Ajker Patrika

বন্ধের পথে চাঁদপুরের একমাত্র সিনেমা হল ‘কাজলী’

মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ মে ২০২২, ১১: ৩১
বন্ধের পথে চাঁদপুরের একমাত্র সিনেমা হল ‘কাজলী’

দর্শকখরার কারণে চাঁদপুর জেলার একমাত্র সিনেমা হল ‘কাজলী’ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একসময় জেলায় আটটি সিনেমা হল থাকলেও এখন শুধু ‘কাজলী’ কোনোমতে টিকে আছে। বছরের পর বছর লোকসান গুনছে মালিকপক্ষ। যেকোনো সময় এটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

একসময় ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই ছবির নাম জানিয়ে মাইকিং করা হতো গ্রামগঞ্জে। ঈদের দিনসহ পরের কয়েক দিন ব্ল্যাকে ছাড়া টিকিট পাওয়া যেত না। ছবি দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শক ভিড় করত। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পরিবার নিয়ে আসত অনেকে।

কাজলী সিনেমা হলের নিয়মিত দর্শক রিপন কসাই বলেন, ‘হলে গিয়ে ছবি দেখা আমার শখ। জেলার মোট আটটি সিনেমা হলেই আমি ছবি দেখেছি। কিন্তু গত ১০ বছরে একবারও হলে যাইনি। ভালো ছবির পাশাপাশি সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো হলে মানুষ হলমুখী হবে।’ 

বন্ধ হয়ে যাওয়া একাধিক সিনেমা হলের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার চিত্রলেখা ও ছায়াবাণী হলই ছিল জেলার দর্শকদের পছন্দের তালিকায়। এসব হলে প্রতি শোতে ৪০০-৫০০ টিকিট বিক্রি হতো। অন্য সিনেমা হলগুলোতে দর্শকসমাগম কিছুটা কম হতো। তবে সেগুলোতেও প্রতি শোতে যথেষ্ট দর্শকের সমাগম ঘটত। মতলব দক্ষিণ উপজেলার দুটি সিনেমা হলে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ হাজার দর্শক বিনোদনের সুবিধা পেত। 

জানা গেছে, ২০১৫ সালে মতলব দক্ষিণ উপজেলার রাজমহল সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের পাশে রাজমহল সিনেমা হলটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। করোনার আগ পর্যন্ত চালু ছিল জেলা শহরের কোহিনুর সিনেমা হল। গত কয়েক বছর লোকসান হলেও কর্মচারীদের কথা মাথায় রেখে মালিকপক্ষ এটি চালু রাখে। কিন্তু করোনায় হল বন্ধ হলে তাঁরা অন্য পেশায় চলে যান। মালিকপক্ষ শিগগিরই হলটি ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করবেন। 

সরেজমিন কাজলী সিনেমা হলে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে কাজলী সিনেমা হলে চলছে শাকিব খানের অ্যাকশন ও রোমান্টিক ছবি ‘বিদ্রোহী’। দর্শক মাত্র ২০-২৫ জন। টিকিট কিনে কেবিনে ঘুমিয়ে আছেন এক দর্শক। নিয়মিত দর্শক না থাকায় আসন ধুলোয় ঢাকা পড়েছে। কিছু আসন ভেঙে গেলেও সংস্কার করা হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। 

কাজলী সিনেমা হলের মালিক স্বপন মিয়ার ভাই বলেন, ‘একটা আবেগের কারণে এখন সিনেমা হল চালাই। প্রতি মাসেই লোকসান হয়। অন্য ব্যবসা এরই মধ্যে শুরু করেছি। একটা সময় তো ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘রূপবান’-এর মতো সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হতো। ভালো ছবিগুলো দুই-তিন মাস চালানোর পরও দর্শকের কমতি ছিল না। 

হলের ক্যাশিয়ার আক্তার বলেন, ‘কাজলীতে একসময় চারটি শো চালানো হতো। দর্শক না থাকায় এখন দু-তিনটি চালানো হয়। হলটিতে ১০০ টাকা করে আটটি ভিআইপি সিট, ৮০ টাকা করে ২০ জনের কেবিন, ৭০ টাকা করে ৬০ জনের বেলকনি ও ৬০ টাকা করে ৮০ জনের প্রথম শ্রেণির আসন রয়েছে। গত কয়েক বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে।’ 

আক্তার আরও বলেন, ‘২৫ বছর আগে কাজলী হলে আচার ও চকলেট বিক্রি করতাম। এ দিয়ে সংসার চলত। বিশ্বস্ত হওয়ায় মালিকপক্ষ আমাকে নিয়োগ দেয়। দর্শক না থাকায় এখন হলের ক্যাশিয়ারের দায়িত্বে থেকেও সংসার চালানো যাচ্ছে না। আগে কাজলী হলে টিকিটের দাম ছিল ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা। তখন  টিকিট কেনার দর্শকদের লম্বা লাইনের কথা এখনো মনে পড়ে।’

অভিনয়শিল্পী ও সংগঠক শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব ও ভালো চলচ্চিত্র না হওয়ায় সিনেমা হলগুলো বিলুপ্তির পথে। সরকার হলের মালিকদের নানাভাবে প্রণোদনা দিয়ে এই সংস্কৃতিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। বেসরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় কম মূল্যে সিনেমা দেখানো গেলে মানুষ হলের দিকে ঝুঁকবে।’

চাঁদপুর জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ বলেন, ‘সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য চাঁদপুর উর্বর স্থান। এখানে সিনেমা হলের সংস্কৃতি বিলুপ্তির বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। সরকার এই শিল্পকে রক্ষা ও ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিলে আমরা সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠনগুলোকে সহযোগিতা করব। সরকার এই খাতকে গণমুখী করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আধুনিক হল নির্মাণ ও সংস্কারে কেউ এগিয়ে এলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে জুয়ার আসর থেকে গ্রেপ্তার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে গণশৌচাগারের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ, তাসসহ পাঁচ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল এই অভিযান চালায়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মুন্না (৪৮), মো. শামীম (২৮), মো. সাগর শেখ (৪২), মিলন সরকার (৩৭) ও মাহাবুল ইসলাম (৩৬)। তাঁরা সবাই রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে আরএমপির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জুয়া খেলার সময় নগদ টাকা, তাসসহ তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় জুয়া আইনে মামলা করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎গণপিটুনিতে ‘ছিনতাইকারীর’ মৃত্যু, গায়ে লবণ ছিটিয়ে উল্লাস

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে এলাকাবাসীর পিটুনিতে অজ্ঞাতনামা (৩৫) এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

‎পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুজন যুবক টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় এলাকাবাসী তাঁদের একজনকে আটক করলেও অপরজন কৌশলে পালিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী আটক যুবকের হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়।

একপর্যায়ে ছিনতাইকারী অভিযোগে মৃত যুবকের গায়ে লবণ দিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে। পরে মরদেহটি টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

‎স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় দৈনিক ২০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুজন যুবক বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এ সময় এলাকাবাসী তাঁদের আটক করলেও একজন পালিয়ে যান। পরে আটক অপরজনকে পিটুনি দেওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুর পর এলাকাবাসী শরীরে লবণ ছিটিয়ে দেন।

এ বিষয়ে ‎টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মৃত ওই যুবকের নাম-পরিচয় শনাক্ত করতে চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫২
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার পরিকল্পনা প্রায় এক মাসে আগেই করেছিল তাঁর ছাত্রী ও তার বন্ধু মাহির রহমান। মাহিরের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জোবায়েদ। তবে মৃত্যুর আগে জোবায়েদ তার ছাত্রীর কাছে শেষ মুহূর্তে বাঁচার আকুতি জানায়। এ সময় জোবায়েদকে ছাত্রী বলে, ‘তুমি না সরলে আমি মাহিরের হতে পারব না’। এর কিছু সময় পরই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান জোবায়েদ।

এই ঘটনায় ছাত্রী তার বন্ধু মো. মাহির রহমান ও তাঁর বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‎

আজ ‎মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন নজরুল ইসলাম ও ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী। ‎

‎অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মাহির একই ভবনে ভাড়া থাকতেন। মাহির ও ছাত্রীর দীর্ঘদিনের পরিচয়। তবে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে দেড় বছর আগে। জোবায়েদ এক বছর ধরে ওই মেয়েকে পড়াতেন। পড়ার সময় জোবায়েদের প্রতি দুর্বল হয়ে যায় সে। এমন অবস্থায় মাহিরকে ওই ছাত্রী বলে, ‘জোবায়েদকে না সরাতে পারলে আমি তোমার হতে পারব না’। এভাবেই তারা জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ‎

পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই ছাত্রী একই সময়ে তার গৃহশিক্ষক জোবায়েদ ও মাহিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিল। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাহির বিষয়টি নিয়ে মেয়েটিকে চাপ প্রয়োগ করলে সেদিনই গৃহশিক্ষক জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। পরবর্তীতে মাহির ও তাঁর বন্ধু আইলান চাকু কিনে গত ১৯ অক্টোবর ওই মেয়ের বাসার নিচে অবস্থান নেন। আর মেয়েটি তার শিক্ষক জোবায়েদকে ডেকে আনে। এরপরই মেয়েটির বাসার সিঁড়িঘরে মাহির জোবায়েদকে বলে, তাকে যেন ভুলে যায়। এ নিয়ে তর্কাতর্কি হলে জোবায়েদ বলেন, ‘সে তো আমাকে পছন্দ করে’। একপর্যায়ে জোবায়েদকে চাকু দিয়ে গলায় পোচ দেন মাহির।

মল্লিক আহসান বলেন, জোবায়েদের প্রতি বেশি দুর্বলতা থাকলেও মেয়েটি একই সঙ্গে মাহির ও জোবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিল। ত্রিভুজ প্রেম থেকে বের হতে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজায় মেয়েটি।

‎মাহিরকে তাঁর মা থানায় হস্তান্তরের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের নানা ধরনের কৌশল থাকে। আগে চট্টগ্রামের রাউজানে নিয়মিত শিক্ষার্থী অপহরণ হতো, মুক্তিপণ আদায় করা হতো। আমরা তখন অপহরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসে তাদের ব্যবহার করে সমঝোতার চেষ্টা করতাম। ঠিক এভাবেই আমরা মাহিরকে থানায় দিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করেছি। এটা আমাদের কৌশলের অংশ। স্বেচ্ছায় থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হত্যার পুরো পরিকল্পনা করেছে মেয়েটিই। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশ মিল রয়েছে। মেয়েটা দুজনের কারও কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। ফলে সে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।’

অভিযুক্ত ছাত্রীর  বন্ধু মো. মাহির রহমান (বামে) ও তাঁর বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলান (ডানে)।  ছবি: ডিএমপি
অভিযুক্ত ছাত্রীর বন্ধু মো. মাহির রহমান (বামে) ও তাঁর বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলান (ডানে)। ছবি: ডিএমপি

‎হত্যার পরিকল্পনায় রাজনৈতিক কোনো বিষয় ছিল কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘মাহির ও মেয়েটি ২৬ সেপ্টেম্বর হত্যার পরিকল্পনা করে। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই। এটা ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা।’

‎হত্যার মুহূর্তে জোবায়েদকে মেয়েটির শেষ কথার বিষয়ে লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের নিশ্চিত করেছে যে জোবায়েদ মারা যাওয়ার সময় সে উপস্থিত ছিল।’

প্রাথমিক ‎তদন্তের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জোবায়েদের শেষ কথা ছিল মেয়েটিকে উদ্দেশ করে—’আমাকে বাঁচাও’। মেয়েটি তখন জোবায়েদের উদ্দেশে বলে, ’ তুমি না সরলে আমি মাহিরের হব না’। তদন্তে প্রকাশ পায়, দোতলার সিঁড়িতে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় সে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল। মেয়েটির বাসা পাঁচতলায় হলেও ঘটনার সময় সে তিনতলার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে নিচের হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছে।

‎জোবায়েদ দোতলার কলিং বেল বাজিয়ে দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা থেকে রক্ত নিচে গড়িয়ে পড়ছিল।

জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষা বর্ষের ছাত্র ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায় কৃষ্ণপুর গ্রামে। গতকাল জোবায়েদকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরায় আওয়ামী লীগের একাধিক মিছিল, ককটেলসহ আটক ৮

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আজ সকালে উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। ছবি: ডিএমপি
আজ সকালে উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। ছবি: ডিএমপি

রাজধানীর উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব মিছিল থেকে অবিস্ফোরিত দু’টি ককটেলসহ ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে উত্তরার জসীম উদদীন রোড, রাজলক্ষ্মী ও হাউস বিল্ডিং এলাকায় এসব মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরা রাজলক্ষ্মী এলাকায় সকাল সোয়া ১০টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিলে ১৫/১৬ জন উপস্থিত ছিল। ওই সময় স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করে দু’জনকে আটক করে। পরে তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাউস বিল্ডিং সংলগ্ন ৮ নম্বর সেক্টরের পুলিশ স্টাফ কোয়ার্টারের পাশের সড়কে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ওই মিছিলের পর সেখান থেকে অবিস্ফোরিত দু’টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।

একই সময় উত্তরার জসীম উদদীন রোড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তবে মিছিল করতে না পেরে তারা পর পর দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।

ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৮ নম্বর সেক্টরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও নাশকতার চেষ্টা করলে জনতার সহযোগিতায় ৬ জনকে আটক করা হয়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে দু’টি অবিস্ফোরিত ককটেল সদৃশ বস্তু পাওয়া যায়। এগুলো নিষ্ক্রিয় করতে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত