Ajker Patrika

জাতীয়করণের নামে বিপুল টাকা লেনদেন

  • আমতলী-তালতলীতে মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ টাকা আদায়
  • দুই উপজেলার ১১৯টি নামসর্বস্ব মাদ্রাসার তালিকা জেলা শিক্ষা অফিসে
  • অনুদানবিহীন ১১৩ মাদ্রাসার অধিকাংশেরই অস্তিত্ব নেই।
মো. হোসাইন আলী কাজী, আমতলী (বরগুনা) 
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৫: ২৩
বরগুনার আমতলী উপজেলার চরখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ঘর তোলা হয় ২০১৮ সালে। কিন্তু সেখানে নেই কোনো শিক্ষা কার্যক্রম। এরপরও জাতীয়করণের জন্য মাদ্রাসাটির নাম পাঠানো হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনার আমতলী উপজেলার চরখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ঘর তোলা হয় ২০১৮ সালে। কিন্তু সেখানে নেই কোনো শিক্ষা কার্যক্রম। এরপরও জাতীয়করণের জন্য মাদ্রাসাটির নাম পাঠানো হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কাগজে-কলমে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। অধিকাংশ মাদ্রাসার কোনো স্থাপনা নেই। অভিযোগ রয়েছে নামসর্বস্ব এসব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণার পর থেকে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলায় দালালেরা মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ টাকা আদায় করছে। দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে চাকরি জাতীয়করণের লোভে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা টাকা দিচ্ছেন। দ্রুত ওই দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি উঠেছে।

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ১১৯টি নামসর্বস্ব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তালিকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অলি আহাদ বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছেন।

ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর ৭৬টি আমতলীর ও ৪৩টি তালতলীর। এর মধ্যে দুই উপজেলায় অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র মাদ্রাসার সংখ্যা মাত্র ছয়টি। এ মাদ্রাসাগুলো হলো পূর্ব চিলা হাসানিয়া, মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া, উত্তর ঘোপখালী, মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া নাচনাপাড়া, কুতুবপুর ইসরাইলিয়া ও তালতলীর চামোপাড়া মজিদিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা ছয়টি অনুদান পেলেও গত দুই/এক বছরে কোনো শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় আসেনি বলে জানা যায়। শিক্ষকেরা কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী দেখিয়ে আসছেন। বাস্তবে কোনো শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষকেরা মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় এলেও উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করে খাতা বগলদাবা করে চলে যান।

স্থানীয়রা বলেন, ওই সব মাদ্রাসায় কোনো দিন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আসতে দেখিনি। জরাজীর্ণ ঘরগুলো সব সময়ই তালাবদ্ধ থাকে। এ ছাড়া অনুদানবিহীন ১১৩ মাদ্রাসার অধিকাংশেরই অস্তিত্ব নেই, শিক্ষার্থী তো দূরের কথা। ২০১৮ সালে কিছু মাদ্রাসার ঘর তুলে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এসব মাদ্রাসার নামে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে।

আমতলীর ৭৬টি মাদ্রাসায় ৯ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী এবং তালতলীর ৪৩টি মাদ্রাসায় ৫ হাজার ৯৫০ শিক্ষার্থী দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে দুই-একটি ছাড়া কোনো মাদ্রাসায়ই শিক্ষার্থী নেই। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ আমতলীতে নামসর্বস্ব মাদ্রাসাসহ ৭৬টি এবং তালতলীতে ৪৩টি মাদ্রাসার তালিকা বরগুনা জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ করার ঘোষণা দিলে আনন্দে মেতে ওঠে আমতলী-তালতলীর একাধিক দালাল চক্র। তারা জাতীয়করণের নামে মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দালালেরা ভয় দেখান এই বলে যে—দ্রুত টাকা দেন, নইলে মাদ্রাসা জাতীয়করণের তালিকায় নাম যাবে না। যাঁরা আগে টাকা দেবেন তাঁদেরটা আগের তালিকায় জাতীয়করণ হবে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে টাকা দিতে হবে। নইলে জাতীয়করণ হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক শিক্ষক বলেন, প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা করে দালালেরা মাদ্রাসাপ্রতি ১০-১৫ লাখ টাকা চাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক দালালদের টাকা দিয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী জালাল পিয়াদা ও আমতলী উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন এই দালালি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে জালাল পিয়াদারের মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।

আমতলী উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাদ্রাসার তালিকা চেয়েছেন, তাই তালিকা দিয়েছি।’ শিক্ষার্থী নেই এমন মাদ্রাসার নাম দিলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

গত সোমবার আমতলী উপজেলার অনুদানভুক্ত মাদ্রাসা কুতুবপুর ইসরাইলিয়া, মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া, মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া ও তালতলী উপজেলার একমাত্র চামোপাড়া মজিদিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে, মাদ্রাসার ঘর আছে; কিন্তু কত দিন আগে এ মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থী এসেছে তা বলা মুশকিল।

কুতুবপুর ইসরাইলিয়া স্বতন্ত্র মাদ্রাসার দোচালা টিনের ঘরের কক্ষ খড়কুটায় ভরা দেখা যায়। কোনো বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ছিল না। এ মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রধান গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এখনো বই পাইনি। তাই ক্লাস করতে পারছি না।’

মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া মাদ্রাসায় ভাঙাচোরা বেঞ্চ-টেবিল দেখা যায়। কক্ষ ময়লা-আবর্জনায় ভরা ছিল। এ মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রধান মাওলানা আলাউদ্দিন দাবি করেন, তাঁরা গত বছর ক্লাস করেছেন। এ বছর বই না পাওয়ায় ক্লাস শুরু হয়নি। এখন রোজা ও ঈদের বন্ধ।

অনুদানবিহীন তালিকার ৪০ নম্বর গোজখালী তাছাউফ স্বতন্ত্র মাদ্রাসার কোনো ভবন নেই। স্থানীয় নুর জামাল, সফিকুল্লাহ ও আবিদ বলেন, ‘ভবন তো নেই, শিক্ষার্থীও নেই। কিন্তু কীভাবে তালিকায় নাম আসল তা আমরা জানি না?’

৭৬ নম্বর পশ্চিম কেওয়াবুনিয়া মুজাহিদিয়া, ১৪ নম্বর উত্তর কাউনিয়া, ৫৩ নম্বর কাউনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব নেই। স্থানীয়রা বলেন, গত ২০ বছরে দেখিনি এই নামে কোনো মাদ্রাসার অস্তিত্ব আছে। তালতলীর ২৫ নম্বর পূর্ব গাবতলী এইউ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসারও কোনো অস্তিত্ব নেই। জাতীয়করণ ঘোষণার পরে মাদ্রাসার নাম তালিকায় দিয়েছেন।

আমতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অলি আহাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয় তালিকা চেয়েছে। তাই তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু নামসর্বস্ব মাদ্রাসার নাম কেন তালিকায় পাঠিয়েছেন এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। তবে টাকার বিনিময়ে তালিকা করা হয়েছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দেড় মাস পর ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন।

সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ২১ শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অ্যাজেন্ডা রেজল্যুশন আকারে অনুমোদন শেষে বৃহস্পতিবার তা সার্কুলেশন হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের শাহারিয়ার শাওন এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের তরিকুল ইসলাম নয়ন।

এর মধ্যে শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেনকে ছয় মাস বা এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, তরিকুল ইসলাম নয়নকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শাহারিয়ার শাওনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে তাঁদের অভিভাবকসহ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কাছে হাজির হয়ে মুচলেকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রক্টর ড. রাহাত বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে এ সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের পর বিষয়টি সিন্ডিকেট পর্যন্ত গড়ায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজিবির ‘মেঘলা’ ধরে ফেলল ২০ লিটার চোলাই মদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং এলাকায় ইজিবাইকে ২০ লিটার দেশীয় চোলাই মদ শনাক্ত করে বিজিবির কুকুর ‘মেঘলা’। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং এলাকায় ইজিবাইকে ২০ লিটার দেশীয় চোলাই মদ শনাক্ত করে বিজিবির কুকুর ‘মেঘলা’। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) প্রশিক্ষিত কে-নাইন কুকুর ‘মেঘলা’র সূক্ষ্ম ঘ্রাণশক্তি ও দক্ষতায় আবারও ধরা পড়ল মাদক পাচার চক্র। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) দমদমিয়া চেকপোস্টে নিয়মিত তল্লাশির সময় হোয়াইক্যং থেকে টেকনাফগামী একটি ইজিবাইক থেকে ২০ লিটার দেশীয় চোলাই মদ উদ্ধার ও দুই পাচারকারীকে আটক করে।

বিজিবি জানায়, তল্লাশির একপর্যায়ে কুকুর মেঘলা ইজিবাইকের যাত্রী ও যানটির নিচের অংশে মাদকের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। এরপর বিজিবি সদস্যরা বাইকের পেছনের সিটের নিচে বিশেষভাবে লুকানো পানির বোতলের ভেতর থেকে চোলাই মদ উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলেই মদ বহনকারী মো. আবুল হাশেম (৩৬) ও তাঁর সহযোগী ইজিবাইকচালক মো. কালা মিয়াকে (৩২) আটক করা হয়।

আটক দুজনের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং এলাকায়। জব্দকৃত মদ, ইজিবাইক এবং আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘ডগ মেঘলা নিয়মিত অভিযানগুলোতে আমাদের চোখের আড়ালে থাকা মাদক খুঁজে বের করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। সীমান্তে মাদক পাচার রোধে এই প্রশিক্ষিত কুকুরের ভূমিকা এখন বিজিবির বড় শক্তি।’

দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি মেঘলার মতো কে-নাইন টিমও প্রতিনিয়ত অবদান রাখছে বলে বিজিবি জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সবার সহযোগিতা ছাড়া কর্ণফুলীর যানজট নিরসন সম্ভব নয়: সিএমপি উপকমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
‘কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকার যানজট নিরসনে করণীয় শীর্ষক’ গোলটেবিল আলোচনায় অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকার যানজট নিরসনে করণীয় শীর্ষক’ গোলটেবিল আলোচনায় অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কর্ণফুলী সেতু এলাকার যানজট নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) উপকমিশনার নেছার আহমেদ বলেছেন, ‘যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। কারণ এটা আমাদের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার মিলিত সহযোগিতা ছাড়া যানজট নিরসন সম্ভব নয়।’

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত ‘কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকার যানজট নিরসনে করণীয় শীর্ষক’ গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

এই বিষয়ে কর্ণফুলী সেতুর টোল ম্যানেজার কাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের টোল গ্রহণের ১০টি বুথ রয়েছে। আরও বুথ বাড়ানো ও টোল আদায় প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করলে এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।’

মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সেক্রেটারি জসিম উদদীন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোম্পানির প্রোপাগান্ডায় বাধাগ্রস্ত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ সংশোধনের উদ্যোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর (বিইআর) সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও কর বৃদ্ধিতে কোম্পানির প্রোপাগান্ডা মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা। ছবি:  আজকের পত্রিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর (বিইআর) সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও কর বৃদ্ধিতে কোম্পানির প্রোপাগান্ডা মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকের ব্যবহার কমাতে সরকার বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে রাখতে প্রতিবছর সরকার মূল্য ও করহার বৃদ্ধি করে আসছে। কিন্তু এসব উদ্যোগ ঠেকাতে তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর (বিইআর) সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও কর বৃদ্ধিতে কোম্পানির প্রোপাগান্ডা মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। কর্মশালার আয়োজন করে বিইআর ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)।

বিইআরের প্রকল্প পরিচালক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো চোরাচালানের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মূল্য ও করহার বৃদ্ধির উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। প্রতিবছর বাজেটের আগে আগে গণমাধ্যমে হঠাৎ চোরাচালানের খবর বেড়ে যায়, যা আসলে সাজানো ও বিভ্রান্তিকর।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সিগারেটের দাম প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। তাই চোরাচালানের গল্পের কোনো ভিত্তি নেই। বরং গত ১৫ বছরে রাজস্ব আয় নিয়মিতভাবে বেড়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সিগারেট থেকে রাজস্ব আয় ছিল ৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৭৭ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তামাক আইন শক্তিশালী হওয়ার পরও রাজস্ব কখনো কমেনি।

প্যানেল আলোচক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা বলেন, বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে পরিচালন ব্যয় বেশি দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। তারা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে, অথচ তারাই রাজস্ব ক্ষতির ভয় দেখিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচলিত বহু স্তরভিত্তিক অ্যাডভেলরেম কর কাঠামো রাজস্ব ফাঁকি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। রাজস্ব বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এখনই সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো চালু করতে হবে। প্রাথমিকভাবে প্রতি শলাকা সিগারেটে এক টাকা হারে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে প্রতিদিন সরকারের রাজস্ব আয় ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, সরকারের উচিত তামাক কোম্পানির মিথ্যা তথ্য আমলে না নিয়ে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন, একটি পূর্ণাঙ্গ তামাক করনীতি প্রণয়ন এবং কোম্পানিগুলোর অবৈধ হস্তক্ষেপ ও আইন অমান্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইআরের সিনিয়র প্রজেক্ট ও কমিউনিকেশন অফিসার ইব্রাহীম খলিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত