Ajker Patrika

পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে তালতলীর শুঁটকিপল্লিতে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি 

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ২০: ১৮
Thumbnail image

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে উপজেলার আশারচরের পল্লিতে শুঁটকি নষ্ট হয়ে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই এমন ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলে ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা। 

জানা যায়, বরগুনার তালতলীর আশারচর এলাকায় কমপক্ষে প্রায় ৫ শতাধিক জেলে শুঁটকি আহরণ করছেন। গড়ে তোলেন ৫ মাসের জন্য অস্থায়ী বসতি। সাগর থেকে ধরা মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় গত পাঁচ দিন ধরে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে শুঁটকিপল্লি ২১ ব্যবসায়ী ও জেলেদের ২০০ থেকে ৫০০ মাচায় মাছ শুকানোর মাঠ থেকে প্রায় ৪ হাজার টন শুঁটকি সাগরে ভেসে গেছে। পাঁচ দিনের ভারী বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে ঘরে থাকা আরও অনেক শুঁটকি। জেলেদের হিসেবে অর্ধ কোটি টাকার বেশি শুঁটকির ক্ষতি হয়েছে। এ অসময়ে ক্ষতির কারণে এখানকার জেলেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিটি জেলে পরিবার ও ব্যবসায়ীদের ২ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফলে শুঁটকির থেকে রাজস্ব আয়ও কমবে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা। 

আশার চরের শুঁটকিপল্লির ব্যবসায়ী সেকান্দার আলী বলেন, টানা পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বাড়ায় শুঁটকির মাচা পানিতে তলিয়ে গেছে। আমার নিজেরই প্রায় ৩ লাখ টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া সাত দিন ধরে আমার জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে পারছেন না। এ জন্য আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। এই শুঁটকি ব্যবসায় প্রতিবছর এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। কিন্তু এই বৃষ্টিতে তা চেয়ে দ্বিগুণ লোকসান হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না। 

আরেক ব্যবসায়ী জামাল আকন বলেন, এখানে আমার ৩০ জন জেলে শুঁটকি শুকানোর কাছে নিয়োজিত আছে। বৃষ্টির এই পাঁচ দিন ধরে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছি। সাগরেও নামতে পারছি না। যে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় শুরু করেছি তা শোধ করতে পারব না। এই বছর লাভের মুখ দেখা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। 

শামসুল হক নামে অপর এক জেলে বলেন, আশারচরে এই মৌসুমে ৫ মাস শুঁটকি আহরণ করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারছি না। এখন যদি মৌসুমের বাকি সময় আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে কিছুটা হলেও ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করা যাবে।

জাফর আকন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে শুঁটকিপল্লি থেকে ২ লাখ টাকার মতো লাভ হয়। কিন্তু এ বছর প্রায় ৩ লাখের ওপরে ক্ষতি হয়েছে। আমার বাসার সামনের মাচায় থাকা লইট্টা ও ছুড়ি মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। 

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, জেলেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী টানা বর্ষণে চরগুলোতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার শুঁটকির ক্ষতি হয়েছে। এতে শুঁটকি পল্লি থেকে রাজস্বও কমে আসবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত