Ajker Patrika

৭০ বছরে বিয়ে করে সাবেক শিক্ষক বললেন, সবারই বিয়ে করা উচিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১৭: ০৬
৭০ বছরে বিয়ে করে সাবেক শিক্ষক বললেন, সবারই বিয়ে করা উচিত

৭০ বছর বয়সে বিয়ে করে চিরকুমারত্ব ঘোচানো সাবেক কলেজ শিক্ষক হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘সবারই বিয়ে করা উচিত। বিয়ে না করা কোনো যৌক্তিক কাজ হতে পারে না। বিয়ে করার ধর্মীয়, সামাজিক, পারিবারিক ও শারীরিক গুরুত্ব অনেক। জীবনের ঝামেলার জন্য সময়মতো না হলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করা উচিত।

একাকিত্ব ঘোচাতে অবশেষে বিয়ে করেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক হাওলাদার শওকত আলী। গত ১৮ মার্চ শনিবার ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে পাশের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার ৩৫ বছর বয়সী শাহেদা বেগম নাজুকে বিয়ে করেন তিনি।

নিজ বাড়িতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পরিবারের সম্মতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী বিয়েতে মেয়ের বাড়িতে ছেলেপক্ষের যাওয়ার কথা থাকলেও শওকত আলীর আবদারে মেয়েপক্ষের লোকজন আসে তাঁর বাড়িতে।

হাওলাদার শওকত আলী ১৯৫৪ সালে রামপাল উপজেলার জিগির মোল্লা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৫ ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করে খুলনা বিএল কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে রামপাল ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন।

সংসার শুরু করার এক সপ্তাহ পর নবদম্পতিসংসারে অভাব-অনাটন থাকায় ভাই-বোনদের পড়াশোনাসহ সংসারের বেশির ভাগ দায়িত্ব পড়ে শওকত আলীর ওপর। আয় বাড়ানোর জন্য চাকরির পাশাপাশি ১৯৯৩ সালে বাড়ি ছেড়ে হুড়কা এলাকায় চিংড়ি চাষ শুরু করেন শওকত। পরবর্তী সময়ে জমি কিনে হুড়কাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

ভাই-বোনদের পাশাপাশি স্থানীয় দুই শতাধিক দরিদ্র শিক্ষার্থীকে নিজ ব্যয়ে পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি। নানা কারণে সময়মতো বিয়ে করা হয়নি তাঁর। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান শওকত আলী। বৃদ্ধ ভাইকে দেখাশোনা করার জন্য ছোট বোন নার্গিস আক্তার ঝরনা একমাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকেন ভাইয়ের বাড়িতে। তারপরও জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে নিজেকে বড় একা মনে হতে থাকে শওকত আলীর। এই একাকিত্ব ঘোচাতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘জীবনের শুরু থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। ভাই-বোন ও এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল আমার একমাত্র লক্ষ্য। যে কারণে বিয়ে বা নিজের করা জমিতে একটি বাড়িও করিনি। আল্লাহ আমার আশাই পূরণ করেছেন। আমার সব ভাইবোন শিক্ষিত হয়েছে। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।’

শওকত আলী আরও বলেন, ‘এলাকার অনেককে পড়াশোনার খরচ দিয়েছি। তারাও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে দেশে-বিদেশে চাকরি করছেন। হুড়কার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আমার নিজস্ব জমি ও মৎস্য ঘের রয়েছে। সবকিছুতেই নিজেকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ মনে হতো। স্বজনদের চাপ থাকলেও বিয়ে করিনি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে নিজেকে খুব একা মনে হতে থাকে। যে কারণে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। এতে পরিবারের সবাই খুবই খুশি হয়েছে।’

বিয়ের পোশাকে নবদম্পতিবিয়ের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল, এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘খুবই ভালো আছি। বিয়ের পর এখনো শ্বশুরবাড়ি যাইনি। তবে স্ত্রীকে নিয়ে নদীতে স্পিডবোটসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। শ্বশুরবাড়ি যাব একটু সময়-সুযোগ করে। সবকিছু জেনেই নাজু আমাকে বিয়ে করেছে। আমিও নাজুকে আপন করে নিয়েছি। জীবনের বাকিটা সময় আমরা একসঙ্গে কাটাতে চাই।’

নববধূ শাহেদা বেগম নাজু বলেন, ‘সবার কাছে দোয়া চাই। বাকি জীবন যেন আমরা সুখ-শান্তিকে কাটাতে পারি।’ শাহেদা বেগম নাজুর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। সেখানে একটি মেয়ে আছে তাঁর। ওই মেয়েরও দায়িত্ব নিয়েছেন হাওলাদার শওকত আলী।

হাওলাদার শওকত আলীর নিকটাত্মীয় আব্দুল হালিম খোকন বলেন, ‘তিনি আমাদের বড় ভাই। আমরা তাঁর কাছে মানুষ হয়েছি। সারাটা জীবন তিনি আমাদের সুখ-দুঃখে বটবৃক্ষের মতো আগলে রেখেছেন। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তাঁকে বিয়ে করাতে। অবশেষে তিনি বিয়েতে রাজি হয়েছেন। সবাই আমাদের ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।’ 

হাওলাদার শওকত আলীর বোন নার্গিস আক্তার ঝরনা বলেন, ‘ভাইয়ার দেখাশোনা করার জন্য ছেলেকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে থাকি। আমরা সব ভাই-বোন সব সময় চাইতাম, ভাইয়ার একা সংসার হোক। তিনি সুখে-শান্তিতে থাকুন। আমাদের জন্য তো অনেক করেছেন। শেষ বয়সে এসে ভাইয়া বিয়ে করেছেন। এ জন্য আমরা সবাই খুশি।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়িতে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এক স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে লিটন ত্রিপুরা (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

‎মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর বন্ধুকে নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে আলুটিলা এলাকায় বেড়াতে যান। ওই সময় লিটন ত্রিপুরা তাঁদেরকে অনুসরণ করেন। আলুটিলায় তারেং এলাকায় পৌঁছানোর পর মোটরসাইকেলচালক লিটন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই শিক্ষিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ১০ হাজার টাকাও দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগীর বন্ধু স্থানীয় সেনাক্যাম্পে খবর দিলে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে লিটন ত্রিপুরাকে আটক করে। এরপর তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। 

মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা ধর্ষণের অভিযোগে মোটরসাইকেলচালক লিটন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করি। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

যমুনা রেলসেতুর পিলারে দেখা দেওয়া কিছু ফাটলের ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো আসলে ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট সূক্ষ্ম ‘হেয়ার ক্র্যাক’ বা চুলের মতো সরু ফাঁকা। বৃহস্পতিবার থেকে একাধিক ফেসবুক পেজে এসব ফাটলের ছবি দেখা যাচ্ছে।

যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. নাইমুল হক বলেন, যমুনা রেলসেতুতে কোথাও কোনো ফাটল ধরেনি। কোনো পিলারে ফাটলের চিহ্নও নেই। একটি চক্র এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাটল ধরানোর ছবি তৈরি করেছে এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে গুজব ছড়িয়েছে।

যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মার্ক হ্যাবি বলেন, রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের ৮-১০টি পিলারের নিচে হেয়ার ক্র্যাক শনাক্ত হয়েছে। এসব জায়গায় ইতিমধ্যে রেজিন বা বিশেষ আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

মার্ক হ্যাবি আরও বলেন, এটি কোনো নির্মাণ ত্রুটি নয়, এমনকি ‘হানিকম্ব’ সমস্যাও নয়। প্রচণ্ড গরম ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কংক্রিটের নিচে শূন্য দশমিক ১ থেকে ৩ মিলিমিটার পর্যন্ত সূক্ষ্ম ফাঁকা তৈরি হয়েছে। এতে সেতুর গঠন বা স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়বে না।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক জানান, এসব হেয়ার ক্র্যাক ধীরে ধীরে ঘষে মেরামত করা হচ্ছে। সেতুর কাঠামো বা ট্রেন চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি বড় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

উল্লেখ্য, যমুনা সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯ স্প্যান। এটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

সেতুটিতে আসা-যাওয়ার দুটি লাইন (ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাক) রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালকসহ নিহত ৩

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদীর রাইনাদী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের রাইনাদী গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে সিয়াম মিয়া (২২), আলতাফ হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৮) ও রবিউল ইসলামের ছেলে অটোচালক ফাহিম মিয়া (৩০)।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, রাতে ইজিবাইকে করে তিনজন মাধবদীর দিক থেকে রাইনাদী এলাকায় যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে সিলেটগামী দ্রুতগতির বাসটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এ সময় দুজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান আরও একজন।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজন মারা গেছেন। ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। বাসটি জব্দ করা হলেও পালিয়ে গেছেন বাসের চালক ও তাঁর সহযোগী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামীকাল শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে। এ কারণে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নামার জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। জাল ও নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গোছাতে মাছঘাটগুলোতে এখন তাদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। এদিকে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশা করছেন, এবার ইলিশের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি হবে।

জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন লক্ষ্মীপুরের রামগতি আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে দুই শতাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে প্রায় ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১০টি নৌকা ও প্রায় ১ হাজার কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার জন্য জেলেরা এখন নৌকা ও জাল মেরামতের কাজ করছেন। জেলেরা জানান, এবারের অভিযান কঠোর ছিল এবং তারা সরকারের আইন মেনেই মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন। তবে তাদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময় বরাদ্দকৃত চাল (৪৪ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি হারে মোট ১ হাজার ১৪ মেট্রিক টন) কিছু ক্ষেত্রে অন্য পেশার লোকজনকে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে তারা পুরোদমে আবার মাছ ধরা শুরু করবেন।

লক্ষীপুর-২
লক্ষীপুর-২

এবারের অভিযান সফল হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, "গতবারের চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। " তিনি আশা করেন, এ বছর লক্ষ্মীপুরে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার মেট্রিক টন হবে, যা গত বছরের চেয়ে ৫০০ মেট্রিক টন বেশি। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এই ধরনের কঠোর অভিযান অব্যাহত ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত