Ajker Patrika

শিল্পচর্চার সামাজিকীকরণে দাগ শিল্পী-গোষ্ঠীর একটি উদ্যোগ

দীপ্তি দত্ত
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২২, ১৪: ২৭
শিল্পচর্চার সামাজিকীকরণে দাগ শিল্পী-গোষ্ঠীর একটি উদ্যোগ

পুরাতন বন্দর নগরী, পুরাতন শহর, পুরাতন শীতলক্ষ্যা, জামদানির পুরাতন সূতিকাগার, পুরাতন কাঠের ঘোড়া—এই সকল পুরাতনের গল্পের রাজ্যে নারায়ণগঞ্জের বাস। সেখানে ঐতিহ্য, সেখানে জাদুঘর সব জমজমাট। টিকিট কেটে আমরা ভিড় করি এই সকল পুরাতনের দিকে একবার চোখ দিতে। অথচ সত্য হলো নারায়ণগঞ্জ পুরাতন শহর, কিন্তু মৃত নয়। সেখানে বাস প্রায় বাইশ লাখ লোকের। শীতলক্ষ্যা অসুস্থ; কিন্তু মৃত নয়। জামদানি শীতলক্ষার দিকেই তাকিয়ে আছে। জাদুঘরের দিকে নয়। ঢাকার বাইরে, ঢাকার গ্যালারিগুলোর বাইরে দাগ আর্ট স্টেশন-এর প্রদর্শনীতে গিয়ে কেবল এই ভালো লাগার অনুরণনই মনে জেগেছে। 

ঐতিহ্য, লোকশিল্পের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রয়াসে নিজেদের ক্লান্ত না করে নারায়ণগঞ্জের এই শিল্পী দল বেঁচে থাকা ও বাঁচিয়ে রাখার কথা বলছে, বুনছে প্রাণের গল্প। এই গল্পে বিদ্রোহের রূপবাদী প্রবণতা লঘু হয়েছে শিল্পীদের নিজেদের জীবনঘনিষ্ঠ রূপ নির্মাণ প্রবণতার কারণে। অমল আকাশ যেমন পটগানে ও পটছবিতে যখন বলে ‘হাশেম ফুডে ঝলসানো প্রাণ’ বা শ্রমিক বিদ্রোহের গল্প, তখন তা কেবল আঙ্গিকের দুর্দান্তপনায় আক্রান্ত হয় না, শিল্পীর সহজাত অবস্থানকেও স্পষ্ট করে। এই অবস্থাটি পুরো প্রদর্শনী, তথা উদ্যোগের মূল শক্তি। শিল্পী খন্দকার নাছির বরাবরের মতোই অরগানিক ফর্মে মুগ্ধ করেছেন। তবে কাঠ মাধ্যমে তিনি সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমসাধ্য যে রীতিতে কাজ করে থাকেন, তা এখানে ছিল না। আয়াসহীন ভাস্কর্যের বাজারের সঙ্গে যুদ্ধ করার পরও কাঠের কাজ তিনি জারি রেখেছেন। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছেন ম্যাটেরিয়াল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এই নিরীক্ষা শীতলক্ষার প্রাণ টিকিয়ে রাখার সাথে ক্রমেই সম্পর্কিত হয়েছে নানাভাবে।

প্রদর্শনীতে থাকা খন্দকার নাছির আহাম্মদের ভাস্কর্যগুলো ভাবনার জোগান দেয়।নাছির এই প্রদর্শনীতে কাঠের বদলে কাজ করেছেন কাগজের কাদামাটিতে (পেপার ক্লে)। মাধ্যম হিসেবে কাগজের কাদামাটি নতুন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু প্রথাগত কাঠ, পাথর, তামা ইত্যাদির বদলে নাছির তাঁর ভাস্কর্যের উপকরণ হিসেবে যেভাবে একে নিজের জন্য প্রাসঙ্গিক করে তোলেন তা আমাদের ভাস্কর্য চর্চার জন্য জরুরি। রামকিঙ্কর তাঁর অবস্থার চাপে যেমন খোঁজ করেছিলেন একটি মাধ্যমের, শিল্পী ইমাম হোসেন সুমনও চমকে দেওয়া সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনীতে। ভাবনা ও মাধ্যমের সমন্বয় ছিল যথাযথ। কাগজের কাদামাটিকে সুমন ভাবনার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছিলেন। প্রদর্শনী কক্ষে প্রবেশের পথে মাথার ওপরে ঝুলছে 'জগদ্দল' নামে এক পাথর। শহীদ আহমেদ মিঠুর এই কাজেও উপকরণ-ভাবনার সহায় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। পাথরের রূপক হয়ে চিন্তা বা উত্তেজনার উদ্দীপক হয়ে আছে দর্শকের জন্য। 

কিন্তু নাছির ভাবনার স্বার্থে ম্যাটেরিয়ালের দিকে যাননি। অর্থনৈতিক শর্তগুলো যাপনের প্রয়োজনে, অবস্থার চাপে নাছির বিকল্প খোঁজেন। সেই বিকল্প থেকে ক্ষণিক কাজের জন্য ব্যবহার করা থার্মোকলের মতো ম্যাটেরিয়ালের সঙ্গে কাগজের কাদামাটির যোগে প্রথমে নিজের সন্তানের জন্য খেলনা পুতুল এবং ক্রমে তা ভাস্কর্যে যুক্ত করেছেন। মাধ্যমের এই নিরীক্ষা স্থানিক সকল প্রসঙ্গ বিবেচনায় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্যকে ঐশ্বর্যের ভারিক্কিপনা থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে।

শিল্পী সুমনা আক্তার গার্মেন্টসের শহর নারায়ণগঞ্জ থেকে ওয়েস্টেজ গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল দিয়ে যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন একটি নান্দনিক দেয়াল কাঁথামাধ্যমের এই নিরীক্ষা-দাগ-গোষ্ঠী তার স্থানিক পরিসর ও পরিজন লক্ষ্যার দিকে নজর রেখে অব্যাহত রাখলে ভাস্কর্যকে গণমুখী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। নাছিরের মতো একই মাধ্যমে কাজ করেছেন শিল্পী রঞ্জিত সরকার। কিন্তু অভিব্যক্তিতে দুজনের কাজ আলাদা হয়ে গেছে পুরোপুরি। 

শিল্পী সুমনা আক্তার গার্মেন্টসের শহর নারায়ণগঞ্জ থেকে ওয়েস্টেজ গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল দিয়ে যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন একটি নান্দনিক দেয়াল কাঁথা। এই কাঁথাও গার্মেন্টসের ওয়েস্টেজকে কেন্দ্র করে একটি বাজার ভাবনাকে উসকে দেয়, যার সম্ভাবনা ও বাজার ইতিমধ্যেই পরীক্ষিত নানাভাবে।

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পী লিটন সরকারের শিল্পকর্ম।শিল্পী লিটন সরকারের শিল্পকর্মের শিরোনাম নিজেই ইতিহাসের জটিলতা ও সংকটের প্রতীকী ভাষা হয়ে ওঠে। ‘পানিজল’ কাজে শীতলক্ষার সমৃদ্ধি, যা লিখিত বা মৌখিক সাহিত্যে ছড়িয়ে আছে, তাকেই আবার সামনে এনেছেন শীতলক্ষ্যাকে ফিরে পাওয়ার আশায়। এই আশা জাগার পেছনে নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটের নবনির্মিত ভবন তার পাশের লেকের সংস্কার অনেক বড় প্রভাবক। এই লেকটি গিয়ে মিশেছে শীতলক্ষার সাথে। ফলে লক্ষ্যা পাড়ের চিত্রকথা এককভাবে দৃশ্যায়িত নয়। চারুকলা ইনস্টিটিউটকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলন, তার একটি সফল পরিবেশকেন্দ্রিক রূপায়ণকে পাশে রেখে এই প্রদর্শনী দেখলে বোঝা যাবে, কোনো ঐতিহ্য-পিপাসা নয়, বরং বর্তমানকে বদলে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ‘লক্ষ্যাপাড়ের চিত্রকথা-১ ’-এ উপলব্ধ হচ্ছে। 

শিল্পী খন্দকার নাছির আহাম্মদের তত্ত্বাবধানে ‘এই শহরে’ শিরোনামের এই ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক স্পেস তৈরির কাজটা করেছেন নয়জন শিক্ষার্থীশিল্পী মুনতাসীর মঈন ইতিহাসের স্মারক হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিত্বকে পাঠ করেন তাঁর ছবি ও টেক্সটের মধ্য দিয়ে। তারই একটি আংশিক উপস্থাপনা এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। ভীখন লাল-নারায়ণগঞ্জের নাম যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন-এঁকেছেন, তাঁর কল্পিত ছবি, ইতিহাস থেকে দৃশ্যরূপে দর্শকের সামনে এনেছেন সমাজ সেবক ফারুক মঈন, সংগীত শিল্পী আবুল সরকার, ব্যবসায়ী রণদা প্রসাদ সাহা, ক্রীড়াবিদ মোনেম মুন্না, শিল্পী মঞ্জুশ্রী নিয়োগী, চিত্রশিল্পী মাহবুব কামরান, বংশীবাদক ওস্তাদ শামসুল হক, ভাষাসৈনিক মমতাজ বেগম, শিক্ষাবিদ খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর মতো নানা গুণীজনকে। শিল্পীদের ইতিহাস পাঠের এই প্রকরণ ইতিহাসকে সহজভাবে পাঠ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে জোরালোভাবে।

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া একটি শিল্পকর্ম। শিল্পী অমল আকাশ।এই প্রদর্শনীর আরেকটি চমৎকার দিক হচ্ছে দ্বিমাত্রিকতা ও ত্রিমাত্রিকতার একাডেমিক চর্চার যে সীমানা, তা ভেদ করে অগ্রসর হয়েছে। ‘এই শহরে’ শিরোনামের একটি দলীয় কাজ রয়েছে। মোট নয়জন শিক্ষার্থী মিলে কিউরেটর নাছিরের তত্ত্বাবধানে ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক স্পেস তৈরির কাজটা করেছে। তাঁদের মধ্যে তামান্না লিজা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএফএ প্রথম পর্বের শিক্ষার্থী। সুমিত দাস, সজীব ঘোষ, সজীব মণ্ডল, শিব শংকর, সানন্দা সাহা, দিপা পোদ্দার, নুর মোহাম্মদ সান্ত, মেইবু অং মারমা চারুকলার প্রি-ডিগ্রির শিক্ষার্থী। তাঁরা নারায়ণগঞ্জ শহরকে করোগেডেট বোর্ডে ত্রিমাত্রিক ফর্মে উপস্থাপন করেছেন। যা চারুকলার প্রথাগত বিশেষায়িত শিক্ষার যে স্কুলিং, তার বিপরীত প্রবণতাকে উদ্দীপ্ত করে। রয়েছে শিল্পী বদরুল আলমের উপস্থাপিত লক্ষ্যার নির্যাতনের ইতিহাস। সর্বোপরি প্রদর্শনীতে অবজেক্ট, স্পেস ও ডিসপ্লের মধ্যে যে একটা সমন্বয় ও পরিমিতিবোধ কাজ করেছে, তা দর্শককে প্রশান্তি দেয়। আর এ কারণেই কিউরেটর হিসেবেও খন্দকার নাছির আমাদের ভাবনার জোগান দেন নানা কারণে। শিল্পচর্চার সামাজিকীকরণের ভাবনা মাথায় রেখে নেওয়া এই উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে সম্প্রসারিত করে নিঃসন্দেহে।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া দাগ শিল্প-গোষ্ঠীর সদস্যরা।দাগ আর্ট স্টেশন তাদের ‘সামাজিক শিল্পচর্চা’র স্লোগান নিয়ে ২০১৮ সালে ‘নারায়ণগঞ্জ আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন ও পাঠাগার’ একটি দলীয় প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, এই প্রদর্শনী সেই আশাবাদকে জিইয়ে রাখে। জিইয়ে রাখে ‘ছবির হাট’-এর মতো গোষ্ঠীগত সাংস্কৃতিক উদ্যোগের প্রসারমান সম্ভাবনাগুলোকে। আলী আহাম্মদ পৌর মিলনায়তন ও পাঠাগার গ্যালারিতে চলমান এ প্রদর্শনী শেষ হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।

মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’

১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।

মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।

নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।

বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল যেন তাঁর দীর্ঘ কোনো বাক্যের সমাপ্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।

১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।

তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।

তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।

২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।

চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।

তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১০
সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।

লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।

লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।

১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।

লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।

‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।

এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত