Ajker Patrika

পাউবোর খালে বাঁধ দিয়ে বাণিজ্যিক মাছ চাষ প্রভাবশালীদের

গনেশ দাস, বগুড়া
পাউবোর খালে বাঁধ দিয়ে বাণিজ্যিক মাছ চাষ প্রভাবশালীদের

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খালে বাঁধ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। পাঁচ বছর ধরে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালের পানি চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারছেন না। 

প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে খালটি খনন করে পাউবো। তবে পানি প্রবাহ বন্ধ করে খালে মাছ চাষের কোনো সুযোগ নেই বলে জানান পাউবোর কর্মকর্তারা। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও বগুড়ার পাউবো থেকে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের মানস নদী থেকে একটি সরু খাল বের হয়ে বাঙালি নদীর সঙ্গে যুক্ত ছিল। আশির দশকে সারিয়াকান্দিতে যমুনার বাঁধ ভেঙে গেলে পানির তোড়ে খালটি ভেঙে প্রশস্ত হয়। ওইসময় থেকেই খালে নিয়মিত পানি প্রবাহ থাকায় দুই তীরের বাসিন্দারা মাছ শিকারের পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে খালের পানি দিয়ে জমিতে চাষাবাদের জন্য সেচ দিতেন। এ ছাড়া ওই অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পাট চাষ হওয়ায় খালের পানিতে সেই পাট জাগ দেওয়া হতো। 

এদিকে খালের তলদেশ ভরাট ও বিভিন্নস্থান সংকুচিত হয়ে পড়লে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয় পাউবো। প্রথমে পুরো খাল খনন ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয় ৯৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ওই টাকায় কুতুবপুর সেতু থেকে শুরু করে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত খাল খনন ও সংস্কার করা হয়। 

এলাকার লোকজন জানান, কুতুবপুর থেকে শুরু হয়ে কালারতাইড় হয়ে বাঁশহাটা গ্রামে বাঙ্গালী নদীর সঙ্গে যুক্ত খালটি খননের পরপরই মাছ চাষ শুরু করেন এলাকার কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা বাঁশের চাটাইয়ের সঙ্গে জাল দিয়ে ঘের তৈরি করে প্রথম দিকে মাছ চাষ শুরু করেন। পরে বাঁধ দিয়ে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে খণ্ড খণ্ড এলাকা দখল নিয়ে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। 

খালে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ শুরুর ফলে দুই তীরের বাসিন্দা ও তীরবর্তী জমির মালিকদের আর খালের পানি ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এমনকি খালের পানিতে মাছ শিকার করে অনেক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ চললেও এখন মাছ ধরা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান মাছ শিকারিরা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালে দেওয়া বাঁধ। ছবি: আজকের পত্রিকানাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবর রহমান, স্থানীয় বিএনপি নেতা আলী ফকির, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মেহেদী হাসান, মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন মণ্ডলসহ অনেকে মাছ চাষ করছেন খাল দখল করে। 

কুতুবপুর ফকির পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ জানান, বন্যার সময় খালের মধ্যে তাঁদের ১০ শতাংশ জমি বিলীন হয়েছে। অথচ তাঁদের কোনো অধিকার নেই খালের পানি ব্যবহারের। এখন মাছ চাষ করছেন এলাকার প্রভাবশালীরা। ওই গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল সরকার বলেন, ‘খালের পানিতে গোসল করা ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই পানি ব্যবহারের।’ 

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের বেড়া ও মাটির বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। মাছ চাষের বিষয়ে যুবদল নেতা মাহবুবর রহমান বলেন, ‘খালের দুই পাড়ের যারা জমির মালিক তাঁদের কাছ থেকে বার্ষিক ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছি।’ একই দাবি করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মেহেদী হাসানের মাছ চাষের দেখাশোনাকারী ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই এখানে এলাকার লোকজন মাছ চাষ করতেন। তাঁরা যেভাবে জমি ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছে, আমরাও একইভাবে জমি ইজারা নিয়েছি।’ এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আলী ফকির ও মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন মণ্ডলের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন জানান, সম্প্রতি এলাকাবাসী খাল দখলের বিষয়ে তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগপত্রটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। সেখান থেকেই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

খাল দখল করে মাছ চাষের বিষয়টি নজরে না আসার কথা জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবিব। তিনি বলেন, ‘এখন খোঁজ নিয়ে দখলদারদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে। খালের জমি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি হতে পারে না। এ ছাড়া পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করার কোনো সুযোগ নেই।’ 

ইউএনও সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘কুতুবপুরে খাল দখলের বিষয়টি জানার পর সেখানে গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। যারা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন তাঁদের এক সপ্তাহের মধ্যে বাঁধ অপসারণ করতে বলা হয়েছে। কোনোভাবেই যেন পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয় এবং স্থানীয় জনগণ যেন খালের পানি তাঁদের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ 

দখলদার কয়েকজন দাবি করেছেন তাঁরা জায়গা ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন। কার কাছ থেকে কী কাগজমূলে ইজারা নিয়েছেন তা দাখিলের জন্যও দখলদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মির্জাপুরে নিখোঁজের তিন দিন পর তিন সন্তানের জননীর পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
নিহত গোলাপী বেগম । ছবি: সংগৃহীত
নিহত গোলাপী বেগম । ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিখোঁজের তিন দিন পর গোলাপী বেগম (৩৫) নামের তিন সন্তানের জননীর পা বাঁধা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে মির্জাপুর থানা-সংলগ্ন বারোখালী খাল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত গোলাপী বেগম মির্জাপুর পৌর এলাকার বাওয়ার রোডের বিশু মিয়ার মেয়ে ও পোষ্টকামুরী দক্ষিণ পাড়ার আব্দুল কাদের মিয়ার স্ত্রী।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তিন দিন আগে গোলাপী বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এর পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি। রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন থানার পাশে খালে ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিআই তার দিয়ে পা বাঁধা অবস্থায় অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘গোলাপী বেগম তিন দিন আগে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পরনের কাপর দেখে তাঁর লাশ স্বামী কাদের মিয়া শনাক্ত করেছেন। এটি একটি হত্যা। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ০৫
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিধ্বংসী মাছ ধরার সরঞ্জাম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিধ্বংসী মাছ ধরার সরঞ্জাম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে জেলেরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেন।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জলাভূমির দেশীয় মাছ ও জলজ প্রাণবৈচিত্র্যের ওপর চায়না দুয়ারি জালের ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। দেশীয় মাছের প্রজনন, বৃদ্ধি এবং জেলে সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকা রক্ষায় এই জালসহ সব ক্ষতিকর মাছ ধরার বিদেশি সরঞ্জাম দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ এবং মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুযায়ী চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ। তবু কিছু বাণিজ্যিক মৎস্যজীবী এই জাল ব্যবহার করে নদী, খালবিলের দেশীয় মাছ ধ্বংস করছেন এবং ঐতিহ্যবাহী জেলে সম্প্রদায়কে জীবিকার সংকটে ফেলছেন। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, এই জালের কারণে শুধু মাছ নয়, জলজ বাস্তুতন্ত্রের অন্যান্য প্রাণী; যেমন ব্যাঙ, কচ্ছপ, পাখি ও জলজ উদ্ভিদ হুমকির মুখে পড়েছে। রাসায়নিক ও কীটনাশকের অতি ব্যবহার এবং চায়না দুয়ারি জালের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে জলজ পরিবেশ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জেলেরা বলেন, চায়না দুয়ারি বা কারেন্ট জাল বন্ধ না করলে দেশীয় মাছ এবং জলজ প্রাণবৈচিত্র্য পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গোকুল মথুরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গ্রিন কোয়ালিশনের রাজশাহীর আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকী, বারসিকের রাজশাহী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামান কাদেরী, আদিবাসী যুব পরিষদের রাজশাহী জেলার সভাপতি উপেন রবিদাস, সমাজকর্মী সম্রাট রায়হান, আতিকুর রহমান আতিক প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আমির হামজা। ছবি: সংগৃহীত
আমির হামজা। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় আসরের নামাজ শেষে একটি মসজিদে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজা। তখন রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় স্থানীয় বিএনপি নেতা শাজাহান আলী হান্নানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বরিয়া জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

শাজাহান আলী হান্নান বটতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। এ ছাড়া বরিয়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতিও তিনি।

৩ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টা। ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজা বক্তব্য দিচ্ছেলেন। হঠাৎ শাজাহান আলী হান্নান দাঁড়িয়ে আমির হামজাকে কিছু বলার অনুমতি চান। এ সময় হান্নানকে বলতে শোনা যায়, ‘হুজুর ধর্মীয় আলোচনা যত পারেন করেন, কিন্তু রাজনৈতিক কোনো আলোচনা করবেন না।’

এরপর মসজিদে থাকা মুসল্লিরা উত্তেজিত হন। তাঁরা হান্নানের দিকে তেড়ে যান এবং ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বাইরে বের করে দেন। এ সময় কয়েকজনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

বরিয়া জামে মসজিদের সভাপতি ও বিএনপি নেতা শাজাহান আলী হান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মসজিদ কমিটির সভাপতি। মুফতি আমির হামজা মসজিদে আসবেন, সেটাও আমাকে কেউ জানায়নি। আসরের নামাজ শেষে আমির হামজা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। সভাপতি হিসেবে আমি শুধু রাজনৈতিক আলোচনা বাদ দিয়ে ইসলামিক আলোচনা করতে বলেছিলাম। এতেই মসজিদের ভেতরে থাকা লোকজন আমার দিকে তেড়ে আসেন। আমাকে ধাক্কা দেন।’

শাজাহান আলী হান্নান বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন ছাড়া মসজিদের ভেতর যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই অপরিচিত। জামায়াতে ইসলামীর লোকজন। যদিও এই ঘটনার পর আমির হামজা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি আমি জেলা বিএনপির সদস্যসচিবকে জানিয়েছি।’

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘হান্নান ভাই নিজেই ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি। তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ প্রতিহিংসামূলক। আর মসজিদে হবে ইসলামিক আলোচনা। সেখানে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হতে পারে না।’

মুফতি আমির হামজা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গণসংযোগে ছিলাম। ওই মসজিদে নামাজ পড়ার পর ইমাম সাহেব সালাম দিতে বললেন। এক থেকে দেড় মিনিটের মাথায় উনি (শাজাহান আলী হান্নান) সামনের থেকে উঠে বললেন রাজনৈতিক কোনো কথা বইলেন না।’

আমির হামজা আরও বলেন, ‘আমি তো শুরুই করিনি। তারপর সাত-আটজন তাঁকে নিষেধ করতে গেলে হট্টগোল বেধে যায়। পরে বিষয়টি আমি ঠিক করে দিয়ে চলে আসছি।’

কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ারদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘ঘটনাটি জেনেছি। মসজিদে রাজনৈতিক আলোচনা নিষেধ করতে বলা দোষের কিছু নয়। দু-একটা মসজিদের ঘটনা নিয়ে এখনই দল থেকে কোনো বিবৃতি নিয়ে ভাবছি না। তবে অবজারভেশন করছি।’

প্রসঙ্গত, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদভর্তি একটি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ডগ স্কোয়াডসহ বিশেষ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন। এই ঘটনায় রেলওয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একটি দল আজ বনলতা এক্সপ্রেসে অভিযান চালায়। তবে ট্রেনটি থেকে কয়টি অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানানো হয়নি। তথ্য পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানানো হবে।’

রেলওয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ট্রলি ব্যাগে ৮টি পিস্তল, ১৪টি ম্যাগাজিন ও ২৬টি গুলি ছিল।

বিমাননবন্দর রেলস্টেশনে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক। ছবি: সেনাবাহিনী
বিমাননবন্দর রেলস্টেশনে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক। ছবি: সেনাবাহিনী

সেনাবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গোয়েন্দা সংস্থা ও রেলওয়ে পুলিশের সহায়তায় বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি তল্লাশি করে ৮টি বিদেশি পিস্তল, ১৬টি ম্যাগাজিন, ২৬ রাউন্ড অ্যামুনিশন, ২ দশমিক ৩৯ কেজি গান পাউডার এবং ২ দশমিক ২৩ কেজি প্লাস্টিক বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজন ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বনলতা এক্সপ্রেস আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একটি বিরতিহীন ট্রেন, যা শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত