তাপস বড়ুয়া

এক.
বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফাস সুখী। কেন? কারণ, কাম্যুর মতে, কাজ করে যাওয়াটাও তো সুখের উপলক্ষ হতে পারে; ‘নাই বা হলো পারে যাওয়া’।
গ্রিক মিথ অনুযায়ী, দেবতা সিসিফাসকে শাস্তি দিয়েছেন বড় এক খণ্ড পাথরকে ঠেলে ঠেলে পাহাড়ের চূড়ায় তোলার। প্রতিবার তোলার পর পাথরটা আবার গড়িয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এসে পড়বে। সিসিফাসকে আবার তুলতে হবে। অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে এভাবে। তার সাজার মেয়াদ যাতে কখনো শেষ না হয়, সে জন্য দেবতা তাকে করে দিয়েছে অমর। অনন্তকাল অর্থহীন জীবন যাপনই সিসিফাসের সাজা।
এখন যদি আমরা আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই, তাহলে কী দেখি? যে মানুষ প্রতিদিন একই কাজ করে, করতে হয় সকাল থেকে রাত—প্রতিদিন শুধুই পুনরাবৃত্তির জীবন, সে-ও আসলে সিসিফাস। সফল হওয়ার চেষ্টা সে করে, সফল হওয়া হয়ে ওঠে না। আসলে চূড়ান্ত সফলতা বলে কোনো গন্তব্য হয়তো নেই। সিসিফাসের মতো এই যে পৌনঃপুনিক দিনরাত্রি মানুষের, এই অনন্ত অর্থহীনতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ কী?
দুই.
আলব্যার কাম্যুর ভাবনায় জীবন ‘অ্যাবসার্ড’—অর্থহীন। তাই জীবনের অর্থ খুঁজতে যাওয়ারও কোনো মানে নেই। আমরা জীবনকে অর্থময় মনে করে অর্থ খুঁজি। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয় না। ব্যক্তি মানুষ জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা করলেও পৃথিবী তার সেই চেষ্টায় একই সুরে, একই তালে সাড়া দেয় না।
দুটি উপায় তখন থাকে মানুষের হাতে—এক. পালিয়ে বাঁচা; দুই. অর্থ খোঁজার চিন্তাটাই বাদ দেওয়া। পালানোর আবার দুটো উপায়—ক. শারীরিকভাবে আত্মহত্যা করা, খ. বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করা।
মানুষ প্রতিমুহূর্তে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, সে আত্মহত্যা করবে কি না। কাম্যুর মতে, এটাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিলোসফিক্যাল প্রশ্ন। অন্য কথায়, সে সিদ্ধান্ত নেয়, যে জীবন সে যাপন করছে, সেটা যাপন করার কি কোনো মানে হয়! যদি মনে হয়, তার জীবনটা যাপন করার অর্থ আছে, তাহলে সে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। না হলে আত্মহত্যা করে; অর্থহীনতার পৌনঃপুনিকতায় ‘ফুলস্টপ’ দিয়ে দেয়।
শারীরিকভাবে আত্মহত্যা কম মানুষ করলেও অধিকাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করে চলেছে। তারা প্রশ্নাতীতভাবে তত্ত্ব ও তথ্যে, এমনকি বানানো গল্প ও ব্যাখ্যাকে বিশ্বাস করে বাস্তবকে ভুলে থাকে বা অস্বীকার করে। কাম্যুর মতে, প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
কারণ, এর মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে নিজেই অস্বীকার করে। নিজের অভিজ্ঞতার চেয়ে অন্যের দেওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যাকে বেশি মূল্য দেয়। জীবনের অর্থহীনতার বিপরীতে একটি আরোপিত অর্থময়তায় সে বিশ্বাস করতে শুরু করে।
আরেকটা হচ্ছে, জীবনটা এখন অর্থহীন হলেও পরে সুদে-আসলে অর্থ তৈরি হবে—এই আশা ও স্বপ্নে বুক বেঁধে স্বস্তি খোঁজে। বিশ্বাস করতে শুরু করে, জীবন খুবই অর্থপূর্ণ; সেটা বুঝতে না পারাটা তার নিজের সমস্যা। সুতরাং তথাকথিত ‘নিজের বোঝার সীমাবদ্ধতা’ কাটিয়ে উঠতে অন্যের চিন্তা ও মোটিভেশনের আলোকে নিজের জীবনকে দেখে।
তৃতীয় পথ হচ্ছে, এই কিছু হওয়ার আশাটা ত্যাগ করা। জীবন যে অর্থহীন, এই সত্যকে সোজাসাপটা মেনে নেওয়া এবং জীবনের মানে খোঁজার মতো অর্থহীন কাজটি না করা। তাহলে কি মানুষ গতানুগতিকতায় গা ভাসিয়ে দেবে? কাম্যু বলেছেন, না, লিভ লাইক এ রেবেল। সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করো। অচলায়তন ভেঙেচুরে দাও। কিন্তু তাতে জীবন অর্থময় হয়ে উঠবে—এই আশা করার কথা তিনি বলেননি; বরং সময়টা কেটে যাবে কিছু একটা নিয়ে। বর্তমানটা মিইয়ে পড়বে না, এটাই লাভ।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা শুধু সেই রীতিনীতিকে প্রশ্ন করি, যেগুলো আমাদের অসুবিধায় ফেলে। যেসব রীতিনীতি আমাদের সুবিধা দেয়, সেগুলো অযৌক্তিক হলেও প্রশ্নাতীতভাবে মেনে নিই। আমরা তাই কাম্যুর ভাবনার রেবেল হতে পারি না।
তিন.
অন্য এক্সিসটেন্সিয়ালিস্ট ফিলোসফারদের সঙ্গে কাম্যুর পার্থক্য হচ্ছে, কাম্যু মনে করেন, অর্থহীনতা শেষ কথা নয়। অর্থহীনতার জটকে পাশে সরিয়ে রেখে জীবনকে উপভোগ্য করা সম্ভব।
সেই আপাত সুখের উপলক্ষগুলো কী হতে পারে? অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে পাশে সরিয়ে রেখে ভালো লাগছে এমন কিছুতে মনোযোগ দেওয়া। সমাজের জন্য, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করা। ভালো কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত আছি, সময়টা অর্থপূর্ণভাবে ব্যয় হচ্ছে—এটা ভেবে মানসিক শান্তি পাওয়া একটা ভালো উপায় হতে পারে।
আরেকটা হতে পারে জীবনের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই লক্ষ্যের পেছনে ছুটে সময়টাকে ব্যয় করা। দিন শেষে বড় কিছু হলেও যে জীবন অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো না। বড় কিছু হওয়া মানুষেরাও জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়েই জীবন শেষ করে। কিন্তু সেই হওয়া পর্যন্ত পথচলার সময়টাতে ভাবা যায়, অর্থপূর্ণ কিছু করছি, বড় কিছুর পেছনে দৌড়াচ্ছি।
এখান থেকেই এসেছে বর্তমানে বাঁচার ধারণা। মনে করা যেতে পারে কাম্যুর বিখ্যাত উক্তি লিভ ইন প্রেজেন্ট। অতীতকে পেছনে রেখে, ভবিষ্যতের আশা ছেড়ে বর্তমানকেই রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করা। আমাদের হিপোক্রেসি হচ্ছে, আমরা অতীতকে ধরে রাখতে চাই; ভবিষ্যতের আশাও ছাড়ি না; আবার বর্তমানকেও পুরোপুরি উদ্যাপন করতে চাই। আমাদের তাই কাম্যুর ‘প্রেজেন্ট’-এ বাঁচা হয়ে ওঠে না।
কাম্যু মনে করেন, সকালবেলায় আমরা আত্মহত্যা না করে যখন এক কাপ গরম কফি খেয়ে নতুন দিন শুরু করি, এর মধ্য দিয়েই আমরা জানিয়ে দিই, জীবন নিয়ে এত সহজে হাল ছাড়ছি না; অর্থহীনতার মধ্যেও আপাত আনন্দ খুঁজছি। গূঢ় কোনো অর্থ থাক বা না থাক; জীবন সুন্দর। প্রতিটা বর্তমান-ক্ষণে সেই সুন্দরেরই উদ্যাপন করছি।

এক.
বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফাস সুখী। কেন? কারণ, কাম্যুর মতে, কাজ করে যাওয়াটাও তো সুখের উপলক্ষ হতে পারে; ‘নাই বা হলো পারে যাওয়া’।
গ্রিক মিথ অনুযায়ী, দেবতা সিসিফাসকে শাস্তি দিয়েছেন বড় এক খণ্ড পাথরকে ঠেলে ঠেলে পাহাড়ের চূড়ায় তোলার। প্রতিবার তোলার পর পাথরটা আবার গড়িয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এসে পড়বে। সিসিফাসকে আবার তুলতে হবে। অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে এভাবে। তার সাজার মেয়াদ যাতে কখনো শেষ না হয়, সে জন্য দেবতা তাকে করে দিয়েছে অমর। অনন্তকাল অর্থহীন জীবন যাপনই সিসিফাসের সাজা।
এখন যদি আমরা আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই, তাহলে কী দেখি? যে মানুষ প্রতিদিন একই কাজ করে, করতে হয় সকাল থেকে রাত—প্রতিদিন শুধুই পুনরাবৃত্তির জীবন, সে-ও আসলে সিসিফাস। সফল হওয়ার চেষ্টা সে করে, সফল হওয়া হয়ে ওঠে না। আসলে চূড়ান্ত সফলতা বলে কোনো গন্তব্য হয়তো নেই। সিসিফাসের মতো এই যে পৌনঃপুনিক দিনরাত্রি মানুষের, এই অনন্ত অর্থহীনতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ কী?
দুই.
আলব্যার কাম্যুর ভাবনায় জীবন ‘অ্যাবসার্ড’—অর্থহীন। তাই জীবনের অর্থ খুঁজতে যাওয়ারও কোনো মানে নেই। আমরা জীবনকে অর্থময় মনে করে অর্থ খুঁজি। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয় না। ব্যক্তি মানুষ জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা করলেও পৃথিবী তার সেই চেষ্টায় একই সুরে, একই তালে সাড়া দেয় না।
দুটি উপায় তখন থাকে মানুষের হাতে—এক. পালিয়ে বাঁচা; দুই. অর্থ খোঁজার চিন্তাটাই বাদ দেওয়া। পালানোর আবার দুটো উপায়—ক. শারীরিকভাবে আত্মহত্যা করা, খ. বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করা।
মানুষ প্রতিমুহূর্তে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, সে আত্মহত্যা করবে কি না। কাম্যুর মতে, এটাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিলোসফিক্যাল প্রশ্ন। অন্য কথায়, সে সিদ্ধান্ত নেয়, যে জীবন সে যাপন করছে, সেটা যাপন করার কি কোনো মানে হয়! যদি মনে হয়, তার জীবনটা যাপন করার অর্থ আছে, তাহলে সে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। না হলে আত্মহত্যা করে; অর্থহীনতার পৌনঃপুনিকতায় ‘ফুলস্টপ’ দিয়ে দেয়।
শারীরিকভাবে আত্মহত্যা কম মানুষ করলেও অধিকাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করে চলেছে। তারা প্রশ্নাতীতভাবে তত্ত্ব ও তথ্যে, এমনকি বানানো গল্প ও ব্যাখ্যাকে বিশ্বাস করে বাস্তবকে ভুলে থাকে বা অস্বীকার করে। কাম্যুর মতে, প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
কারণ, এর মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে নিজেই অস্বীকার করে। নিজের অভিজ্ঞতার চেয়ে অন্যের দেওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যাকে বেশি মূল্য দেয়। জীবনের অর্থহীনতার বিপরীতে একটি আরোপিত অর্থময়তায় সে বিশ্বাস করতে শুরু করে।
আরেকটা হচ্ছে, জীবনটা এখন অর্থহীন হলেও পরে সুদে-আসলে অর্থ তৈরি হবে—এই আশা ও স্বপ্নে বুক বেঁধে স্বস্তি খোঁজে। বিশ্বাস করতে শুরু করে, জীবন খুবই অর্থপূর্ণ; সেটা বুঝতে না পারাটা তার নিজের সমস্যা। সুতরাং তথাকথিত ‘নিজের বোঝার সীমাবদ্ধতা’ কাটিয়ে উঠতে অন্যের চিন্তা ও মোটিভেশনের আলোকে নিজের জীবনকে দেখে।
তৃতীয় পথ হচ্ছে, এই কিছু হওয়ার আশাটা ত্যাগ করা। জীবন যে অর্থহীন, এই সত্যকে সোজাসাপটা মেনে নেওয়া এবং জীবনের মানে খোঁজার মতো অর্থহীন কাজটি না করা। তাহলে কি মানুষ গতানুগতিকতায় গা ভাসিয়ে দেবে? কাম্যু বলেছেন, না, লিভ লাইক এ রেবেল। সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করো। অচলায়তন ভেঙেচুরে দাও। কিন্তু তাতে জীবন অর্থময় হয়ে উঠবে—এই আশা করার কথা তিনি বলেননি; বরং সময়টা কেটে যাবে কিছু একটা নিয়ে। বর্তমানটা মিইয়ে পড়বে না, এটাই লাভ।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা শুধু সেই রীতিনীতিকে প্রশ্ন করি, যেগুলো আমাদের অসুবিধায় ফেলে। যেসব রীতিনীতি আমাদের সুবিধা দেয়, সেগুলো অযৌক্তিক হলেও প্রশ্নাতীতভাবে মেনে নিই। আমরা তাই কাম্যুর ভাবনার রেবেল হতে পারি না।
তিন.
অন্য এক্সিসটেন্সিয়ালিস্ট ফিলোসফারদের সঙ্গে কাম্যুর পার্থক্য হচ্ছে, কাম্যু মনে করেন, অর্থহীনতা শেষ কথা নয়। অর্থহীনতার জটকে পাশে সরিয়ে রেখে জীবনকে উপভোগ্য করা সম্ভব।
সেই আপাত সুখের উপলক্ষগুলো কী হতে পারে? অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে পাশে সরিয়ে রেখে ভালো লাগছে এমন কিছুতে মনোযোগ দেওয়া। সমাজের জন্য, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করা। ভালো কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত আছি, সময়টা অর্থপূর্ণভাবে ব্যয় হচ্ছে—এটা ভেবে মানসিক শান্তি পাওয়া একটা ভালো উপায় হতে পারে।
আরেকটা হতে পারে জীবনের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই লক্ষ্যের পেছনে ছুটে সময়টাকে ব্যয় করা। দিন শেষে বড় কিছু হলেও যে জীবন অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো না। বড় কিছু হওয়া মানুষেরাও জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়েই জীবন শেষ করে। কিন্তু সেই হওয়া পর্যন্ত পথচলার সময়টাতে ভাবা যায়, অর্থপূর্ণ কিছু করছি, বড় কিছুর পেছনে দৌড়াচ্ছি।
এখান থেকেই এসেছে বর্তমানে বাঁচার ধারণা। মনে করা যেতে পারে কাম্যুর বিখ্যাত উক্তি লিভ ইন প্রেজেন্ট। অতীতকে পেছনে রেখে, ভবিষ্যতের আশা ছেড়ে বর্তমানকেই রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করা। আমাদের হিপোক্রেসি হচ্ছে, আমরা অতীতকে ধরে রাখতে চাই; ভবিষ্যতের আশাও ছাড়ি না; আবার বর্তমানকেও পুরোপুরি উদ্যাপন করতে চাই। আমাদের তাই কাম্যুর ‘প্রেজেন্ট’-এ বাঁচা হয়ে ওঠে না।
কাম্যু মনে করেন, সকালবেলায় আমরা আত্মহত্যা না করে যখন এক কাপ গরম কফি খেয়ে নতুন দিন শুরু করি, এর মধ্য দিয়েই আমরা জানিয়ে দিই, জীবন নিয়ে এত সহজে হাল ছাড়ছি না; অর্থহীনতার মধ্যেও আপাত আনন্দ খুঁজছি। গূঢ় কোনো অর্থ থাক বা না থাক; জীবন সুন্দর। প্রতিটা বর্তমান-ক্ষণে সেই সুন্দরেরই উদ্যাপন করছি।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফা
৩০ জুলাই ২০২২
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফা
৩০ জুলাই ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফা
৩০ জুলাই ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফা
৩০ জুলাই ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে