Ajker Patrika

বরিশালে অপসোনিন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, উৎপাদন বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
Thumbnail image

বেতন বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে বরিশালে অপসো স্যালাইন কারখানায় (ওএসএল ফার্মা) শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। ফলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কারখানাটিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় আলোচনা সাপেক্ষে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা। 

দাবিগুলো হচ্ছে–কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা যাবে না,৬ মাসের বেশি কর্মরত শ্রমিককে স্থায়ী করতে হবে, বছরে দুটি উৎসবে বেতনের সমপরিমাণ বোনাস দিতে হবে, দৈনিক খাবারের বিল কমপক্ষে ১২০ টাকা, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার ও মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অস্থায়ী শ্রমিকেরা কারখানায় বিক্ষোভ করেন। সন্ধ্যার পর তারা কিছু সময়ের জন্য বগুড়া সড়ক অবরোধ করেন। 

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের আজ (বৃহস্পতিবার) ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করলে স্থায়ী শ্রমিকরাও তাতে যোগ দেন। ফলে বিকেল ৫টার পর কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নেয়। 

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, অপসো স্যালাইন কারখানায় দেড় সহস্রাধিক শ্রমিকের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত। দৈনিক মজুরিতে তাদের বেতন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। সাপ্তাহিক ছুটিসহ অন্যান্য ছুটিতে তারা মজুরি পান না। অস্থায়ী শ্রমিকেরা তাদের বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকার দাবিতে বুধবার কারখানায় বিক্ষোভ করেন। সন্ধ্যার পরে তারা সড়কেও নেমেছিলেন। ওই সময়ে সেনাবাহিনী এসে মধ্যস্থতা করলে মালিকপক্ষ শনিবার পর্যন্ত সময় চান। 

অস্থায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের একটি অংশ বৃহস্পতিবার বিকেলে কর্মস্থলে গেলে মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয় যে, অস্থায়ী শ্রমিক রাখা হবে না। এ খবর জানাজানি হলে কর্মরত স্থায়ী শ্রমিকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মবিরতিতে যান। এ সময় তারা বেতন বৃদ্ধির দাবি তোলেন। 

স্থায়ী কয়েকজন শ্রমিক জানান, ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের বেতন ১২-১৩ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তা ছাড়া নানা কৌশলে স্থায়ী শ্রমিকদের ছাঁটাই করে অল্প মজুরিতে অস্থায়ী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হয়। গত পাঁচ বছরেরও বেশি স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ হয়নি। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অপসো স্যালাইনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাজিদুল ইসলাম দিপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিকেরা সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ করলেও পরে সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় আলোচনা সাপেক্ষে কাজে যোগ দিয়েছেন। কোম্পানির আর্থিক সংকটের কারণে আপাতত বেতন বৃদ্ধি সম্ভব নয়।’ 

এদিকে শ্রমিক অসন্তোষের এ ঘটনায় বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অপসোনিন ফার্মায় শ্রমিকদের হুমকি শ্রমিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। দীর্ঘদিন ধরে অপসোনিন ফার্মা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের অত্যাচার করে আসছে। 

আর বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের বরিশাল শাখার সদস্যসচিব (বাসদ) ডা. মণিষা চক্রবর্তী বলেছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে কর্মবিরতি শুরুর পর মালিকপক্ষের ডাকে সেনাবাহিনী কারখানায় যায়। বৈষম্য দুর করতে কয়েক দিন আগে শত শত ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে। এখনো শ্রমিকদের ভয় দেখানো শহীদদের আত্মত্যাগ অস্বীকার করার শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত