আজাদুল আদনান, ঢাকা

মতিন খোন্দকার করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন। তারপরও করোনায় আক্রান্ত হন বিক্রমপুরের এই মুদি ব্যবসায়ী। গত ১৮ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী। গত তিন দিন ধরে অবস্থা সংকটের দিকে যাওয়ায় তাঁকে নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অনেক ছোটাছুটির পরও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় কোনো ফল মেলেনি। এখন তিনি জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে এখন অনেককেই। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালেই যেমন গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগীকে আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
নিজেদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মতিন খোন্দকারের স্ত্রী রাজিয়া বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী হয়তো বাঁচবে না। ডাক্তারদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আইসিইউ ফাঁকা নেই। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েক জায়গায় গিয়েছি; কোথাও ফাঁকা পাইনি। ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ডাক্তার জানিয়েছেন, একটা আইসিইউ আজ (শনিবার) ফাঁকা হতে পারে। সেখানে আমার স্বামীকে নেওয়া হবে। শুধু যে আমরা নই। আমাদের মতো অনেকে আইসিইউ পেতে চেষ্টা করছেন।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে চরম সংকটাবস্থা চলছে বাংলাদেশে। প্রতিদিনই আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বহু মানুষ, যার অধিকাংশই রাজধানী ঢাকার। করোনা রোগীর পাশাপাশি অন্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হয়েছে। কিন্তু আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৪ জন। এর আগের দিনই গত নয় মাসে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শনিবারে শনাক্তদের নিয়ে দেশে ভাইরাসটির শিকারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯ জনের। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর এটিই একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৬৯–এ।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজ জেলা ও বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এমন আহ্বান শুরু থেকেই করা হলেও তা কাজে আসেনি। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের। চাপ বাড়ছে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর ওপর।
ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যত করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে, তা আগের দুই সপ্তাহে হয়নি। রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদিও দু–একটি ছাড়া তেমন অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি কয়েকটি হাসপাতালে গুরুতর রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে, যেকোনো সময় তাদের আইসিইউ দিতে চরম বিপাকে পড়তে হতে পারে কর্তৃপক্ষকে। আবার সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে—এমন সাধারণ রোগীদের মধ্যে যারা ভর্তি হতে আসছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউয়ে আইসিইউ তো নয়ই করোনা রোগীদের জন্য কোনো শয্যাই খালি নেই। পুরোনো রোগী বের হলেই কেবল নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন। করোনা রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেলে মোট ৫০০ শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া পিসিসিইউ ও এইচডিইউ মিলে রয়েছে ২০টি বেড। সেগুলোও খালি নেই। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫৭৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। এর মধ্যে আটজনের করোনা শনাক্ত হয়। সন্দেহজনক হওয়ায় বাকিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ বলেন, ‘পিসিসিইউ ও এইচডিইউয়ের একটি বেডও খালি নেই। আজ (শনিবার) এখন পর্যন্ত (করোনা) পজেটিভ বেড খালি নেই; সাসপেক্টেড বেডও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
বিএসএমএমইউতে করোনা রোগীদের জন্য ১৪১টি শয্যা রয়েছে, যার কোনোটিই খালি নেই। গত দুই মাসে সংক্রমণ কিছুটা কমায় এই হাসপাতালের ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার তা নতুন করোনা রোগীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৬টি আইসিইউয়ের সবকটিই এখন রোগীতে পূর্ণ।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজমুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন যে হারে রোগী বাড়ছে তাতে আশঙ্কা বেড়েই চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তা আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিয়েছে। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
নতুন করে বেড বাড়ানো প্রসঙ্গে নাজমুল করিম বলেন, গত দুই মাসে সংক্রমণ কমায় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। এখন সংক্রমণ বাড়ায় আগামীকাল রোববার থেকে সেগুলো আবার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে।
রাজধানীর কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, মুগদা, রাজারবাগ, সোহরাওয়ার্দী, সংক্রামক ব্যাধি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের দুই–তৃতীয়াংশ শয্যাই এখন রোগীতে পূর্ণ। এসব হাসপাতালে থাকা আইসিইউয়ের কোনোটিই খালি নেই। ফলে আইসিইউ একরকম সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারি এসব হাসপাতালে ২ হাজার ৪০১টি শয্যা আছে করোনা রোগীদের জন্য। এর মধ্যে রোগী আছে ১ হাজার ৯৪৮টিতে। খালি ৪৫৩টি। পাশাপাশি আইসিইউ আছে ১০৮টিতে, খালি ৫টি। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আসগর আলী, স্কয়ার, ইবনে সিনা, ইউনাইটেড, এভার কেয়ার, ইম্পালস, এএমজেড ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯২৮টি শয্যা রয়েছে, যার ৫১৪টিতে রোগী আছে। এসব হাসপাতালে ১৮৮ আইসিইউর মধ্যে খালি আছে ৪৫টি। সারা দেশে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৪টি, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৫৪টিতে রোগী রয়েছে। আর ৫৭৪টি আইসিইউয়ের মধ্যে খালি আছে ২২৬টি।
শুধু যে সরকারি হাসপাতাল তা কিন্তু নয়, ক্রমেই আইসিইউ মারাত্মক সংকটাবস্থা তৈরি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও। পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত তিন–চতুর্থাংশ শয্যাই এখন পূর্ণ। সবচেয়ে বাজে দশা ঢাকায়। ঢাকার বাইরে সংক্রমণ কিছুটা কম থাকায় নাগালে রয়েছে বিভাগীয় ও জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটগুলো। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ফলে তালিকাভুক্ত সরাকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বেডের পাশাপাশি আইসিইউ বেডের সংকট চলছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগীদের ফেরত পাঠাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুগদা হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই গুরুতর। গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগী আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকে। যে হারে রোগী আসছে, তা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা দেওয়ার মতো বেড থাকবে না। কিন্তু আমাদের এখানে বেড বাড়ানোর কোনো অবকাশ নেই। তাই, এই মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিরোধ নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের।’
প্রতিরোধের ওপর জোর দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরালোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানুও। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার ফল হয়তো ধীরে ধীরে আরও প্রকাশ পাবে। শনিবার বহু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় যাদের করোনা সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের আমরা বাসায় কোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি আইসিইউয়ের সংকট নিরসনে নতুন করে ১০টি আইসিইউ শয্যা চলতি সপ্তাহেই যুক্ত করা হচ্ছে।’

মতিন খোন্দকার করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন। তারপরও করোনায় আক্রান্ত হন বিক্রমপুরের এই মুদি ব্যবসায়ী। গত ১৮ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী। গত তিন দিন ধরে অবস্থা সংকটের দিকে যাওয়ায় তাঁকে নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অনেক ছোটাছুটির পরও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় কোনো ফল মেলেনি। এখন তিনি জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে এখন অনেককেই। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালেই যেমন গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগীকে আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
নিজেদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মতিন খোন্দকারের স্ত্রী রাজিয়া বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী হয়তো বাঁচবে না। ডাক্তারদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আইসিইউ ফাঁকা নেই। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েক জায়গায় গিয়েছি; কোথাও ফাঁকা পাইনি। ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ডাক্তার জানিয়েছেন, একটা আইসিইউ আজ (শনিবার) ফাঁকা হতে পারে। সেখানে আমার স্বামীকে নেওয়া হবে। শুধু যে আমরা নই। আমাদের মতো অনেকে আইসিইউ পেতে চেষ্টা করছেন।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে চরম সংকটাবস্থা চলছে বাংলাদেশে। প্রতিদিনই আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বহু মানুষ, যার অধিকাংশই রাজধানী ঢাকার। করোনা রোগীর পাশাপাশি অন্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হয়েছে। কিন্তু আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৪ জন। এর আগের দিনই গত নয় মাসে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শনিবারে শনাক্তদের নিয়ে দেশে ভাইরাসটির শিকারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯ জনের। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর এটিই একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৬৯–এ।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজ জেলা ও বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এমন আহ্বান শুরু থেকেই করা হলেও তা কাজে আসেনি। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের। চাপ বাড়ছে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর ওপর।
ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যত করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে, তা আগের দুই সপ্তাহে হয়নি। রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদিও দু–একটি ছাড়া তেমন অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি কয়েকটি হাসপাতালে গুরুতর রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে, যেকোনো সময় তাদের আইসিইউ দিতে চরম বিপাকে পড়তে হতে পারে কর্তৃপক্ষকে। আবার সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে—এমন সাধারণ রোগীদের মধ্যে যারা ভর্তি হতে আসছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউয়ে আইসিইউ তো নয়ই করোনা রোগীদের জন্য কোনো শয্যাই খালি নেই। পুরোনো রোগী বের হলেই কেবল নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন। করোনা রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেলে মোট ৫০০ শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া পিসিসিইউ ও এইচডিইউ মিলে রয়েছে ২০টি বেড। সেগুলোও খালি নেই। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫৭৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। এর মধ্যে আটজনের করোনা শনাক্ত হয়। সন্দেহজনক হওয়ায় বাকিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ বলেন, ‘পিসিসিইউ ও এইচডিইউয়ের একটি বেডও খালি নেই। আজ (শনিবার) এখন পর্যন্ত (করোনা) পজেটিভ বেড খালি নেই; সাসপেক্টেড বেডও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
বিএসএমএমইউতে করোনা রোগীদের জন্য ১৪১টি শয্যা রয়েছে, যার কোনোটিই খালি নেই। গত দুই মাসে সংক্রমণ কিছুটা কমায় এই হাসপাতালের ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার তা নতুন করোনা রোগীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৬টি আইসিইউয়ের সবকটিই এখন রোগীতে পূর্ণ।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজমুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন যে হারে রোগী বাড়ছে তাতে আশঙ্কা বেড়েই চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তা আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিয়েছে। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
নতুন করে বেড বাড়ানো প্রসঙ্গে নাজমুল করিম বলেন, গত দুই মাসে সংক্রমণ কমায় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। এখন সংক্রমণ বাড়ায় আগামীকাল রোববার থেকে সেগুলো আবার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে।
রাজধানীর কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, মুগদা, রাজারবাগ, সোহরাওয়ার্দী, সংক্রামক ব্যাধি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের দুই–তৃতীয়াংশ শয্যাই এখন রোগীতে পূর্ণ। এসব হাসপাতালে থাকা আইসিইউয়ের কোনোটিই খালি নেই। ফলে আইসিইউ একরকম সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারি এসব হাসপাতালে ২ হাজার ৪০১টি শয্যা আছে করোনা রোগীদের জন্য। এর মধ্যে রোগী আছে ১ হাজার ৯৪৮টিতে। খালি ৪৫৩টি। পাশাপাশি আইসিইউ আছে ১০৮টিতে, খালি ৫টি। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আসগর আলী, স্কয়ার, ইবনে সিনা, ইউনাইটেড, এভার কেয়ার, ইম্পালস, এএমজেড ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯২৮টি শয্যা রয়েছে, যার ৫১৪টিতে রোগী আছে। এসব হাসপাতালে ১৮৮ আইসিইউর মধ্যে খালি আছে ৪৫টি। সারা দেশে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৪টি, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৫৪টিতে রোগী রয়েছে। আর ৫৭৪টি আইসিইউয়ের মধ্যে খালি আছে ২২৬টি।
শুধু যে সরকারি হাসপাতাল তা কিন্তু নয়, ক্রমেই আইসিইউ মারাত্মক সংকটাবস্থা তৈরি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও। পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত তিন–চতুর্থাংশ শয্যাই এখন পূর্ণ। সবচেয়ে বাজে দশা ঢাকায়। ঢাকার বাইরে সংক্রমণ কিছুটা কম থাকায় নাগালে রয়েছে বিভাগীয় ও জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটগুলো। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ফলে তালিকাভুক্ত সরাকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বেডের পাশাপাশি আইসিইউ বেডের সংকট চলছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগীদের ফেরত পাঠাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুগদা হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই গুরুতর। গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগী আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকে। যে হারে রোগী আসছে, তা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা দেওয়ার মতো বেড থাকবে না। কিন্তু আমাদের এখানে বেড বাড়ানোর কোনো অবকাশ নেই। তাই, এই মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিরোধ নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের।’
প্রতিরোধের ওপর জোর দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরালোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানুও। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার ফল হয়তো ধীরে ধীরে আরও প্রকাশ পাবে। শনিবার বহু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় যাদের করোনা সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের আমরা বাসায় কোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি আইসিইউয়ের সংকট নিরসনে নতুন করে ১০টি আইসিইউ শয্যা চলতি সপ্তাহেই যুক্ত করা হচ্ছে।’
আজাদুল আদনান, ঢাকা

মতিন খোন্দকার করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন। তারপরও করোনায় আক্রান্ত হন বিক্রমপুরের এই মুদি ব্যবসায়ী। গত ১৮ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী। গত তিন দিন ধরে অবস্থা সংকটের দিকে যাওয়ায় তাঁকে নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অনেক ছোটাছুটির পরও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় কোনো ফল মেলেনি। এখন তিনি জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে এখন অনেককেই। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালেই যেমন গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগীকে আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
নিজেদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মতিন খোন্দকারের স্ত্রী রাজিয়া বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী হয়তো বাঁচবে না। ডাক্তারদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আইসিইউ ফাঁকা নেই। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েক জায়গায় গিয়েছি; কোথাও ফাঁকা পাইনি। ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ডাক্তার জানিয়েছেন, একটা আইসিইউ আজ (শনিবার) ফাঁকা হতে পারে। সেখানে আমার স্বামীকে নেওয়া হবে। শুধু যে আমরা নই। আমাদের মতো অনেকে আইসিইউ পেতে চেষ্টা করছেন।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে চরম সংকটাবস্থা চলছে বাংলাদেশে। প্রতিদিনই আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বহু মানুষ, যার অধিকাংশই রাজধানী ঢাকার। করোনা রোগীর পাশাপাশি অন্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হয়েছে। কিন্তু আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৪ জন। এর আগের দিনই গত নয় মাসে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শনিবারে শনাক্তদের নিয়ে দেশে ভাইরাসটির শিকারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯ জনের। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর এটিই একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৬৯–এ।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজ জেলা ও বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এমন আহ্বান শুরু থেকেই করা হলেও তা কাজে আসেনি। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের। চাপ বাড়ছে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর ওপর।
ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যত করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে, তা আগের দুই সপ্তাহে হয়নি। রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদিও দু–একটি ছাড়া তেমন অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি কয়েকটি হাসপাতালে গুরুতর রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে, যেকোনো সময় তাদের আইসিইউ দিতে চরম বিপাকে পড়তে হতে পারে কর্তৃপক্ষকে। আবার সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে—এমন সাধারণ রোগীদের মধ্যে যারা ভর্তি হতে আসছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউয়ে আইসিইউ তো নয়ই করোনা রোগীদের জন্য কোনো শয্যাই খালি নেই। পুরোনো রোগী বের হলেই কেবল নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন। করোনা রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেলে মোট ৫০০ শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া পিসিসিইউ ও এইচডিইউ মিলে রয়েছে ২০টি বেড। সেগুলোও খালি নেই। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫৭৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। এর মধ্যে আটজনের করোনা শনাক্ত হয়। সন্দেহজনক হওয়ায় বাকিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ বলেন, ‘পিসিসিইউ ও এইচডিইউয়ের একটি বেডও খালি নেই। আজ (শনিবার) এখন পর্যন্ত (করোনা) পজেটিভ বেড খালি নেই; সাসপেক্টেড বেডও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
বিএসএমএমইউতে করোনা রোগীদের জন্য ১৪১টি শয্যা রয়েছে, যার কোনোটিই খালি নেই। গত দুই মাসে সংক্রমণ কিছুটা কমায় এই হাসপাতালের ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার তা নতুন করোনা রোগীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৬টি আইসিইউয়ের সবকটিই এখন রোগীতে পূর্ণ।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজমুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন যে হারে রোগী বাড়ছে তাতে আশঙ্কা বেড়েই চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তা আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিয়েছে। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
নতুন করে বেড বাড়ানো প্রসঙ্গে নাজমুল করিম বলেন, গত দুই মাসে সংক্রমণ কমায় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। এখন সংক্রমণ বাড়ায় আগামীকাল রোববার থেকে সেগুলো আবার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে।
রাজধানীর কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, মুগদা, রাজারবাগ, সোহরাওয়ার্দী, সংক্রামক ব্যাধি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের দুই–তৃতীয়াংশ শয্যাই এখন রোগীতে পূর্ণ। এসব হাসপাতালে থাকা আইসিইউয়ের কোনোটিই খালি নেই। ফলে আইসিইউ একরকম সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারি এসব হাসপাতালে ২ হাজার ৪০১টি শয্যা আছে করোনা রোগীদের জন্য। এর মধ্যে রোগী আছে ১ হাজার ৯৪৮টিতে। খালি ৪৫৩টি। পাশাপাশি আইসিইউ আছে ১০৮টিতে, খালি ৫টি। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আসগর আলী, স্কয়ার, ইবনে সিনা, ইউনাইটেড, এভার কেয়ার, ইম্পালস, এএমজেড ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯২৮টি শয্যা রয়েছে, যার ৫১৪টিতে রোগী আছে। এসব হাসপাতালে ১৮৮ আইসিইউর মধ্যে খালি আছে ৪৫টি। সারা দেশে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৪টি, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৫৪টিতে রোগী রয়েছে। আর ৫৭৪টি আইসিইউয়ের মধ্যে খালি আছে ২২৬টি।
শুধু যে সরকারি হাসপাতাল তা কিন্তু নয়, ক্রমেই আইসিইউ মারাত্মক সংকটাবস্থা তৈরি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও। পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত তিন–চতুর্থাংশ শয্যাই এখন পূর্ণ। সবচেয়ে বাজে দশা ঢাকায়। ঢাকার বাইরে সংক্রমণ কিছুটা কম থাকায় নাগালে রয়েছে বিভাগীয় ও জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটগুলো। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ফলে তালিকাভুক্ত সরাকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বেডের পাশাপাশি আইসিইউ বেডের সংকট চলছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগীদের ফেরত পাঠাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুগদা হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই গুরুতর। গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগী আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকে। যে হারে রোগী আসছে, তা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা দেওয়ার মতো বেড থাকবে না। কিন্তু আমাদের এখানে বেড বাড়ানোর কোনো অবকাশ নেই। তাই, এই মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিরোধ নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের।’
প্রতিরোধের ওপর জোর দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরালোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানুও। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার ফল হয়তো ধীরে ধীরে আরও প্রকাশ পাবে। শনিবার বহু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় যাদের করোনা সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের আমরা বাসায় কোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি আইসিইউয়ের সংকট নিরসনে নতুন করে ১০টি আইসিইউ শয্যা চলতি সপ্তাহেই যুক্ত করা হচ্ছে।’

মতিন খোন্দকার করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন। তারপরও করোনায় আক্রান্ত হন বিক্রমপুরের এই মুদি ব্যবসায়ী। গত ১৮ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী। গত তিন দিন ধরে অবস্থা সংকটের দিকে যাওয়ায় তাঁকে নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অনেক ছোটাছুটির পরও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় কোনো ফল মেলেনি। এখন তিনি জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে এখন অনেককেই। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালেই যেমন গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগীকে আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
নিজেদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মতিন খোন্দকারের স্ত্রী রাজিয়া বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী হয়তো বাঁচবে না। ডাক্তারদের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আইসিইউ ফাঁকা নেই। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েক জায়গায় গিয়েছি; কোথাও ফাঁকা পাইনি। ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ডাক্তার জানিয়েছেন, একটা আইসিইউ আজ (শনিবার) ফাঁকা হতে পারে। সেখানে আমার স্বামীকে নেওয়া হবে। শুধু যে আমরা নই। আমাদের মতো অনেকে আইসিইউ পেতে চেষ্টা করছেন।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে চরম সংকটাবস্থা চলছে বাংলাদেশে। প্রতিদিনই আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বহু মানুষ, যার অধিকাংশই রাজধানী ঢাকার। করোনা রোগীর পাশাপাশি অন্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হয়েছে। কিন্তু আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৪ জন। এর আগের দিনই গত নয় মাসে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শনিবারে শনাক্তদের নিয়ে দেশে ভাইরাসটির শিকারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯ জনের। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর এটিই একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৬৯–এ।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজ জেলা ও বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এমন আহ্বান শুরু থেকেই করা হলেও তা কাজে আসেনি। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের। চাপ বাড়ছে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর ওপর।
ঢাকা মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যত করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে, তা আগের দুই সপ্তাহে হয়নি। রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদিও দু–একটি ছাড়া তেমন অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি কয়েকটি হাসপাতালে গুরুতর রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে, যেকোনো সময় তাদের আইসিইউ দিতে চরম বিপাকে পড়তে হতে পারে কর্তৃপক্ষকে। আবার সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে—এমন সাধারণ রোগীদের মধ্যে যারা ভর্তি হতে আসছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউয়ে আইসিইউ তো নয়ই করোনা রোগীদের জন্য কোনো শয্যাই খালি নেই। পুরোনো রোগী বের হলেই কেবল নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন। করোনা রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেলে মোট ৫০০ শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া পিসিসিইউ ও এইচডিইউ মিলে রয়েছে ২০টি বেড। সেগুলোও খালি নেই। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫৭৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। এর মধ্যে আটজনের করোনা শনাক্ত হয়। সন্দেহজনক হওয়ায় বাকিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ বলেন, ‘পিসিসিইউ ও এইচডিইউয়ের একটি বেডও খালি নেই। আজ (শনিবার) এখন পর্যন্ত (করোনা) পজেটিভ বেড খালি নেই; সাসপেক্টেড বেডও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’
বিএসএমএমইউতে করোনা রোগীদের জন্য ১৪১টি শয্যা রয়েছে, যার কোনোটিই খালি নেই। গত দুই মাসে সংক্রমণ কিছুটা কমায় এই হাসপাতালের ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার তা নতুন করোনা রোগীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ১৬টি আইসিইউয়ের সবকটিই এখন রোগীতে পূর্ণ।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজমুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন যে হারে রোগী বাড়ছে তাতে আশঙ্কা বেড়েই চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তা আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিয়েছে। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
নতুন করে বেড বাড়ানো প্রসঙ্গে নাজমুল করিম বলেন, গত দুই মাসে সংক্রমণ কমায় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৪০ শয্যার দুটি কেবিন সাধারণ রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। এখন সংক্রমণ বাড়ায় আগামীকাল রোববার থেকে সেগুলো আবার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে।
রাজধানীর কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, মুগদা, রাজারবাগ, সোহরাওয়ার্দী, সংক্রামক ব্যাধি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের দুই–তৃতীয়াংশ শয্যাই এখন রোগীতে পূর্ণ। এসব হাসপাতালে থাকা আইসিইউয়ের কোনোটিই খালি নেই। ফলে আইসিইউ একরকম সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারি এসব হাসপাতালে ২ হাজার ৪০১টি শয্যা আছে করোনা রোগীদের জন্য। এর মধ্যে রোগী আছে ১ হাজার ৯৪৮টিতে। খালি ৪৫৩টি। পাশাপাশি আইসিইউ আছে ১০৮টিতে, খালি ৫টি। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আসগর আলী, স্কয়ার, ইবনে সিনা, ইউনাইটেড, এভার কেয়ার, ইম্পালস, এএমজেড ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯২৮টি শয্যা রয়েছে, যার ৫১৪টিতে রোগী আছে। এসব হাসপাতালে ১৮৮ আইসিইউর মধ্যে খালি আছে ৪৫টি। সারা দেশে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৪টি, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৫৪টিতে রোগী রয়েছে। আর ৫৭৪টি আইসিইউয়ের মধ্যে খালি আছে ২২৬টি।
শুধু যে সরকারি হাসপাতাল তা কিন্তু নয়, ক্রমেই আইসিইউ মারাত্মক সংকটাবস্থা তৈরি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও। পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত তিন–চতুর্থাংশ শয্যাই এখন পূর্ণ। সবচেয়ে বাজে দশা ঢাকায়। ঢাকার বাইরে সংক্রমণ কিছুটা কম থাকায় নাগালে রয়েছে বিভাগীয় ও জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটগুলো। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ফলে তালিকাভুক্ত সরাকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বেডের পাশাপাশি আইসিইউ বেডের সংকট চলছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোগীদের ফেরত পাঠাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুগদা হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই গুরুতর। গড়ে প্রতিদিন ৫–১০ জন রোগী আইসিইউয়ের অপেক্ষায় থাকে। যে হারে রোগী আসছে, তা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা দেওয়ার মতো বেড থাকবে না। কিন্তু আমাদের এখানে বেড বাড়ানোর কোনো অবকাশ নেই। তাই, এই মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিরোধ নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের।’
প্রতিরোধের ওপর জোর দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরালোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানুও। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার ফল হয়তো ধীরে ধীরে আরও প্রকাশ পাবে। শনিবার বহু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় যাদের করোনা সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের আমরা বাসায় কোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি আইসিইউয়ের সংকট নিরসনে নতুন করে ১০টি আইসিইউ শয্যা চলতি সপ্তাহেই যুক্ত করা হচ্ছে।’

আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে
একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে
২ ঘণ্টা আগে
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
গতকাল দুপুরের এ দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। তবে বেলা ৩টার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফার্মগেট হয়ে পুরো রুটে আবার কখন ট্রেন চালু হবে, তা বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগে বলা যাবে না।
১৩ মাসে দুবার এমন গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম খুলে পড়ায় মেট্রোরেলের নিরাপত্তা- ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর প্রথমবার প্যাড খুলে পড়ার পর খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, নির্মাণকাজের সময়ই এ উপকরণটির মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার কিছু আগে মেট্রোরেল চলার সময় ওপর থেকে হঠাৎ একটি বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে পথচারী আবুল কালামের (৩৫) মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় কাছে থাকা আরও দুজন আহত হন এবং ফুটপাতসংলগ্ন একটি চায়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঙ্গে থাকা পাসপোর্টের কথা উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি শরীয়তপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম।
মেট্রোরেলের লাইন যে কংক্রিটের কাঠামোর ওপর পাতা থাকে, তা হচ্ছে ভায়াডাক্ট। আর ভায়াডাক্টগুলো দাঁড়িয়ে থাকে বিশাল ও প্রশস্ত খুঁটি বা পিলারের ওপর। ভায়াডাক্ট ও পিলারের সংযোগস্থলের মধ্যে রাবার ও স্টিলের তৈরি ৮০ কেজি ওজনের বিয়ারিং প্যাড বসানো হয়। এটি ট্রেন চলাচলের সময় ওপরের কাঠামোর ভার নিচের পিলারে স্থানান্তর করে এবং কম্পন শোষণ করে। এতে কাঠামোর ক্ষয় ও সম্ভাব্য স্থানচ্যুতি রোধ করা যায়।
মেট্রোরেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) প্রকৌশল সূত্র বলেছে, বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক ঘটনা। বিষয়টি কাঠামোর নির্মাণত্রুটি নাকি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যর্থতা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
জানা গেছে, মেট্রোরেলের দুই পিলারের মাঝখানে থাকা প্রতিটি স্প্যানের জন্য চারটি করে বিয়ারিং প্যাড রয়েছে। মেট্রোরেলের এ পর্যন্ত চালু হওয়া ৬ নম্বর লাইনটিতে (মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত) মোট পিলার আছে ৬২০টি।
তদন্ত কমিটি গঠন
এ ঘটনায় সাবেক মেট্রোরেল এমডি এবং বর্তমান সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—বুয়েটের অধ্যাপক এ বি এম তৌফিক হাসান, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) সহকারী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব এবং সড়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসফিয়া সুলতানা। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের কেউ কর্মক্ষম থাকলে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
দুর্ঘটনার পরপরই ফার্মগেটে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি এ সময় বলেন, ‘এটা নির্মাণকাজের ত্রুটির জন্য হয়েছে নাকি নাশকতামূলক কিছু ঘটেছে, সেটি তদন্তে বের হবে। যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সুপারিশ করা হবে।’
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিয়ারিং প্যাডের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আলগা হয়ে পড়ে যাওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি রক্ষণাবেক্ষণে নজরদারির ঘাটতি বা নির্মাণপর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতার ফল হতে পারে। এখন সবচেয়ে জরুরি হলো পুরো ট্র্যাকের নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা।’
এবার বিয়ারিং প্যাড পড়েছে ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে, যার অবস্থান ফার্মগেট স্টেশনের পশ্চিম পাশে। ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্যাড পড়েছিল ৪৩০ নম্বর পিলার থেকে। তবে সেবার কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল ১১ ঘণ্টা।
প্যাড নিয়ে উদ্বেগ পুরনো
মে্ট্রোরেলের ভায়াডাক্টে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাড নিয়ে নির্মাণের সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এ ব্যাপারে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে কারিগরি পরীক্ষা করে একাধিক প্যাডের মানে ঘাটতি পাওয়া যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু তখন অজ্ঞাত কারণে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। তবে নতুন করে ‘উন্নত’ প্যাড আনার উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছিল।
বুয়েটের ল্যাবে উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা প্যাডের মান পরীক্ষা করা হয়েছিল। এসব প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল–থাই। তবে যখন অভিযোগ ওঠে, ততদিনে প্রায় আট কিলোমিটার উড়ালপথে প্যাড বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছিল।
যাত্রীদের উদ্বেগ ও ভোগান্তি
বিচিত্র ধরনের এ দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজাদুল হক নামের এক যাত্রী লিখেছেন, ‘আমরা ভাবতাম মেট্রোরেল সবচেয়ে নিরাপদ। এখন ভয় লাগছে; যদি ট্র্যাকের নিচ থেকে কিছু খুলে পড়ে, তাহলে নিরাপত্তা কোথায়?’ স্টেশনের যাত্রীদের মধ্যেও এ নিয়ে গুঞ্জন চলে।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধের পর ফার্মগেট ও মতিঝিল স্টেশন এলাকায় যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বিকল্প পরিবহন খুঁজে নিতে বাধ্য হন। অফিস ছুটির পর নিয়মিত যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।
গতকাল বিকেলে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ আপাতত বন্ধ থাকবে। আজ (রোববার) চালু করা সম্ভব হবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পুরো রুট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তবে নির্দিষ্ট সময় এখনই বলা যাচ্ছে না।’

আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
গতকাল দুপুরের এ দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। তবে বেলা ৩টার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফার্মগেট হয়ে পুরো রুটে আবার কখন ট্রেন চালু হবে, তা বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগে বলা যাবে না।
১৩ মাসে দুবার এমন গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম খুলে পড়ায় মেট্রোরেলের নিরাপত্তা- ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর প্রথমবার প্যাড খুলে পড়ার পর খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, নির্মাণকাজের সময়ই এ উপকরণটির মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার কিছু আগে মেট্রোরেল চলার সময় ওপর থেকে হঠাৎ একটি বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে পথচারী আবুল কালামের (৩৫) মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় কাছে থাকা আরও দুজন আহত হন এবং ফুটপাতসংলগ্ন একটি চায়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঙ্গে থাকা পাসপোর্টের কথা উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি শরীয়তপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম।
মেট্রোরেলের লাইন যে কংক্রিটের কাঠামোর ওপর পাতা থাকে, তা হচ্ছে ভায়াডাক্ট। আর ভায়াডাক্টগুলো দাঁড়িয়ে থাকে বিশাল ও প্রশস্ত খুঁটি বা পিলারের ওপর। ভায়াডাক্ট ও পিলারের সংযোগস্থলের মধ্যে রাবার ও স্টিলের তৈরি ৮০ কেজি ওজনের বিয়ারিং প্যাড বসানো হয়। এটি ট্রেন চলাচলের সময় ওপরের কাঠামোর ভার নিচের পিলারে স্থানান্তর করে এবং কম্পন শোষণ করে। এতে কাঠামোর ক্ষয় ও সম্ভাব্য স্থানচ্যুতি রোধ করা যায়।
মেট্রোরেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) প্রকৌশল সূত্র বলেছে, বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক ঘটনা। বিষয়টি কাঠামোর নির্মাণত্রুটি নাকি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যর্থতা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
জানা গেছে, মেট্রোরেলের দুই পিলারের মাঝখানে থাকা প্রতিটি স্প্যানের জন্য চারটি করে বিয়ারিং প্যাড রয়েছে। মেট্রোরেলের এ পর্যন্ত চালু হওয়া ৬ নম্বর লাইনটিতে (মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত) মোট পিলার আছে ৬২০টি।
তদন্ত কমিটি গঠন
এ ঘটনায় সাবেক মেট্রোরেল এমডি এবং বর্তমান সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—বুয়েটের অধ্যাপক এ বি এম তৌফিক হাসান, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) সহকারী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব এবং সড়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসফিয়া সুলতানা। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের কেউ কর্মক্ষম থাকলে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
দুর্ঘটনার পরপরই ফার্মগেটে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি এ সময় বলেন, ‘এটা নির্মাণকাজের ত্রুটির জন্য হয়েছে নাকি নাশকতামূলক কিছু ঘটেছে, সেটি তদন্তে বের হবে। যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সুপারিশ করা হবে।’
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিয়ারিং প্যাডের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আলগা হয়ে পড়ে যাওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি রক্ষণাবেক্ষণে নজরদারির ঘাটতি বা নির্মাণপর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতার ফল হতে পারে। এখন সবচেয়ে জরুরি হলো পুরো ট্র্যাকের নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা।’
এবার বিয়ারিং প্যাড পড়েছে ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে, যার অবস্থান ফার্মগেট স্টেশনের পশ্চিম পাশে। ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্যাড পড়েছিল ৪৩০ নম্বর পিলার থেকে। তবে সেবার কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল ১১ ঘণ্টা।
প্যাড নিয়ে উদ্বেগ পুরনো
মে্ট্রোরেলের ভায়াডাক্টে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাড নিয়ে নির্মাণের সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এ ব্যাপারে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে কারিগরি পরীক্ষা করে একাধিক প্যাডের মানে ঘাটতি পাওয়া যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু তখন অজ্ঞাত কারণে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। তবে নতুন করে ‘উন্নত’ প্যাড আনার উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছিল।
বুয়েটের ল্যাবে উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা প্যাডের মান পরীক্ষা করা হয়েছিল। এসব প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল–থাই। তবে যখন অভিযোগ ওঠে, ততদিনে প্রায় আট কিলোমিটার উড়ালপথে প্যাড বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছিল।
যাত্রীদের উদ্বেগ ও ভোগান্তি
বিচিত্র ধরনের এ দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজাদুল হক নামের এক যাত্রী লিখেছেন, ‘আমরা ভাবতাম মেট্রোরেল সবচেয়ে নিরাপদ। এখন ভয় লাগছে; যদি ট্র্যাকের নিচ থেকে কিছু খুলে পড়ে, তাহলে নিরাপত্তা কোথায়?’ স্টেশনের যাত্রীদের মধ্যেও এ নিয়ে গুঞ্জন চলে।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধের পর ফার্মগেট ও মতিঝিল স্টেশন এলাকায় যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বিকল্প পরিবহন খুঁজে নিতে বাধ্য হন। অফিস ছুটির পর নিয়মিত যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।
গতকাল বিকেলে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ আপাতত বন্ধ থাকবে। আজ (রোববার) চালু করা সম্ভব হবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পুরো রুট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তবে নির্দিষ্ট সময় এখনই বলা যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হলেও আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের।
২৭ মার্চ ২০২১
একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে
২ ঘণ্টা আগে
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
২ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে, সেটির আঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদার পাঁচ বছর আগে ঘর বেঁধেছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়, প্রিয়ার সঙ্গে। ঘরে আছে দুই সন্তান আবদুল্লাহ ও ফারিয়া। বয়স যথাক্রমে ৪ ও ২ বছর। তাদের নিয়ে পাঠানটুলী এলাকায় মনোয়ার ভিলায় থাকতেন।
গতকাল সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, আবুল কালামের শাশুড়ি রিনা আক্তার বিলাপ করছেন। আর স্বামীর লাশের পাশে আর্তনাদ করছেন প্রিয়া।
প্রিয়ার বোন নুসরাত বলেন, ‘কালাম ভাই ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। এখন আমার বড় বোন অসহায় হয়ে গেল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কীভাবে থাকবে? আমার বাবা ইতালি থাকেন। আমাদের কোনো ভাই নেই। উনিই আমাদের ভাইয়ের অভাব পূরণ করেছিলেন।’
নিহত কালামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে আবুল কালাম চোকদার। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে কালাম ভাইদের মধ্যে ছোট। প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁর বাবা ও মা মারা যান।
কালামের চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই ইলিয়াস চোকদার চাঁদপুরে সিলভারের ব্যবসা করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। বাড়িতে তাঁর একটি ঘর রয়েছে এবং মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি আসেন।
মেজ ভাই খোকন চোকদার বাড়িতেই থাকেন এবং কৃষিকাজ করে সংসার চালান। তাঁকে মাঝেমধ্যে আর্থিক সহযোগিতা করতেন আবুল কালাম।
আবুল কালাম ছয়-সাত বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর তিনি আর বিদেশে যাননি। ঢাকাতেই জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ফার্মগেট এলাকায় তিনি একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়। গ্রামে থাকা মেজ ভাইয়ের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।
কালামের ভাবি আসমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিল। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আসো। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসব। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর শুনি—মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে।’
সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ও-ই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’
ছোটবেলা থেকে কালাম পরিশ্রমী ছিলেন বলে জানান তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেওয়া কঠিন।’
গতকাল রাত ১০টায় পাঠানটুলীর বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে কালামের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর তাঁর মরদেহ শরীয়তপুরে নিজ গ্রামে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার সকাল ৯টায় নড়িয়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে, সেটির আঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদার পাঁচ বছর আগে ঘর বেঁধেছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়, প্রিয়ার সঙ্গে। ঘরে আছে দুই সন্তান আবদুল্লাহ ও ফারিয়া। বয়স যথাক্রমে ৪ ও ২ বছর। তাদের নিয়ে পাঠানটুলী এলাকায় মনোয়ার ভিলায় থাকতেন।
গতকাল সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, আবুল কালামের শাশুড়ি রিনা আক্তার বিলাপ করছেন। আর স্বামীর লাশের পাশে আর্তনাদ করছেন প্রিয়া।
প্রিয়ার বোন নুসরাত বলেন, ‘কালাম ভাই ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। এখন আমার বড় বোন অসহায় হয়ে গেল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কীভাবে থাকবে? আমার বাবা ইতালি থাকেন। আমাদের কোনো ভাই নেই। উনিই আমাদের ভাইয়ের অভাব পূরণ করেছিলেন।’
নিহত কালামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে আবুল কালাম চোকদার। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে কালাম ভাইদের মধ্যে ছোট। প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁর বাবা ও মা মারা যান।
কালামের চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই ইলিয়াস চোকদার চাঁদপুরে সিলভারের ব্যবসা করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। বাড়িতে তাঁর একটি ঘর রয়েছে এবং মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি আসেন।
মেজ ভাই খোকন চোকদার বাড়িতেই থাকেন এবং কৃষিকাজ করে সংসার চালান। তাঁকে মাঝেমধ্যে আর্থিক সহযোগিতা করতেন আবুল কালাম।
আবুল কালাম ছয়-সাত বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর তিনি আর বিদেশে যাননি। ঢাকাতেই জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ফার্মগেট এলাকায় তিনি একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়। গ্রামে থাকা মেজ ভাইয়ের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।
কালামের ভাবি আসমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিল। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আসো। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসব। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর শুনি—মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে।’
সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ও-ই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’
ছোটবেলা থেকে কালাম পরিশ্রমী ছিলেন বলে জানান তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেওয়া কঠিন।’
গতকাল রাত ১০টায় পাঠানটুলীর বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে কালামের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর তাঁর মরদেহ শরীয়তপুরে নিজ গ্রামে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার সকাল ৯টায় নড়িয়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হলেও আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের।
২৭ মার্চ ২০২১
আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
২ ঘণ্টা আগেসাইফুল আরিফ জুয়েল, নেত্রকোনা

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি। এতে নদের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোস্তাক আহম্মেদ একজন শিল্পপতি। তিনি মল্লিকপুর গ্রামের মৃত রেহান উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। বর্তমানে সপরিবারে ঢাকায় থাকেন।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের (দক্ষিণ পাড়া) সেতুর পাশে নদের পাড়ঘেঁষে প্রায় দুই একরের বেশি জায়গাজুড়ে কারখানা স্থাপন করছেন কবির মোস্তাক আহমেদ। কয়েক মাস আগে নিজের জায়গার পাশে নদের ৫৫ শতাংশ জায়গা দখল করে দেয়াল তোলেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ জানালেও মোস্তাকের অনুসারীরা তাদের হুমকিধমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এ নদী শুধু কৃষির জন্যই নয়, বরং হাজারো মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কেউ মাছ ধরে, কেউ গোসল বা গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করে নদের পানি। পানির এই প্রবাহ রুদ্ধ হলে কংস একদিন মরে যাবে—এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, ‘এ নদ ছাড়া আমাদের জীবন কল্পনা করা যায় না। এখন দেয়াল তুলছে, পিলার (প্রাচীর) বসাচ্ছে; আমরা ভয় পাচ্ছি, আর কিছুদিন পর হয়তো নদটাই থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে কথা বললেও কবির মোস্তাকের অনুসারীরা হুমকিধমকি দেন। আমরা চাই প্রশাসন যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।’ আরেক বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, কারখানা করবে ভালো কথা, সেটা নিজের জায়গায় করুক। নদের অর্ধেক অংশ দখল করে দেয়াল তোলা হয়েছে। এতে চিরকালের জন্য কংস নদ হারিয়ে যাবে।
শফিক মিয়া বলেন, ‘দখল বন্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে কংস নদ হারিয়ে যাবে’এ বিষয়ে কথা বলতে পরপর তিন দিন একাধিকবার কল করা হলেও মোস্তাক আহম্মেদ রিসিভ করেননি।
অভিযোগ রয়েছে, চার মাস আগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।
সিংধা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ মহোদয়। সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই জায়গার নকশাসহ প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গাটি পরিমাপ করে নিশ্চিত হতে হবে। পরে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানো হবে। কাগজপত্র দেখে যতটুকু জেনেছি নদের বেশ অনেকটা অংশ ওই দেয়ালের ভেতর পড়েছে। ওখানে ৫৫ শতক জায়গা রয়েছে। সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলি হয়েছেন। নতুন একজন যোগদান করলে আবার এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে।’
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান বলেন, কংস নদের জায়গা দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ নথি তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেকোনো সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি। এতে নদের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোস্তাক আহম্মেদ একজন শিল্পপতি। তিনি মল্লিকপুর গ্রামের মৃত রেহান উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। বর্তমানে সপরিবারে ঢাকায় থাকেন।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের (দক্ষিণ পাড়া) সেতুর পাশে নদের পাড়ঘেঁষে প্রায় দুই একরের বেশি জায়গাজুড়ে কারখানা স্থাপন করছেন কবির মোস্তাক আহমেদ। কয়েক মাস আগে নিজের জায়গার পাশে নদের ৫৫ শতাংশ জায়গা দখল করে দেয়াল তোলেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ জানালেও মোস্তাকের অনুসারীরা তাদের হুমকিধমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এ নদী শুধু কৃষির জন্যই নয়, বরং হাজারো মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কেউ মাছ ধরে, কেউ গোসল বা গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করে নদের পানি। পানির এই প্রবাহ রুদ্ধ হলে কংস একদিন মরে যাবে—এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, ‘এ নদ ছাড়া আমাদের জীবন কল্পনা করা যায় না। এখন দেয়াল তুলছে, পিলার (প্রাচীর) বসাচ্ছে; আমরা ভয় পাচ্ছি, আর কিছুদিন পর হয়তো নদটাই থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে কথা বললেও কবির মোস্তাকের অনুসারীরা হুমকিধমকি দেন। আমরা চাই প্রশাসন যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।’ আরেক বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, কারখানা করবে ভালো কথা, সেটা নিজের জায়গায় করুক। নদের অর্ধেক অংশ দখল করে দেয়াল তোলা হয়েছে। এতে চিরকালের জন্য কংস নদ হারিয়ে যাবে।
শফিক মিয়া বলেন, ‘দখল বন্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে কংস নদ হারিয়ে যাবে’এ বিষয়ে কথা বলতে পরপর তিন দিন একাধিকবার কল করা হলেও মোস্তাক আহম্মেদ রিসিভ করেননি।
অভিযোগ রয়েছে, চার মাস আগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।
সিংধা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ মহোদয়। সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই জায়গার নকশাসহ প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গাটি পরিমাপ করে নিশ্চিত হতে হবে। পরে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানো হবে। কাগজপত্র দেখে যতটুকু জেনেছি নদের বেশ অনেকটা অংশ ওই দেয়ালের ভেতর পড়েছে। ওখানে ৫৫ শতক জায়গা রয়েছে। সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলি হয়েছেন। নতুন একজন যোগদান করলে আবার এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে।’
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান বলেন, কংস নদের জায়গা দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ নথি তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেকোনো সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হলেও আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের।
২৭ মার্চ ২০২১
আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে
একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে
২ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
২ ঘণ্টা আগেমো. মাহমুদুল হক মানিক

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জানা গেছে, জেলার বিরামপুর উপজেলাটি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত। ভালো যোগাযোগব্যবস্থার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিরামপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলার অসংখ্য রোগী প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক ও জনবলসংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে, ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল কর্মকর্তা, কনসালট্যান্ট, সহকারী সার্জনসহ মোট ২৫ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে প্রতিদিন রোগীদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম কর্তব্যরতরা।
এ দিকে গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে সিজারিয়ান অপারেশন। এ ছাড়া হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কয়েকটি পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।
চিকিৎসা নিতে আসা আতিকুর রহমানসহ কয়েকজন রোগী বলেন, সামর্থ্যবানরা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা করালেও গরিব রোগীদের ভরসা এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘চিকিৎসক ও জনবলসংকটে দিনরাত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিরামপুর উপজেলার একটি পৌরসভা, সাতটি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার ৫০০-৬০০ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোরে এবং প্রায় ৬০ জন ভর্তি রোগীকে ইনডোরে চিকিৎসা দিতে হয়। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীকে সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
মেডিকেল কর্মকর্তা আরও বলেন, চিকিৎসক ও জনবলসংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সংযুক্ত করা হলে রোগীরা ভোগান্তিহীনভাবে চিকিৎসাসেবা পাবেন।

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জানা গেছে, জেলার বিরামপুর উপজেলাটি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত। ভালো যোগাযোগব্যবস্থার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিরামপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলার অসংখ্য রোগী প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক ও জনবলসংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে, ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল কর্মকর্তা, কনসালট্যান্ট, সহকারী সার্জনসহ মোট ২৫ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে প্রতিদিন রোগীদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম কর্তব্যরতরা।
এ দিকে গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে সিজারিয়ান অপারেশন। এ ছাড়া হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কয়েকটি পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।
চিকিৎসা নিতে আসা আতিকুর রহমানসহ কয়েকজন রোগী বলেন, সামর্থ্যবানরা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা করালেও গরিব রোগীদের ভরসা এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘চিকিৎসক ও জনবলসংকটে দিনরাত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিরামপুর উপজেলার একটি পৌরসভা, সাতটি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার ৫০০-৬০০ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোরে এবং প্রায় ৬০ জন ভর্তি রোগীকে ইনডোরে চিকিৎসা দিতে হয়। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীকে সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
মেডিকেল কর্মকর্তা আরও বলেন, চিকিৎসক ও জনবলসংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সংযুক্ত করা হলে রোগীরা ভোগান্তিহীনভাবে চিকিৎসাসেবা পাবেন।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়নো হলেও আগের মতোই রয়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা। ফলে তীব্র আইসিইউ সংকটে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের।
২৭ মার্চ ২০২১
আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে
একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে
২ ঘণ্টা আগে
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে