Ajker Patrika

ববিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৫৬
ববিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদারের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সাদেকুল আরেফিনের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম এবিএম মুশফিকুর রহমান। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ছাত্র।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান দুপুর দেড়টার দিকে একাডেমিক ভবনের চারতলা থেকে নিচতলায় যাচ্ছিলেন। হঠাৎ সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার তাঁকে ডাক দেন। ডাক শুনতে না পেয়ে নিচতলার উদ্দেশ্যে হেঁটে যান মুশফিকুর। এতে সুপ্রভাত হালদার ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে শিক্ষক সুপ্রভাত হালদার কোনো উত্তর না দিয়ে ওই ছাত্রের শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে নিজের কক্ষে নিয়ে তাঁকে উপর্যুপরি লাঞ্ছিত করেন ও শার্ট ছিঁড়ে ফেলেন।

এদিকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সমঝোতায় না গিয়ে এ বিষয়ে সুষ্ঠু বিচার চান ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান জানান, শিক্ষক সুপ্রভাত হালদার তাঁর কক্ষে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপাচার্য বলেছেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার আজকের পত্রিকাকে জানান, যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি এখনো পাননি, সেহেতু এ বিষয়ে কিছুই বলতে চান না তিনি। উপাচার্যের দপ্তরে মঙ্গলবার ওই ছাত্রের সঙ্গে সমঝোতা করানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ঘটনাও সত্য নয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, সোমবার দুপুরে মুশফিকসহ একদল শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষের সামনে হইচই করছিলেন। এ সময় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার বেরিয়ে এসে বকাবকি করেন। ওই শিক্ষক মুশফিককে ডাক দিলেও তিনি না শোনায় শিক্ষক তাঁর হাত ধরেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে শিক্ষক সুপ্রভাত বোধ হয় ছাত্রের কলার ধরে তাঁর বিভাগে নিয়ে যান। 

প্রক্টর ড. খোরশেদ জানান, বিষয়টি শুনে দ্রুত গিয়ে ওই ছাত্রকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন তিনি।

প্রক্টর আরও বলেন, এ ঘটনা সোমবার রাতে ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে ছাত্র মুসফিককে বোঝানো হলেও তিনি মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ সময় তারা ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেও পারেননি। ওই ছাত্র সমঝোতায় আসতে চান না। উপাচার্যের কার্যালয়ে তখন আইন বিভাগ এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষকেরাও ছিলেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিৎ। যে শিক্ষককে নিয়ে কথা উঠেছে সেই শিক্ষক ভালো মানুষ। ওনার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার কথা নয়। যে বিষয়টি এসেছে তা দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষার্থীর অভিযোগ সঠিক কিনা তা নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তা ছাড়া ছাত্রদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো রাখতে দুই বিভাগের শিক্ষকেরাও ভূমিকা নেবেন বলে মনে করি।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৮ টাকা কেজি আলু, গাড়ি থামতেই মানুষের ভিড়

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে মাইকে ভেসে আসছিল ঘোষণা, ‘৫০ কেজি আলুর বস্তা মাত্র ৫০০ টাকা!’ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজারে আলুর গাড়িটি থামতেই ভিড় জমায় লোকজন। দর-কষাকষির পর শেষমেশ বস্তাপ্রতি দাম নেমে আসে ৪০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি মাত্র ৮ টাকা।

বর্তমানে খুচরা বাজারে ভালো মানের আলুর দাম যখন প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা বা ১০০ টাকায় ৫-৬ কেজি, তখন এই দামে আলু পেয়ে ক্রেতারা দারুণ খুশি। কেউ এক বস্তা, কেউ দুই বস্তা, আবার কেউ তিন বস্তা আলু কিনেছেন।

আলু কিনতে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আলুগুলো তেমন ভালো নয়। তবে এত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, তাই এক বস্তা নিলাম। গরু-ছাগলের খাবার হবে।’

আরেক ক্রেতা মো. ছাবের আলী বলেন, ‘যেটুকু খাওয়া যায় খাব। আর প্রতিদিন গরুকে ২ কেজি করে ঘাসের সঙ্গে কেটে দেব। তা ছাড়া এই আলুর গাছ বের হলে লাগালেও হতে পারে।’

ক্রেতা আবু হানিফ জানান, মাইকে ৫০০ টাকা দাম শুনে বাজারে ভিড় জমে। লোকজনের দর-কষাকষিতে শেষ পর্যন্ত প্রতি বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন বিক্রেতা।

আলু ব্যবসায়ী মো. উমর ফারুক জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন জেলায় তাঁদের চারটি গাড়ি আলু বিক্রির জন্য বের হয়। তিনি বলেন, ‘৫০ কেজির বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি করেও আমাদের লাভ থাকছে। যে বাজারেই থামছি, ১০ থেকে ১৫ মণ আলু বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আলুর অন্তত ৩০ কেজি মানুষ খেতে পারবে এবং বাকি ২০ কেজি গরু-ছাগলের খাবার হবে। এত সস্তায় আলু সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যবসা করছি। আরও দুই মাস চলবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম। তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মিত বহুতল ভবনে প্লাস্টারের কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।

ভবনটি নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত নির্মাণশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের নবম তলায় প্লাস্টারের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত ৮টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে এই ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজানি হয় রাত ১১টার দিকে।

ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ভবনের নবম তলায় প্লাস্টারের কাজ করা হচ্ছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান। পরে সাভারের এনাম মেডিকেলে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে সিপিবি সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
মাউথ স্পিকার হাতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাউথ স্পিকার হাতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেট জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে আটক করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। শুক্রবার মধ্যরাতে নগরের কালীবাড়ি এলাকার সুমনের নিজ বাসা থেকে এসএমপি জালালাবাদ থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করে।

রাত ২টায় আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। কী অভিযোগে আটক করা হয়েছে, তা সকালে জানাবেন উল্লেখ করে অভিযান চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সিপিবি সিলেটের সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ি এলাকার বাসা থেকে সুমনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

সম্প্রতি আনোয়ার হোসেন সুমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার নগরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন চালকেরা। এতে আনোয়ার হোসেন সুমনও সম্পৃক্ত ছিলেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে সুমনসহ কয়েকজন মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর দাবি আদায়ে রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন চালকেরা। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে রোববার অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন তাঁরা। তার আগেই শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সুমনকে আটক করা হলো।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, অটোরিকশাচালকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের শনি ও রোববারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে সিলেট মহানগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে বহু রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর পর থেকে নগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে দেওয়া হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শতবর্ষেও আব্দুর রহিমকে পরতে হয় না চশমা, নড়বড়ে হয়নি দাঁত

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। ছবি: আজকের পত্রিকা

১০৫ বছর বয়স। কিন্তু নড়বড়ে হয়নি একটি দাঁতও, পরতে হয় না চশমা। এই বয়সেও দিব্যি হেঁটে চলাফেরা করেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের নিঝাল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম।

গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করছিলেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। তিনি একটি চাকু দিয়ে সুপারি কাটছিলেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এই বয়সেও কি সুপারি চিবোতে পারেন?

প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসলেন রহিম। জানালেন, তাঁর দাঁত পড়েনি, এমনকি নড়বড়েও হয়নি। আলাপচারিতার মাঝেই পান-সুপারি মুখে দিয়ে কাপড়ের পোঁটলা থেকে চুনের ডিব্বা বের করলেন। তিনি জানান, তাঁর বয়স এখন ১০৫ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর।

পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের জনক আব্দুর রহিম এখনো বেশ সক্ষম। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে-মেয়েদের দেখলে তাঁদেরই বয়স বেশি মনে হবে। তাঁর আপন চার ছোট ভাই অনেক আগে মারা গেছেন। মাথার চুল দেখিয়ে তিনি বললেন, এখনো কিছুটা চুল কালো রয়েছে।

এত বয়সেও শারীরিক সক্ষমতা ঠিক থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করি বটে, তবে ভালো খাবার খাই। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করি, মাথায় তেল দিই। ডিম ও কলা খাই। নিয়মিত গোসল করি এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করি।’

৯ ছেলে-মেয়ে থাকতেও কেন ভিক্ষা করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের সংসার ঠিকমতো চলে না। কেউ চট্টগ্রাম, কেউ ঢাকায় থাকে, অন্যরা কৃষিশ্রমিকের কাজ করে। আমার স্ত্রী বেঁচে আছেন, তবে তিনি এখন অচল হয়ে পড়েছেন।’

জীবনের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধনদৌলত, হায়াত-মৌত আল্লাহর হাতে। তাঁর (স্রষ্টার) রহমতেই এখনো বেঁচে আছি এবং ভালো আছি। তবে আমার টাকার দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত