Ajker Patrika

বিএনপির লোক পরিচয়ে ফসলি জমির মাটি লুটের ব্যবসা

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি 
কোপা ড্রেজার দিয়ে চরমালিয়া গ্রামের একটি বিলের ফসলি জমির মাটি তোলা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোপা ড্রেজার দিয়ে চরমালিয়া গ্রামের একটি বিলের ফসলি জমির মাটি তোলা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের মুলাদীতে বিএনপির কর্মী পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি ফসলি জমির মাটি লুট করে ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের চরমালিয়া গ্রামের একটি বিলের ফসলি জমির মাটি নিয়ে ডোবা, নিচু এলাকা ভরাট করা হচ্ছে। ওই গ্রামের কাঞ্চন সিকদার ও তাঁর লোকজন নিজেদের বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে ‘কোপা ড্রেজার’ দিয়ে মাটি লুট করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দুজন জমির মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করে ফসলি জমির মাটি লুট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সফিপুর ইউনিয়নের চরমালিয়া বিলের বেশির ভাগ জমিতে আমন, বোরো ধানসহ দুই-তিনটি ফসল হয়। কিছু দিন আগে কাঞ্চন সিকদারের নেতৃত্বে এলাকার কয়েকজন লোক নিজেদের বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে ‘কোপা ড্রেজার’ ব্যবসা শুরু করেন। তাঁরা ওই ড্রেজার দিয়ে জোরপূর্বক ফসলি জমির মাটি নিয়ে ডোবা ও নিচু জমি ভরাটের ব্যবসা করছেন। এসব ব্যবসায়ী ডোবা ভরাটের জন্য টাকা নিলেও জমির মালিকদের কোনো টাকা-পয়সা দেন না। জমি থেকে মাটি নেওয়ায় বাধা দিলে জমির মালিকদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগকারী চরমালিয়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু আকন জানান, জমির মালিকদের না জানিয়ে ডোবা, পুকুর, নিচু এলাকা ভরাটের জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি নেওয়ায় পুকুর তৈরি হয়েছে। এতে পার্শ্ববর্তী জমি ভেঙে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের আশায় ফসলি জমির মাটি লুট বন্ধ করছেন না। এভাবে মাটি নেওয়া হলে পুরো বিলের প্রায় ২০ একর জমিতে চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়বে।

আরেকজন জমির মালিক মো. মঞ্জু মোল্লা বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি তুলতে নিষেধ করার পরেও কাঞ্চন সিকদার ও তাঁর লোকজন শুনছেন না। তাঁরা সবাই বিএনপির কর্মী, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোর করে মাটি নিচ্ছেন। এতে সাধারণ কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই মাটি কাটা বন্ধের দাবিতে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছে।

সফিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মো. হান্নান চৌকিদার বলেন, আগে ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সেলিম মল্লিক ড্রেজারটি চালাতেন। কয়েক মাস আগে বিএনপির কর্মী কাঞ্চন সিকদার ড্রেজারটি কিনে এলাকায় ব্যবসা করছেন।

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী কাঞ্চন সিকদার বলেন, কিছুটা নিচু জমি থেকে মাটি নিয়ে ডোবা, পুকুর ভরাটের কাজ করা হয়। জমিমালিকদের কাছ থেকে মাটি কেনা হয়। ফসলি জমি থেকে কোনো মাটি কাটা হয় না। বিএনপির কোনো পদে আছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাঞ্চন সিকদার বলেন, ‘আমি বিএনপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী। বর্তমানে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নাই। তাই কোনো পদ-পদবি নাই।’

এদিকে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী কামাল হোসেন জানান, সফিপুর ইউনিয়নে যাঁদের বিরুদ্ধে ফসলি জমির মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা বিএনপির কেউ নন। বিএনপির লোক পরিচয়ে অবৈধ কাজ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার বৈধতা নেই। দুজন জমিমালিকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব জমি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত