Ajker Patrika

ছুটি বাড়লেও কর্মস্থল ছাড়তে পারবেন না পোশাক শ্রমিকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছুটি বাড়লেও কর্মস্থল ছাড়তে পারবেন না পোশাক শ্রমিকেরা

ঢাকা: গার্মেন্টস শ্রমিকদের মালিকপক্ষ ছুটি বাড়িয়ে দিলেও তাঁরা কর্মস্থল বা এলাকা ছাড়তে পারবেন না বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান।

আজ রোববার রাজধানীর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণিতে অবস্থিত শ্রম ভবনে আয়োজিত ‘আরএমপজ–বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)’–এর নবম সভায় এ কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার তিন দিনের ছুটি নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেটি অতিক্রম করা সম্ভব নয়। তবে যেসব কারখানায় কাজ নেই অথবা জরুরি রপ্তানির জন্য কাজ চলছে, সেখানে মালিক ও শ্রমিকেরা মিলে ছুটি নির্ধারণ করবেন। তবে ছুটি বাড়ানো হলেও কেউ কর্মস্থল বা এলাকা ছাড়তে পারবেন না বলে জানান তিনি।

১০ মের মধ্যে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের যাবতীয় বেতন ও বোনাস পরিশোধের জন্য তিনি মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। বর্তমান সরকার শিল্প ও শ্রমিকবান্ধব সরকার উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে করোনা মহামারিতেও শিল্পকারখানা চালু রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গার্মেন্টস শ্রমিকদের তিন দফা বেতন–ভাতা বাড়ানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শ্রমিক নেতারা বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকেরা টানা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন যাতে তাঁরা ঈদের সময় একটু বেশি ছুটি ভোগ করতে পারেন। তাঁরা বছরে দুটি ঈদ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে করে থাকেন। কিন্তু ছুটি তিন দিন দেওয়া হলে তাঁদের সমস্যা হবে। এ জন্য তাঁরা ছুটি বাড়ানোর তাগিদ দেন। তবে শ্রমিক সংঘটনের অন্য নেতারা সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তাঁরা বলেন, সরকারের নির্দেশনা ছিল যেসব শ্রমিক কারখানায় কাজ করবেন, তাঁদের কারখানার পক্ষ থেকে পরিবহনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু কোনো মালিকই তা করেননি। এতে সরকারের আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানান তাঁরা।

শ্রমিক সংগঠনগুলো আরও বলছে, ঈদের তিন দিনের বেশি ছুটি থাকবে না এই বিষয়টি আরও আগে প্রচার করা দরকার ছিল। তাহলে শ্রমিকদের আগে থেকেই এ বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করা যেত। কিন্তু সেটি অনেক দেরি হয়ে গেছে। অনেক গার্মেন্টস রয়েছে, যেগুলোর বিজিএমই বা বিকেএমইর সদস্য নয়। সেসব কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ছুটির বিষয়ে মানানো সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তবে শ্রমিক নেতাদের অনেকেই বলছেন, আগে বাঁচতে হবে। বেঁচে থাকলে জীবনে অনেক ঈদ করা যাবে। তবে এ কথাও বলেন, তাঁরা গার্মেন্টস শিল্পে ৪০ থেকে ৫০ লাখ শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। এর বাইরে ১ কোটি ২৫ লাখ ইনফরমাল সেক্টরে শ্রমিক রয়েছেন। এসব শ্রমিক সব ধরনের বাধা–বিপত্তি অতিক্রম করে ঘরমুখী হচ্ছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে কোনো কথা আসে না। তাহলে শুধু গার্মেন্টস শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কেন এত কথা আসবে? গামেন্টেস শ্রমিকেরা কোনো করোনা ছড়াচ্ছেন না বলেও দাবি তাঁদের।

বিজিএমইর ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান কচি বলেন, করোনা নিয়ে কেউ যাতে রাজনীতি না করে। শ্রমিকদের ছুটি দিতে বাধা নেই। তবে সবার আগে দেশ ও জাতিকে বাঁচতে হবে। ১০ মের মধ্যে প্রায় শতভাগ গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন–বোনাস পরিশোধ করা হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...