Ajker Patrika

অবৈধভাবে গরু প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির নজরদারি

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ৩ লাখ কোরবানির পশু। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ৩ লাখ কোরবানির পশু। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। জেলার বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ৩ লাখ কোরবানির পশু, যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সরবরাহ করা হবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও এ বছর জেলায় বেড়েছে খামারের সংখ্যা ও পশু লালন-পালন। হাটে ও খামারে ভালো দাম পাওয়ায় আশাবাদী খামারিরা। তবে ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ। প্রাণিসম্পদ বিভাগ আশ্বাস দিয়েছে, তারা খামারিদের পাশে থাকবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গরুর চাহিদা বরাবরই বেশি। এ বছর প্রায় ৩ লাখ গরু, মহিষসহ বিভিন্ন প্রজাতির কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে।

আরও এক সপ্তাহ পর শুরু হবে কোরবানির পশুর হাট। এরই মধ্যে খামারগুলোতে পশু মোটাতাজা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। হাটের পাশাপাশি খামার থেকেও শুরু হয়েছে বেচাকেনা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত কয়েক বছরে গো-খাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় এবং ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় খামার খাতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তবে এবার জেলায় খামারির সংখ্যা ও পশু পালনের পরিমাণ বেড়েছে। তাই এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে খামার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও খাদ্যের দাম কমিয়ে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ১ লাখ ৩৫ হাজার পশুর চাহিদার বিপরীতে নিবন্ধিত ১৩ হাজার ৫২২টি বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারে মোটাতাজা করা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ পশু। নতুন নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৫২২টি। প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ৬৬ হাজার ১০৪টি কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। প্রান্তিক খামারিদের হিসাব ধরলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের খামারি কামাল উদ্দিন বলেন, “করোনার সময় অনেক খামারি লোকসানে পড়েছিল। গরু বিক্রি করতে পারেনি। ফলে অনেকেই খামার বন্ধ করে দেয়। এবার তারা আবার খামার চালু করেছে। আমরা আশাবাদী, যদি ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায়, তাহলে খামারগুলো আবার ঘুরে দাঁড়াবে।”

তিনি আরও বলেন, “এখন হাটবাজারে ভালো দাম পাচ্ছি। খামার থেকে গরু নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। প্রতিদিন ক্রেতারা খামারে এসে বুকিং দিচ্ছেন, পছন্দমতো গরু বেছে নিচ্ছেন।”

দুটি খামারে ৫০টি গরু লালন-পালন করেছেন হাসানুল বান্না। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে ৩৫টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি পাচ্ছি। মাঝারি আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি। গত বছর ঢাকায় যেতে হয়েছিল, এবার আশা করছি এখানেই সব বিক্রি হয়ে যাবে।”

তিনি আরও জানান, “এখন ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এ দাম থাকলে গত বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।”

গোমস্তাপুর উপজেলার খামারি আতিকুর রহমান বলেন, “এবার জেলায় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি গরু লালন-পালন করা হয়েছে। বাইরে থেকেও ব্যাপারিরা গরু কিনতে আসছেন। তবে আমরা চাই, ভারতের গরু যেন বাংলাদেশে প্রবেশ না করে। এতে আমাদের ক্ষতি হবে, ঘুরে দাঁড়ানো বাধাগ্রস্ত হবে।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ৩ লাখ কোরবানির পশু। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় ৩ লাখ কোরবানির পশু। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মুনজের আলম মানিক বলেন, “মাঝখানে এই খাতে অনেক টানাপোড়েন ছিল। এখন বাজার পরিস্থিতি ভালো। দাম পাচ্ছি, নতুন খামার নিবন্ধিত হচ্ছে। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম এখনও বেশি। সরকার যদি ভর্তুকি দেয় এবং খামার ব্যবস্থাপনা উন্নত করা যায়, তাহলে খামারিরা লাভবান হবে, দেশও উপকৃত হবে।”

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, “ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

তিনি জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। আশা করা যায়, এবারের ঈদে খামারিরা ভালো দাম পেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনির-উজ-জামান বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। দু-একটি গরু এলেও আমরা সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলছি।”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাড়াশে কীটনাশকের দোকান থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র চুরি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রাতের আঁধারে সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র খোয়া গেছে মালিকের।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাস্তা বাজারে মেসার্স জিসা এন্টারপ্রাইজে এই ঘটনা ঘটে।

দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম দাবি করে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাই। সকালে এসে দেখি দোকানের পেছনের টিন কাটা। দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার কীটনাশক ও অন্য মালপত্র চুরি হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘চুরির বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আমি বিএনপি করে শ ম রেজাউলের আমলে মামলায় জেল খেটেছি। এমনকি আমাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে এযাবৎ কাজ করেছি।’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করে আবারও আলোচনায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে ভাই ও চাচাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আগে থেকেই সমালোচিত। অভিযোগ উঠেছে, ওই মামলায় রেহাই পেতে তাঁর ভাই ও চাচা ৫০ হাজার টাকা দিলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পাননি। তাঁরা এখনো ভুগছেন সেই ঘর পোড়ানোর মামলায়। বিতর্কিত মন্তব্য করে এখন তিনি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

সোহাগ মৃধার চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সোহাগ তার ভাইকে হয়রানি করত। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চুরির মামলায় ফাঁসায়। পরে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমি ও তার ভাই তৈমুর রেজার নামে মামলা দেয়। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও রেহাই দেয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী আমলে সোহাগ মৃধা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো, সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে তিনি জড়িত ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন তিনি বিএনপি পরিচয়ে সক্রিয় হয়েছেন।

জানতে চাইলে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সোহাগ মৃধা কেমন মানুষ, তা সবাই জানে। সে আমার বাবাকেও একসময় হয়রানি করেছে।’

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফকরুল আলম বলেন, ‘শুনেছি সোহাগ মৃধা আওয়ামী লীগ করতেন। এখন কীভাবে বিএনপি করলেন জানি না। কেউ নিজেকে বিএনপি বললেই সে বিএনপি হয়ে যায় না। তিনি আমাদের দলের কেউ নন।’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা বলেন, ‘আমি কাউকে মিথ্যা মামলা দিইনি। আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। ইউপি সদস্যদের নির্দিষ্ট দল থাকে না—যে সরকার আসে, তার হয়ে কাজ করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউয়াছড়া বন থেকে টহল দলের সদস্যের লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দায়িত্বরত মো. সিরাজ মিয়া (৭০) নামের এক বন টহল দলের (সিপিজি) সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের জানকিছড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার ডলুছড়া এলাকার বাসিন্দা।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সিরাজ মিয়া মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে লাউয়াছড়া বনের জানকিছড়া এলাকায় বন পাহারায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। আজ সকালে খবর পাওয়া যায়, লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে সিপিজি ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন বিভাগের সদস্যরা।

জানতে চাইলে লাউয়াছড়া বনের বনবিট কর্মকর্তা মারজুক হোসেন বলেন, ‘নিহত সিরাজ মিয়ার ডিউটি শেষ হয়েছিল ভোর ৫টার দিকে। সকাল ৬টার দিকে খবর পাই, তাঁর মরদেহ সড়কের পাশে পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে কোনো গাড়ির ধাক্কায় তিনি মারা গেছেন। মরদেহের পাশে গ্লাস ভাঙা টুকরো পাওয়া গেছে।’

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত