সাদ্দাম হোসেন, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনে ভ্রমণই যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয়। কিন্তু এই ভ্রমণ এখন ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাথর নিক্ষেপে যাত্রীদের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এদিকে পুলিশের কড়া নজরদারি, ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পরও থামছে না পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী বিভিন্ন ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রেলপথে চলাচলকারী আন্তনগর ও মেইল ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে।
দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে। চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি ট্রেনে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন। এতে জানালার কাচ ভেঙে ট্রেনের সহকারী চালক তৌহিদুল মুরসালিনের মাথার এক পাশ ফেটে যায়।
আহত সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট থেকে ৯৫২ নম্বর তেলবাহী ট্রেন নিয়ে আখাউড়া আসছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মনতলা স্টেশনের আউটারে পৌঁছার পর হঠাৎ করে ইঞ্জিনে কয়েকটি ঢিল পড়ে। এ সময় একটি পাথর আমার মাথায় এসে পড়ে। এতে আমার কপালের এক পাশ ফেটে যায়। পরে মনতলা স্টেশনে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আঘাতের স্থানে দুটি সেলাই দেন। তিনি আরও বলেন, কুয়াশার কারণে কে বা কারা পাথর ছুড়েছে দেখতে পাইনি।’
২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আখাউড়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার ট্রেনে রাত পৌনে ১০টার দিকে আখাউড়া রেল সেকশনের পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া পাথরের আঘাতে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পেশায় তিনি একজন হকার।
২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশকালে দক্ষিণ আউটার সিগন্যাল এলাকায় লাদেন (২০), হৃদয় (১৯) এবং আতিক (২০) এলোপাতাড়িভাবে ওই ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারে। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে ট্রেনযাত্রীরা ঘটনাটি কর্তব্যরত স্টেশন ডিউটিরত রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। পরে তারা ওই তিন যুবককে আটক করেন।
এই রকম একাধিক আটকের ঘটনা ঘটেছে পূর্বাঞ্চল রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী, পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে এসব আইনে কারও শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
স্থানীয়রা বলছে, যারা চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ছে, তারা সেটাকে অপরাধ বলে মনে করে না। শুধু আনন্দ পেতে অনেকে এই কাজ করছে। আবার অনেকে হয়তো ভাবে, পাথর ছোড়া হলে ট্রেন থামবে কিংবা কিছু জিনিসপত্র কুড়িয়ে পাওয়া যাবে। মূলত, এটা করে তারা অসুস্থ আনন্দ পাচ্ছে।
এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকলেও এসব অন্যায় করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। জিআরপি সূত্রে জানা যায়, ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ৮০ ভাগই বস্তির শিশু-কিশোর এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বস্তির শিশুদের আটক করা হলেও প্রমাণের অভাবে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত নয় মাসে রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে ১১০টি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পাথর নিক্ষেপের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙেছে ১০৩ টি। এদিকে রেলওয়ে কন্ট্রোল রুম (ঢাকা বিভাগ) সূত্র জানায়, আখাউড়া-সিলেট, আখাউড়া-ময়মনসিংহ ও আখাউড়া-ঢাকা রেলপথে ২০২১ সালে এক বছরে এ রেলপথের চলন্ত ট্রেনে ৩৯টা পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেন যাত্রী, গার্ড, চালক আহত হওয়া ছাড়াও ট্রেন সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম আজকের পত্রিকাকে জানান, চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়া মারাত্মক অপরাধ। এতে যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি বিপন্ন হচ্ছে মানুষের জীবন। জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ রকম কোনো দুষ্কৃতকারীকে দেখা মাত্র যেন তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রেলওয়ে জংশন এলাকায় রেলওয়ে থানার আয়োজনে স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনে অবৈধ মালামাল পরিবহন, চোরাচালান, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং রোধে বিট পুলিশিং সভাও করছি আমরা।

যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনে ভ্রমণই যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয়। কিন্তু এই ভ্রমণ এখন ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাথর নিক্ষেপে যাত্রীদের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এদিকে পুলিশের কড়া নজরদারি, ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পরও থামছে না পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী বিভিন্ন ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রেলপথে চলাচলকারী আন্তনগর ও মেইল ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে।
দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে। চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি ট্রেনে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন। এতে জানালার কাচ ভেঙে ট্রেনের সহকারী চালক তৌহিদুল মুরসালিনের মাথার এক পাশ ফেটে যায়।
আহত সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট থেকে ৯৫২ নম্বর তেলবাহী ট্রেন নিয়ে আখাউড়া আসছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মনতলা স্টেশনের আউটারে পৌঁছার পর হঠাৎ করে ইঞ্জিনে কয়েকটি ঢিল পড়ে। এ সময় একটি পাথর আমার মাথায় এসে পড়ে। এতে আমার কপালের এক পাশ ফেটে যায়। পরে মনতলা স্টেশনে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আঘাতের স্থানে দুটি সেলাই দেন। তিনি আরও বলেন, কুয়াশার কারণে কে বা কারা পাথর ছুড়েছে দেখতে পাইনি।’
২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আখাউড়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার ট্রেনে রাত পৌনে ১০টার দিকে আখাউড়া রেল সেকশনের পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া পাথরের আঘাতে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পেশায় তিনি একজন হকার।
২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশকালে দক্ষিণ আউটার সিগন্যাল এলাকায় লাদেন (২০), হৃদয় (১৯) এবং আতিক (২০) এলোপাতাড়িভাবে ওই ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারে। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে ট্রেনযাত্রীরা ঘটনাটি কর্তব্যরত স্টেশন ডিউটিরত রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। পরে তারা ওই তিন যুবককে আটক করেন।
এই রকম একাধিক আটকের ঘটনা ঘটেছে পূর্বাঞ্চল রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী, পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে এসব আইনে কারও শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
স্থানীয়রা বলছে, যারা চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ছে, তারা সেটাকে অপরাধ বলে মনে করে না। শুধু আনন্দ পেতে অনেকে এই কাজ করছে। আবার অনেকে হয়তো ভাবে, পাথর ছোড়া হলে ট্রেন থামবে কিংবা কিছু জিনিসপত্র কুড়িয়ে পাওয়া যাবে। মূলত, এটা করে তারা অসুস্থ আনন্দ পাচ্ছে।
এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকলেও এসব অন্যায় করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। জিআরপি সূত্রে জানা যায়, ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ৮০ ভাগই বস্তির শিশু-কিশোর এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বস্তির শিশুদের আটক করা হলেও প্রমাণের অভাবে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত নয় মাসে রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে ১১০টি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পাথর নিক্ষেপের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙেছে ১০৩ টি। এদিকে রেলওয়ে কন্ট্রোল রুম (ঢাকা বিভাগ) সূত্র জানায়, আখাউড়া-সিলেট, আখাউড়া-ময়মনসিংহ ও আখাউড়া-ঢাকা রেলপথে ২০২১ সালে এক বছরে এ রেলপথের চলন্ত ট্রেনে ৩৯টা পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেন যাত্রী, গার্ড, চালক আহত হওয়া ছাড়াও ট্রেন সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম আজকের পত্রিকাকে জানান, চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়া মারাত্মক অপরাধ। এতে যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি বিপন্ন হচ্ছে মানুষের জীবন। জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ রকম কোনো দুষ্কৃতকারীকে দেখা মাত্র যেন তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রেলওয়ে জংশন এলাকায় রেলওয়ে থানার আয়োজনে স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনে অবৈধ মালামাল পরিবহন, চোরাচালান, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং রোধে বিট পুলিশিং সভাও করছি আমরা।
সাদ্দাম হোসেন, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনে ভ্রমণই যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয়। কিন্তু এই ভ্রমণ এখন ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাথর নিক্ষেপে যাত্রীদের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এদিকে পুলিশের কড়া নজরদারি, ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পরও থামছে না পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী বিভিন্ন ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রেলপথে চলাচলকারী আন্তনগর ও মেইল ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে।
দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে। চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি ট্রেনে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন। এতে জানালার কাচ ভেঙে ট্রেনের সহকারী চালক তৌহিদুল মুরসালিনের মাথার এক পাশ ফেটে যায়।
আহত সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট থেকে ৯৫২ নম্বর তেলবাহী ট্রেন নিয়ে আখাউড়া আসছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মনতলা স্টেশনের আউটারে পৌঁছার পর হঠাৎ করে ইঞ্জিনে কয়েকটি ঢিল পড়ে। এ সময় একটি পাথর আমার মাথায় এসে পড়ে। এতে আমার কপালের এক পাশ ফেটে যায়। পরে মনতলা স্টেশনে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আঘাতের স্থানে দুটি সেলাই দেন। তিনি আরও বলেন, কুয়াশার কারণে কে বা কারা পাথর ছুড়েছে দেখতে পাইনি।’
২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আখাউড়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার ট্রেনে রাত পৌনে ১০টার দিকে আখাউড়া রেল সেকশনের পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া পাথরের আঘাতে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পেশায় তিনি একজন হকার।
২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশকালে দক্ষিণ আউটার সিগন্যাল এলাকায় লাদেন (২০), হৃদয় (১৯) এবং আতিক (২০) এলোপাতাড়িভাবে ওই ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারে। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে ট্রেনযাত্রীরা ঘটনাটি কর্তব্যরত স্টেশন ডিউটিরত রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। পরে তারা ওই তিন যুবককে আটক করেন।
এই রকম একাধিক আটকের ঘটনা ঘটেছে পূর্বাঞ্চল রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী, পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে এসব আইনে কারও শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
স্থানীয়রা বলছে, যারা চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ছে, তারা সেটাকে অপরাধ বলে মনে করে না। শুধু আনন্দ পেতে অনেকে এই কাজ করছে। আবার অনেকে হয়তো ভাবে, পাথর ছোড়া হলে ট্রেন থামবে কিংবা কিছু জিনিসপত্র কুড়িয়ে পাওয়া যাবে। মূলত, এটা করে তারা অসুস্থ আনন্দ পাচ্ছে।
এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকলেও এসব অন্যায় করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। জিআরপি সূত্রে জানা যায়, ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ৮০ ভাগই বস্তির শিশু-কিশোর এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বস্তির শিশুদের আটক করা হলেও প্রমাণের অভাবে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত নয় মাসে রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে ১১০টি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পাথর নিক্ষেপের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙেছে ১০৩ টি। এদিকে রেলওয়ে কন্ট্রোল রুম (ঢাকা বিভাগ) সূত্র জানায়, আখাউড়া-সিলেট, আখাউড়া-ময়মনসিংহ ও আখাউড়া-ঢাকা রেলপথে ২০২১ সালে এক বছরে এ রেলপথের চলন্ত ট্রেনে ৩৯টা পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেন যাত্রী, গার্ড, চালক আহত হওয়া ছাড়াও ট্রেন সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম আজকের পত্রিকাকে জানান, চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়া মারাত্মক অপরাধ। এতে যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি বিপন্ন হচ্ছে মানুষের জীবন। জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ রকম কোনো দুষ্কৃতকারীকে দেখা মাত্র যেন তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রেলওয়ে জংশন এলাকায় রেলওয়ে থানার আয়োজনে স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনে অবৈধ মালামাল পরিবহন, চোরাচালান, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং রোধে বিট পুলিশিং সভাও করছি আমরা।

যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনে ভ্রমণই যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয়। কিন্তু এই ভ্রমণ এখন ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাথর নিক্ষেপে যাত্রীদের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এদিকে পুলিশের কড়া নজরদারি, ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পরও থামছে না পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী বিভিন্ন ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রেলপথে চলাচলকারী আন্তনগর ও মেইল ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে।
দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে। চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি ট্রেনে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন। এতে জানালার কাচ ভেঙে ট্রেনের সহকারী চালক তৌহিদুল মুরসালিনের মাথার এক পাশ ফেটে যায়।
আহত সহকারী ট্রেনচালক তৌহিদুল মুরসালিন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট থেকে ৯৫২ নম্বর তেলবাহী ট্রেন নিয়ে আখাউড়া আসছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মনতলা স্টেশনের আউটারে পৌঁছার পর হঠাৎ করে ইঞ্জিনে কয়েকটি ঢিল পড়ে। এ সময় একটি পাথর আমার মাথায় এসে পড়ে। এতে আমার কপালের এক পাশ ফেটে যায়। পরে মনতলা স্টেশনে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আঘাতের স্থানে দুটি সেলাই দেন। তিনি আরও বলেন, কুয়াশার কারণে কে বা কারা পাথর ছুড়েছে দেখতে পাইনি।’
২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আখাউড়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার ট্রেনে রাত পৌনে ১০টার দিকে আখাউড়া রেল সেকশনের পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া পাথরের আঘাতে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পেশায় তিনি একজন হকার।
২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশকালে দক্ষিণ আউটার সিগন্যাল এলাকায় লাদেন (২০), হৃদয় (১৯) এবং আতিক (২০) এলোপাতাড়িভাবে ওই ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারে। ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে ট্রেনযাত্রীরা ঘটনাটি কর্তব্যরত স্টেশন ডিউটিরত রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। পরে তারা ওই তিন যুবককে আটক করেন।
এই রকম একাধিক আটকের ঘটনা ঘটেছে পূর্বাঞ্চল রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী, পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে এসব আইনে কারও শাস্তি হয়েছে, এমন নজির নেই।
স্থানীয়রা বলছে, যারা চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ছে, তারা সেটাকে অপরাধ বলে মনে করে না। শুধু আনন্দ পেতে অনেকে এই কাজ করছে। আবার অনেকে হয়তো ভাবে, পাথর ছোড়া হলে ট্রেন থামবে কিংবা কিছু জিনিসপত্র কুড়িয়ে পাওয়া যাবে। মূলত, এটা করে তারা অসুস্থ আনন্দ পাচ্ছে।
এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকলেও এসব অন্যায় করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। জিআরপি সূত্রে জানা যায়, ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ৮০ ভাগই বস্তির শিশু-কিশোর এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বস্তির শিশুদের আটক করা হলেও প্রমাণের অভাবে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত নয় মাসে রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে ১১০টি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পাথর নিক্ষেপের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙেছে ১০৩ টি। এদিকে রেলওয়ে কন্ট্রোল রুম (ঢাকা বিভাগ) সূত্র জানায়, আখাউড়া-সিলেট, আখাউড়া-ময়মনসিংহ ও আখাউড়া-ঢাকা রেলপথে ২০২১ সালে এক বছরে এ রেলপথের চলন্ত ট্রেনে ৩৯টা পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেন যাত্রী, গার্ড, চালক আহত হওয়া ছাড়াও ট্রেন সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম আজকের পত্রিকাকে জানান, চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়া মারাত্মক অপরাধ। এতে যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি বিপন্ন হচ্ছে মানুষের জীবন। জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ রকম কোনো দুষ্কৃতকারীকে দেখা মাত্র যেন তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রেলওয়ে জংশন এলাকায় রেলওয়ে থানার আয়োজনে স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনে অবৈধ মালামাল পরিবহন, চোরাচালান, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং রোধে বিট পুলিশিং সভাও করছি আমরা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
৪ ঘণ্টা আগে
কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের।
৪ ঘণ্টা আগে
বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
৪ ঘণ্টা আগেমো. হাবিবুল্লাহ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর)

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বিভিন্নভাবে সক্রিয় রয়েছেন। প্রচার চালাচ্ছেন নিজেদের কর্মী নিয়ে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলের প্রয়াত নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদীর নাম ঘোষণা করেছে। কোনো অভ্যন্তরীণ বিভাজন ছাড়াই তিনি নির্বিঘ্নে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তৃণমূল থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামায়াতের এই প্রার্থী।
এ আসনে শরিক দলসহ বিএনপির অন্তত ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁরা হলেন, ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. জুয়েল মৃধা, নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফকরুল আলম, সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও পারিবারিক প্রভাবের কারণে সোহেল মঞ্জুর সুমন আলোচনায় এগিয়ে। তাঁর বাবা বিএনপির সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সুমনের গ্রহণযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা তাঁকে হাইকমান্ডের সুনজরে রেখেছে।
মাহমুদ হোসেন ও জুয়েল মৃধা সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছেন। দুজনে ভোটারদের নজর কাড়তে যুক্ত আছেন দান-অনুদানে। ইতিমধ্যে তাঁরা নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় গড়েছেন শক্ত ঘাঁটি। ফকরুল আলম ও সৈকতও তৃণমূলে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। অন্যদিকে ইরানের নিজস্ব প্রচারণা না থাকলেও তিনি দাবি করেছেন, ধানের শীষের প্রচার-প্রচারণা চলছে। ধানের শীষ মানেই তিনি।
প্রত্যেকেই দলের প্রতি আনুগত্য ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। সোহেল মঞ্জুর সুমন বলেন, ‘দলের দুর্দিনে পাশে ছিলাম, মনোনয়ন পেলে বিএনপির হারানো আসন পুনরুদ্ধার করে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। দল মনোনয়ন দিলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা জুয়েল মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি; দল তা মূল্যায়ন করবে।’
ইরান বলেন, ‘আমি জোটের প্রার্থী। যত সময় পর্যন্ত এখান থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া হবে, আমিই একমাত্র প্রার্থী। কারণ ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তাই আমিই মনোনয়নের দাবিদার।’
স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী কামাল হোসেন বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপি থেকে যাঁরা মনোনয়ন চাচ্ছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য লোক। তবে দেশনায়ক তারেক রহমান যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবেন; আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করব।’
প্রবীণ রাজনীতি-সচেতন মো. আবুল হোসেন মৃধা বলেন, ‘শুনছি বিএনপি থেকে অনেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন। একজন সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত লোক এ আসনে নেতৃত্বে দেখতে চাই। যাঁরা এলাকার জন্য কাজ করবে, আশা করি দল সে ধরনের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবে।’
স্থানীয় রাজনীতি-সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণের পরেই এ আসনে চূড়ান্ত নির্বাচনী সমীকরণ স্পষ্ট হবে। আপাতত জামায়াতের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী এককভাবে প্রচারণার সুবিধা ভোগ করছেন। বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ও মনোনয়ন চূড়ান্তে দেরি নির্বাচনী ফলে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও তারা মনে করছেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বিভিন্নভাবে সক্রিয় রয়েছেন। প্রচার চালাচ্ছেন নিজেদের কর্মী নিয়ে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলের প্রয়াত নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদীর নাম ঘোষণা করেছে। কোনো অভ্যন্তরীণ বিভাজন ছাড়াই তিনি নির্বিঘ্নে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তৃণমূল থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামায়াতের এই প্রার্থী।
এ আসনে শরিক দলসহ বিএনপির অন্তত ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁরা হলেন, ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. জুয়েল মৃধা, নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফকরুল আলম, সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও পারিবারিক প্রভাবের কারণে সোহেল মঞ্জুর সুমন আলোচনায় এগিয়ে। তাঁর বাবা বিএনপির সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সুমনের গ্রহণযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা তাঁকে হাইকমান্ডের সুনজরে রেখেছে।
মাহমুদ হোসেন ও জুয়েল মৃধা সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছেন। দুজনে ভোটারদের নজর কাড়তে যুক্ত আছেন দান-অনুদানে। ইতিমধ্যে তাঁরা নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় গড়েছেন শক্ত ঘাঁটি। ফকরুল আলম ও সৈকতও তৃণমূলে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। অন্যদিকে ইরানের নিজস্ব প্রচারণা না থাকলেও তিনি দাবি করেছেন, ধানের শীষের প্রচার-প্রচারণা চলছে। ধানের শীষ মানেই তিনি।
প্রত্যেকেই দলের প্রতি আনুগত্য ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। সোহেল মঞ্জুর সুমন বলেন, ‘দলের দুর্দিনে পাশে ছিলাম, মনোনয়ন পেলে বিএনপির হারানো আসন পুনরুদ্ধার করে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। দল মনোনয়ন দিলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা জুয়েল মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি; দল তা মূল্যায়ন করবে।’
ইরান বলেন, ‘আমি জোটের প্রার্থী। যত সময় পর্যন্ত এখান থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া হবে, আমিই একমাত্র প্রার্থী। কারণ ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তাই আমিই মনোনয়নের দাবিদার।’
স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী কামাল হোসেন বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপি থেকে যাঁরা মনোনয়ন চাচ্ছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য লোক। তবে দেশনায়ক তারেক রহমান যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবেন; আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করব।’
প্রবীণ রাজনীতি-সচেতন মো. আবুল হোসেন মৃধা বলেন, ‘শুনছি বিএনপি থেকে অনেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন। একজন সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত লোক এ আসনে নেতৃত্বে দেখতে চাই। যাঁরা এলাকার জন্য কাজ করবে, আশা করি দল সে ধরনের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবে।’
স্থানীয় রাজনীতি-সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণের পরেই এ আসনে চূড়ান্ত নির্বাচনী সমীকরণ স্পষ্ট হবে। আপাতত জামায়াতের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী এককভাবে প্রচারণার সুবিধা ভোগ করছেন। বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ও মনোনয়ন চূড়ান্তে দেরি নির্বাচনী ফলে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও তারা মনে করছেন।

দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে
০৮ জানুয়ারি ২০২২
কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের।
৪ ঘণ্টা আগে
বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
৪ ঘণ্টা আগেঅরূপ রায়, সাভার (ঢাকা)

কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের। ২০২২ সালে পাইপ ড্রেনসহ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সাভার পৌরসভার প্রকৌশল শাখা থেকে জানানো হয়েছে, বেদেপাড়ার প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য লুৎফর রহমানের মার্কেট থেকে বেদেপল্লির পোড়াবাড়ি সেতু পর্যন্ত ১ হাজার ২৪০ মিটার পাইপ ড্রেন নির্মাণসহ ১ হাজার ১০০ মিটার সড়ক পাকা করা হয়। ২০২২ সালে তমা কনস্ট্রাকশন এবং সিকদার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড বিল্ডার্স নামের দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই সড়ক পাকাকরণসহ পাইপ ড্রেন নির্মাণের কাজ করে। পুরো কাজের মধ্যে ড্রেন নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ২৭৯ টাকা এবং সড়ক পাকাকরণে ব্যয় করা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৬২২ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দলিল লেখক আক্তার হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে সেতু পর্যন্ত অন্তত ১৫টি স্থানে কার্পেটিংসহ সড়কের কয়েক ফুট জুড়ে ভেতরের দিকে ঢুকে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা কয়েকটি সুড়ঙ্গ মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দিলেও কয়েকটি সুড়ঙ্গ এখনো দৃশ্যমান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক পাকাকরণের মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে সড়কটি প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বেদেপাড়ার লোকজন জানান, কয়েক মাস ধরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রথমে ছোট গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এর পর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেখানে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় অনেক গর্ত ও সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে সড়কটিতে। অনেক ম্যানহোলের ঢাকনা উঠে গেছে আবার অনেক ম্যানহোলের চার পাশে দেবে গেছে। তাঁরা আরও জানান, সুড়ঙ্গ বা গর্ত বড় হয়ে গেলে বিষয়টি পৌরসভাকে জানানো হয়। কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অবশেষে স্থানীয় লোকজন কোনো কোনো স্থানে মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দেন। কিন্তু তা স্থায়ী হয় না। বৃষ্টি হলেই আবার তা সরে যায়। তাই পথচারী ও যানবাহনের শ্রমিকদের সতর্ক
করতে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ও সুড়ঙ্গে বাঁশ পুঁতে বা আবর্জনা দিয়ে রাখা হয়, যা দেখে যে কেউ বুঝতে পারেন জায়গাটি বিপজ্জনক।
কাঞ্চনপুর মহল্লার হালিমা বেগমের চায়ের দোকানের সামনের বাঁকে কয়েক ফুটের ব্যবধানে দুটি সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছিল কয়েক মাস আগে। মাঝেমধ্যে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।
হালিমা বেগম বলেন, ‘মাস তিনেক আগে আমার দোকানের সামনে সড়কে ছোট একটা গর্তের মতো হয়। কয়েক দিনের মধ্যে ওই গর্ত বেশ বড় হয়ে যায়। একপর্যায়ে তা অনেক নিচের দিকে চলে যায় এবং সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়।’
যোগাযোগ করা হলে আত্মগোপনে থাকা সাভার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আহমেদ বলেন, ‘পাইপ ড্রেনের ওপরে যে মাটি ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি। এ কারণে কার্পেটিংয়ের নিচ থেকে দেবে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হচ্ছে।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সম্ভবত পাইপ ড্রেনের জোড়ায় ছিদ্র হয়ে পানি বের হয়। এ কারণে ওই স্থানের মাটি সরে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়। আমি লোক পাঠিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের। ২০২২ সালে পাইপ ড্রেনসহ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সাভার পৌরসভার প্রকৌশল শাখা থেকে জানানো হয়েছে, বেদেপাড়ার প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য লুৎফর রহমানের মার্কেট থেকে বেদেপল্লির পোড়াবাড়ি সেতু পর্যন্ত ১ হাজার ২৪০ মিটার পাইপ ড্রেন নির্মাণসহ ১ হাজার ১০০ মিটার সড়ক পাকা করা হয়। ২০২২ সালে তমা কনস্ট্রাকশন এবং সিকদার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড বিল্ডার্স নামের দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই সড়ক পাকাকরণসহ পাইপ ড্রেন নির্মাণের কাজ করে। পুরো কাজের মধ্যে ড্রেন নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ২৭৯ টাকা এবং সড়ক পাকাকরণে ব্যয় করা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৬২২ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দলিল লেখক আক্তার হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে সেতু পর্যন্ত অন্তত ১৫টি স্থানে কার্পেটিংসহ সড়কের কয়েক ফুট জুড়ে ভেতরের দিকে ঢুকে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা কয়েকটি সুড়ঙ্গ মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দিলেও কয়েকটি সুড়ঙ্গ এখনো দৃশ্যমান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক পাকাকরণের মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে সড়কটি প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বেদেপাড়ার লোকজন জানান, কয়েক মাস ধরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রথমে ছোট গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এর পর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেখানে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় অনেক গর্ত ও সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে সড়কটিতে। অনেক ম্যানহোলের ঢাকনা উঠে গেছে আবার অনেক ম্যানহোলের চার পাশে দেবে গেছে। তাঁরা আরও জানান, সুড়ঙ্গ বা গর্ত বড় হয়ে গেলে বিষয়টি পৌরসভাকে জানানো হয়। কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অবশেষে স্থানীয় লোকজন কোনো কোনো স্থানে মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দেন। কিন্তু তা স্থায়ী হয় না। বৃষ্টি হলেই আবার তা সরে যায়। তাই পথচারী ও যানবাহনের শ্রমিকদের সতর্ক
করতে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ও সুড়ঙ্গে বাঁশ পুঁতে বা আবর্জনা দিয়ে রাখা হয়, যা দেখে যে কেউ বুঝতে পারেন জায়গাটি বিপজ্জনক।
কাঞ্চনপুর মহল্লার হালিমা বেগমের চায়ের দোকানের সামনের বাঁকে কয়েক ফুটের ব্যবধানে দুটি সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছিল কয়েক মাস আগে। মাঝেমধ্যে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।
হালিমা বেগম বলেন, ‘মাস তিনেক আগে আমার দোকানের সামনে সড়কে ছোট একটা গর্তের মতো হয়। কয়েক দিনের মধ্যে ওই গর্ত বেশ বড় হয়ে যায়। একপর্যায়ে তা অনেক নিচের দিকে চলে যায় এবং সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়।’
যোগাযোগ করা হলে আত্মগোপনে থাকা সাভার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আহমেদ বলেন, ‘পাইপ ড্রেনের ওপরে যে মাটি ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি। এ কারণে কার্পেটিংয়ের নিচ থেকে দেবে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হচ্ছে।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সম্ভবত পাইপ ড্রেনের জোড়ায় ছিদ্র হয়ে পানি বের হয়। এ কারণে ওই স্থানের মাটি সরে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়। আমি লোক পাঠিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে
০৮ জানুয়ারি ২০২২
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
৪ ঘণ্টা আগে
বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
৪ ঘণ্টা আগেসবুর শুভ, চট্টগ্রাম

বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে। এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানা যাচ্ছে, হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা (ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম) অকার্যকর। এই অকার্যকর ব্যবস্থা বসিয়েই ২ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মা ও শিশু হাসপাতালে মোট ১৯টি বিভাগ আছে। প্রতিদিন অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি থাকে ৮০০ থেকে ৮৫০ জন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে ১৮০০ থেকে ২০০০ জন। একইভাবে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেয় ২০০ থেকে ২৫০ রোগী। অ্যাকুইট মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি থাকে ১৫-১৮ জন। আইসিইউতে ভর্তি থাকে ২৫-৩০, সিসিইউতে ২০-২৫, এনআইসিইউতে ৬০-৭০, শিশু আইসিইউতে ৪০-৪৫ এবং ক্যানসার ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকে ৫০-৫৫ রোগী।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ইপিজেডের কারখানায়, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালের ফায়ার ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এর পর থেকে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম সরবরাহে সিম্যানটেক লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১ জুন কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালে কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু এখনো তারা কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। অথচ পাঁচ দফায় ২ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৬২৮ টাকা বিল দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। এ-সংক্রান্ত বিলের কপি প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত আছে।
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় গলদের বিষয়টি জানিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নুরুল হক সিম্যানটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘হাসপাতালের ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম বর্তমানে অকার্যকর, যা আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা। ফলে অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় এই হাসপাতাল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। প্রাথমিক তদন্তে দুটি বিষয় দৃষ্টিগোচর হয়। এক. শিডিউলে বর্ণিত এনএফপিএ স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে কাজের চুক্তি থাকলেও তা বাস্তবে অনুসরণ করা হয়নি। দুই. শিডিউলে ইউপিভিসি পাইপ উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। চিঠিতে ‘ত্রুটিপূর্ণ কাজের জন্য কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিষ্ঠানটি দায়ী থাকবে’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সিম্যানটেকের বিজনেস ডেভেলপার মুহাম্মদ নূর ফাহাদের বক্তব্য হচ্ছে, ‘কার্যাদেশ মতে, অগ্নিনির্বাপণের পুরো ব্যবস্থাটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে পরবর্তীকালে কী হয়েছে, তা আমরা জানি না। কিন্তু গত এক বছর আমরা সেখানে কোনো কাজ করতে পারছি না।’ বর্তমানে তাদের ৭-৮ কোটি টাকা বকেয়া আছে বলেও জানান তিনি।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। এ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন বলেন, ‘ফায়ার ব্যবস্থাপনায় গলদের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরই আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর পুরো চিত্রটা আমাদের সামনে আসবে। এরপর আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ক্ষেত্রে কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু সিস্টেমটা চালু হয়নি।’
নেপথ্যে আছে ভিন্ন ঘটনা
এদিকে এই অগ্নিনির্বাপণ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পরিচালনা কমিটির সহসভাপতির বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলেছেন সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরুল মোস্তফা। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানার বিরুদ্ধে আনা এক অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, হামলা হয় ১৬ অক্টোবর। পরদিন তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগের কপি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা বলেন, ‘হাসপাতালের কেনাকাটার বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদনে নানা অনিয়মের কথা উঠে এসেছে। সেই অনিয়ম ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে ঘুষি মারার এই মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার কি কাউকে ঘুষি মারার বয়স আছে?’
প্রকৌশলীকে ঘুষি মারার বিষয়টি সামনে আসার পর ফায়ার ব্যবস্থাপনায় গলদ বেরিয়ে আসে।

বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে। এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানা যাচ্ছে, হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা (ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম) অকার্যকর। এই অকার্যকর ব্যবস্থা বসিয়েই ২ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মা ও শিশু হাসপাতালে মোট ১৯টি বিভাগ আছে। প্রতিদিন অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি থাকে ৮০০ থেকে ৮৫০ জন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে ১৮০০ থেকে ২০০০ জন। একইভাবে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেয় ২০০ থেকে ২৫০ রোগী। অ্যাকুইট মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি থাকে ১৫-১৮ জন। আইসিইউতে ভর্তি থাকে ২৫-৩০, সিসিইউতে ২০-২৫, এনআইসিইউতে ৬০-৭০, শিশু আইসিইউতে ৪০-৪৫ এবং ক্যানসার ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকে ৫০-৫৫ রোগী।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ইপিজেডের কারখানায়, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালের ফায়ার ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এর পর থেকে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম সরবরাহে সিম্যানটেক লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১ জুন কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালে কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু এখনো তারা কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। অথচ পাঁচ দফায় ২ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৬২৮ টাকা বিল দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। এ-সংক্রান্ত বিলের কপি প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত আছে।
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় গলদের বিষয়টি জানিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নুরুল হক সিম্যানটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘হাসপাতালের ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম বর্তমানে অকার্যকর, যা আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা। ফলে অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় এই হাসপাতাল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। প্রাথমিক তদন্তে দুটি বিষয় দৃষ্টিগোচর হয়। এক. শিডিউলে বর্ণিত এনএফপিএ স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে কাজের চুক্তি থাকলেও তা বাস্তবে অনুসরণ করা হয়নি। দুই. শিডিউলে ইউপিভিসি পাইপ উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। চিঠিতে ‘ত্রুটিপূর্ণ কাজের জন্য কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিষ্ঠানটি দায়ী থাকবে’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সিম্যানটেকের বিজনেস ডেভেলপার মুহাম্মদ নূর ফাহাদের বক্তব্য হচ্ছে, ‘কার্যাদেশ মতে, অগ্নিনির্বাপণের পুরো ব্যবস্থাটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে পরবর্তীকালে কী হয়েছে, তা আমরা জানি না। কিন্তু গত এক বছর আমরা সেখানে কোনো কাজ করতে পারছি না।’ বর্তমানে তাদের ৭-৮ কোটি টাকা বকেয়া আছে বলেও জানান তিনি।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। এ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন বলেন, ‘ফায়ার ব্যবস্থাপনায় গলদের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরই আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর পুরো চিত্রটা আমাদের সামনে আসবে। এরপর আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ক্ষেত্রে কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু সিস্টেমটা চালু হয়নি।’
নেপথ্যে আছে ভিন্ন ঘটনা
এদিকে এই অগ্নিনির্বাপণ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পরিচালনা কমিটির সহসভাপতির বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলেছেন সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরুল মোস্তফা। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানার বিরুদ্ধে আনা এক অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, হামলা হয় ১৬ অক্টোবর। পরদিন তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগের কপি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা বলেন, ‘হাসপাতালের কেনাকাটার বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদনে নানা অনিয়মের কথা উঠে এসেছে। সেই অনিয়ম ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে ঘুষি মারার এই মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার কি কাউকে ঘুষি মারার বয়স আছে?’
প্রকৌশলীকে ঘুষি মারার বিষয়টি সামনে আসার পর ফায়ার ব্যবস্থাপনায় গলদ বেরিয়ে আসে।

দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে
০৮ জানুয়ারি ২০২২
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
৪ ঘণ্টা আগে
কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের।
৪ ঘণ্টা আগে
দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
৪ ঘণ্টা আগেখোরশেদ আলম সাগর, লালমনিরহাট

দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
স্থানীয়রা বলছেন, মাদক কারবারের কারণে উপজেলার কোনো কোনো গ্রাম ‘মাদকের গ্রাম’ হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। এসব গ্রামে কেউ আত্মীয়তাও করতে চায় না। গ্রামের নাম শুনে অনেক ছেলেমেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব গ্রামের মধ্যে রয়েছে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের লতাবর ও লোহাকুচি গ্রাম এবং গোড়ল ইউনিয়নের মালগাড়া, সেবকদাস ও ময়নাচরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে চোরাচালান আর মাদকের পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। সব থেকে ভয়াবহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নে। এটি কালীগঞ্জ থানা থেকে বেশ দূরে। তাই ২০২১ সালে গোড়ল ইউনিয়নে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সীমান্ত গ্রামগুলোতে গড়ে ওঠে মাদকের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। মাদক পাচারে নিরাপদ রুটে পরিণত হয় এসব এলাকা। এসব মাদকের মধ্যে ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা ও ভারতীয় মদ উল্লেখযোগ্য।
জানা যায়, ওই সময় গোড়লে তদন্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও আওয়ামী নেতাদের তদবিরে সফল হয়নি পুলিশ। তবে আওয়ামী লীগের পতনের পর চোরাচালান মাদক আর অপরাধ দমনে গোড়ল তদন্ত কেন্দ্র কঠোর অবস্থানে গেলে অনেকটা চাপে পড়ে মাদক কারবারিরা। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মাদক কারবারে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হলেও কয়েকদিন হাজতবাস করে বের হয়ে তাঁরা আবার একই কাজে লিপ্ত হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, গোড়ল ইউপির সদস্য নুরল আমিন বাদশার নামেই রয়েছে ১৪টি মামলা। তাঁর বাড়ি মালগাড়া গ্রামে। তাঁর স্ত্রী স্বপ্নার নামে দুটি এবং ছেলে শাহীনের নামে দুটি মাদক মামলা রয়েছে। বাদশার ভাই এমদাদুল হকের নামে দুটি ও আতিকুল ইসলামের নামে পাঁচটি মামলা রয়েছে। তাঁরা গ্রেপ্তারও হয়েছেন কয়েকবার। মামলার চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে। বাদশার ভাই এরশাদ কারবারি করলেও হাতেনাতে আটক করতে না পারায় মামলা দিতে পারেনি পুলিশ। ২০২২ সালে ‘ইউপি সদস্য বাদশার বাড়িতে ফেনসিডিলের বার’ শিরোনামে ভিডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়াও গোড়ল ইউনিয়নের আলোচিত মাদক কারবারিদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে মোফা মিয়ার নামে দুটি, দুলাল ওরফে ঘুগরি দুলালের সাতটি, রহিম বাদশার চারটি, নান্নু মিয়ার নামের চারটি মাদক মামলা বিচারাধীন। মাদক পাচার ও বিক্রি করে এসব এলাকার কেউ কেউ শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন বলেও শোনা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাতের কাছে মাদক পেয়ে নষ্ট হচ্ছে এসব গ্রামের যুবসমাজ। অপবাদ ঘোচাতে ও যুবসমাজ রক্ষায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার আহ্বান স্থানীয় সাধারণ মানুষের।
কৃষক তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘মাদক কারবারিরা সীমান্ত এলাকার জমির ফসল নষ্ট করে রাতের আঁধারে এসব পাচার করে নিয়ে আসে। শীত আসছে, এখন মাদকের সঙ্গে শত শত গরু পাচার করবে। এতে ফসল নষ্ট হবে। চোরাকারবারিদের জন্য শুধু যুবসমাজই নষ্ট হচ্ছে না, ফসলও নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় অরণ্য স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী পরিচালক আনজুরুল হক সরকার মিন্টু বলেন, মাদক কারবারিদের কারণে এলাকার শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাতের কাছে মাদক পেয়ে শিক্ষার্থীরাও আসক্ত হচ্ছে। গ্রামগুলোর নামের সঙ্গে মাদকের ট্যাগ পড়ে যাওয়ায় অনেকের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে।
গোড়ল চাকলারহাট কেন্দ্রীয়
জামে মসজিদের ইমাম আবুল কাশেম বলেন, মাদক কারবারিদের কাছে স্থানীয়রা জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ করলেই বিপদ।
গোড়ল ইউপির সদস্য নুরল আমিন বাদশা বলেন, ‘এখানে সবাই মাদকের কারবার করে। একটা সময় আমিও মাদকের কারবার করেছি। সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছি।’
গোড়ল তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিন বলেন, ‘যোগদানের এক বছরে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ ৭০ জনকে ৬৮টি মামলায় গ্রেপ্তার করেছি। যার অধিকাংশের অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে।’
কালীগঞ্জ থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, ‘সীমান্তের গ্রামে মাদকের ট্যাগ রোধে অভিযান জোরদার করা হচ্ছে। অভিযান স্তব্ধ করতে মাদক কারবারিদের কোনো চক্রান্তই সফল হবে না। আমরা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’

দফায় দফায় অভিযান আর মামলার পরও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সীমান্ত গ্রামগুলোতে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়নেই শতাধিক মাদক কারবারি রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ১৪-১৫টি মামলাও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যও।
স্থানীয়রা বলছেন, মাদক কারবারের কারণে উপজেলার কোনো কোনো গ্রাম ‘মাদকের গ্রাম’ হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। এসব গ্রামে কেউ আত্মীয়তাও করতে চায় না। গ্রামের নাম শুনে অনেক ছেলেমেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব গ্রামের মধ্যে রয়েছে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের লতাবর ও লোহাকুচি গ্রাম এবং গোড়ল ইউনিয়নের মালগাড়া, সেবকদাস ও ময়নাচরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে চোরাচালান আর মাদকের পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। সব থেকে ভয়াবহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নে। এটি কালীগঞ্জ থানা থেকে বেশ দূরে। তাই ২০২১ সালে গোড়ল ইউনিয়নে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সীমান্ত গ্রামগুলোতে গড়ে ওঠে মাদকের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। মাদক পাচারে নিরাপদ রুটে পরিণত হয় এসব এলাকা। এসব মাদকের মধ্যে ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা ও ভারতীয় মদ উল্লেখযোগ্য।
জানা যায়, ওই সময় গোড়লে তদন্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও আওয়ামী নেতাদের তদবিরে সফল হয়নি পুলিশ। তবে আওয়ামী লীগের পতনের পর চোরাচালান মাদক আর অপরাধ দমনে গোড়ল তদন্ত কেন্দ্র কঠোর অবস্থানে গেলে অনেকটা চাপে পড়ে মাদক কারবারিরা। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মাদক কারবারে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হলেও কয়েকদিন হাজতবাস করে বের হয়ে তাঁরা আবার একই কাজে লিপ্ত হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, গোড়ল ইউপির সদস্য নুরল আমিন বাদশার নামেই রয়েছে ১৪টি মামলা। তাঁর বাড়ি মালগাড়া গ্রামে। তাঁর স্ত্রী স্বপ্নার নামে দুটি এবং ছেলে শাহীনের নামে দুটি মাদক মামলা রয়েছে। বাদশার ভাই এমদাদুল হকের নামে দুটি ও আতিকুল ইসলামের নামে পাঁচটি মামলা রয়েছে। তাঁরা গ্রেপ্তারও হয়েছেন কয়েকবার। মামলার চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে। বাদশার ভাই এরশাদ কারবারি করলেও হাতেনাতে আটক করতে না পারায় মামলা দিতে পারেনি পুলিশ। ২০২২ সালে ‘ইউপি সদস্য বাদশার বাড়িতে ফেনসিডিলের বার’ শিরোনামে ভিডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়াও গোড়ল ইউনিয়নের আলোচিত মাদক কারবারিদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে মোফা মিয়ার নামে দুটি, দুলাল ওরফে ঘুগরি দুলালের সাতটি, রহিম বাদশার চারটি, নান্নু মিয়ার নামের চারটি মাদক মামলা বিচারাধীন। মাদক পাচার ও বিক্রি করে এসব এলাকার কেউ কেউ শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন বলেও শোনা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাতের কাছে মাদক পেয়ে নষ্ট হচ্ছে এসব গ্রামের যুবসমাজ। অপবাদ ঘোচাতে ও যুবসমাজ রক্ষায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার আহ্বান স্থানীয় সাধারণ মানুষের।
কৃষক তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘মাদক কারবারিরা সীমান্ত এলাকার জমির ফসল নষ্ট করে রাতের আঁধারে এসব পাচার করে নিয়ে আসে। শীত আসছে, এখন মাদকের সঙ্গে শত শত গরু পাচার করবে। এতে ফসল নষ্ট হবে। চোরাকারবারিদের জন্য শুধু যুবসমাজই নষ্ট হচ্ছে না, ফসলও নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় অরণ্য স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্বাহী পরিচালক আনজুরুল হক সরকার মিন্টু বলেন, মাদক কারবারিদের কারণে এলাকার শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাতের কাছে মাদক পেয়ে শিক্ষার্থীরাও আসক্ত হচ্ছে। গ্রামগুলোর নামের সঙ্গে মাদকের ট্যাগ পড়ে যাওয়ায় অনেকের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে।
গোড়ল চাকলারহাট কেন্দ্রীয়
জামে মসজিদের ইমাম আবুল কাশেম বলেন, মাদক কারবারিদের কাছে স্থানীয়রা জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ করলেই বিপদ।
গোড়ল ইউপির সদস্য নুরল আমিন বাদশা বলেন, ‘এখানে সবাই মাদকের কারবার করে। একটা সময় আমিও মাদকের কারবার করেছি। সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছি।’
গোড়ল তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিন বলেন, ‘যোগদানের এক বছরে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ ৭০ জনকে ৬৮টি মামলায় গ্রেপ্তার করেছি। যার অধিকাংশের অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে।’
কালীগঞ্জ থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, ‘সীমান্তের গ্রামে মাদকের ট্যাগ রোধে অভিযান জোরদার করা হচ্ছে। অভিযান স্তব্ধ করতে মাদক কারবারিদের কোনো চক্রান্তই সফল হবে না। আমরা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’

দুর্বৃত্তদের ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এতে ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড, চালকসহ ট্রেন যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এতে কেউ চোখ হারিয়েছেন, এমনকি মৃত্যুবরণের ঘটনাও ঘটেছে
০৮ জানুয়ারি ২০২২
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
৪ ঘণ্টা আগে
কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের।
৪ ঘণ্টা আগে
বন্দর নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরই চিকিৎসাসেবা নিতে বেশি ভিড় জমে মা ও শিশু হাসপাতালে। প্রায় ৫ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এই হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে