০টি সিসা কার্তুজ ও ৫টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিমলায় টিকা নিতে গিয়ে পিকআপের ধাক্কায় নানি-নাতনি নিহত

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলায় টিকা নিতে যাওয়ার পথে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় নানি তাঁর ১৪ দিনের নবজাতক নাতনিসহ নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের গয়াবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন ঘোড়ামারা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের শুটিবাড়ি বাজারসংলগ্ন এলাকার আব্দুস ছাত্তার খানের স্ত্রী মোছা. সূর্য খাতুন (৫৫) এবং তাঁর নাতনি সামিয়া আক্তার (১৪ দিন) একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে সূর্য খাতুন নাতনি সামিয়াকে নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি মালবাহী পিকআপ তাঁদের ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই নবজাতক সামিয়া মারা যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সূর্য খাতুনকে উদ্ধার করে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার পর পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

নিহত নবজাতকের স্বজনেরা বলেন, নানি তাঁর নাতনিকে নিয়ে টিকা দিতে গিয়েছিল। সকালবেলায় হাসিখুশি ছিল সবাই। কিন্তু মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল।

স্থানীয়রা জানান, ওই সড়কে বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। পিকআপের চালককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্টেশনমাস্টারের দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আক্কেলপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ‘আক্কেলপুরবাসী’র ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধশতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, খাদিজা খাতুন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সান্তাহার জংশনের দায়িত্বেও আছেন। স্থানীয় যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া এবং তাঁর মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের আক্কেলপুরে যাত্রাবিরতি বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁকে দ্রুত এখান থেকে অপসারণের দাবি জানান তাঁরা।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির সমন্বয়ক আব্দুর রউফ মাজেদ। বক্তব্য দেন পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম চপল, তিলকপুর ইউপির সদস্য মামুনুর রশিদ পিন্টু, কলেজশিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম তুহিন, মাসুদ চৌধুরী, ছাত্রদল নেতা আরমান হোসেন কানন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল, নওগাঁর বদলগাছী-পত্নীতলা এবং বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার যাত্রীরা এই স্টেশন ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে। চিলাহাটী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি পেলে মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। কিন্তু স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুনের মনগড়া প্রতিবেদনের কারণে তা বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে আক্কেলপুরের স্টেশনমাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমি চিলাহাটী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির বিরোধিতা করে কোনো মৌখিক বা লিখিত প্রতিবেদন দিইনি। ২০২৪ সাল থেকে সান্তাহার জংশনের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছি। এক বছর তিন মাসে কোনো যাত্রী আমার দ্বারা হয়রানির শিকার হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত