আলমগীর শাহরিয়ার

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’। ‘বিচিন্তা’র সম্পাদক ছিলেন সাংবাদিক মিনার মাহমুদ। তিনি কিছু কারণে দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। সেখানে ট্যাক্সি চালাতেন। একদিন তিনি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। তো, যাত্রী তাঁর দেশ বাংলাদেশ শুনে জানতে চেয়েছিলেন তসলিমা নাসরিনকে চেনেন কি না। মিনার মাহমুদ বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, তসলিমা নাসরিনকে চিনি। তিনি আমার স্ত্রী ছিলেন।’ যাত্রী তাঁর কথা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন। চিৎকার করে মিনার মাহমুদকে ট্যাক্সি থামিয়ে তাঁকে নামিয়ে দিতে বলেছিলেন। হয়তো যাত্রী ভেবেছিলেন, চালক মাতাল বা মাথায় গন্ডগোল আছে। তা না হলে নিজেকে তসলিমার স্বামী দাবি করে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার!
নিবন্ধের শুরুতে গল্পটা বলার একটা উদ্দেশ্য আছে। তা হলো, বাংলা সাহিত্যে যে কজন সাহিত্যিকের নাম বিশ্বব্যাপী পরিচিত, তাঁদের একজন তসলিমা নাসরিন। বিতর্কিত লেখনীর জন্য তিনি যেমন নন্দিত, তেমনি নিন্দিতও। মূলত নারীবাদ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তাঁর আপসহীন ভূমিকার জন্য তিনি নানা সময়ে হামলা, মামলা, জীবননাশের হুমকির মুখে যেমন পড়েছেন, তেমনি সারা বিশ্বে নানা সম্মাননা ও পুরস্কার অর্জন করেছেন। তসলিমা নাসরিন যখন লেখালেখির কারণে, সত্য বলার কারণে, মৌলবাদীদের সমালোচনা করার কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, তখন তিনি বসবাসের জন্য ইউরোপ-আমেরিকায় থাকতে পারতেন। নিরাপত্তা ও আরাম-আয়েশের জীবন যাপন করতে পারতেন। ইউরোপ-আমেরিকায় ছিলেনও তিনি। শুধু লেখালেখি করার জন্যই, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সান্নিধ্যের জন্যই বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী কলকাতায় চলে এসেছিলেন। প্রায় তিন দশক ধরে দেশের বাইরে থাকছেন তিনি। কখনো ভারতে, কখনো ইউরোপ-আমেরিকায়। ভারত তাঁর দেশ নয়, ইউরোপ-আমেরিকাও তাঁর দেশ নয়; বাংলাদেশের জল-হাওয়া-মাটিতেই তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা। বাংলাদেশই তাঁর আরাধ্য ভূমি, প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও তিনি নিজের জন্মভূমিতে কেন ফিরতে পারছেন না?
কয়েক দিন আগে তসলিমা নাসরিনের ৬০তম জন্মদিন উদ্যাপিত হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁর অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী। তসলিমাও অনেক দিন ধরে চেষ্টা করেছেন, দাবি জানিয়েছেন, অনুরোধ-আবদার করেছেন—তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়া হোক। বিভিন্ন সময়ে তসলিমা তাঁর কবিতায়, উপন্যাসে, আত্মজীবনীতে, সোশ্যাল মিডিয়ার নানা পোস্টে দেশে ফেরার প্রবল আকুতি প্রকাশ করেছেন। দেশ থেকে দূরে থাকার গভীর দীর্ঘশ্বাস শুধু পাঠক নয়, মানবিক মানুষমাত্রই যে কাউকে স্পর্শ করবে। কবিতায় তিনি লিখেছেন—
‘মেঘ উড়ে যাচ্ছে পশ্চিম থেকে পুবে, তাকে ক’ফোটা জল দিচ্ছি চোখের,
যেন গোল পুকুরপাড়ের বাড়ির টিনের চালে একবার বৃষ্টি হয়ে ঝরে।
শীতের পাখিরা যাচ্ছে পশ্চিম থেকে পুবে, ওরা একটি করে পালক ফেলে আসবে
শাপলা পুকুরে, শীতলক্ষ্যায়, বঙ্গোপসাগরে।
ব্রহ্মপুত্র শোনো, আমি ফিরব।
শোনো শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, সীতাকুণ্ড পাহাড়—আমি ফিরব।
যদি মানুষ হয়ে না পারি, পাখি হয়েও ফিরব একদিন।’
তসলিমা নাসরিন শুধু নন, পৃথিবীর অনেকে দেশেই কবি-লেখকেরা নিগৃহের শিকার হয়েছেন, হামলা-মামলা ও দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আলেকজান্ডার সোলঝিনিৎসিনের কথা বলা যায়। তিনি খ্যাতিমান রাশিয়ান কথাসাহিত্যিক ও ইতিহাসবিদ। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার। তাঁর লেখালেখিতে উঠে আসত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসন-শোষণের প্রতিবাদ। ফলে তিনি নিজেও শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। শুধু কারাদণ্ড নয়, নির্যাতন-নিপীড়ন নয়, নিজ দেশ থেকে নির্বাসিতও হয়েছিলেন। একসময়ের প্রতাপশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়, তারপর ১৯৯৪ সালে তিনি রাশিয়ায় ফিরে আসেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি রাশিয়াতেই বসবাস করেন। তসলিমা নাসরিনের নির্বাসনের প্রায় তিন দশক হতে চলল। তিনি কি ফিরতে পারবেন নিরাপদ স্বদেশে?
তসলিমা নাসরিন দেশে ফিরতে পারছেন না—এই দুর্ভাগ্য কি তাঁর একার? এই ব্যর্থতার দায় কি রাষ্ট্র এড়াতে পারে? দীর্ঘ নির্বাসনজীবনে তসলিমা নাসরিন তাঁর মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েছেন। মায়ের পর পিতৃবিয়োগের মতো শোক সইতে হয়েছে। অনেক স্বজন হারিয়েছেন। তবু দেশে ফিরতে পারেননি। তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরার আসল বাধা কোথায়?
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে পত্রিকায় কলাম ও নারীদের অধিকার নিয়ে জোরালো লেখালেখির মধ্য দিয়ে তসলিমা বেশ আলোচনায় আসেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত সাপ্তাহিক ‘খবরের কাগজ’ নামক পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন বলে সেই অফিসে একদল ধর্মান্ধ লোক হামলা চালায়। এ সময় তাঁর আলোচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘নির্বাচিত কলাম’ প্রকাশিত হয়। বইটির জন্য ১৯৯২ সালে তসলিমা আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। একই বছর ভারতের অযোধ্যায় হিন্দু উগ্রবাদীদের দ্বারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটে, যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা হয়। এটা নিয়ে তসলিমা লিখেছিলেন তাঁর আলোচিত উপন্যাস ‘লজ্জা’। বইটি প্রকাশের পরপরই নিষিদ্ধ হয় এবং তাঁর জীবননাশের হুমকি আসতে থাকে। বইমেলায় তিনি নিগ্রহের শিকার হন। এর কিছুদিন পরে তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হন।
তসলিমা নাসরিন প্রায়ই বলেন, শুধু উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীই নয়, তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেয়নি বিএনপি-জামায়াত জোট এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারও। নানা সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন। ১৯৯৪ সালের মাঝামাঝি দেশ ছাড়ার পর তসলিমা নাসরিন নবায়ন করতে পারেননি নিজ দেশের পাসপোর্ট। দূতাবাসগুলো বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে তাঁকে। তবু তিনি হাল ছাড়েননি। বিএনপি আমলে দেশ ছাড়লেও উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভয়ে খালেদা জিয়া কিংবা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার তসলিমা নাসরিন প্রশ্নে অভিন্ন ঐক্য বলে লেখক নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর লেখায় মন্তব্য করেছেন। কারও আমলেই তিনি দেশে বসবাসের জন্য ফিরে আসতে পারেননি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পর বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও তসলিমার দেশে ফেরার ব্যাপারে ইতিবাচক নয়।
তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরার আইনি বাধা নিয়ে কথা হয়েছিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাশের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ‘তসলিমা নাসরিনের দেশে ফিরতে আইনি কোনো বাধা নেই। কোনো নাগরিককে নিজ দেশে আসতে সরকার বাধা দিতে পারে না। কোনো কারণেই পারে না। এমনকি কেউ অপরাধী হলেও দেশে তার বিচার হতে পারে, শাস্তি হতে পারে; কিন্তু দেশে আসতে বাধা দেওয়া যায় না। তসলিমা নাসরিনের দেশে প্রবেশে বাধা সামাজিক ও রাজনৈতিক। ধর্মীয় মৌলবাদীদের ভয়ে কোনো সরকারই তাঁকে দেশে আসতে দিতে ইচ্ছুক নয়। সে জন্যই তাঁর পাসপোর্ট নবায়ন করে দিচ্ছে না।’
তসলিমা নাসরিন একজন লেখক; তিনি খুনি নন, যুদ্ধাপরাধী বা দেশদ্রোহী নন, দুর্নীতিবাজও নন। একজন লেখক তাঁর মা, মাটি ও ভাষাকে গভীরভাবে ভালোবেসেই লেখালেখি করেন। তিনি তাঁর মাতৃভূমিতে বসবাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন কেন? কেন নির্বাসিত থাকবেন দীর্ঘদিন? সভ্যতার এত উন্নতির কালে রাষ্ট্রই তার জবাব দিক।
লেখক: তরুণ কবি ও গবেষক

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’। ‘বিচিন্তা’র সম্পাদক ছিলেন সাংবাদিক মিনার মাহমুদ। তিনি কিছু কারণে দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। সেখানে ট্যাক্সি চালাতেন। একদিন তিনি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। তো, যাত্রী তাঁর দেশ বাংলাদেশ শুনে জানতে চেয়েছিলেন তসলিমা নাসরিনকে চেনেন কি না। মিনার মাহমুদ বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, তসলিমা নাসরিনকে চিনি। তিনি আমার স্ত্রী ছিলেন।’ যাত্রী তাঁর কথা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন। চিৎকার করে মিনার মাহমুদকে ট্যাক্সি থামিয়ে তাঁকে নামিয়ে দিতে বলেছিলেন। হয়তো যাত্রী ভেবেছিলেন, চালক মাতাল বা মাথায় গন্ডগোল আছে। তা না হলে নিজেকে তসলিমার স্বামী দাবি করে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার!
নিবন্ধের শুরুতে গল্পটা বলার একটা উদ্দেশ্য আছে। তা হলো, বাংলা সাহিত্যে যে কজন সাহিত্যিকের নাম বিশ্বব্যাপী পরিচিত, তাঁদের একজন তসলিমা নাসরিন। বিতর্কিত লেখনীর জন্য তিনি যেমন নন্দিত, তেমনি নিন্দিতও। মূলত নারীবাদ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তাঁর আপসহীন ভূমিকার জন্য তিনি নানা সময়ে হামলা, মামলা, জীবননাশের হুমকির মুখে যেমন পড়েছেন, তেমনি সারা বিশ্বে নানা সম্মাননা ও পুরস্কার অর্জন করেছেন। তসলিমা নাসরিন যখন লেখালেখির কারণে, সত্য বলার কারণে, মৌলবাদীদের সমালোচনা করার কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, তখন তিনি বসবাসের জন্য ইউরোপ-আমেরিকায় থাকতে পারতেন। নিরাপত্তা ও আরাম-আয়েশের জীবন যাপন করতে পারতেন। ইউরোপ-আমেরিকায় ছিলেনও তিনি। শুধু লেখালেখি করার জন্যই, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সান্নিধ্যের জন্যই বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী কলকাতায় চলে এসেছিলেন। প্রায় তিন দশক ধরে দেশের বাইরে থাকছেন তিনি। কখনো ভারতে, কখনো ইউরোপ-আমেরিকায়। ভারত তাঁর দেশ নয়, ইউরোপ-আমেরিকাও তাঁর দেশ নয়; বাংলাদেশের জল-হাওয়া-মাটিতেই তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা। বাংলাদেশই তাঁর আরাধ্য ভূমি, প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও তিনি নিজের জন্মভূমিতে কেন ফিরতে পারছেন না?
কয়েক দিন আগে তসলিমা নাসরিনের ৬০তম জন্মদিন উদ্যাপিত হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁর অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী। তসলিমাও অনেক দিন ধরে চেষ্টা করেছেন, দাবি জানিয়েছেন, অনুরোধ-আবদার করেছেন—তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়া হোক। বিভিন্ন সময়ে তসলিমা তাঁর কবিতায়, উপন্যাসে, আত্মজীবনীতে, সোশ্যাল মিডিয়ার নানা পোস্টে দেশে ফেরার প্রবল আকুতি প্রকাশ করেছেন। দেশ থেকে দূরে থাকার গভীর দীর্ঘশ্বাস শুধু পাঠক নয়, মানবিক মানুষমাত্রই যে কাউকে স্পর্শ করবে। কবিতায় তিনি লিখেছেন—
‘মেঘ উড়ে যাচ্ছে পশ্চিম থেকে পুবে, তাকে ক’ফোটা জল দিচ্ছি চোখের,
যেন গোল পুকুরপাড়ের বাড়ির টিনের চালে একবার বৃষ্টি হয়ে ঝরে।
শীতের পাখিরা যাচ্ছে পশ্চিম থেকে পুবে, ওরা একটি করে পালক ফেলে আসবে
শাপলা পুকুরে, শীতলক্ষ্যায়, বঙ্গোপসাগরে।
ব্রহ্মপুত্র শোনো, আমি ফিরব।
শোনো শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, সীতাকুণ্ড পাহাড়—আমি ফিরব।
যদি মানুষ হয়ে না পারি, পাখি হয়েও ফিরব একদিন।’
তসলিমা নাসরিন শুধু নন, পৃথিবীর অনেকে দেশেই কবি-লেখকেরা নিগৃহের শিকার হয়েছেন, হামলা-মামলা ও দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আলেকজান্ডার সোলঝিনিৎসিনের কথা বলা যায়। তিনি খ্যাতিমান রাশিয়ান কথাসাহিত্যিক ও ইতিহাসবিদ। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার। তাঁর লেখালেখিতে উঠে আসত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসন-শোষণের প্রতিবাদ। ফলে তিনি নিজেও শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। শুধু কারাদণ্ড নয়, নির্যাতন-নিপীড়ন নয়, নিজ দেশ থেকে নির্বাসিতও হয়েছিলেন। একসময়ের প্রতাপশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়, তারপর ১৯৯৪ সালে তিনি রাশিয়ায় ফিরে আসেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি রাশিয়াতেই বসবাস করেন। তসলিমা নাসরিনের নির্বাসনের প্রায় তিন দশক হতে চলল। তিনি কি ফিরতে পারবেন নিরাপদ স্বদেশে?
তসলিমা নাসরিন দেশে ফিরতে পারছেন না—এই দুর্ভাগ্য কি তাঁর একার? এই ব্যর্থতার দায় কি রাষ্ট্র এড়াতে পারে? দীর্ঘ নির্বাসনজীবনে তসলিমা নাসরিন তাঁর মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েছেন। মায়ের পর পিতৃবিয়োগের মতো শোক সইতে হয়েছে। অনেক স্বজন হারিয়েছেন। তবু দেশে ফিরতে পারেননি। তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরার আসল বাধা কোথায়?
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে পত্রিকায় কলাম ও নারীদের অধিকার নিয়ে জোরালো লেখালেখির মধ্য দিয়ে তসলিমা বেশ আলোচনায় আসেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত সাপ্তাহিক ‘খবরের কাগজ’ নামক পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন বলে সেই অফিসে একদল ধর্মান্ধ লোক হামলা চালায়। এ সময় তাঁর আলোচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘নির্বাচিত কলাম’ প্রকাশিত হয়। বইটির জন্য ১৯৯২ সালে তসলিমা আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। একই বছর ভারতের অযোধ্যায় হিন্দু উগ্রবাদীদের দ্বারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটে, যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা হয়। এটা নিয়ে তসলিমা লিখেছিলেন তাঁর আলোচিত উপন্যাস ‘লজ্জা’। বইটি প্রকাশের পরপরই নিষিদ্ধ হয় এবং তাঁর জীবননাশের হুমকি আসতে থাকে। বইমেলায় তিনি নিগ্রহের শিকার হন। এর কিছুদিন পরে তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হন।
তসলিমা নাসরিন প্রায়ই বলেন, শুধু উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীই নয়, তাঁকে দেশে ফেরার সুযোগ দেয়নি বিএনপি-জামায়াত জোট এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারও। নানা সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন। ১৯৯৪ সালের মাঝামাঝি দেশ ছাড়ার পর তসলিমা নাসরিন নবায়ন করতে পারেননি নিজ দেশের পাসপোর্ট। দূতাবাসগুলো বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে তাঁকে। তবু তিনি হাল ছাড়েননি। বিএনপি আমলে দেশ ছাড়লেও উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভয়ে খালেদা জিয়া কিংবা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার তসলিমা নাসরিন প্রশ্নে অভিন্ন ঐক্য বলে লেখক নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর লেখায় মন্তব্য করেছেন। কারও আমলেই তিনি দেশে বসবাসের জন্য ফিরে আসতে পারেননি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পর বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও তসলিমার দেশে ফেরার ব্যাপারে ইতিবাচক নয়।
তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরার আইনি বাধা নিয়ে কথা হয়েছিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাশের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ‘তসলিমা নাসরিনের দেশে ফিরতে আইনি কোনো বাধা নেই। কোনো নাগরিককে নিজ দেশে আসতে সরকার বাধা দিতে পারে না। কোনো কারণেই পারে না। এমনকি কেউ অপরাধী হলেও দেশে তার বিচার হতে পারে, শাস্তি হতে পারে; কিন্তু দেশে আসতে বাধা দেওয়া যায় না। তসলিমা নাসরিনের দেশে প্রবেশে বাধা সামাজিক ও রাজনৈতিক। ধর্মীয় মৌলবাদীদের ভয়ে কোনো সরকারই তাঁকে দেশে আসতে দিতে ইচ্ছুক নয়। সে জন্যই তাঁর পাসপোর্ট নবায়ন করে দিচ্ছে না।’
তসলিমা নাসরিন একজন লেখক; তিনি খুনি নন, যুদ্ধাপরাধী বা দেশদ্রোহী নন, দুর্নীতিবাজও নন। একজন লেখক তাঁর মা, মাটি ও ভাষাকে গভীরভাবে ভালোবেসেই লেখালেখি করেন। তিনি তাঁর মাতৃভূমিতে বসবাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন কেন? কেন নির্বাসিত থাকবেন দীর্ঘদিন? সভ্যতার এত উন্নতির কালে রাষ্ট্রই তার জবাব দিক।
লেখক: তরুণ কবি ও গবেষক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’।
৩০ আগস্ট ২০২২
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’।
৩০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’।
৩০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

কবি ও কথাসাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন কতটা জনপ্রিয় ও আলোচিত, তাঁকে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্পে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা সাপ্তাহিক ছিল ‘বিচিন্তা’।
৩০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে